লাভ ইউ টু

লাভ ইউ টু

-“কিরে ঘুমাস নাই?”
“না,ব্যাগ গুছাচ্ছি।”
-“কালই যাবি সিলেটে?” “হ্যাঁ,প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল বাসায় যাইনা..মন টানছে খুব..”
-“কে কে যাচ্ছে তোর সাথে?” “কেউনা আমি একাই।”
-“আবার? তোকে না বলছি,একা যাবিনা..ক্লাসমেট না পেলে সিনিওর/জুনিওর যাকে পাস,তার লেজ ধরে রওনা হয়ে যাবি “হ্যাঁ,সবাই তো বসে আছে আমার সাথে যাওয়ার জন্য!আরে..কোন প্রবলেম হয়না আমার,একা জার্নি করতে।”

-“হুমমম” “কি হুমমম?”
-“সন্ধ্যা হয়ে যাবে কিন্তু পৌঁছতে পৌঁছতে”

“আমি কি নতুন যাচ্ছি নাকি রে বাবা!এই গার্জিয়ান গিরি বন্ধ করতো।দিনের বেলা,একা একটা মেয়ে জার্নি করতে পারবেনা?..অদ্ভুত সব কথাবার্তা!”

-“মানলাম।যা..কিন্তু আমাকেও নিয়ে যা না..বাসায় যেতে ইচ্ছা করতেছে।খুব “আচ্ছা?!পরশু থেকে কার না জানি পরীক্ষা?!”
-“আমার.. ”

“আবেদ,লক্ষ্মী ছেলে না তুই!পরীক্ষা শেষ হোক,তারপর যাইস।আরে থাকিস তো ঢাকায়,চট করে চলে যাবি।আমিই না যাব কুমিল্লা থেকে,পচা বাসে কষ্ট-মষ্ট করে।তবে..সিলেট গিয়ে তোদের বাসায় একবার যাবই যাব।আন্টির হাতের মজার মজার সব রান্না..কতদিন খাইনা!”

-“কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছিস,না?” “বাহ!বুদ্ধি হইছে তো..সব বুঝে ফেলিস!! উঠিরে..তোর সাথে আজকের বোরিং চ্যাটিংএর এখানেই সমাপ্তি!অনেক কাজ বাকি এখনো।”

-“এখনই উঠবি?” “হ্যাঁ।ঘুমা তুই এখন..আর আমিও কাজগুলো সব শেষ করি।”
-“আচ্ছা..গুডনাইট।”
“গুডনাইট।আর শোন..”
-“কি?” “মন খারাপ করিস না।ঈদের সময় যাবনে আমরা।একসাথে..ঠিক আছে?!”
-“ক..বে ঈদ!আর সে এখন থেকেই..যা ভাগ!”

“যাচ্ছিই তো!” হাসিমুখে চ্যাট শেষ করে উঠলো নুসরাত।রাত দেড়টা বাজে।তাড়াতাড়ি করে ব্যাগ গুছাতে হবে।তারপর অ্যাটলিস্ট ৪/৫ ঘণ্টার একটা ঘুম। সকাল সকাল বেরুতেও তো হবে চেনা গানের কলি গুনগুন করতে করতে হাত চালায় নুসরাত বাড়ি ভর্তি মানুষ গিজগিজ করছে।ব্যস্ত সবাই,চারদিকে হাঁকডাক..কেউ একজন ডাকল যেন,

-“আবেদ,বাবা একটু শুনে যাওতো..”নুসরাতের মা।ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল আবেদ।
-“জী চাচি?”

