টেলিফোনের ওপাশে

টেলিফোনের ওপাশে

: হ্যালো।
: হ্যাঁ হ্যালো।
: এখনো জেগে আছেন যে?
: বই পড়ছিলাম।
: রাত দুটো বেজে ৩৭ মিনিট। এখনো বই পড়ছেন?
: হুম।
: কি বই?
: এই তো গল্পের বই। হুমায়ূন আহমেদ এর।
: নাম কি?

: নন্দিত নরকে।
: এই বই আগে পড়েন নি?
: পড়েছি। আবারো পড়ছি। ভাল লাগে।
: মন্টুর জন্য আমার খুব খারাপ লাগে।
: হুম।
: কি হলো বিরক্ত করলাম।
: না তা নয়… মানে। হ্যাঁ! কিছুটা।
: ও রেখে দিবো?
: যদি আপনার আপত্তি না থাকে…

কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে ফোনটা রেখে দিলো সামান্তা। পল্লব ইদানিং রাত জেগে গল্পের বই পড়ে। পড়ার সময় কেউ ফোন দিলেই বিরক্ত হয়ে যায়। ভার্সিটিতে ভ্যাকেশন চলছে। একটু অবসর জীবনে বই ই একমাত্র বিনোদন। একটু পরে সামান্তার আবারো ফোন।

: হ্যালো।
: আচ্ছা আপনি কেমন মানুষ বলুন তো। এতো রাতে একটা মেয়ে আপনায় ফোন দিচ্ছে একটু ভাল করে কথা বললে কি হয়?
: খারাপ করেই বা কখন কথা বললাম!
: আরে আমি সেটা বলিনি তো। বলছি ১০ টা মিনিট কি আমার সাথে কথা বললে আপনার খুব ক্ষতি হয়ে যায়।
: না তা নয়। মানে বই পড়ার আমেজটা কেটে যায়…
: আচ্ছা ঠিক আছে বই পড়েন। রাখছি।

আবার খট করে ফোনটা রেখে দিলো সামান্তা। পড়ার মুডটাই নষ্ট করে দিলো মেয়েটা। বারান্দায় গিয়ে একটা সিগারেট ধরালো পল্লব। রাতের এই নিস্তদ্ধতা ভীষণ ভাল লাগে ওর। হালকা ঠান্ডা বাতাস। বাতাসের গায়ে রাতের কেমন যেন একটা গন্ধ পাওয়া যায়। আকাশের নক্ষত্র গুলো কোটি কোটি বছর ধরে জ্বলেই যাচ্ছে। গাছের পাতায় সোডিয়াম আলোর বন্যা। গাছের ছায়া পড়েছে রাস্তায়। দুই একটা কুকুর সাহেবি ভঙ্গিতে হেলে দুলে যাচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে এলাকাটা ঘুরে ফিরে দেখছে কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না তো।

হঠাৎ পল্লবের চিন্তার সুতো কেটে দিলো টেলিফোনের শব্দ। থাক বাজুক। ঐ মেয়ের সাথে এতো রাতে কে ঝগড়া করতে যাবে। গত কয়েকদিন ধরে এই মেয়ের জ্বালানির মাত্রা বেড়ে গেছে। কিন্তু একমাস পরেই ওরা এই বাসা ছেড়ে চলে যাবে তাই তেমন বলেও না কিছুই। আর তাছাড়া পল্লবের ছোট বোন মুমুর সাথে বেশ ভাব। এক নাগারে বেজেই চলছে টেলিফোন। ভাজ্ঞিস রিংগারটা কমানো। না হলে বাসার সবার ঘুম ভেংগে যেতো। ৩ রুমের ছোট একটা বাসা। এক রুমে বাবা মা থাকে। অন্য রুমটা মুমুর জন্য। পল্লব বসার রুমেই সোফার পাশে একটা খাটে থাকে। নতুন বাসায় গেলে নিজের একটা রুম পাবে পল্লব। সিগারেট শেষ করে রুমে এলো। টেলিফোন বেজেই চলছে।

