কালো টিপ

কালো টিপ

বেনু কখনো ভাবেনি আজ তিন বছর পর এসেও ওকে সাফায়েত ভাইয়ের মুখোমুখি ঠিক এভাবে হতে হবে। সময়টাও কত জলদি বদলে যায়।কিন্তু সেই টিপটা এখনও নানুর সেই যুগের ছোট্ট ড্রেসিং টেবিলের কাঁচের সাথে একইভাবে কতই না অযত্ন স্বত্বেও শক্ত করে লেগে আছে।কিছু কিছু জিনিস শুধুই স্মৃতিগুলো মনে করায় না সাথে মনের অব্যক্ত অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে দু’চোখ ভাসায়।তিন বছর আগে যখন সেবার সবাই নানু বাড়ি এসেছিলো তখন টিপটা আসলে কালো টিপটা আয়নার গেঁথে দিয়েছিলো।

সেদিন মামাতো বোন জয়ীর বিয়েতে সবাই খুব সেজেছিলো কিন্তু বেনু ছিলো পুরোপুরি আলাদা।এইসব সাজুগুজু ওর একদমই ভাল লাগতো না।কিন্তু তবুও সেদিন বিয়ের বাড়িতে সবার জোরাজোরিতে বেনু অনেক কষ্টে শাড়ী, কাজল আর একটা কালোটিপ পরেছিলো।সেদিন প্রথমবারের মতন সাফায়েত ভাই তার একটুখানি প্রশংসা করেছিলো।আর তাতেই বেনু এতটা খুশি হয়েছিলো যা বলার মতন না। সাফায়েত ভাইকে বরাবরই বেনুর খুব ভাল লাগতো হয়তো পরে ভালও বেসে ফেলেছিলো কিন্তু সেটা এক পাক্ষিক ছিলো বোধহয়।

সাফায়েত ভাই খুব সুন্দর করে ছবি আঁকতে পারতো। তার আঁকা ছবিগুলো মনে হত যেন জীবন্ত এক একটা ছবি।সাফায়েত ভাইয়ের কথা বলা, ঘাড় অবধি চুল,চোখের চশমা আর গালের উপরের তিল সবই যেন বেনুর ভাললাগা আরো দ্বিগুণ করে দিত।সেদিন বিয়ের বাড়িতে বেনু শাড়ী পাল্টিয়ে কাজল তুলছিলো চোখের আর তখন নানুর ঘরে সাফায়েত ভাই আর খালামণিও ছিলো।কিন্তু কালো টিপটা বেনু তখনি আয়নায় গেঁথে দেয়।তখন সাফায়েত ভাই বলেছিলো আয়নার কাঁচে না গেঁথে বরং পরে থাক।বেনু হেসে বলেছিলো নাগো ভাল লাগেনা। কারো মনে তো গেঁথে রইতে পারলাম না তাই আমার এই টিপটা নাহয় আয়না তেই থাকুক।তখনি সাফায়েত ভাইয়ের কাছে একটা ফোন এসেছিলো।মনে গেঁথে থাকার কথাটা বেনু সাফায়েত ভাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলেছিলো কারণ বেনু যেন দিন দিন সাফায়েত ভাইয়ের প্রতি আরো মুগ্ধ হতে লেগেছিলো।আর জয়ী আপার বিয়ের দিনের একটু প্রশংসা যেন তা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিলো।

হ্যাঁ আমিই সেই হতভাগী বেনু।কিন্তু সেই ভালোলাগার কথা কখনো বলতে পারিনি সাফায়েত ভাইকে। তার আগেই যেন সব উল্টো হয়ে গেল।জয়ী আপার বিয়ের পরদিন শহর থেকে সাফায়েত ভাইয়ের এক বান্ধবী এসেছিলো।আসলে উনার বিয়ের আগেই আসার কথা ছিলো কোন কাজে আটকে গিয়েছিলো তাই পরদিন এসেছিলো। গ্রামের বিয়ে বাড়ী আর কনে-জামাই নিয়ে ছবি আঁকার খুব শখ ছিলো তাই নিজের চোখে অভিজ্ঞতা নিতে সাফায়েত ভাই দাওয়াত করেছিলো স্নিগ্ধা আপুকে।নামটা যেমন সুন্দর আপু দেখতেও তেমন সুন্দর ছিলো।সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার সময় সাফায়েত ভাই খুব খুশি ছিলো আর যে কটা দিন আপু ছিলো দেখে বুঝা যাচ্ছিলো ওদের বন্ধুত্বটা কতটা গভীর আর ঘনিষ্ঠ।একদিন আমাকে ডেকে মুখের উপর বলেই দিলো সাফায়েত ভাই যদি কখনো বিয়ে করে তবে স্নিগ্ধা আপুর মতন কাউকেই বিয়ে করবে।