“একটু বাজারে যাও না বাবা..বাবুর্চি বলছে,আরও কি কি যেন লাগবে।লিস্ট নিয়ে ঘুরতেছি,মানুষ পাচ্ছিনা।তুমি কি যাবা একটু?” “হ্যাঁ চাচি,এক্ষুনি যাচ্ছি ” হন্তদন্ত হয়ে রওনা হল আবেদ। যাওয়ার পথে কুড়িয়ে নিল আরও ডজন খানেক দায়িত্ব..নুসরাতের খালাকে পার্লারে নামায়ে দিয়ে আসতে হবে..শেষ মুহূর্তে কিছু গেস্ট আসবে,উনাদের রিসিভ করতে হবে..নুসরাতের পুচকা ভাই দীপ্তর জুতা একসাইজ বড় হয়ে গেছে,বদলায়ে আনতে হবে!..সকাল থেকে ঘ্যানঘ্যান করেই যাচ্ছে সে-“অ্যাঁ..আপুর বিয়েতে অন্য জুতা পড়বনা আমি..আমার জুতা ঠিক করে দাও তোমরা..না না,এখনি ঠিক করে দাও ফ্যামিলির প্রথম বিয়ে..আজ নুসরাতের বিয়ে। এত তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিক হয়ে গেল..কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিয়ে বাড়ির হাজারো ঝামেলা।তারি ফাঁকে,নানা কাজে গলদঘর্ম আবেদ..খুঁজছে নুসরাতকে..খুব দরকার ওকে ওর এখন..কিন্তু,মহারাণী গেলটা কোথায়?!

-“এই দীপ্ত,তোর বোন কইরে?”
-“আপু?আছে তো কই জানি।ও আবেদ ভাইয়া..তুমি আমার জুতা ঠিক করে দাওনা,আজকে আমি স্যান্ডেল পরবনা কিন্তু!”আবার শুরু হল ঘ্যানঘ্যান..
-“চল চল এক্ষুনি বদলায়ে আনব..”

এদিক সেদিক তাকাতে তাকাতে বেরিয়ে পরল আবেদ।কোথায় নুসরাত?!সকাল থেকে খুঁজছে..জরুরি কিছু কথা ছিল ওর সাথে..এদিকে ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছে..কোন মানে হয়?বিয়ের আগেই এই অবস্থা,আর বিয়ের পরে তো..কি আশ্চর্য!আবেদের এখনো বিশ্বাসই হচ্ছেনা..এত তাড়াতাড়ি বিয়ে ঠিক হয়ে গেল নুসরাতের?! যাবতীয় কাজ কর্ম শেষ করে,পরিশ্রান্ত আবেদ..বিয়ে বাড়িতে।ঘামছে..প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছে..ভেবেছিল,আরও কটা বছর সময় পাবে।স্টাবলিশড হবে..তারপর একদিন দাঁড়াবে নুসরাতের সামনে।বলেই ফেলবে।বহুদিন ধরে বলতে চাওয়া কথাগুলো..কিন্তু আর মাত্র কয়েকঘণ্টা।আজ সন্ধ্যা-রাতেই বিয়ে হয়ে যাবে নুসরাতের উদ্ভ্রান্তের মত খুঁজছে ও..নুসরাতকে..সময় বড় কম..একটা বারও কি বলতে পারবেনা?পালপিটিশন হচ্ছে রীতিমত..কোথায় হারিয়ে গেল পাগলীটা? জানেনা??কত কাল ধরে..আবেদ চেয়েছিল কিছু বলতে?আজ পারবে কি..এই শেষ মুহূর্তে এসে??

সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে..খুউব তাড়াতাড়ি ধড়মড় করে জেগে উঠলো আবেদ।ঘড়িতে এখন ৪টা।নুসরাতের সাথে চ্যাটিং শেষ করে ঘুমিয়ে ছিল প্রায় আড়াইটা বাজে।এরই মধ্যে দেখল স্বপ্নটা..বিছানা ভিজে গেছে ঘামে।পরপর ২গ্লাস পানি খেল আবেদ..কেমন যেন পাগল পাগল লাগছে।আবার কোথায় যেন অদ্ভুত একটাস্বস্তি..নাহ..শুধু স্বপ্নই তো ছিল ব্যাপারটা..কি করবে?নুসরাতকে ফোন করবে?আরে ধ্যুত!নিজের মনেই হাসল আবেদ।সত্যি সত্যি কি আর নুসরাতের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে নাকি?!কিন্তু পরক্ষনেই মনে হল..যদি হয়ে যায়?যদি..যদি সে সত্যিই কোনদিন বলতে না পারে ওকে?? না।আজ বলবে,যেভাবেই হোক..ভোরের বাসেই কুমিল্লা রওনা হয়ে যাবে।নুসরাত বেরিয়ে পরার আগেই পৌঁছতে হবে ওকে ট্রলি ব্যাগটা ঠেলতে ঠেলতে হোস্টেল গেটে এসে দাঁড়াল নুসরাত।একটা ট্যাক্সি খুঁজছে।তাড়া নেই অবশ্য..হাতে সময় নিয়েই বেরিয়েছে।১১টার বাস ইজিলি ধরা যাবে।আরে..রিক্সা থেকে কে নামলো এইটা?আবেদ না?