: হ্যালো।
: হ্যাঁ বলুন।
: এতোক্ষন কোথায় ছিলেন? এতোবার রিং দিলাম।
: এই তো ছিলাম।
: আচ্ছা বাদ দেন। মুমু আপনায় কিছু দিয়েছে?
: হুম।
: হুম মানে কি। পছন্দ হয়েছে?
: হুম।
: আবার হুম। গায়ে দিয়ে দেখেছেন ফতুয়াটা হয় কিনা?
: না।

: না কেন। এখনই গায়ে দিয়ে দেখেন ঠিক আছে কিনা।
: ফতুয়া তো মুমুর ঘরে।
: তো কি। যান নিয়ে এসে পড়ে দেখেন।
: এতো রাতে…
: আহা যান না।
: পারবো না।
: আপনি মানুষটা এমন কেনো?
: কেমন?
: জানিনা। আচ্ছা রাখছি আর ডিস্টার্ব করবো না।
: আচ্ছা ঠিক আছে।

এবার অন্যপাশ থেকে কিছু বলার আগে পল্লবই ফোন রেখে দিলো। বই পড়ার আমেজটা কেটে গেছে। নন্দিত নরকে বইটা এমন যে একটানা না পড়লে তৃপ্তি মেটে না। এই জন্যই রাতে বই পড়া শুরু করেছিলো যেন মনযোগে চিড় না ধরে। কিন্তু ঐ মেয়ে ঠিকই বই পড়ার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। মেয়েটাকে ঝারি দিতে ইচ্ছে করলেও দিতে পারে না। পাশের বাসায় থাকে। দুই পরিবারের সাথেই বেশ ভাল একটা সম্পর্ক। মেয়েটাকে বকা দিলে আবার মাকে বলে দেয় কিনা এটা ভেবে আর কিছুই বলেনা। আর তাছাড়া ১ মাস পরে তো ওরা এই বাসা ছেড়ে চলেই যাচ্ছে। লাইট টা নিভিয়ে শুয়ে গেল পল্লব।

পল্লবের মনে পরে গেল সেই প্রথম দিনের কথা। বছর তিনেক আগে যখন ওরা এই বাসায় উঠলো সেদিন সামান্তারা ওদের অনেক সাহায্য করেছিলো। দুপুরে খাইয়েছিলো। সেই প্রথম দিন থেকেই সামান্তার চোখে মুখে কিছু একটার আভা দেখতে পেয়েছিলো। কিন্তু পাত্তা দেয়নি। মেয়েটা ভাল। অনেক গুণবতীও। দারুন গানের গলা। শুধু একটাই সমস্যা পল্লবকে জ্বালায় খুব। বয়সেও এক বছরের বড়। আবার টেলিফোন বেজে উঠলো।

: জি বলুন।
: কি করে বুঝলেন যে আমিই ফোন দিয়েছি?
: এতো রাতে আপনি ছাড়া আমার আর কোন শুভাকাঙ্ক্ষী নেই।
: হি হি হি! এতোদিনে বুঝলেন।
: না বুঝেছি অনেক আগেই। এখন টের পাচ্ছি। এই আর কি।
: মানে? কি টের পাচ্ছেন?
: না কিছু না।
: যাক বাদ দেন। আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
: কি?
: আপনার বালিশের নিচে তোষেকের নিচে দেখেন।
: কি?
: আহা দেখেন ই না। পল্লব তোষকের নিচে হাতড়ে একটা খাম বের করলো। ঘর অন্ধকার। তাই বুঝতে পারছে না কিসের খাম।

: হ্যালো এটা কিসের খাম?
: একটা মেয়ে একটা ছেলেকে খামে করে কি দিতে পারে। পল্লব মোটামুটি বিরক্ত হচ্ছে মনে মনে। মেয়েটা তো এতো ন্যাকা কখনো ছিলো না। কিন্তু দিন দিন এমন ন্যাকামি শুরু করেছে কেন।

