বেশকিছুদিন ধরে একটা মেয়ের সাথে প্রেম প্রেম ভাব চলছে। বউ বাসায় না থাকায় একদিন মেয়েটাকে বাসায় ডাকলাম। আমি আর মেয়েটি পাশাপাশি বসে আছি। ওর নাম শিলা। শরনা শিলার মতোই দেখতে একদম। কিন্তু এতো সহজে পটে যাবে এটা ভাবতে পারিনি।
এক কাপ চা বানিয়ে ওর হাতে দিতে যাবো এমন সময় কলিংবেলের শব্দে বুক কেঁপে উঠলো। এই সময় কে আসতে পারে! স্ত্রী তো অফিসের কাজে বাহিরের দেশ নোয়াখালী গিয়েছে। দরজায় একটা ফোটা রাখা হয়েছিল, যেন বাহিরে কেউ আসলে তাকালে দেখা যায়। ফোটা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ওপাশে সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখি ওমা এ যে স্বয়ং আমার স্ত্রী। সর্বনাশ!
তাড়াতাড়ি শিলার কাছে এসে বললাম ” অবস্থা খারাপ। আমার স্ত্রী হঠাৎ চলে এসেছে”। আমার কথা শুনে শিলার চোখমুখ কালো হয়ে গেলো। ও বললো ” আপনি না বলেছেন আপনার স্ত্রী সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরবে না। এখন তো সকাল ১০ টা বাজে”। আমি বললাম ” আমি নিজেও জানিনা ব্যাপারটা। আপনি তাড়াতাড়ি এখন থেকে চলে যান। এবার যদি ধরা পরি তাহলে আমার ১২ টা বাজিয়ে দিবে । সাথে আপনার ও ১২ টা বাজিয়ে ছাড়বে। মেয়েটা আমার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ার মতো হয়ে বললো ” মানে কি? আমি বলতে লাগলাম, এবার মানে? আপনি কি এর আগেও ধরা পরেছিলেন”?
আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললাম ” আরে হ্যাঁ, এর আগেও স্ত্রী এক মেয়ের সাথে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল। তারপর এমন মার মেরেছিল যে সেই মেয়েকে ১ মাস আমাকে ৩ মাস হাসপাতালে থাকা লেগেছে।এবং বউয়ের সাথে ১ মাস রাতে একসাথে ঘুমাতে দেয় নি। ও আবার কুস্তিগিরি বংশের মেয়ে। ওর বাপ দাদা সবাই এককালে কুস্তি খেলেছে। এইজন্য ওর শরীরে প্রচুর শক্তি”। আবার অনেক লম্বা”।
মেয়ের দেখি মুখচোখ শুকিয়ে একাকার অবস্থা। কোনোরকমে বলে উঠলো “এখন উপায়”? আমি বললাম “আপনি পালিয়ে যান”। মেয়ে বলে উঠলো ” কিন্তু দরজায় তো আপনার স্ত্রী দাঁড়িয়ে”। আমি আচমকা বলে উঠলাম “আপনি বারান্দা থেকে নিচে লাফ দিন”। মেয়ে ঠাস করে গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে উঠলো ” আমার কি জানের মায়া নেই”? আপনি অন্য উপায় ভাবুন। এদিকে স্ত্রী একেক পর এক বেল টিপেই যাচ্ছে। আমি বললাম “উপায় একটা আছে”। শিলা বলে উঠলো “কি?” আমি বললাম ” আপনি আমার বাসার নতুন কাজের মেয়ে। আজ থেকেই আপনি কাজ করবেন। আপনি তাড়াতাড়ি বাথরুমে চলে যান। গিয়ে কাপড় ধুয়া শুরু করুন।।
শিলা চমকে উঠে বললো ” আপনার মাথা খারাপ? আমি জীবনে কখনো আমার কাপড় ধুয়ে দেইনি। সব কাপড় আমার মা ধুয়ে দেয়। আমি জানিই না কিভাবে কাপড় ধুতে হয়”। আমি নিরাশ গলায় বললাম ” তাহলে ১ মাস হাসপাতালে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নাই আপনার। দাঁড়ান আমি দরজা খুলে দেই”। শিলা আমার কথা শুনে বললো ” আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দিন”।
আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম ” এই বিপদের সময় আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড লাগবে কেন”? শিলা বললো ” ইউটিউবে কাপড় ধুয়ার টিউটোরিয়াল দেখবো। ঠিকমতো ধুতে না পারলে আপনার বউ আবার যদি সন্দেহ করে! আমি ওকে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দিয়ে দরজা খুলতে গেলাম। দরজা খুলতেই দেখি স্ত্রী অগ্নিশর্মা হয়ে বললো ” দরজা খুলতে এতো সময় লাগলো কেন? আমি আমতাআমতা করে বললাম ” বাসায় নতুন কাজের বুয়া রেখেছি। ওকে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। তাই দেরি হয়ে গেলো।”
স্ত্রী ঘরে ঢুকে সোজা বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেলো। শিলাকে দেখে বললো ” ওর চেহারা দেখে তো কাজের বুয়ার মতো লাগে না”। আমি আমতাআমতা করে উত্তর দিলাম ” আগে ও লন্ডনে কাজের বুয়া ছিল। আর ওদেশে সুন্দরী ছাড়া কেউ কাজের বুয়া রাখে না। কিছুদিন হলো দেশে ফিরেছে”। স্ত্রী আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো ” তাহলে ওর খোঁজ পাইলা কোথায়?” আমি সোজাসাপ্টা বললাম “অনলাইনে (কাজের বুয়া. কমে) খোঁজ পেয়েছি।”
বউ দেখি আমার কথা শুনে কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট হলো তারপর বললো ” শীত তো প্রায় এসে গেলো। সব কাপড় গুলো ধুয়ে দেওয়া দরকার। এই মেয়ে আমার সাথে আসো। আজকে সব ধুতে হবে। আমি কাপড় গুলো বের করে দিচ্ছি তুমি ধুয়ে দেও”। স্ত্রী দেখি আমার আর ওর যত কাপড় আছে সব বের করে শিলার হাতে তুলে দিলো। সাথে দরজা জানালার কাপড় ও বিছানার চাদর আর কাঁথাও দেখতে পেলাম। শিলা দেখি আমার চোখের দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি মাথা নিচু করে আমার রুমে চলে এলাম। সন্ধ্যায় ক্লান্ত হয়ে শিলা চলে যাওয়ার সময় দেখলাম স্ত্রী বড়বড় গলায় বললো ” কালকে সকাল সকাল চলে আসবেন।
কিন্তু শরনার গল্পে শিলা এলেও আমার গল্পের শিলা আর পরেরদিন আসেনি। কিছুদিন পরের কথা কিছুদিন ধরেই ঘরের কাপড়চোপড় আর জিনিসপত্র সব ময়লা হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী খালি কানের কাছে প্যানপ্যান করছে অন্য কোনো শিকার ধরার জন্য। কিন্তু কুমিল্লা শহরে কি এতো সহজে শিকার ধরা যায়? বউকে বললাম সবুর করো হবে। বউ বললো ” এবার আগেভাগেই দেখে নিবা মেয়ে ঠিকমতো কাপড় ধুতে পারে কিনা। আগের মেয়েটার কাপড় ধুয়া পরিস্কার হয়নি।” আমি বললাম ” কি আর করবা! এই শহরে প্রেমিকার চেয়ে বুয়া পাওয়া কঠিন।”