-“এই তুই কোত্থেকে?” “আসলাম”..আবেদের নির্লিপ্ত উত্তর।তাড়াহুড় া করে এসেছে বোঝাই যাচ্ছে।কুঁচকানো শার্ট,চোখের কোনে কালি..
-“কিরে রাতে ঘুমাস নাই?” “নাহ ভোরের বাস ধরতে হল..”
-“সেটাই তো,কেন আসছিস?” “সিলেট যাব।”
-“তো তুই ঢাকা থেকে চলে যেতি..গাধার মত কুমিল্লা আসার মানে কি?” “মানে আমি তোর সাথে যাব।”

-“কি মুশকিল!মা বলছে নাকি কিছু?যে আমার বডি গার্ড হয়ে আমাকে বাসায় পৌঁছে দিতে হবে!” “আরে না না আমার একটা দায়িত্ব আছে না?” বোকার মত একগাল হেসে ঝপাং করে নুসরাতের ট্রলি ব্যাগটা হাতে তুলে নেয় আবেদ!

-“হইছে হইছে এটা রাখ।আরেক জনকে দিয়ে বহন করাতে হবে এমন ভারী কিছু নেইনাই আমি।আর,এটা ঠেলেও নেয়া যায়!”ফিক করে হেসে দিল নুসরাত। “চল চল তোর দেরি হয়ে যাচ্ছে।”আবেদ তাগাদা দিল। কি হল আজকে আবেদের?নুসরাত যথার্থই অবাক।মুখে শুধু বলল,”হ্যাঁ চল।আচ্ছা দাঁড়া দাঁড়া..নাস্তা করছিস তুই?” “হালকা একটু করছি..পরে আবার করে নিবনে,বাস যেখানে থামবে।”

-“আচ্ছা চল।” একটাই টিকেট বাকি ছিল,নুসরাতের পাশেরটা।আবেদ বিশ্বজয়ীর হাসি দিল!”দেখলি তোর পাশের সিটটাই পেয়ে গেলাম।”

-“হ্যাঁ এখন পুরা রাস্তা আমার কান ঝালাপালা করবি আরকি।” তোকে একটা কথা বলার জন্যই এমন হঠাৎ করে ছুটে আসছি নুসরাত..জানিনা তুই কিভাবে রিএক্ট করবি।হয়তো,এরপর বাকি রাস্তাটা দুজনেই চুপ করে থাকব নিজের মনে ভাবছিল আবেদ..

-“কিরে কি চিন্তা করিস?”নুসরাত ফিরে তাকাল অন্যমনস্ক আবেদের দিকে। “না,কিচ্ছু না।” বাসে উঠে আরেক বিপত্তি।সুপারভা ইজার বিনয়ে বিগলিত হয়ে নুসরাতকে বলল,”ইয়ে আপা..বাসে একজন মহিলা যাচ্ছে..একা।তার পাশের সিটে একজন পুরুষ।উনি চাচ্ছিল যদি কোন মহিলার পাশে বসা যায়।আপনার টিকেট তো আগে একটাই বুকিং দেয়া ছিল..আপনি বললে উনাকে আপনার পাশে বসায়ে দেই?” এক মুহূর্ত ভাবল নুসরাত।তারপর বলল-“হ্যাঁ হ্যাঁ সমস্যা নাই।” কনুই দিয়ে গুতা মারল আবেদকে।-“এই আবেদ,তুই ওই ভদ্রমহিলার সিটে গিয়ে বস।উনি একা যাচ্ছে,আমার পাশে বসবে।”

