মেঘের কোলে রোদ: ০৮. টাকা-পয়সা আদায় করার পর

মেঘের কোলে রোদ: ০৮. টাকা-পয়সা আদায় করার পর

০৮. টাকা-পয়সা আদায় করার পর

টাকা-পয়সা আদায় করার পর কমিটির মেম্বাররা মাদ্রাসার ভীত দেয়ার জন্য ঐ লোককে আনার ব্যবস্থা করতে চেয়ারম্যানকে বললেন।

চেয়ারম্যান বললেন, ঠিক আছে, আমি সেই ব্যবস্থা করছি।

এরমধ্যে একদিন মুশতাক বিশ্বাস একটা উকিল নোটিশ পেলেন। নোটিশ পড়ে বুঝতে পারলেন, খাঁপাড়ার যে মেয়েকে তার দাদা গোপনে বিয়ে করেছিলেন এবং পরদাদাজী গুলি করে মেরে ফেলেছিলেন, তারই ছেলে সম্পত্তির দাবি করে কোর্টে মামলা করেছে। নোটিশ পড়ে যতটা না অবাক হলেন, তার চেয়ে বেশি রেগে গেলেন। অনেকক্ষণ থুম ধরে বসে রইলেন। এমন সময় পারভেজকে দেখতে পেয়ে কাছে ডেকে নোটিশের কাগজটা দিয়ে পড়তে বললেন।

নোটিশ পড়ে পারভেজের অবস্থা বাপের মতো হল। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, এই নোটিশ নিয়ে একজন উকিলের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।

একদিন মুশতাক বিশ্বাস ও পারভেজ চুয়াডাঙ্গা কোর্টের নামকরা উকিল শারাফাতের কাছে গিয়ে নোটিশটা দিয়ে পরামর্শ চাইলেন।

শারাফাত খুব নামকরা উকিল। বয়স প্রায় পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন। তার বাবা বিলায়েত হোসেনও নামকরা উকিল ছিলেন। মুশতাক বিশ্বাসের পরদাদা ছেলের বৌকে গুলি করে যে খুনীর আসামী হয়েছিলেন, সেই কেস তিনি ড্রিল করে আসামীকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন।

নোটিশ পড়ে শারাফাত উকিল বললেন, অনেক আগে একদিন বাবার মুখে শুনেছিলাম, কুতুবপুরের বিশ্বাসদের কেউ একজন পুত্রবধূকে গুলি করে খুন করেছিলেন। মনে হচ্ছে, সেই মেয়ের ছেলেই বাদি, তাই না?

মুশতাক বিশ্বাস বললেন, হ্যাঁ আপনি ঠিক ধরেছেন। আব্বার মুখে শুনেছি, সে সময় আপনার বাবাই পরদাদাজীকে বাঁচিয়েছিলেন। তাই তো আপনার কাছে এলাম। তারপর বললেন, দাদাজীর মুখেই শুনেছি, ঐ মেয়ের দু’মাসের একটা ছেলে ছিল।

শারাফাত উকিল বললেন, বাদি যদি প্রমাণ করতে পারেন, উনিই সেই ছেলে, তা হলে তার ও তার মায়ের প্রাপ্য অংশ আপনাকে দিতে হবে।

মুশতাক বিশ্বাস চিন্তিত গলায় বললেন, আপনার কী মনে হয়, বাদি প্রমাণ করতে পারবে?

মামলা যখন করেছেন, তখন প্রমাণ জোগাড় করেই করেছেন।

মুশতাক বিশ্বাস বললেন, মামলা চললে অনেক টাকাপয়সা খরচ হবে। তা ছাড়া বংশের মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি পড়বে। বাদিকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে মামলা মিটিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করুন।

তা করতে পারব; যদি বাদি রাজি হয়। তা ছাড়া বাদি যদি মোটা অংকের টাকা দাবি করেন, আপনারা দেবেন তো?

পারভেজ এতক্ষণ চুপ করেছিল, এবার আব্বা কিছু বলার আগে বলল, আপনি বাদির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে দেখুন। তিনি কত টাকা দাবি করেন। তারপর যা করার আমরা আপনার সঙ্গে পরামর্শ করে করব।

শারাফাত উকিল বললেন, ঠিক আছে, আপনারা এখন যান। আমি বাদির সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনাকে জানাব।

শারাফাত উকিল একদিন বাদির বাসার ঠিকানায় গেলেন। তিনি ব্যারিস্টার খলিলুর রহমানকে চেনেন। কিন্তু তিনিই যে বাদি হাসিবুর রহমানের ছেলে, তা জানতেন না। জানার পর যা বোঝার বুঝে গেলেন। তাদের সঙ্গে কেসের ব্যাপারে আলাপ করে মুশতাক বিশ্বাসের কথা মতো টাকার কথা তুলে কেস মিটিয়ে ফেলার কথা বললেন।

