গতকাল রাতে মেয়েটার সাথে ছেলেটির ব্রেক আপ হয়ে গেছে । কল করে দীর্ঘ দু ঘন্টা ছেলেটা মেয়েটাকে বকে গেছে । মেয়েটা টু শব্দ টুকুও করেনি । নিজের হয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগগুলোর প্রতিবাদও করেনি । ছেলেটা মেয়েটার নিরব থাকার তোয়াক্কা না করে কেবল বকেই গেছে যা তার মনে আসছে । এক কথা বারবার রিপিটও করেছে । তবু মেয়েটা চুপ দু ঘন্টার হাজারো অভিযোগ দিয়েও যখন ছেলেটা কলটা কাটেনা, মেয়েটা কলটা হোল্ড করে দেয় । হোল্ড পেয়ে ছেলেটা টুট করে কলটা কেটে দেয় । এখন ছেলেটার মনে কি চলছে তা মেয়েটা স্পষ্ট জানে । তাই মেয়েটা ১২১ এ কল করে বসে থাকে ।
ওদিকে মেয়েটার মনের ভাবনা সত্য করে দিয়ে ছেলেটা বারবার কল দেয় । কিন্তু ছেলেটা কলটা Waiting পায় । এদিকে মেয়েটা ছেলেটার মিথ্যা অভিযোগে দোষি সাভ্যস্থ হয় । কারন ওদিকে ছেলেটা যে এখন ভাবছে মেয়েটা এতরাতে কোন ছেলের সাথে কথা বলছে । যা সে বরাবরই ভেবে গেছে তার ভাবনায় প্রতিনিয়ত । এজন্য মেয়েটা আজ তাকে নিজেই দোষি সাজিয়েছে ১২১ এ কল করে ছেলেটাকে waiting এ রেখে । ওদিকে ছেলেটা মেয়েটাকে মেয়েটার বাপ মা সহ গালিগালাজ করে মেয়েটার গুষ্টি উদ্ধার করছে । আর এদিকে মেয়েটা নিজেকে বিনা দোষে দোষি করে অপলক দৃষ্টিতে জানালার ওপাশে আকাশ পানে তাকিয়ে খোদার নিকট ফরিয়াদ জানাচ্ছে “সব কিছুর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ইয়া রব” অবাক হচ্ছের পাঠক বৃন্দ !!
ভাবছেন মেয়েটার ব্রেকআপ হল সে না কাদলো, না ছেলেটাকে প্রতিত্তোরে কিছু বললো, আর না খোদার কাছে অভিযোগ জানালো- এই মেয়ের কি মাথা নস্ট হল নাকি? তাহলে উত্তরটি শুনুন “না_ মেয়েটার মাথা নস্ট হয়নি” বরং এখন একদম ঠিক কাজ করছে । নস্টতোতো ছিল গত ৫টি বছর ঠিকি শুনলেন গত ৫টি বছর ধরে মেয়েটার মাথা নস্ট ছিল ছেলেটার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে । ৫ বছরের সম্পর্ক কতগুলি দিন , কতগুলি মাস, কতগুলি মুহূর্ত একবার ভেবে দেখেছেন? কতটা সময় মেয়েটার জীবন থেকে হারিয়ে গেল তা কি ছেলেটা জানে ? জানলে হয়তো ৫ বছরের সম্পর্কের পর অবলিলায় সে বলে দিতে পারতোনা অন্য কাওকে বিয়ে করে নিবে কথাটা ।
বলতো পারতোনা এখন মেয়েটার কি যোগ্যতা আছে কথাটা ।
বলতো পারতোনা মেয়েটা এতগুলি বছর তাকে জালিয়ে গেছে সহ হাজারো ভিত্তিহীন অভিযোগ, অপবাদ, গালিগালাজ । আজ মেয়েটা জানে ছেলেটা মেয়েটার নিরবতাকে সম্মতির লক্ষন ভেবে মেয়েটাকে এতকিছু বলার সাহস পেয়েছে । কিন্তু অনেক সময় আত্ন চিৎকার শব্দহীন হয়ে পড়লে নিরবতাও যে হাজারো কথা বলে , সহস্র দুঃখ ব্যক্ত করে তা যদি একটা বার ছেলেটা বুঝতো !! মেয়েটা জানে ছেলেটা সেসব কখনোই বুঝবেনা । যদি বুঝতো তাহলে এতগুলো বছরেই বুঝে যেতো যে মেয়েটা কতটা ঝুকি মাথায় নিয়ে লুকিয়ে রান্না করে ছেলেটাকে পাঠাতো, যে মেয়েটা নিজের পড়ালেখার দিকে না তাকিয়ে ছেলেটাকে পড়ালেখায় উৎসাহিত করতো, যে মেয়েটা পরীক্ষায় নিজে সব উত্তর না লিখে ছেলেটাকে সহায়তা করতো সব দিতে,
যে মেয়েটা টাকা দিয়ে ছেলেটার হাত খরচা চালাতো, যে মেয়েটা ছেলেটাকে নামাজ পড়তে কতটা অনুনয়, বিনয়, না খেয়ে রাগ দেখিয়ে নামাজ পড়তে শিখিয়েছে, যে মেয়েটা ক্লাস না করে ছেলেটাকে সময় দিয়েছে, যে মেয়েটা রাতের পর রাত রাতের ঘুম হারাম করে ছেলেটার কথা বলার সঙ্গি হয়েছে, যে মেয়েটা ছেলেটার পাশে যখন কেউ ছিলনা তখনো মেয়েটা পাশে থেকেছে, যে মেয়েটা কোন কিছুর আশা না করে নিস্বার্থভাবে ছেলেটার প্রতিনিয়ত সহায়তা করে গেছে সে মেয়েটার কি কোন অবদান ছিলনা ছেলেটার জীবনে ?? ১০ টাকার বাদাম যে মেয়েটা ছেলেটার থেকে খায়নি, বরং খায়য়েছে সে মেয়েটা লোভি ? যে মেয়েটা রাতের পর রাত ছেলেটার অহেতুক কথা শুনার সঙ্গি হয়েছে সে মেয়েটা ভাব নেয়? যে মেয়েটা ছেলেটার চাকরি হবার পরেও ১টা টাকার কিছু চায়নি বা পায়নি সে মেয়েটা স্বার্থান্বেসী ?
আজ ছেলেটা স্বাবলম্বী বলে এমন শত শত অভিযোগ ছেলেটার মেয়েটার প্রতি কিন্তু মেয়েটার হাজারো ত্যাগ , বিসর্জন, করুনা যে ছেলেটার প্রতি সেসব এত সহজেই ভূলে গেল ! ছেলেটা নিজেই এত স্বার্থপর আর সে মেয়েটাকে স্বার্থপর বানিয়ে দিলো ? মেয়েটার এতগুলো বছর ছেলেটার জন্যে সব হারাতে হারাতে আজ সে খুব ক্লান্ত । মেয়েটা এখন ভালো করেই বুঝেছে, এখন ছেলেটার সব পাওয়া শেষ তাই ছেলেটার কাছে মেয়েটার গুরুত্বও শেষ মেয়েটা এটাও জেনে গেছে , ছেড়ে যাবার দোষটা ছেলেটা নিরিহ মেয়েটার ঘাড়েই চাপা নোর উদ্দেশ্যে ছেলেটার এত শত অভিযোগ
তবু মেয়েটার ছেলেটাকে মুখে কিছু বলার ছিলনা বিবেক সম্পন্ন মানুষকে কিছু বলে বুঝানো যায়, কিন্তু যে বিবেক বেঁচে বসে আছে তাকে কেবল বলে নয়, শাসন করেও কিছু বুঝানো সম্ভব নয় সেজন্য মেয়েটি নিরবতা অবলম্বনকেই বেশি সাচ্ছন্দবোধ করেছে । মেয়েটি এত বছরে বুঝে গেছে স্রষ্টা যা করেন মানুষের মঙ্গলের জন্যেই করেন । তাই মেয়েটির ব্রেকআপ হওয়ার বিষয়টিকে দুঃখ নয় বরং তার জন্যে মঙ্গল হয়েছে অনুধাবন করেই স্রষ্টার প্রতি সে ঋনি হয়ে শোকরিয়া জানিয়েছে . .