আমাকে ব্যঙ্গ করে আপুর সামনে বলেছিলো আমাদের বেনু নামে একটা ভাই আছে জানিস।সে কখনো মেয়েদের মতন মাথার চুলটাও আঁচড়ায় না।তবে জয়ীর বিয়ের দিন দেখলাম আমার ভাই একটু বোন সেজেছিলো। সাফায়েত ভাইয়ের কথা শুনে সবার মাঝে হাসির রোল পড়ে গেলো।আমার চোখ বেয়ে একটু হলেই পানিটা পড়ে যাচ্ছিলো।খুব অপমানে সেখান থেকে উঠে এসেছিলাম।আমি পরদিন সকালেই নানু বাড়ি থেকে চলে এসেছিলাম।মা খুব করে বলছিলো আর কটা দিন থেকে যেতে কিন্তু আমি থাকিনি।আমার সাথে মাকেও নিয়ে চলে এসেছি।জয়ী আপাও হয়তো একটু রাগ করেছে সেদিন চলে আসাতে।তবে সেসব গাঁয়ে না মাখিয়ে আমি চলে এসেছিলাম।

সেদিনের পর বদলে গিয়েছিলো অনেক কিছুই।সেদিনের অপমানটা হয়তো আমার একটু বেশিই লেগেছিলো। এরপর কেন যেন রাগ আর জেদেই নিজেকে বদলিয়ে ফেললাম।সেদিন পর আমি আর সাফায়েত ভাইয়ের সাথে কখনো কথা বলিনি।হঠাৎ করে নানু মারা গেলো।সাফায়েত ভাই এক বছরের জন্য বিদেশ চলে গেলো।এমনকি যাওয়ার আগের দিন ফোন করেছিলো উনি আমি কথা বলিনি। ছোট্ট করে একটা টেক্সট করেছিলো শুধু যেখানটায় লিখা ছিলো,

“খুব রাগ করেছিস!একটা কথাও বললি না।ভাল থাকিস পাগলি” সেদিন কেঁদেছিলাম খুব।কেন কেঁদেছিলাম জানি না।তবে সাফায়েত ভাইয়ের উপর রাগটা আমার কমেনি।উনি ভাল থাকুক স্নিগ্ধা আপুকে নিয়ে।আমার মত মেয়ের সাথে তো আর তার যায়না।বাবা অসুস্থ ছিলো বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলো। ছেলেও খুব ভাল সবার পছন্দের।হুট করে হয়ে গেলো বিয়েটা।তবে আগের বেনু আর এখনকার বেনুর মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক।এই বেনুকে দেখলে হয়তো সাফায়েত ভাইয়ের আর ভাই লাগতো না।যে বেনু কখনো সাজতো না সে বেনুর শরীর জুড়ে এখন গহনা থাকে।সব সময় সেজেগুজে পুতুল হয়ে থাকে এখনকার বেনু।যে কেউ একবার দেখলেই বেনুর রূপে মুগ্ধ হয়ে যাবে এখন।সময়টা এত জলদি বদলাবে বেনু ভাবতেও পারেনি। আর সময়ের সাথে নিজেকে এতটা বদলে ফেলেছে বেনু নিজেরই অবাক লাগে ওর।

বেনুর মাও খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছে।শুনেছে সাফায়েত ভাই নাকি দেশে এসেছে।এবার খালামণিকে নিয়ে একবারে যাবে।তাই সবাই শেষ বারের মতন হ্যাঁ হয়তো শেষ বারই হবে সবাই নানুর মৃত্যুবার্ষিকীতে গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বেনু যাবার কোন ইচ্ছে নেই তবুও মায়ের অনুরোধের কারণে ওকে যেতে হচ্ছে।আর গিয়েই মুখোমুখি হতে হলো সাফায়েত ভাইয়ের।তবে এবার সাফায়েত ভাই আর বেনুকে দেখে ব্যঙ্গ করেনি বরং চোখে মুখে ছিলো একটা অনুতপ্ত আর দুঃখের ছাপ।নানুর ঘরে বসে আছি ঠিক সেসময় সাফায়েত ভাই এসে বললো,

-“কেমন আছিস বেনু!রাগ কি এখনো কমেনি?” এতদিন পর সাফায়েত ভাইয়ের কন্ঠে নিজের নাম শুনে একটু যেন ইমোশনাল হয়ে গেলাম।তবে রাগ নিয়েই বললাম,