“অ্যাঁ..কি বলিস?!”ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল আবেদ।কতকিছু ভেবে এসেছিল..একসাথে গল্প করতে করতে অনেক কথার ফাঁকে..কোন এক সময় বলেই ফেলবে সেই কথাগুলো..আর কি হচ্ছে এসব!অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে গেল সে।বসল নুসরাতের ঠিক সামনের সিটে,জানলার পাশটায়।আর নুসরাতের পাশে এসে বসল বোরখা পরা এক তরুণী।
কতক্ষন রাস্তা-টাস্তা দেখে আর নিজের ভাগ্যকে বকাঝকা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পরল আবেদ।একে তো রাতে ঘুমায়নি,তার উপর জার্নি করে এসেছে..ভীষণ টায়ার্ড ছিল ও।বাসের দুলুনিতে,জানলার গ্রিলে বারবার বাড়ি খাচ্ছিল আবেদের মাথা দেখ ভোম্বলদাস ঘুমাচ্ছে যে..বিড়বিড় করল নুসরাত।

-“এই গাধা,সোজা হয়ে ঘুমা।”

“উউউ”..ঘুমের ঘোরে কিছু একটা বলে মাথা সোজা করল আবেদ।পাঁচ মিনিট পরই আবার আগের অবস্থা!
নুসরাত গান শুনছিল হেডফোনে।কিন্তু মনোযোগ চলে যাচ্ছে বারবার আবেদের দিকে।যেকোনো সময় একটা ভালরকম ব্যথা পাবে..হঠাৎ বাসটা ঝাঁকি খেল জোরে।আর আবেদের মাথাটা গ্রিলের মধ্যে শক্ত বাড়ি খেতে গিয়েও..খেলোনা। মুহূর্তের মধ্যে গ্রিল চেপে ধরেছে নুসরাত..পেছন থেকে।এবার নুসরাতের হাতের উপর মাথা রেখেই আরামসে ঘুমাতে লাগলো আবেদ!

-আবার নাকও ডাকে..হাত ব্যথা করে ছাড়বে আজকে! আপন মনে হাসল নুসরাত। বহুক্ষন পর ঘুম ভাঙল আবেদের।ভীষণ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল “কিরে,তুই গ্রিলে হাত দিয়ে রাখছিস কেন?”

-“সখ করে!” “কি?”ঘুমঘুম চোখে আবেদের প্রশ্ন।

-“ওরে,কতবার বললাম সোজা হয়ে ঘুমা।কে শোনে কার কথা..তাই বাধ্য হয়ে তিন ঘণ্টার উপর গ্রিল ধরে বসে আছি।
“সরি,আমি আসলে..”আবেদের কথা শেষ হওয়ার আগেই ব্রেক কষল বাসটা। যাত্রা বিরতি-২০ মিনিট। গপগপ করে পরোটা আর মুরগী ঝালফ্রাই খাচ্ছিল আবেদ।

-“মরিচ খেতে পারেনা..নিয়েছে ঝাল ফ্রাই।”বলে ওঠে নুসরাত.. “আসলেই অনেক ঝাল।তুই আবার এক্সট্রা মরিচ খাচ্ছিস নুসরাত?”

-“হ্যা।আমি সব পারি।” “আচ্ছা?!আমার প্লেটের সাইডে রাখা মরিচগুলাও খেতে পারবি?”
-“নিশ্চয়ই..” “যা,গুল মারিস না।”
-“দে না..” “ওকে,ট্রাই কর।কষ্ট হলে খাইসনা কিন্তু।পরে আবার রাস্তা ঘাটে..!”
-“যা যা..খালি ফালতু বকর বকর।” ফ্রেশ হয়ে,বিল চুকিয়ে পাঁচ মিনিট পর ফিরল আবেদ। “এই নুসরাত তুই কাঁদতেছিস কেন?”
-“ঝালরে ঝাল..”
-“সবগুলা মরিচ খাইছিস?”
-“হ্যাঁ।”
-“অ্যাঁ?..সবগুলা?”
-“হ্যাঁ তো..”
-“কেন??পাগলামির একটা লিমিট থাকে..”
-“আরে,তুই দিছিস না..তোর প্লেট থেকে..”
-“মানে?”

-“চল চল এত মানে বুঝতে হবেনা।”নাকের পানি,চোখের পানি মুছে নিয়ে হাসতে হাসতে টেবিল ছাড়ে নুসরাত।
-“আর শোন,পুরা বিল তুই দিবিনা।আমার টাকাটা আমি দিয়ে দিব।” “কেন?একটাদিন আমি খাওয়াতে পারিনা?”
-“ইনকাম করিস কিছু?যখন করবি শুধু তোর পয়সায় খাব..খুশি?” “পুরাই পাগল একটা তুই!” কুমিল্লা- সিলেট..সাড়ে ৬ ঘণ্টা,দেখতে দেখতে চলে গেল।পরের দিকে আর ঘুমায়নি আবেদ। আজকেও বলা হলনা কথাগুলো..কয়েকবার পেছন ফিরে দেখেছে নুসরাতকে..আমতা আমতা করেছে..

-“কিরে কিছু বলবি?” “নাহ!এভাবে কি আর..”
-“কি??শোনা যাচ্ছেনা,জোরে বল এবারে গলা ফাটিয়ে বলল আবেদ,”এভাবে সামনে পিছনে বসে চিৎকার করে করে কি কথা বলা যায়?”

-“ও আচ্ছা..”নির্বিকার নুসরাত।আবার গান শোনায় মন দিল।চোখ বন্ধ,ঠোঁটের কোনায় হাসি..
ধুর শালা!স্বপ্নটাই সত্যি হবে এবার।বিমর্ষ আবেদের চোখ ঢলে পরা সূর্যটায়।আচ্ছা,কখনোই কি বলা হবেনা নুসরাতকে “শেষ বিকেলের আলো মুখে এসে পড়লে কেমন অদ্ভুত সুন্দর লাগে তোকে..জানিস সেটা?” অবশ্য বললেও কি..ফাজলামি করেই উড়িয়ে দেবে দীর্ঘশ্বাস কেটে এগিয়ে যায় বাস।গন্তব্যের পথে.. বাসস্টেশন।সিলেট। “চল নুসরাত,তোকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে তারপর আমি বাসায় যাব।”

-“পাগলের মত যে আসলি..পরশু তোর পরীক্ষাটা কে দিবে?” “কালকেই চলে যাব।”
-“তাইলে আসছিলি কেন?”
“এমনি..”মাটির দিকে তাকিয়ে কথা বলে আবেদ।
-“দাঁড়া আসতেছি।” পাঁচ মিনিট পর ফিরে আসে নুসরাত।আবেদের পকেটে টিকেট গুঁজে দেয়। “কিসের টিকেট এইটা?”
-“ঢাকা ব্যাক করার।আধা ঘণ্টার মধ্যে একটা বাস আছে,আজকে রাতেই ব্যাক করবি।পাগলামি বহুত করছিস..আমার বডি গার্ডও সাজছিস!শান্তি হইছে??এখন হোস্টেলে যা..পড়াশোনা কর।” “চলে যাব?”

-“হ্যাঁ।সেটাই ভাল।ঘুমাতে ঘুমাতে চলে যাবি ভেতরের দিকের সিট এইটা।তোর পাশে যে বসবে,তার ঘাড়ে মাথা দিয়ে ঘুমাইস..গ্রিলে মাথা ভাঙতে যাইসনা আবার!আমি গেলাম আবেদের চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে,একটা রিক্সা নিল নুসরাত।

আবেদ আর কি করবে..বাসে বসেই অপেক্ষা করবে ঠিক করল।সিট নাম্বারটা জানি কত?পকেট হাতড়ে টিকেটটা বের করতেই ছোট্ট একটা চিরকুট পরল মাটিতে..তুলল আবেদ। তাতে লেখা- “আবেদ, তোর পাগলামি..ব্যাখ্যাহীন সব কার্যকলাপ..হঠাৎ দিশেহারা হয়ে যাওয়া..সব বুঝি আমি।আমি জানি রে বুদ্ধু,তুই কি বলতে চাস..তবু মজা লাগে তোকে জ্বালাতে..চিন্ত া করিস না,বাকি জীবনটাও ঠিক এভাবেই জ্বালাবো..আমার বুদ্ধুরামকে!ঠিকমতো যাস।ফিরে কল দিস..আর..আরেকদিনের সিলেট-কুমিল্লা জার্নির জন্য ওয়েট করতে পারবনা! তাই বলেই ফেলি..লাভ ইউ টু!!-নুসরাত”

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত