জানিস, নিহিতা ভাবি কি সেক্সি মা। এমন একটা হৃদয় ক্লাব ঘরে বন্ধুদের সাথে ক্যারাম খেলার সময় নিহিতাকে কথা গুলো বলতে থাকে। বাজার করে বাসায় ফেরার পথে হৃদয়ের কথা গুলো কানের কাছে ভাসতেই সে দিকে ফিরে তাকালো। অনেক বারই অনেক কথা শুনেছে।
” আজ হৃদয়ের সাথে চোখে চোখ পড়তেই মুচকি হেঁসে বাসার পথে পা বাড়ালো। হৃদয় যেনো হাতে আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলো। হৃদয়ের বন্ধুরা খেলায় মনোযোগ থাকায় ঘটনা বুঝতে না পারলেও মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়। তাঁদের অজান্তেই যে হৃদয়ের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল। বাজার থেকে ফিরেই কাজের মেয়ের হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে বললো….
– ওই যে হ্যাংলা পাতলা সুন্দর ছেলে টা আছে না? সবাই একটু মেনে চলে তাকে চুপচাপ দিয়ে আসবি। আর তোর দুপুরে ছুটি। ” নিহিতার কথায় বেশ একটু অবাক হল। হাত থেকে কাগজটা নিতে নিতে বললো….
– কি আছে? আর প্রত্যেক নানা রকম বাজে কথা বলে। আর আপনি? নিহিতা তখন তাকিয়ে বললো….
– তুই ভাবিস না। এর পর থেকে দেখিস আর কিছু বলবে না। সোফায় বসে টিভি দেখছে তখনি কলিং বেল বাজার শব্দ। নিহিতা উঠে গিয়ে দেখতে পেলো তাঁর নাগর এসে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা খোলে হাসি মুখে বললো…
– এসো এসো ছোট জামাই, তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। হৃদয় লজ্জা পেয়ে বলল…
– আমি ছোট জামাই? কি বলেন…??
– ওমা। কেনো তুমি জানো না দেবর তো অর্ধেক জামাই হয়। যেহেতু তুমি দেবর তাই তো তুমি ছোট জামাই হবে। কেনো আপত্তি আছে বুঝি…..???
– না না, আপত্তি থাকবে কেনো?? হৃদয়ের অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে তখন নিহিতা বলল….
– ছোট জামাই বাহিরে কেনো? ভিতরে আসো….
নিহিতার কথা শুনেই লজ্জা পেয়ে হৃদয় মাথা নিচু করে ফেললো। দরজা খোলে দিতেই নিহিতার পিছু পিছু ড্রয়িং রুমে এসে দাঁড়িয়ে থেকে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে বাসা খালি। কেউ নেই বাসায়,তখন হৃদয়ের মনে অন্য রকম অনুভূতি হতে থাকলো। মনে দিলকা লাড্ডু ফুটতে শুরু করলো। নিহিতা সোফায় বসতে বসতে বললো….
– দাঁড়িয়ে কেনো? বসো কিছু মনে করলে না তো? হৃদয় ভয়ে ভয়ে মাথা করে বললো…
– না না মনে করবো কেন, ভাই কোথায়?
– তোমার ভাই তো অফিসের কাজে বাহিরে গেছে।
– ও আচ্ছা, আপনার মেয়েকে ও দেখছি নাতো।
– ওর তো ড্রয়িং ক্লাস আছে আজ। পাড়াই তো নতুন এসেছি কারো সাথে তেমন আলাপ হয়নি, আর এই সময় বাড়ীতেও কেও নেই তাই ভাবলাম তোমার সাথে একটু নিরিবিলিতে বসে আলাপ করা যাবে। চা খাবে ?
– না না ঠিক আছে। বলুন কেন ডাকছিলেন ? হৃদয়ের দিকে হাসি দিয়ে বলল….