-” ভাল আছি খুব ভাল।হয়তো তুমি স্নিগ্ধ আপুর সাথে যেমন আছো তার চেয়েও ঢের ভালো।” সাফায়েত ভাই মুচকি হেসে বললো,

-“আমি স্নিগ্ধার সাথে আছি তোকে কে বললো?তবে স্নিগ্ধা বর বাচ্চা নিয়ে বেশ আছে।প্রায়ই কথা হয়।তা তোর বর কোথায়? দেখাবি না! হুট করে বিয়ে করে ফেললি তোর বিয়েতে থাকতেও পারলাম না।”

~”থাকার খুব ইচ্ছে হয়তো তোমার হতোওনা।আমি তো তোমার ভাই তাই না!আমি ঠিক মত চুলটাও আঁচড়াতে পারি না কিনা”

-বেনু তুই এখনো সেই কথা মনে রেখে রাগ পুষে রেখেছিস!ওটা শুধুই ফাজলামো ছিলো তোকে রাগানোর জন্য।তুই চাইলে স্নিগ্ধাকেও জিজ্ঞেস করতে পারিস।”

~দেখো আমি কাউকেই আর কিছু জিজ্ঞেস করতে চাই না।আর আমি যতটা জানি তোমার সাথে আপুর বিয়ে হওবার ছিলো”

-আমরা শুধুই ভাল বন্ধু ছিলাম।এর চেয়ে বেশি কিছুই নয়।আমি অন্য কাউকে বলতে গিয়েই সাফায়েত ভাই থেমে গিয়ে বলল বাদ দে এই প্রথম হয়তো আমার চোখের পানি সাফায়েত ভাইয়ের সামনেই চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো।তবে আড়াল করে ফেললাম।তবে পাশে বসা মানুষটা তা বুঝতে পেরেছে ভাল করেই বুঝে গেলাম সাফায়েত ভাই সেই কালো টিপটা দেখিয়ে বললো, “মনে পড়ে দেখতো!আমি একপানে মিনিট দুয়েক তাকিয়ে থাকলাম কালো টিপটার দিকে। তারপর বললাম,

“কি হবে আর এসব মনে করে বলো!” সাফায়েত ভাই বললো, “হ্যাঁ রে বেনু তুই খুব ভাল আছিস তাইনা!খুব সুখে আছিস বরকে নিয়ে।কোন কিছুর অভাব নাই নিশ্চয়ই তোর।খুব ভালোবাসে তোর বর তোকে তাইনা!” এই কথার উত্তর কি দিবে ভেবে দিশেহারা হয়ে যায় বেনু। ভাল তো আছে সে কোন কিছুর অভাবও নেই কিন্তু ভালোবাসা!! আচ্ছা ভালোবাসা কি আছে বেনুর জীবনে! হাসি খুশি বেনুর সুন্দর মুখশ্রীর পিছনে বেনুর মনের খবর আর ক’জনা রাখে।বেনু শুধু মুচকি হেসে বলে আমি খুব ভাল আছি সাফায়েত ভাই খুব ভাল।আর আমার বর কোন এক কাজে আটকে গেছে তাই আসতে পারেনি।ওরও আসার কথা ছিলো।কিন্তু আমার জন্য সুখ,বিলাসিতা আর ভাললাগা একত্র করতে ব্যস্ত সে।আমার ভালোবাসাটা তার কাছে মুখ্য নয় গো।

এতদিন পরেও টিপটার কথা তোমার মনে আছে ভেবেই অবাক লাগছে আমার। এমন অনেক কিছুই আমার মনে আছে যা ভেবে তোর হতবাক হয়ে যাবার কথা।কেন করলি এমন!আগ্রহের স্বরে বললো সাফায়েত ভাই। শুধু রাগ করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলি।যা নিজে কিছু বললি আর না আমায় বলার সুযোগ দিলি।বেনু উদাস মনে বললো, “আমার কখনো মনে হয়নি তুমি আমার প্রতি এমন কোন অনুভূতি তোমার মনে রেখেছো! আর আমি বলার সুযোগ পাইনি।আসলে আমার দ্বিতীয়বার অপমানিত হতে ইচ্ছে করেনি আর জানো তো আত্নসন্মানে আঘাত আমার গাঁয়ে লাগে খুব।” সাফায়েত ভাই বলেই ফেললো, বেনু তুই এখনো কিন্তু আমায় ভুল বুচ্ছিস। আমি কিছু না বলে ড্রেসিংটেবিল থেকে কালো টিপটা তুলে ফেলে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।

পরের দুদিন আর কথা কিংবা দেখা করিনি সাফায়েত ভাইয়ের সাথে।তবে খালামণি বলছিলো দীঘির পাড়ে নাকি দুইদিন যাবত মনযোগ দিয়ে কি এক ছবি আঁকছে।অথচ এককালে কত করে বলতাম আমার একটা ছবি এঁকে দিতে।বাধাই করে দেয়ালে ঝুলাবো বলে।কিন্ত বরাবরের মতন সাফায়েত ভাই বিদ্রুপের হাসি হাসতো আর বলতো দেয়ালের অসন্মান হবে বেনু তোর ছবি আঁকলে।কিন্তু আজ সেই সাফায়েত ভাই কতটা বদলে গেছে।ওসব নাকি ফাজলামো ছিলো।অনুভূতি গুলো কখনো কখনো সঠিক সময়ে বলে দিতে হয় নয়তো বড্ড দেরি হয়ে যায়।তখন আর কিছুই করার থাকেনা।শুধু মনে মনে অনুভবের আগুনে পুড়ে মরতে হয়।যেমনটা এখন বেনুর হচ্ছে হয়তো সাফায়েত ভাইয়ের তারচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে।

চলে আসার দিনে গাড়িতে উঠে বসার পর জয়ী আপা এসে বেনুর হাতে একখানা কাগজে মোড়ানো ছবি দিয়ে গেলো।বেনু জিজ্ঞেস করলে বললো, সাফায়েত দিয়েছে তোকে দিতে।নিজেই নাহয় খুলে দেখে নে। বেনু আনমনে কাগজ ছিঁড়ে ছবিটা দেখে কয়েক মুহূর্ত’র জন্য যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।এটা যে তারই ছবি।তবে কি এই দুইদিন সাফায়েত ভাই এই ছবিটাই আঁকছিলো মনযোগ দিয়ে! ছবিটা দেখেই বেনু জয়ী আপার বিয়ের দিনে ফিরে গেলো।যেমনটা সেজেছিলো ঠিক তেমন ছবি।সেই শাড়ী,সেই কাজল আর সেই কালো টিপটা।যেন জীবন্ত এক বেনুকে দেখছে বেনু নিজের চোখে।কিন্তু একি!টিপটা যে আসল টিপ, তুলির আঁকা টিপ নয়।সেদিন কি তবে ফেলে দেয়া কালো টিপটা সাফায়েত ভাই তুলে নিয়েছিলো! কেন নিয়েছিলো! এই ছবিতে ব্যবহারের জন্য!

আচমকা জলপাই গাছটার পিছনে বেনু কাউকে যেন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।ওটা যে সাফায়েত ভাই এটা বুঝতে বেনুর কোন রকম অসুবিধা হলো না।তবে সাফায়েত ভাইয়ের চোখের কোণের জলটা বেনু ঠিকি দেখে ফেললো।
এমন সময় বেনুর মা এসে গাড়িতে বসলো। সবাই ওদের বিদায় দিলো একে একে কিন্তু সাফায়েত ভাই আসলো না।
গাড়ি ছেড়ে দিলো বেনু ছবিটা হাতে ধরে চুপচাপ বসে আছে।বেনুর মা ছবিটা দেখে সাফায়েতের খানিক প্রশংসা করলো। বেনু গাড়ির গ্লাস নামিয়ে মুখটা বাহিরে দিয়ে কান্না আড়াল করার চেষ্টা করলো। মা দেখে ফেললে হাজারো প্রশ্ন শুরু করবে।আর বেনুর কোনটারই জবাব দিতে পারবে না।

বেনুর খুব কষ্ট হচ্ছে।বুকের বাঁ পাশে চিনচিনে একটা ব্যথ্যা হচ্ছে ওর।ছবিটা আরো একবার দেখে নিলো বেনু।বেনুর এক দৌড়ে জলপাই গাছটার পিছনে দাঁড়ানো সাফায়েত ভাইয়ের কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে।ইচ্ছে করছে গিয়ে সাফায়েত ভাইকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি লাগিয়ে জড়িয়ে ধরে একটানা কাঁদতে। কিন্তু নিয়তি বেনুর ভাগ্যের গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে।সেই গাড়ি বহুদূরে চলে গেছে সেখান থেকে চাইলেই আর জলপাই গাছের পেছনের মানুষ মুখচ্ছবি দেখা যাবেনা।বেনু সাফায়েত ভাইয়ের আঁকা ছবিটা বুকে জড়িয়ে নিলো খুব সাবধানে যেন কালো টিপটা উঠে না যায় ছবি থেকে।সেই কালো টিপ যেটা এত বছর পর সাফায়েত ভাই খুব যত্ন করে হোকনা ছবিতে তবুও পরিয়ে দিয়েছে ওর কপালে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত