মুটকি

সে আমার কোন কথাই মানতে রাজি না। যেদিন আমাদের প্রথম দেখা সেদিনই আমাদের বিয়ে।বেচারা মায়ার জালে আটকে গিয়ে বিয়েটা করেই ফেল্লো আমায়।কিন্তু আমি ওকে বলেছিলাম,এখনো সময় আছে পালিয়ে গেলে যেতে পারেন। তার কথা,তোমার মন কে ভালবেসেছি দেহকে নয়। ওকে ফাইন জামাই নিয়ে বাসায় উঠলাম।

ওমায়ায়া, আম্মু তো দেখছি মহা খুশি।এত সুন্দর জামাই পেয়ে।কত দোয়া করলো আম্মু আব্বু। সবাই রান্না বান্না করে খাইয়ে বিদায় জানালো।বর আমার মহা খুশি এত ভালো শশুড় শাশুড়ি পেয়ে। শশুড় বাড়ী গিয়ে উঠলাম, প্রতিবেশী সবাই বলতে লাগলো, এত সুন্দর ছেলেটা একটা জলহস্তী বিয়ে করে নিয়ে আসছে। কথা টা একদম গায়ে লাগাইনি। খাইলে এখন থেকে আমার বরের টা খাবো।কার বাপের কি?

শাশুড়ি মা আমাকে পেয়ে ভীষণ খুশি। খুশি হবেই না বা কেন। উনার পরিবারে কেউ কি আছে নাকি এত সুন্দর সাস্থ্যের, সবাই চিকনা।আমার অর্ধেক।দেখেই বোঝা যাচ্ছে,তারা অনেক চেষ্টা করেও মোটা হতে পারেনা।তাই সে আমাকে দেখে খুশিতে আত্মহারা। বর আমার আদর করে নাম দিলো গলুমলু বউ। অনেক সুখে আছি আমি আমার স্বামী সংসার নিয়ে। হঠাৎ একদিন টিভিতে দেখলাম বর বউকে কোলে নিয়ে সারা বাড়ী ঘুরছে। ইচ্ছেটা আমার মনেও খপ করে বসে পড়লো। মৃন্ময় বাসায় আসার পর বললাম, জান, আমাকে একটু কোলে নাও তো। আমি তোমার কোলে উঠে সারা বাড়ী ঘুরবো। বর আমার ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে।

-কি হলো?নিবেনা কোলে?
-সোনারে, নিচ্ছি নিচ্ছি।

আমার সোনা বর আমাকে কোলে নিতে গিয়ে ঠাস করে পড়ে গেলো মেঝেতে।আর আমি পড়লাম ওর উপরে।
সাথে সাথে সে অজ্ঞান। ডাক্তার বলেছে,এক্টুর জন্য বেঁচে গেছে। আর সেই দিনই আমি পণ করলাম আমি শুকাবো।ডায়েটকন্ট্রোল করবো। আমার বরের কোলে উঠে সারাবাড়ী ঘুরার জন্য হলেও আমি মুটকি থেকে শুটকি হবো।আমার এত সাধের ইচ্ছে আমি অপূর্ণ রেখে মরতেও চাইনা।