স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে তার গায়ে হাত তোলার পরে পরেরদিন শপিংয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে স্ত্রীর মর্যাদা আদায় করার চিন্তাভাবনা করা লোকগুলোর খুবই অদ্ভুত মনের মানুষ। বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি আরাফ পরকিয়া করছে তার স্ত্রীর আড়ালে! বিয়ের আগে যে ও খুব একটা ভাল স্বভাবের ছিল তা একদমই নয়। একাধিক মেয়ের সাথে ছিল ওর শারীরিক সম্পর্ক যার জন্য পরিবারের সবাই মিলে বিয়ে দেয় ওরে। বিয়ের পরেও ওর এমন স্বভাব চরিত্র পরিবর্তন হয়নি যার ফলপ্রসু প্রায়ই দাম্পত্য জীবনে অসুখী ছিল ওর স্ত্রী।
খুব একটা শিক্ষিত নয় আরাফ তবে তারপরেও শিক্ষিত মধ্য শিক্ষিত নিম্ন শিক্ষিত অনেক মেয়ের সাথে ওর সম্পর্ক ছিল। তাই আমরা ওরে গুরু মনে করতাম বন্ধুমহলে বিয়ের পরেও মেয়েদের সাথে সম্পর্কে জড়ানো মোটেই ভালো ফল নিয়ে আসেনি ওর জন্য। স্ত্রী মিলি খুব ভাল মনের মানুষ, দেখতেও বেশ সুন্দরী কিন্তু তারপরেও কেন যে আরাফ তার কর্মকাণ্ড পরিবর্তন করতে পারেনি এই উত্তর হয়তো ওর কাছেও নেই। ওর এসব সম্পর্কের কথা যখন মিলি জানতে পারে তখন ঝগড়াঝাটি হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু নিজের ভূল থাকা স্বত্তেও আরাফ যখন ওর স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে তখন বিষয়টা খুব শোচনীয় হয়ে দাড়ায়। বাজে ব্যবহার গায়ে হাত তোলা ইত্যাদি একরকম দৈনন্দিন চলতে শুরু করে।
কিন্তু আশ্চর্য হয়েছিলাম যখন দেখি এরকম ঝগড়াঝাটি গায়ে হাত তোলার পরে ও মিলিকে নিয়ে শপিংয়ে যেত আর মিলিও নিজের খেয়াল খুশি মতো শপিং করে আসতো যেনো কিছুই হয়নি ওদের মাঝে। বিষয়টা এরকম দাঁড়িয়েছে যে জুতা মেরে গুরু দান। মিলির অবস্থাও বোঝা যায় কারণ মিলি এই অল্প সুখের মাঝেই ওর চাওয়া পাওয়া খুঁজে নিয়েছে। যে স্বামী সংসার জীবনে পরকিয়ায় লিপ্ত থাকে তাদের থেকে অল্প সুখই স্ত্রীর কাছে অনেক অনেক সুখের ঠিকানা।
আগে ভাবতাম মিলি খুব লোভী কারণ মার খেয়ে কেউ শপিংয়ে যেতে পারে নাকি! কিন্তু এখন বুঝছি যে মিলি কতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে, ঝগড়াঝাটি হওয়ার পরেরদিন যখন আরাফ ওরে শপিংয়ে নেয় তখন প্রথম অস্বীকৃতি জানালেও পরে ঠিক যেতো আর এই যাওয়া আসার মাধ্যমেই নিজের স্বামীকে সে নিজের দিকে ধাবিত করতো! দেখতাম আরাফও অনেকটা পরিবর্তন হতে শুরু করে ধীরে ধীরে এই ক্ষমতাটা প্রত্যেক নারীর মধ্যেই বিদ্যমান, কিভাবে একটা পুরুষকে বসে আনতে হবে তা মিলিরা খুব ভালই জানেন।
যদি সেটা ঝগড়ার পরে হয় তাইলে আরও ভাল কারণ ঝগড়া করার মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে দেয়৷ তারপরে কাছে আসার জন্যে ক্ষুদ্র পরিসরও অনেক বড় ভূমিকা রাখে যেমনটা শপিংয়ে যাওয়ার মাধ্যমে মিলি আরাফের কাছে একান্ত ভাবে নিজেকে তুলে ধরেছে আরাফতো নিজেকে বড় রাখতে গিয়েছে মাত্র, ঝগড়াঝাটি করার বিষয়টা ধামাচাপা দেয়ার জন্য শপিংয়ে যাওয়ার পন্থায় সে নিজেই মিলির কাছে ধামাচাপা পরে গেলো নিজের অজান্তেই।
সব স্বামীরা আদর্শ স্বামী হয়না, জীবনের সব চেয়ে বড় সঙ্গীটা আপনার মনের মত নাও হতে পারে। যেখানে আপনি তাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনেছেন হাজারো সুখের পায়তারা সেখানে আপনার স্বামী হতে পারে পুরোটাই উল্টো ধাচের।
কিন্তু হাল ছাড়বেন না, সুযোগ সন্ধান করতে থাকুন। বলা যায়না খুব অল্প সময় খুব ছোট একটা মুহূর্তও আপনার সুখের চাবিকাঠি হয়ে যেতে পারে আর সেজন্য আমার মত দু’চারজনের চোখে লোভী হওয়া কোনো ব্যাপারই নাহ।
কারণ তাতে আপনার পরিচয় হবে, সুখের লোভী!
আমরা তো ওই একটা কাজ ঠিক মতো পারি, কিভাবে অন্যের সমালোচনা করা যায়, কিভাবে তার চরিত্রের সার্টিফিকেট তৈরি করা যায়, কিভাবে অন্যকে ছোট করা যায়। আমাদের মতো মানুষের কাজ এগুলোই, আমরা আজ আপনাকে নিয়ে বলবো কাল অন্যকে দুদিন পরে আবার আরেকজন। তাই আমাদের জন্য নিজের সুযোগ হাতছাড়া করবেন না কারণ সেই দায় আমরা নিবোনা…