বাবা কিছু বলার আগে ব্যারিস্টার খলিলুর রহমান বললেন, দাদি ও বাবার অংশের সম্পত্তির মূল্য বাবদ পাঁচ লাখ, আর দাদিকে খুন করার জন্য পাঁচ লাখ, মোট দখ লাখ টাকা পেলে আমরা মামলা তুলে নিতে পারি। আর যদি দশ লাখ টাকা দিতে মুশতাক বিশ্বাস রাজি না হন, তা হলে, খুব শিঘ্রি আমরা খুনের মামলাও দায়ের করব। আমাদের দাবি ন্যায্য কিনা উকিল হিসাবে আপনি নিশ্চয় জানেন!

শারাফাত উকিল আর কিছু না বলে বিদায় নিয়ে ফিরে এলেন। তারপর একদিন মুশতাক বিশ্বাসকে খবর দিয়ে আনিয়ে সবকিছু জানালেন।

টাকার অংক শুনে মুশতাক বিশ্বাস ভিমরি খেয়ে চুপ করে রইলেন, আর রাগে ফুলতে লাগলেন।

পারভেজও আব্বার সঙ্গে এসেছে। তাকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল, যিনি খুন করেছেন তিনি ও তার ছেলে অনেক আগে মারা গেছেন। দাদাজী ও মারা গেছেন, মরা মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়?

শারাফাত উকিল বললেন, দেখুন বাদি বিরাট ধনী। তার এক ছেলে ব্যারিস্টার। হাইকোর্টে ওকালতি করেন। এ ব্যাপারে ওঁদের সঙ্গে পেরে উঠবেন না। কি করবেন না করবেন, চিন্তা ভাবনা করে আমাকে জানাবেন। আমি সেই মতো ব্যবস্থা করব। তবে আমার মনে হয়, আপনারা নিজে গিয়ে ওঁদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মীমাংসা করে ফেলাই ভালো।

মুশতাক বিশ্বাস রাগের সঙ্গে বললেন, তা কখনই সম্ভব নয়। দুশমনদের সঙ্গে আলাপ করা কিছুতেই সম্ভব নয়। ধনী হলে কী হবে? ছোটলোকের বাচ্চা তো, তাই টাকার এত লোভ।

শারাফাত উকিল বললেন, তা হলেতো আপনাকে নির্দিষ্ট দিনে কোর্টে হাজির হয়ে নোটিশের বিরুদ্ধে জওয়াব দাখিল করতে হবে?

এ ব্যাপারে পরে আপনাকে জানাব বলে মুশতাক বিশ্বাস ছেলেকে বললেন চল, এবার ফেরা যাক। তারপর বিদায় নিয়ে ফিরে এলেন।

কার্পাসডাঙ্গায় বাস থেকে নেমে হাবিব ডাক্তারের সঙ্গে দেখা। সে রুগী দেখে ফিরছিল। তাদেরকে দেখে সাইকেল থেকে নেমে সালাম বিনিময় করে বলল, কোথায় গিয়েছিলেন মাতব্বর সাহেব?

মুশতাক বিশ্বাস তার কথার উত্তর না দিয়ে বললেন, অনেক দিন আমাদের ওদিকে আপনাকে দেখি নি। ঢাকায় গিয়েছিলেন নাকি?

হ্যাঁ গিয়েছিলাম, আব্বা ফোন করে যেতে বলেছিলেন। তবে দু’দিন পরেই চলে এসেছি। তারপর বলল, আপনাদের ওদিকে রুগী না থাকলে যাওয়া হয় না। তবে গত সপ্তাহে বইরাপাড়ায় কাদের আলির বাড়িতে রুগী দেখতে গিয়েছিলাম। আপনাদের কারো সঙ্গে দেখা হয় নি। হেলথ কমপ্লেক্সে চলুন না, চা-টা খেয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে আলাপও করা যাবে।

মুশতাক বিশ্বাসের হঠাৎ মনে পড়ল, ডাক্তারের বাবা ব্যারিস্টার। ডাক্তারকে সঙ্গে নিয়ে তার সঙ্গে কেসের ব্যাপারে আলাপ করলে কেমন হয়?

কি ভাবছেন মাতব্বর সাহেব? গেলে খুশি হতাম।

ঠিক আছে চল বলে মুশতাক বিশ্বাস পারভেজকে আসতে বলে এগোলেন।

হাবিব ডাক্তার তাদেরকে নিজের রুমে এনে বসাল, তারপর একজন আয়াকে ডেকে চা-নাস্তা দিতে বলল।

নাস্তা খেয়ে চা খাওয়ার সময় মুশতাক বিশ্বাস হাবিব ডাক্তারকে বললেন, একটা কেসের ব্যাপারে এক উকিলের কাছে গিয়েছিলাম। উনি বললেন, এই কেস চালান তার দ্বারা সম্ভব নয়। তারপর চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে নামিয়ে রেখে বললেন, শুনেছি, তোমার বাবা হাইকোর্টের উকিল। ভাবছি তাকে দিয়ে কেসটা চালাব। তুমি যদি আমাদেরকে তার কাছে নিয়ে যেতে, তা হলে ভালো হত।

হাবিব ডাক্তার বলল, বেশ তো নিয়ে যাব। এই কয়েকদিন আগে ঢাকা গিয়েছিলাম। সপ্তাহ দুই পরে আবার যাব। তখন না হয় নিয়ে যাব।

মুশতাক বিশ্বাস বললেন, ঠিক আছে, যাওয়ার আগের দিন আমাকে জানাবে। তারপর বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলেন।

বাড়িতে পৌঁছে দেখলেন, বৈঠকখানায় ঘটক বসে আছে।

ঘটক মাতব্বর সাহেবকে আসতে দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে উঠেছিল। কাছে এলে সালাম দিয়ে বলল, কেমন আছেন?

সালামের উত্তর দিয়ে মুশতাক বিশ্বাস বললেন, ভালো আছি। তারপর একটা চেয়ারে বসে তাকেও বসতে বলে বললেন, তা কি খবর নিয়ে এসেছ বল।

খবর খুব ভালো। পরশু আনন্দবাস থেকে ছেলেপক্ষরা বিয়ের পাকা কথাবার্তা বলতে আসবে।

মুশতাক বিশ্বাস আলহামদুলিল্লাহ বলে একটা একশ টাকার নোট দিয়ে বললেন, এখন এটা রাখ। বিয়ের দিন তোমাকে খুশি করে দেব। তা ক’জন আসবে কিছু বলেছে? গতবারে তো পনের ষোলজন এসেছিল।

ঘটক বলল, এবারে বেশি লোক আসবে না। চার পাঁচজন আসবেন।

মুশতাক বিশ্বাস ছেলেকে বললেন, ঘটককে নাস্তা-পানি খাইয়ে বিদায় কর। আমি খবরটা তোমার মাকে জানাই বলে বাড়ির ভিতর চলে গেলেন।

রাতে এশার নামায পড়ে এসে চামচা রসুকে দেখে মুশতাক বিশ্বাস বললেন, কী ব্যাপার, তোমার যে কয়েকদিন পাত্তা নেই?

রসু সালাম বিনিময় করে বলল, আপনার কাজেই ব্যস্ত ছিলাম।

তা কাজটা হয়েছে।

জি, দু’টো গুরুত্বপূর্ণ খবর নিয়ে এসেছি।

বল, কি তোমার গুরুত্বপূর্ণ খবর?

প্রথমটা হল, গিয়াস বাজারে মুদি দোকান দিয়েছে। সে আর আপনার কোনো কাজ করবে না। দ্বিতীয়টা হল, হাশেম আলির মেয়ে যীনাত পোয়াতী হয়েছে।

শেষের কথাটা শুনে মুশতাক বিশ্বাস চমকে উঠে সামলে নিলেন। অল্পক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, কথাটা সত্য মিথ্যা যাচাই করছ?

রসু বলল, যাচাই আর কি করব? পশ্চিমপাড়ার মেয়ে পুরুষ অনেকেই জানে।

তুমি কবে জেনেছ?

শুনেছি বেশ কয়েকদিন আগে। শোনার পর যার দ্বারা এই কাজ হয়েছে, তাকে জানার জন্য পশ্চিমপাড়ার মহিমকে লাগিয়েছিলাম। সে বলল, হাবিব ডাক্তারকে মাঝে মাঝে হাশেম আলির বাড়িতে রাতে থাকতে ও ভোরে চলে যেতে দেখেছে। তার কথা সত্য কিনা জানার জন্য পরশু রাতে মহিমদের ঘরে আমি রাত কাটাই। সে ও আমি হাবিব ডাক্তারকে রাতে আসতে ও ভোরে চলে যেতে দেখেছি।

মুশতাক বিশ্বাস ভাবলেন, হাবিব ডাক্তারের মতো লোক এমন গর্হিত কাজ করতে পারল? সে কি ধর্মের মুখোশ পরে এরকম শয়তানি কাজ করে বেড়াচ্ছে?

মাতব্বরকে চুপ করে থাকতে দেখে রসু আবার বলল, কথাটা আমিও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারি নি। তাই সত্য মিথ্যা যাচাই করে আপনাকে জানাতে এলাম। আপনি গ্রামের মাতব্বর। এরকম কাজের বিচার না করলে সবার উপর আল্লাহর গজব নাজেল হবে। আর সেজন্য আপনি দায়ী হবেন।

বিচার তো হবেই। ভাবছি, গ্রামের সবাই হাবিব ডাক্তারকে পীরের মতো মানে। তার বিচার করতে হলে ঘটনার সততার মজবুত সাক্ষীর দরকার। শুধু তোমার ও মহিমের সাক্ষীতে কাজ হবে না। তা ছাড়া হাশেম আলির ভাইপো আজরাফ মাস্টারের খুব পেয়ারের লোক হাবিব ডাক্তার। তার সাক্ষী আগে দরকার। আচ্ছা, পাড়ার লোকেরা এত বড় একটা কাণ্ড আজরাফ মাস্টারকে জানাই নি কেন বলতে পার?

সে কথা আমি মহিমকে বলেছিলাম। সে আপনার কথাটাই বলল, “হাবিব ডাক্তার আজরাফ মাস্টারের খুব পেয়ারের লোক।” তাই কেউ বলতে সাহস করে নি।

তুমি কাল আজরাফ মাস্টারকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলবে। আর শোন, এই ব্যাপারটা গোপন রাখবে। কারো কাছে বলবে না। বিচারের সময়। সবাই জানুক, এটাই আমি চাই।

ঠিক আছে, তাই হবে। আর কিছু বলবেন?

না, তুমি এবার যাও।

পরেরদিন রসু এসে খবর দিল, আজরাফ মাস্টার আজ সকালের দিকে বৌ ছেলে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গেছে। এক সপ্তাহ পর ফিরবে।

ঠিক আছে, এক সপ্তাহ পরে ফিরলে তাকে আমার কথা বলবে। পরশু আনন্দবাস থেকে লোকজন আসবে আতিকার বিয়ের দিন ঠিক করতে। তুমি এখন যাও। পরশুদিন সকালের দিকে এস।

জি, আসব বলে রসু চলে গেল।

মুশতাক বিশ্বাস ঘটনাটা বিশ্বাস করতে পারলেন না। নিজের রুমে এসে চিন্তা করতে লাগলেন, হাবিব ডাক্তার হাশেম আলির বাড়িতে রাত কাটায়, তার ভাইপো হয়ে পাশাপাশি বাড়িতে থেকে আজরাফ মাস্টারের চোখে পড়বে না, এটা কেমন করে হয়? তখন তার গিয়াসের কথা মনে পড়ল, সে বলেছিল, “হাবিব ডাক্তার যীনাতের সাথে মেলামেশা করে।” তবু কথাটা বিশ্বাস করতে পারলেন না। নামি দামি লোকের ছেলে, তার উপর শুধু একজন বড় ডাক্তার নয়, আলেমও। বিয়েও করেছে। বিয়ের কথা শুনে মনে পড়তে চিন্তা করলেন, যীনাতকেই বিয়ে করে নি তো? কিন্তু তা হলে তো গ্রামের সবাই জানত? বিয়ের কথাতো আর চাপা থাকে না? বিশেষ করে আজরাফ মাস্টারতো আগেই জানবে? সেই তো এখন তাদের সংসার চালাচ্ছে?

এমন সময় শাফিয়া বানু স্বামীকে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকতে এসে তাকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বললেন, চুপচাপ বসে আছ যে, ভাত খাবে না?

মুশতাক বিশ্বাস এতই চিন্তামগ্ন ছিলেন যে, স্ত্রীর কথা শুনতে পেলেন না। তাকিয়ে বললেন, কিছু বললে?

শাফিয়া বানু উকিল নোটিশের কথা জানেন। নোটিশের ব্যাপারে যে আজ সকালে চুয়াডাঙ্গা কোর্টে স্বামী ও ছেলে উকিলের কাছে গিয়েছিল তাও জানেন। তাই স্বামীর কথা শুনে বললেন, কী এত ভাবছিলে যে, আমার কথা শুনতে পেলে না? উকিল সাহেব কি বললেন, তাও তো বললে না? ওরা কি টাকা নিয়ে মামলা তুলে নিতে চায় নি?

মামলা তুলে নিতে চেয়েছে, তবে টাকাটা বেশি দাবি করেছে। সে যাই হোক, আমি সে কথা ভাবছি না। তারপর যীনাতের ব্যাপারটা চেপে গিয়ে বললেন, ভাবছিলাম, আতিকার বিয়েটা ভালোভাবে মিটে গেলে নিশ্চিন্ত হতে পারি।

শাফিয়া বানু বললেন, ওরা তো পরশু দিন আসছে। বিয়ের দিনটা কাছাকাছি করবে।

সেকথা তোমাকে বলে দিতে হবে না। পারভেজকে বাজার হাট করার লিস্ট করতে বলেছ? কালকেই সবকিছু কিনে ফেলতে হবে।

সে সব তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। পারভেজ ও বৌমা সব দায়িত্ব নিয়েছে। এখন খাবে চল। বৌমা ভাত বেড়ে বসে আছে।

আতিকার বিয়ের দিন ধার্য হল সামনের শুক্রবারের পরের শুক্রবার। মাঝখানে মাত্র দশদিন। গহনাপত্র আগেই বানিয়ে রেখেছিলেন মুশতাক বিশ্বাস। বাকি অন্যান্য সবকিছু কেনার দায়িত্ব পারভেজের উপর ছেড়ে দিলেন।

বিয়ের দু’দিন আগে সকাল থেকে আতিকাকে পাওয়া যাচ্ছে না। শাফিয়া বানু পাড়ায় পাড়ায় ও জ্ঞাতি-গুষ্ঠীদের বাড়িতে যেখানে যেখানে আতিকা বেড়াতে যায়, সবখানে কাজের মেয়েকে দিয়ে খোঁজ করালেন; কিন্তু পাওয়া গেল না। এমনকি কেউ তাকে দেখে নি বলে জানাল। শাফিয়া বানু ভাবলেন, আতিকা নাদের আলির ঘরে চলে যাই নি তো? চাকর হালিমকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুই খপাড়ার নাদের আলিকে চিনিস?

হালিম মাঝপাড়ার গরিবের ছেলে। তার বাবা যখন মারা যায় তখন তার বয়স ছয় বছর। বছর খানেক পর বইচিতলার একজনের সঙ্গে তার মায়ের আবার বিয়ে হয়। হালিম চাচাদের কাছে ছিল। আট বছর বয়সে চাচারা তাকে মুশতাক বিশ্বাসের বাড়িতে কাজে দেয়। এখন তার বয়স তের চৌদ্দ বছর। আতিকা তাকে খুব স্নেহ করে। ভালো মন্দ কিনে খাওয়ায়। মাঝে মধ্যে দু’পাঁচ টাকা দেয়। তাই আতিকা যা বলে তাই শোনে। তাকে দিয়েই আতিকা নাদের আলির সঙ্গে চিঠি লেন-দেন করে, দেখা সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে। হালিম আতিকাকে বুবু ডাকে। তার মা বাবাকে চাচা-চাচী ও পারভেজ ও তার স্ত্রীকে ভাই-ভাবি বলে ডাকে। সে কিশোর হলেও বুঝতে পেরেছে আতিকা বুবুও নাদের আলি ভাই একে অপরকে ভালবাসে। বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার পর থেকে আতিকার মন খারাপ। সে গতকাল তাকে দিয়ে নাদের আলির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। আজ তাকে পাওয়া যাচ্ছে না শুনে ভেবেছে, আতিকা বুবু নাদের আলি ভাইদের ঘরে পালিয়ে গেছে। তাই শাফিয়া বানু যখন তাকে জিজ্ঞেস করলেন নাদের আলিকে চেনে কিনা তখন ভয় পেলেও সাহস করে বলল, জে, চিনি।

তাদের ঘর চিনিস?

জে, চিনি।

তুই এক্ষুনি একবার তাদের ঘরে গিয়ে দেখে আসবি তোর আতিকা বুবু সেখানে আছে কিনা। খবরদার, চুপি চুপি যাবি আর আসবি। আমি যে তোকে পাঠিয়েছি, কাউকে বলবি না। ওখান থেকে সোজা আমার কাছে আসবি।

জে আচ্ছা, বলে হালিম বেরিয়ে গেল।

শাফিয়া বানু অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলেন। প্রায় একঘণ্টা পর হালিম ফিরে এলে জিজ্ঞেস করলেন, কী রে, আছে?

হালিম মন ভার করে বলল, না নেই।

নাদের আলি আছে?

সেও নেই।

ঘরে আর কে কে আছে?

নাদের আলি ভাইয়ের তো কেউ নেই, শুধু এক ফুফু আছে। তাকে জিজ্ঞেস করতে বলল, কাজে গেছে।

ঠিক আছে, তুই তোর কাজে যা বলে শাফিয়া বানু চিন্তা করলেন, আর দেরি করে স্বামী ও ছেলেকে কথাটা জানান দরকার।

পারভেজের স্ত্রী সায়লা ননদকে সকাল থেকে দেখতে না পেয়ে শাশুড়ীকে কয়েকবার তার কথা জিজ্ঞেস করেছে। পাড়ার কারো বাড়িতে হয়তো বেড়াতে গেছে বলে তিনি এড়িয়ে গেছেন। দুপুর হয়ে যেতেও যখন তাকে ফিরতে দেখল না তখন সায়লা শাশুড়ীকে বলল, আম্মা, বুবুতো এখনও এল না, কোথায় গেল একটু খোঁজ নিলে হত না?

শাফিয়া বানু চিন্তিত মুখে বললেন, মেয়েটা দিন দিন খুব বেয়াড়া হয়ে যাচ্ছে। কোথাও গেলে বলে যাবি তো? তা না, সেই যে সকালে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়েছে, এখনও ফেরার নাম নেই।

সায়লা বলল, আমার কেমন যেন ভয় ভয় করছে আম্মা!

এতে তোমার আবার ভয় পাওয়ার কি আছে?

আনন্দবাস থেকে যেদিন লোকজন এসে বিয়ের দিন ঠিক করে গেল, সেদিন তার মন খারাপ দেখে বললাম, বুবু তোমার মন খারাপ কেন? এখন তো খুশি হওয়ার কথা? বলল, এ বিয়েতে আমার মত নেই। আমি বললাম কেন? বলল, সে কথা তোমাকে বলা যাবে না। অনেক আদর ও কাকুতি মিনতি করতে বলল, আমি এই গ্রামের একটা ছেলেকে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ভালবাসি। তাকে ছাড়া আর কারো সঙ্গে বিয়ে বসতে পারব না। জিজ্ঞেস করলাম, ছেলেটাও কি তোমাকে ভালবাসে? বলল, হ্যাঁ, সেও আমাকে ভীষণ ভালবাসে। ছেলেটার পরিচয় জানতে চাইতে বলল, আম্মা, আব্বা ও ভাইয়া জানে। তারা ঐ ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পেরে আনন্দবাসের একটা বাজে ছেলের সঙ্গে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দিতে যাচ্ছে। আমারও এক কথা, তাকে ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিলে যা করব, তা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না।

তুমি কী কথাগুলো পারভেজকে বলেছ?

জি, ঐদিন রাতেই বলেছি।

শুনে পারভেজ কি বলল?

খুব রেগে উঠে বলল, এসব কথা কাউকে বলবে না। ও যাকে ভালবাসে, তার বংশের সঙ্গে আমাদের দুশমনি। আতিকা আমার একমাত্র বোন। তাকে আমি যে কতটা ভালবাসি তা তুমিও জান। তবু দুশমনি বংশের ছেলের সঙ্গে ওর বিয়ে কিছুতেই দিতে পারি না। তা ছাড়াও ছেলেটা অন্য বংশের। বিশ্বাস বংশের হলেও না হয় কথা ছিল। ওর জন্য আমরা বংশের সম্মান নষ্ট করতে পারি না। তাই আমরা অন্য গ্রামের বিশ্বাস বংশেই বিয়ের ব্যবস্থা করেছি।

আমি বললাম, তা না হয় বুঝলাম; কিন্তু বুবু তো বলছিল, ছেলেটা নাকি খুব খারাপ?

ছেলে ভালো না খারাপ, তা আমরা না জেনে কি বিয়ে দিচ্ছি? ওর কথা আর বলবে না, পারলে ওকে বোঝাও।

শাফিয়া বানু বললেন, তুমি ওকে বুঝিয়েছিলে?

সায়লা বলল, বোঝাতে চেয়েছিলাম; কিন্তু দু’একটা কথা বলতে না বলতে রেগে উঠে আমার কাছ থেকে চলে গেল। তারপর বলল, এখন কি হবে আম্মা?

ভাবছি, দুপুরে খাওয়ার পর পারভেজকে ও তার আব্বাকে জানাব।

হ্যাঁ আম্মা, তাই জানান। আমার তো ভয় হচ্ছে। বুবু যা জেদী, কোনো অঘটন না ঘটিয়ে ফেলে।

শাফিয়া বানুও পেটের মেয়েকে ভালভাবেই জানেন। তিনিও ঐ কথা ভেবে ভয় পাচ্ছেন। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললেন, সেইজন্য আমারও খুব চিন্তা হচ্ছে। এমন সময় স্বামীকে নামায পড়ে আসতে দেখে বললেন, তোমার শ্বশুর এসে গেছে, যাও ভাত বাড়।

খাওয়া-দাওয়ার পর শাফিয়া বানু স্বামীকে কয়েকটা পান সেজে পিরীচে করে দিয়ে বললেন, আতিকাকে সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

মুশতাক বিশ্বাস চমকে উঠে বললেন, পাওয়া যাচ্ছে না মানে? সকালে নাস্তা খাই নি?

না। মনে করেছিলাম, পাড়ায় কোনো আত্মীয়ের বাড়ি গেছে, সেখানেই হয়তো নাস্তা খেয়েছে। দুপুর পর্যন্ত না আসায় কাজের মেয়েকে খোঁজ করতে পাঠিয়েছিলাম। সে ফিরে এসে বলল, কোনো বাড়িতেই নাকি যাই নি।

মুশতাক বিশ্বাস স্ত্রীর উপর খুব রেগে গেলেন। রাগের সঙ্গে বললেন, এখন বেলা আড়াইটা বাজে, এতক্ষণ জানাও নি কেন?

বললাম তো, মনে করেছিলাম কারো বাড়ি বেড়াতে গেছে। না বলে সে তো প্রায় কারো না কারো বাড়ি যায়।

বৌমা কথাটা জানে?

জানে। সে তো কয়েকবার আতিকার কথা জিজ্ঞেস করেছে।

মুশতাক বিশ্বাস শোয়া থেকে উঠে একটা পান মুখে দিয়ে দু’টো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলেন। তারপর দুই তিনজন কাজের লোককে আতিকার খোঁজে পাঠালেন।

স্কুল ছুটির পর পারভেজ ঘরে এলে মুশতাক বিশ্বাস আতিকার কথা বলে বললেন, আমি দু’তিনজনকে খুঁজতে পাঠিয়েছি। তুমি কাউকে নাদের আলির ঘরে পাঠিয়ে খোঁজ নাও।

সবাই সারাদিন খোঁজ করে আতিকাকে পেল না। পারভেজ যাকে নাদের আলির ঘরে খোঁজ নিতে পাঠিয়েছিল, সেও ফিরে এসে বলল, আতিকা সেখানে যায় নি। আর নাদের আলিও ঘরে নেই। কোথায় গেছে তার ফুফু জানে না।

কথাটা শুনে পারভেজের ধারণা হল, আতিকাকে নিয়ে নাদের আলি পালিয়ে গেছে। আব্বাকে তার ধারণার কথা বলল।

মুশতাক বিশ্বাসও ঐরকম ধারণা করেছিলেন। ছেলের কথা শুনে ধারণাটা দৃঢ় হল। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন, ছোটলোকের বাচ্চাকে একবার পেয়ে নিই, তারপর যে কি করব, তা….রাগে কথাটা শেষ করতে পারলেন না।

পারভেজ বলল, নাদের আলিকে যা করবেন পরে চিন্তা করলে চলবে। পরশু বিয়ের দিন। সে ব্যাপারে কি করবেন আগে চিন্তা করুন।

বাপ-ছেলেকে কথা বলতে দেখে শাফিয়া বানু এসে দাঁড়িয়েছিলেন। পারভেজের কথা শুনে বললেন, কাল দুপুর পর্যন্ত যদি আতিকা ও নাদের আলি

ফেরে, তা হলে বিকেলে পারভেজ আনন্দবাস গিয়ে বলে আসুক, “গত রাত থেকে আতিকার খুব জ্বর। জ্বরের ঘোরে ভুল বকছে। তাই বিয়ের দিন পিছাতে হবে। আতিকা সুস্থ হওয়ার পর আমরা এসে বিয়ের দিন ঠিক করে যাব।”

স্ত্রীর কথায় মুশতাক বিশ্বাসের রাগ একটু কমল। ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমার মা ভালো কথা বলেছে। তা ছাড়া মান-সম্মান বাঁচাবার মতো অন্য কোনো পথওতো খুঁজে পাচ্ছি না।

পারভেজ বলল, তাই করতে হবে। আমিও অন্য কোনো উপায় দেখতে পাচ্ছি না।

পরের দিন দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও যখন আতিকা ও নাদের আলি ফিরল তখন সবাই-এর বদ্ধ ধারণা হল, ওরা পালিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে পারভেজ বিকেলে আনন্দবাস গিয়ে আতিকার অসুখের কথা বলে বিয়ের দিন পিছিয়ে দিয়ে এল। রাতে আব্বাকে বলল, কাল সকালে দামুড়হুদা গিয়ে থানায় নাদের আলির নামে আতিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কেস দিতে হবে।

মুশতাক বিশ্বাস বললেন, হুট করে থানায় কিছু করা ঠিক হবে না। জানাজানি হয়ে গেলে বিয়েটা ভেঙ্গে যাবে। যা করার ভেবে চিন্তে করতে হবে।

সন্ধ্যের পর রসুকে হন্তদন্ত হয়ে আসতে দেখে মুশতাক বিশ্বাস বললেন, কোনো খবর পেলে?