– ঊফ এতো তারা কিসের, জল খাবে একটু। জানো হৃদয় আমি যখন মেয়েকে রোজ স্কুলে দিতে যায় তুমি আর তোমার বন্ধুরা ক্লাবের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যখন আমাকে টোন কাটো আমার বেশ লাগে শুনতে।
– না মানে , ওই সবার পাল্লাই পরে নিহিতার কথা শুনে মাথা নিচু করে ফেললে নিহিতা মুচকি হেসে ভরসা দিয়ে বললো….
– আর এতে সংকুচিত হওয়ার কিছু নেই, আমার তো ভালোই লাগে ! তোমার মতো হ্যান্ডসাম সুপুরুষ ছেলে ছয় বছরের মেয়ের মাকে কে যখন ‘সেক্সী ভাবী, ‘হেব্বি মাল’ ‘ভাই না থাকলে আমাকে ডেকো’ এইসব বলে টোন কাটো বেশ লাগে শুনতে। তাইতো আজ তোমাকে ডেকেছি। ” নিহিতার কথা শুনে একটু লজ্জা পেয়ে বললো….
– আসলে আপনি ভুল করছেন, আমি ওদের সাথে থাকি কিন্তু আমি ঠিক ওসব বলিনি।
– দুষ্টু কোথাকার, আমি শুনেছি তুমিই তো বললে তোমার না থাকায় তোমাকে ডাকেছি হি হি। এসো এসো বেডরুমে এসো, আর সদর দরজাটা বন্ধ তো করে এসো।
– কেনো দরজা বন্ধ কেন?
– তুমি না সত্যি, আমরা ভিতর ঘরে থাকবো, কেউ যদি এসে পরে। এই কিগো এতো ঘামছ কেনো? আমার তো শীত শীত লাগছে, তাহলে আমার আবার জ্বর এলো নাকি? একটু দেখতো তো গায়ে হাত দিয়ে। এ বাবা হাত কাঁপছে কেনো।
– না মানে আমি না কোনোদিন কোন মেয়ে কে এভাবে ছুয়ে দেখিনি।
– নে বাবা এর মধ্যেই সব মর্দানা হাওয়া হয়ে গেলো। এমন টোন কাটো বন্ধুদের সাথে ক্লাবে দাঁড়িয়ে মনে হয় কত বাঘ মেরেছ, এখন তো দেখছি বিড়াল দেখেই প্যান্ট হলুদ হওয়ার জোগাড়। নাও ঝটপট জামা প্যান্ট খোলো, সময় খুব কম।
– এ .. এ… এখনি এত জামা প্যান্ট খুলবো, আগে একটু …
– উফ দেরি না করে যা বলছি তাই করো। তোমার ভাই পারেনি বলেই না তোমাকে…
– আচ্ছা আচ্ছা তুমি যেমন বলবে ভাবি, হে হে।
– হুম এই তো গুড বয়। নাহ জাঙ্গিয়াটা না খুললেও চলবে। এবার শোনো ওই যে সামনে দরজাটা, খুলে বাথরুমে ঢুকে যাও। ” নিহিতার মুখে বাথরুমে যাওয়ার কথা শুনেই চমকে উঠে। চমকে উঠে জানতে চাইলো……
– আবার বাথরুম কেনো? আচ্ছা বুঝেছি বাথরুম করে আসবো তাইতো কিন্তু আমার এখনো অতটা পাইনি। নিহিতা কিছুটা রেগে গিয়ে বললো…..
-বেশি কথা বলোনা। যা বলছি করো আর বাথরুমের দরজা বন্ধ করার দরকার নেই। এবার যা বলছি শোনো, কমোডের মধ্যে আমার একটা কানের দুল পরে গেছে। কাজের মেয়ে কে বললাম পাঁচশ টাকা দেব সে বললো তাকে দশহাজার দিলেও সে করবেনা। তোমার ভাই বাসায় নেই কি করি বলতো? তখনই আমার তোমার কথা মনে পরলো ‘ ভাই না পারলে…’
– তারমানে তুমি আমাকে অসম্ভব।
– দেখ তুমি এই বাড়িতে ঢুকেছ অনেকেই দেখেছে এখন আমি যদি চিৎকার করি কি হবে বুঝতে পারছ? তোমার প্রাণের বন্ধু যারা ক্লাবে বসে সারাদিন আড্ডা দেয় তোমার সাথে এখনি তারাই হিরো সাজার জন্য পাবলিকের সামনে তোমাকে কেলিয়ে কাঁঠাল বানিয়ে দেবে। শুধু কি তাই পাবলিক থেকে পুলিশ পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনাও যে নেই বলা যায় না। আর তোমরা যে ক্লাবে বসে এ পাড়ার অনেক বউ মেয়েদেরই টোন কাটো সেতো সবার জানা দুয়ে দুয়ে চার করতে আমার সময় লাগবে না।
নিহিতার কথা শুনে ভয় চুপসে যায়। ভয়ে কাঠ হয়ে যায়। একটুও বুঝতে অসুবিধা হয়নি। হৃদয় যেনো হুস হারিয়ে ফেলে। হৃদয় বুঝতে পারে তাঁর কর্মফল এটা। কি ভূলটাই না করেছে।
– কি হলো? নিহিতা তাড়া দিতেই হুস ফিরে আসে। নিহিতার কথা শুনেই হৃদয় বললো…..
– আচ্ছা দিচ্ছি। তাও এমন করো না। ইশ! কি গন্ধ। কই পাচ্ছিনা তো।
– ভালো করে ভিতরে হাত ঢুকিয়ে দেখো ঠিক পাবে।
– ওয়াক…আমার বমি পাচ্ছে। আমার দ্বারা হবেনা।
– মুখ দিয়ে তো বমির থেকেও কত নোংরা কথা বার করো, আজ না হয় একটু বমি হলো। যাইহোক না হলে ছেড়ে দাও আমিই দেখছি কি করা যায়।
– কি করবেন?
– এই তোমার জামা প্যান্ট গুলো নিয়ে বাইরে যাচ্ছি, তুমি ঘরেই থাকো।
– নানা ভাবি প্লিজ এমন করবেন না। এই যে খুঁজছি। এই…..এই…..এই যে পেয়েছি।
– বাহ এবার ওই যে ওখানে সাবান আছে ভালো করে ওটা ধুয়ে রেখে বেরিয়ে এসো।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
– ভালো করে পরিস্কার কর। তারপর আমি পরীক্ষা করে দেখবো।
– কি পরীক্ষা?
– ধুয়ে ওটা তুমি একবার মুখে নেবে। অবশ্য তোমার মুখ ও যা নোংরা, মুখে নিয়ে আবার ভালো করে ধুয়ে রাখবে।
– ইস ছি ক্ষমা করে দিন আর করবো না কোনোদিন। আমি ভালো করে পরিষ্কার করে দিচ্ছি কিন্তু এখনি কানের দুলটা মুখে নিতে পারবোনা। প্লিজ
– আচ্ছা ঠিক আছে ভালো করে পরিষ্কার করো।
– হয়ে গেছে, ভালো করে পরিষ্কার করেছি। এবার কি করতে হবে।
– অনেক করেছ, পরে যদি কখনো দরকার পরে আবার ডাকবো। আর শোনো তোমার ঐ কমোডে হাত ঢোকানোর ভিডিওটা বেশ এসেছে। কাল থেকে যদি দেখি কাওকে কোন বাজে কথা বলছো এটা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাবে মনে থাকে। ভিডিও টা আমার কাছে রেখে দিলাম। কেউ জানবে কি-না তোমার উপর নির্ভর করবে। এবার নিজের জামা প্যান্ট পরে বিদায় হোও। ” হৃদয় বুঝতে পেরে চুপচাপ চলে আসে। বুঝতে পারে কোন কথা বললেই মানসম্মান নিয়ে টানাটানি। তাঁর থেকে চুপ করে থাকাই ভালো। কেউ জানবে না। ” এক বিজয়ের হাসি দিলো নিহিতা।