: খামটা আমার বালিশের নিচেই বা এলো কি করে।
: হি হি হি! আপনি সন্ধ্যায় যখন বাইরে হাঁটতে গিয়েছিলেন তখনই আপনাদের বাসায় গিয়ে লুকিয়ে রেখে এসেছিলাম।

: কি আছে খামে?
: আরেকটা জিনিষ আছে আপনার জন্য।
: আবার কি?
: আপনার বুক সেলফের শার্লক হোমস বইটা হাতে নিলেই দেখতে পাবেন। শুধু বক্স কাভারটাই আছে। ভিতরে কিন্তু বই নেই।

: তাহলে কি আছে?
: আপনার পছন্দের ডেইরী মিল্ক চকলেট। আপনায় খামে করে একটা চিঠি দিয়েছি। চিঠি পড়ে যেন মুখ তেতো হয়ে না যায় এই জন্যই চকলেট দিয়েছি। আর তাছাড়া শুভ কাজে মুখ মিঠা করতে হয়।

: শুভ কাজ মানে?
: মানে আপনার বোঝা লাগবে না। শুনেন আপনি চিঠি পড়েন আমি রাখছি।
: রেখে কি করবেন। একটু পরে তো আবারো ফোন দিবেন।
: না আর দিবো না। বেশি রাত জাগলে চেহারা নষ্ট হয়ে যায়। সাজুগুজু যতোই করি রাত জাগার ক্লান্তি ঢাকা যায় না।
: আচ্ছা ঠিক আছে শুভ রাত্রি।
: আচ্ছা আপনি কেমন মানুষ এই দিনে কেউ শুভ রাত্রি বলেই ফোন রেখে দেয়।
: তাহলে কি বলতে হয়?
: বলুন, সামান্তা তোমায় ফাগুনের শুভেচ্ছা।

এই কথা শুনেই ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো পল্লব। কেউ জেগে যেতে পারে চিন্তা করে মুখে হাত চাপা দিলো। হঠাৎ কেন যে হাসি চলে এলো বুঝতে পারলো না। সামান্তার মনে হলো এতো প্রাণ খুলে যেই মানুষটা হাসতে পারে তাকে যদি এক জীবনের জন্য বাঁধতে না পারে কি থাকলো আর বেঁচে থাকার মাঝে।

: দুঃখিত! হঠাৎ হাসি চলে আসছিলো।
: দুঃখিত বলবেন না তো। আমার তো ভালোই লাগছিলো।
: তাই?
: হুম। অনেক ভাল লাগে আপনার হাসিটা।
: বেশি ভাল লাগা ভাল নয়।
: এতো ভাল খারাপের হিসেব কে করতে যাবে। এখন যা বলতে বলেছি তাই বলুন।
: কি বলবো?
: আরে বাবা! আমাকে ফাগুনের শুভেচ্ছা দিয়ে ঘুমুতে যান।
: ফাগুনের শুভেচ্ছা আপনাকে। শুভরাত্রি।
: একেবারে মুখস্ত ঝেরে দিলেন। একটু সুন্দর করে বলেন না- তোমাকে ফাগুনের শুভেচ্ছা সামান্তা।
: এতো ঢং করে বলার কি আছে বললামই তো।
: আপনি জানেন না মেয়েরা ঢং পছন্দ করে। এবার বলুন।
: মেয়েরা ঢং পছন্দ করে আমি তো করি না।
: এই যে এখন তো করছেন। এতোক্ষণ লাগে সামান্য ঐ কথাটা বলতে।
: সামান্তা…
: হ্যাঁ পল্লব। পল্লবের গলাটা হঠাৎ করে শুকিয়ে গেল। এভাবে নার্ভাস হয়ে যাচ্ছে বলে নিজের উপরই বিরক্ত লাগছে ওর।

: সামান্তা…
: হ্যাঁ পল্লব বলো!
: তোমায় ফাল্গুনের শুভেচ্ছা।

বলেই বুকের ভিতরে হাতুড়ির শব্দ পাচ্ছে পল্লব। তুমি শব্দটায় যে আলাদা কিছু একটা আছে টের পেল। বুকের ভিতরে সামান্তার নামটা যেন একবার প্রতিধ্বনি তুললো। ঠিক বুঝতে পারছে না পল্লব কি করা উচিৎ । সাথে সাথেই ফোনটা রেখে দিলো। হাতে ধরা খামটা দিয়ে বাতাস খেলো। চিঠিটা এখন পড়বে কিনা বুঝতে পারছে না। একটু ভেবেই অন্ধাকারেই সেন্টার টেবিল থেকে একটা ম্যাগাজিন হাতরে নিয়ে ম্যাগাজিনের ভিতরে খামটা রেখে দিলো। সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়া যাবে। বিছানায় শুয়ে এপাশা ওপাশ করছে। ঘুম আসি আসি করেও আসছে না। চোখের পাপড়ির উপরে ঘোরাঘুরি করে চলে যাচ্ছে। বারবার পল্লবের মনে হচ্ছে এই বুঝি আবার সামান্তা ফোন দিবে। কিন্তু সামান্তার আর ফোন আসেনা। এপাশ ওপাশ করতে করতেই কখন ঘুমিয়ে গেছে টের পায়নি।

যখন ওর পল্লবের ঘুম ভাঙলো চোখ মেলার আগেই নাকে একটা পারফিউমের ঘ্রাণ এলো। পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে সামান্তা সোফায় বসে আছে। ওর হাতে শার্লক হোমসের বই। সাথে সাথে মনে পরে গেল, সামান্তা কাল রাতে বলেছিলো বুক সেলফে শার্লক হোমসের বক্স কাভারের ভিতরে ডেইরী মিল্ক চকলেট আছে। সাথে সাথে আরো অনেক কিছুই মনে পরে গেল ওর। চিঠির কথা মনে উঠতেই সেন্টার টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখে সেখানে ম্যাগাজিন নেই। শুধু ম্যাগাজিন না কোন পত্রিকাই নেই। বুকটা ধক করে উঠলো ওর। দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সাড়ে বারোটা বাজে। পল্লব জোরে করে মুমুকে ডাকলো।

: মুমু বাসায় নেই। বলেই আবার বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে লাগলো সামান্তা। পল্লবের ডাক শুনে ওর মা ছুটে এলো।

: কি রে মুমু কে ডাকিস কেন? ও তো কলেজে গেছে।
: মা এইখানে ম্যাগাজিন ছিল না। কই গেছে?
: ম্যাগাজিন পত্রিকা সব তো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দিছি।
: কখন দিছো। কোন ফেরিওয়ালার কাছে। আমাকে ডাকো নাই কেন।
: তোরে ঘুম থেকে ডাকলেই তো চিল্লাচিল্লি করিস। আর যে মরার মতো ঘুমাইস বোমা মারলেও তো জাগিস না।
: কোন ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করছো?
: আমি কি চিনি নাকি না ঠিকানা নিয়া রাখছি। কতো ফেরিওয়ালাই তো আসে।

মা চলে গেল রান্না ঘরের দিকে। পল্লব অসহায়ের মতো বসে আছে। সামান্তা মাথা নিচু করে বইয়ের পৃষ্ঠা উলটে যাচ্ছে। একবার তাকাচ্ছেও না পল্লবের দিকে। পল্লবের মা রান্নাঘর থেকে সামান্তাকে ডাক দিলো তরকারীর লবণ ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য। সামান্তা চুপচাপ উঠে চলে গেল।

সামান্তার যাওয়ার সময় খেয়াল করলো বাসন্তি রঙয়ের শাড়িতে বেশ সুন্দর লাগছে ওকে। চুলের খোপায় গাদা ফুল। পল্লব উঠে বুক সেলফে গিয়ে শার্লক হোমসের বইয়ের বক্স কাভারটা নিতেই দেখতে পেল ৫ টা ডেইরী মিল্ক চকলেট। আর একটা ছোট্ট চিরকুট। চিরকুটে লিখা। ” না এখন চকলেট খাওয়া যাবে না পল্লব। আগে চিঠিটা পড়ো। আর যদি এর মধ্যে পড়ে ফেল তাহলে খেতে পারো।” পল্লব বুক সেলফে বাক্স কাভারটা তুলে রেখে আবার বিছানায় এসে বসলো। তখনই সামান্তা রান্নাঘর থেকে আসছিলো। আসতে আসতেই খোঁপা থেকে গাদা ফুলের মালাটা খুলে ফেলে। সোফায় গিয়ে বসেই মালা থেকে ফুল ছিঁড়ছে দু’হাত দিয়ে। আর শীতল চোখে তাকিয়ে ছিলো পল্লবের দিকে। পল্লব কি বলবে বুঝতে পারছে না। সামান্তা উঠে দাঁড়ালো।

: কোথায় যাচ্ছেন?
: বাসায়।
: কেন?
: কেন মানে? আশ্চর্য বাসায় যাবো না!

পল্লব কিছু বলার আগেই দরজার কাছে চলে গেল সামান্তা। দরজার লক খুলে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেল। পল্লব দরজার কাছে যেতেই সামান্তা আবার পল্লবের মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো।

: আমি আপনার জন্য সাড়ে ৩ ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম একটা জায়গায়।
: কোথায়?
: কোথায় মানে? আপনি চিঠি পড়েন নি?

সামান্তা আর কিছু না বলে হাতের মালাটা মেঝেতে ছুড়ে ফেলে ওদের বাসার কলিংবেল বাজালো। পল্লব দাঁড়িয়ে আছে। সামান্তার বাসার দরজা খুলতেই ও ভিতরে চলে গেল। পল্লব ওদের বাসার দরজা আটকে দিয়ে আবার বিছানায় এসে বসলো। সামান্তা কি লিখেছে চিঠিতে? সামান্তা সাড়ে ৩ ঘন্টা একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল ওর জন্য। একটা ফোন দিলো না কেন? কিছুই ভাবতে পারছে না। হাত মুখ ধুতে চলে গেল। দুপুরে খেয়ে সামান্তার দেওয়া ফতুয়াটা পরে বেড়িয়ে গেল বাইরে। ফিরলো রাত ৯ টার দিকে। বাসায় এসেই দেখে মুমুর মুখ গম্ভীর। সবার সামনে কিছু জিজ্ঞেস ও করা যাচ্ছে না। একটু সুযোগ হতেই জানতে চাইলো সামান্তার সাথে ওর কথা হয়েছে কিনা। মুমু কিছু বলল না। শুধু বলল, “ভাইয়া তুই একটা গাধা।”

বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে পল্লব। রাত এখন ৩ টা বেজে পনেরো। ঘুম আসছে না ওর। বারবার মনে হচ্ছে এউ বুঝি সামান্তার ফোন আসবে। বই পড়াতেও মন দিতে পারলো না। চোখ বারবার চলে যাচ্ছিলো টেলিফোনের দিকে। এখন দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। নিঝুম রাত। অন্য রাতের মতো আজ রাতে পল্লব কোন মুগ্ধতা খুঁজে পাচ্ছেনা। কেমন যেন বিষাদ লাগছে সব।

হঠাৎ টেলিফোনের রিং পল্লব ফোন ধরার আগেই কেটে গেল। পল্লব ভাবছে কেটে গেছে নাকি কেটে দিলো। এতো তাড়াতাড়ি তো রিং কাটার কথা না। একটা বই নিয়ে বসলো। ঘুম আসছে না। সারা রাত পার হয়ে গেল। সামান্তার ফোন এলো না। এরপরে সামান্তার ফোন আর কখনোই আসেনি। পল্লব এটাও জানতে পারলো না কোনদিন সামান্তা কি লিখেছিলো চিঠিতে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত