স্বামীঃ এটা কি বানিয়েছিস তোর মাথা?
স্ত্রীঃ চিনি কি বেশি হয়ছে?
স্বামীঃ তুই জানিস না, চিনি বেশি না কম তোর বাবা মা জীবনে চা বানানোও শিখায় নাই? বলেই চায়ের কাপটা ছুড়ে মারে স্ত্রী গায়ে। স্ত্রী নিস্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে কোন কথা নেই।
স্বামীঃ যা আমার চোঁখের সামনে থেকে দূর হ।
স্ত্রীঃ আমাকে মাফ করে দিন, এর পর থেকে আর ভুল হবে না।
স্বামীঃ এখান থেকে যেতে বলছি তোকে।
স্ত্রী স্বামীর চোঁখের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে চলে আসলো। স্বামী ছোটখাট একটা চাকরি করে। তার ইচ্ছে ছিলো মর্ডান একটা মেয়ে বিয়ে করার, যে সুন্দর করে সাজবে, বাইরে ঘুরতে যাবে পার্টিতে যাবে, কিন্তু কপালে যা থাকে আর কি! তার বাবা মা একজন পর্দাশীল মেয়েকে বউ করে আনলো, দেখতে যে খারাপ তা নয় সুন্দরীদের চাইতেও সুন্দর কিন্তু তাতেও স্বামীর কোন আদর ভালোবাসা পায় নাই স্ত্রী; কিন্তু তাতেও তার কোন আপসোস নেই।
শুধু চায় একটু ভালো কথা ভালো ব্যবহার। স্ত্রীর দোষ এখানেই, কোথাও বের হলে পর্দা করে বের হয়, বেশি সময় বাইরে থাকে না, কোন পার্টির আয়োজন হলে পার্টিতে সবার স্ত্রী আসে কিন্তু ও যেতে চায় না। স্বামী দেখে কত স্বামী স্ত্রী প্রেমিক প্রেমিকা পার্কে আড্ডা দেয়, বাইকে করে ঘুরে, স্বামীরও ইচ্ছে হয় কিন্তু তার স্ত্রী বেশি সময় থাকে না আর যেতেও চায় না। এখানেই তার জিদ। তাই সব সময় স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে। স্ত্রীকে একদম সহ্য করে না।
স্ত্রীঃ এখানে সিগারেটা না খেলে হয় না?
স্বামীঃ তোর টাকায় সিগারেট খাই, না তোর বাপের টাকায়।
স্ত্রীঃ আমি কি না খাওয়ার কথা বলছি, আমি সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারি না, সে জন্য বলছি বাইরে থেকে খেয়ে আসলে ভালো হতো।
স্বামীঃ না সহ্য হলে রুম থেকে চলে যা, বেশি কথা বলবি না।
স্ত্রী চুপচাপ শুয়ে থাকে, সিগারেটের পচা গন্ধ সহ্য করেও স্বামীর সাথেই থাকে। রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় স্ত্রী, পাশে ফিরে দেখে স্বামী নাই, মনে হঠাৎ ধুক করে উঠে, স্ত্রী উঠে বারান্দায় গিয়ে দেখে কার সাথে কথা বলে ফোনে।
স্ত্রীঃ কার সাথে কথা বলো? স্বামী কিছুটা হকচকিয়ে গেলো, পিছনে ফিরে দেকে স্ত্রী, দেখে মেজাজ গরম করে বল্ল।
স্বামীঃ তোকে আমি বলতে বাধ্য নই যে আমি কার সাথে কথা বলি।
স্ত্রীঃ বলতে বাধ্য কারণ, আমি তোমার স্ত্রী। দেখি কার সাথে কথা বলছো?
যখন মোবাইলটা নিতে যাবে তখন স্বামী সজোরে একটা চড় বসিয়ে দিলো। তারপর চলে এলো রুমে। স্ত্রী বাকিটা রাত বারান্দায় কাটিয়ে দিলো। পরদিন, অফিস থেকে এসে খুব ক্ষিদে পেলো, টেবিলে গিয়ে দেখে খাবার রাখা আছে কিন্তু খাবার মুখে দেওয়ার পর প্লেটটা ছুড়ে মারলো স্ত্রীর গায়ে।
স্বামীঃ তোর মাথা রান্না করছিস না তোর বাপের মাথা।
স্ত্রী মুখে নিয়ে দেখলো তরকারিতে লবণ বেশি। তখন নিজকেই দোষ দিতে লাগলো সারাদিন অফিস করে এসেও খাইতে পারলো না। পরদিন স্বামী অফিস থেকে বললো।
স্বামীঃ কালকে আমার কিছু শার্ট ,লুঙ্গী, আমার প্রয়োজনীয় সব কিছু ব্যাগে ভর্তি করে রাখতে হবে।
স্ত্রীঃ কোথায় যাবা?
স্বামীঃ অফিস থেকে তিনদিনের জামাতে যেতে হবে। স্ত্রী অনেক খুশি হয়ে, হাসি মুখে তুমিও যাবা?
স্বামীঃ হাঁ এখানে হাসার কি কি আছে? পরদিন সব কিছু সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যাগে করে দিলো।
স্ত্রীঃ আচ্ছা শুন।
স্বামীঃ কি?
স্ত্রীঃ এই পাঞ্জাবীটা গায়ে দেও, না এটা দেও, না না এটা দেও।
স্বামীঃ একটা গায়ে দিলেই হয়!
স্ত্রীঃ তোমাদের যে আমির থাকবে তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনবা।
তারা ১২ জন একটা মসজিদে গেলো জামাতে গেলে কিন্তু একজনের এক বেলা পাক করার দায়িত্ব পড়ে। তো আজকে উনার পড়লো। পারে না তারপরেও করলো, যখন খেতে যাবে তখন খাবার মুখে দিয়ে দেখলো, লবণ এত্তো বেশি যে খাবার অযোগ্য, সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো সবাই আপন মনে খাচ্ছে। কেউ কিছু বললো না। তার মনে পড়লো একটু লবণ বেশি হওয়াতে প্লেট ছুড়ে মারছিলো স্ত্রীকে। কিন্তু আজ সবাই নিশ্চুপ ভাবে খেয়ে যাচ্ছে। ভাবতেই তার চোঁখে পানি চলে আসে তখন বুঝতে পারে আসলে তার স্ত্রী কতটা দামি। আর সে কি ব্যবহারটাই না করতো, তখন নিজেই নিজকে ঘৃনা করলো। তাদের আমির বয়ানে বলছিলো একজন নেককার স্ত্রী ১০০ জন শহীদের সমান, যার ঘরে নেককার স্ত্রী আছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা থাকে। আরো বিভিন্ন ওয়াজ শুনলো তিন দিন পর বাসায় আসলো দড়জা নক করাতেই দড়জা খুলে খেলো, আজকে আসবা সে জন্য সকাল থেকেই দড়জায় দাড়িয়ে ছিলাম। স্বামি ব্যাগটা রেখেই স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো। স্বামীর কান্নাতে স্ত্রীর চোঁখেও পানি চলে আসলো
স্বামীঃ তুমি আমাকে মাফ করে দেও।
স্ত্রীঃ তুমি তো কিছুই করো নাই মাফ করবো কেন।
স্বামীঃ আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করছি।
স্ত্রীঃ আমি তো কিছু মনে করি নাই, স্বামী কখনো স্ত্রীর কাছে মাফ চায় বোকা।
স্ত্রীঃ আচ্ছা তুমি ওই দিন রাতে কার সাথে কথা বলছ?
স্বামীঃ ওহ ওইটা আমার একাটা ফ্রেন্ড সিঙ্গাপুর থাকে। তখন স্ত্রী স্বামীকে একটা চিমটি কাটাল।
স্ত্রীঃ এটা আমাকে কষ্ট দেওয়া আর সারারাত কাদানোর জন্য। তারপর দুজনেই একসাথে হেসে ফেলে। আবার জড়িয়ে ধরে… তবে সেই পুরুষ উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম, আল -হাদীস।