রসু বলল, জি পেয়েছি। আমার চাচাতো ভাই জাফর পরশু দিন ভোরে চুয়াডাঙ্গা গিয়েছিল। যাওয়ার সময় কার্পাসডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে হাবিব ডাক্তারের সঙ্গে একটা বোরখাপরা মেয়েকে কথা বলতে দেখে মনে করেছিল, হয়তো কোনো পরিচিত রুগী টুগী হবে। একটু পরে সেখানে নাদের আলি এলে হাবিব ডাক্তার তার হাতে একটা চিঠির খাম দিয়ে তাকে ও বোরখাপরা মেয়েটাকে ঢাকার বাসে তুলে দিলেন। জাফর মনে করেছিল, বোরখাপরা মেয়েটা নাদের আলির ফুফু। আজ সন্ধ্যের আগে বাড়িতে এসে কথাটা আমাকে বলে। শুনে আমার ধারণা হল, বোরখাপরা মেয়েটাই আতিকা। নাদের আলির ফুফুতো ঘরেই আছে। আমার ধারণা যদি ঠিক হয়, তা হলে হাবিব ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলে সত্য মিথ্যা জানা যাবে। তাই তাড়াতাড়ি আপনাকে খবরটা দিতে এলাম।

মুশতাক বিশ্বাস রসুর কথা অবিশ্বাস করতে পারলেন না। ভাবলেন, সেদিন নাদের আলির সঙ্গে আতিকার বিয়ে দেয়ার জন্য যখন হাবিব ডাক্তার অনেক কথা বলেছে তখন সেই নিশ্চয় ওদেরকে পালাবার যুক্তি দিয়েছে। পারভেজকে ডেকে রসুর কথা বলে বললেন, আমাদের ধারণাই ঠিক, নাদের আলি আতিকাকে নিয়ে ঢাকা পালিয়ে গেছে। আর হাবিব ডাক্তার ওদেরকে পালাবার যুক্তি দিয়েছে।

পারভেজ বলল, আমারও মনে হচ্ছে, হাবিব ডাক্তারের পরামর্শ মতো ওরা ঢাকা চলে গেছে। কালকে তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেই সবকিছু জানা যাবে।

মুশতাক বিশ্বাস বললেন, হ্যাঁ, তাই করতে হবে। তারপর রসুকে বললেন, কাল বেলা দু’টোর দিকে কার্পাসডাঙ্গা গিয়ে হাবিব ডাক্তারকে আমার অসুখের কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে আসবে। এখন তুমি যাও।

রসু চলে যাওয়ার পর পারভেজকে বললেন, চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মুরব্বীদের বিকেল চারটের সময় আসতে বলবে। আর আজরাফ মাস্টার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরেছে কিনা খোঁজ নেবে। ফিরে থাকলে তাকেও আসতে বলবে।

তুমি শুনেছ কিনা জানি না, পশ্চিমপাড়ার হাশেম আলির বিধবা মেয়ে যীনাতের সঙ্গে হাবিব ডাক্তারকে জড়িয়ে গ্রামে কুৎসা রটেছে। দু’তিন দিন আগে কয়েকজন এসে সে কথা জানিয়ে বিচার বসাতে বলে গেছে। কাল দু’টো বিচার একসঙ্গে হবে।

আতিকার ব্যাপারটা পারভেজ বিশ্বাস করলেও যীনাতের ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারল না। অবাক কণ্ঠে বলল, হাবিব ডাক্তার এরকম কাজ করতে পারেন না। হয়তো তার কোনো দুশমন তাকে হেয় করার জন্য মিথ্যে কুৎসা রটাবার ব্যবস্থা করেছে।

মুশতাক বিশ্বাস রেগে উঠে বললেন, আর সে যে তোমার বোনকে নিয়ে নাদের আলির পালাবার সুযোগ করে দিল, সেটাও কী বিশ্বাস কর না?

তা করব না কেন? কিন্তু হাবিব ডাক্তারের নামে যে কুৎসা….। তাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে মুশতাক বিশ্বাস বললেন, তুমি বিশ্বাস করলেও আমি করি না। কাল দু’টো ব্যাপারের বিচার করবই।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত