“ভাই নেশা করার আর টাকা পাচ্ছি না || পার্টির কল্যাণে দু টাকা কেজি চাল আর একশো দিনের কাজের জন্যে সংসারটার দিকে তাকানোর দরকার হচ্ছে না ঠিকই , কিন্তু মদ খাওয়ার টাকাটা আর যোগাড় হচ্ছে না” | বিকেল বেলায় গ্রামের শেষ প্রান্তে থাকা বট গাছের নীচে বসে আড্ডা দিতে দিতে প্যাংলার কথা গুলো শুনে হ্যাংলা বলে উঠলো ..”ঠিকই বলেছিস ভাই | শ্লা বউ সব টাকা গুলো কেড়ে নিচ্ছে | কিছু বলতে গেলেই ঝাঁটা নিয়ে তেড়ে আসে |
কি করা যায় বল দিকি ভাই “? প্যাংলা বলে উঠলো”পার্টি দু টাকা কেজি চালের বদলে যদি দু টাকা লিটারে মদ দিতো তাহলে কি সুবিধেয় টা না হতো বলতো “!! তা তো দেবে না | শুধু চাল চাল আর চাল | শ্লা সব চাল বস্তাই পচে গিয়ে পোকায় খেয়ে নষ্ট করছে” | নাঃ..নাঃ..এইসব পার্টির লোকের চক্রান্ত | এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ করতেই হবে “| হ্যাংলা একটু ঝাঁঝিয়ে উঠে বললো….”পার্টির চক্রান্তটা আমি বুঝতে পেরেছি | শ্লা রা মদের টাকাতে রোজগার করে দু টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছে | কেন রে বাবা || দু টাকা কেজি চাল কে চেয়েছে | আমরা কি নায্য দামে চাল কিনে ভাত খেতে পারবো না ! চাল ছেড়ে মদ দেওয়ার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে এরপর আন্দোলন করতে হবে | বলতে হবে…”দু”টাকাতেই মদ চাই / তা না হলে ভোট নাই “||
ফটকে খবর কাগজটা নিয়ে পড়তে পড়তে মুচকি হেসে বললো….”আরে হ্যাংলা প্যাংলা তোদের এতো দুঃখ কিসের “? প্যাংলার যে ভূত গুলো পোষা আছে তাদের বললেই তো সব ব্যবস্থা করে দেবে” | কথাটা শুনেই প্যাংলা বললো….”আমার কি সম্মান নেই | ভূতের কাছে মদ চেয়ে নিজের সম্মান খোয়াবো”! ! ফটকে কাগজটা ভাঁজ করে রাখতে রাখতে বললো…”তাহলে তোর বিদ্যে অন্য কাজে লাগা” | প্যাংলা বললো …”কি আর কাজে লাগাবো | সবই তো ভূত তাড়ানোর বিদ্যে | এখন ভূতেরা সব কোথায় ! ভূতুড়ে পুরানো ঘর বাড়ি ভেঙ্গে এখন সব ফ্ল্যাট হয়ে গিয়েছে | তাছাড়া সবাই যা জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম বলছে ভূতেরা ভয়ে তটস্থ হয়ে লুকিয়ে গেছে | তাদের আর আস্তানা নেই | তাহলে তাদের পাবো কোথায়”? ফটকে বললো…”তাহলে তোর পোষা ভূত গুলো কোথায় আছে “? প্যাংলা একটু হেসে বললো…”ওই গুলো সব কাঁচের শিশিতে ভরে আমার ঝোলায় রেখেছি | কিন্তু তারাও খুব দূর্বল হয়ে পরেছে | মাঝে মাঝেই তারা নিষিদ্ধ আওয়াজ শুনে ভয়ে কুঁত কুঁত করছে” |
ফটকে বললো….”শোন আমি একটা ভূতের বাড়ির সন্ধান দিতে পারি | ওই বাড়ির মালিক বলেছে যদি কেউ ভূত তাড়িয়ে দিতে পারে তবে তাকে এক লক্ষ টাকা দেবে “| হ্যাংলা হিচকি তুলে বললো….”ক..ক..কত টাকা বললে ? এ..এ..এক লক্ষ” ! ! ফটকে বললো…”হ্যাঁরে ভাই | এক লক্ষ “|| ফটকের কথা শুনে হ্যাংলা আর প্যাংলা তার মুখের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে রইলো |
হ্যাংলা প্যাংলার কানে কানে ফিস ফিস করে বললো….”ভাই তোর বাপুতি বিদ্যেটা একবার প্রয়োগ করে দেখ | অনেক টাকার ব্যপার | যদি একবার পেয়ে যায় তাহলে নেশা করার কথা আর ভাবতে হবে না” | প্যাংলা হ্যাংলার কথা শুনে বললো…”বলছিস যখন তাহলে একবার দেখাই যাক” | বাবার ভূত তাড়ন বিদ্যের কিছুটা প্যাংলা শিখেছে | ঝাঁটা মেরে আর সর্ষে পোড়া দিয়ে ছোট খাটো হেতি পেতি ভূত তাড়ানোর মোটামুটি তার ক্ষমতা আছে | বেশ কয়েকটা ভূত তার হাতে বন্দী হয়ে আছে | কিন্তু ওই গুলো সব বাপের আমলের ভূত | প্যাংলার বাবা ওই ভূত গুলো কে বন্দী করেছিলো |
ফটকের কাছে ঠিকানাটা নিয়ে প্যাংলা আর হ্যাংলা মদ খেয়ে টলতে টলতে একটা অট্টালিকা বাড়ির সামনে এসে হাজির হলো | বাড়ির মালিক বাঁকাচাঁদ বাবু তাদের দেখেই ..রে..রে..করে তেড়ে এলো | চিৎকার করে বললো…”এই মাতালের বাচ্চারা তোদের এইখানে কি চাই”? প্যাংলা ঝাঁঝিয়ে উঠে বললো…”খবরদার এইসব বলবেন না | আমরা জাতে মাতাল হলে কি হবে | তালে কিন্তু ঠিক আছি | আর তুই তোকারি একদম করবেন না | ভস্ম করে দেবো “| বাঁকাচাঁদ বাবু একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো…”কে আপনারা”? হ্যাংলা প্যাংলার দিকে আঙ্গুল তুলে বলে উঠলো …”এ হলো ভূত তাড়ানোর এক্সপার্ট প্যংলা তান্ত্রিক | আর আমি তার চ্যালা হ্যাংলা সাধু” | বাঁকাচাঁদ বাবু গদগদ হয়ে বললো…”ও | তা আগে বলবেন তো ? দুঃখিত আপনাদের ঠিক আমি চিনতে পারি নি” |
প্যাংলা বাড়ির চারিদিকে তাকিয়ে বললো…”এই বাড়িতেই তাহলে ভূত আছে ” ? বাঁকাচাঁদ বাবু বললেন ….”না না এই বাড়িতে না | আমি একটা নতূন বাড়ি কিনেছি সেইখানেই ভূত আছে” | প্যাংলা বললো…”বটে | তা ভূত ওই বাড়িতে ঠিক কি অত্যাচার করছে”? বাঁকাচাঁদ বাবু একটু নরম সুর করে বললেন…”আর বলবেন না | সন্ধ্যে হলেই ছাদের উপর দুম দুম করে আওয়াজ হচ্ছে | সাথে সাথে মেয়েলি নাকি কন্ঠের চিৎকারের গালমন্দ” | আর তার সাথে পুরুষ কন্ঠের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার || হ্যাংলা চমকে উঠে বললো…”সে কি মশাই !! এতো মনে হয় কোন পেত্নী টেত্নীর কেস” |
বাঁকাচাঁদ বাবু বললেন…”তা তো জানি না | তবে সেই গাল মন্দের জ্বালায় কেউ তিষ্টোতে পারছে না” | প্যাংলা বললো…”বুঝলাম || এরপর ঝেড়ে কেশে বলুন তো দেখি !! ভূত তাড়িয়ে দিলে ঠিক কত টাকা দিবেন”? বাঁকাচাঁদ বাবু একটু বাঁকা হাসি হেসে বললেন….”কেন আমি তো আগেই ঘোষনা করেছি এক লক্ষ টাকা দেবো | আপনি ভূত তাড়িয়ে দেবেন | আর সাথে সাথে আমি চেক সাইন করে দেবো” | প্যাংলা একটু চোখ বড় বড় করে বললো…”আরে ধুরর মশাই আমি চেক টেক নিতে পারবো না | আমাকে নগদেই দিতে হবে | ব্যাঙ্কে টাকা রাখার মতো আমার ক্ষমতা নেই” | প্যাংলার কথা শুনেই বাঁকাচাঁদ বাবু বললেন….”তা কি করে সম্ভব”!! প্রধানমন্ত্রী তো টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে লেনদেন করতে বলেছেন” |
কথাটা শুনেই প্যাংলা তিড়িং করে উঠে বললো….”অত শত আমি বুঝি না | আমার নগদ চাই | দিতে পারলে বলুন | না হলে আমি চললাম | এই বলে প্যাংলা হ্যাংলা কে বললো….”চল ভাই “|| সাথে সাথে বাঁকাচাঁদ বাবু শশব্যস্ত হয়ে বললেন….”আহাহা ..করেন কি মশাই !! চলে যান কেনো ? ঠিক আছে আপনাকে আমি নগদ এক লক্ষ টাকাই দেবো” | বাঁকাচাঁদের কথা শুনে হ্যাংলা বলে উঠলো…”সে তো দেবেনই তার সাথে দু লিটার বাংলা আর দু লিটার রাম চাই” | বাঁকাচাঁদ বাবু মুচকি হেসে বললেন…সর্ব্বোনাশ || আপনারা দেখছি বাংলাতে রাম মিশিয়েই ছাড়বেন || সন্ধ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে | প্যাংলা ভূত বিতাড়ন করার সমস্ত কিছু জিনিস পত্র নিয়ে তৈরী | ভূত পেত্নী যায় থাক না কেনো সে মদের খালি বোতলে তাদের বন্দী করবে বলে ঠিক করেছে |
বাঁকাচাঁদ বাবু হ্যাংলার কথা মতো রাম আর বাংলা মদের দুটো করে চারটে এক লিটারের মদের বোতল দিয়ে তাদের বাড়িটা দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছে | তার মধ্যে দুটো বোতল এখনই খালি হয়ে গিয়েছে | প্যাংলা টলতে টলতে হ্যাংলা কে বললো…”শোন হ্যাংলা আমি ভূত কে মন্ত্র পড়ে ডাকছি | তুই একটা বোতলের ছিপি খুলে রেডি হয়ে থাক | আমি ভূত কে বোতলে ঢুকতে বললেই সে বোতলের ভিতরে ঢুকে পরবে | আর তুই তখনই ছিপিটা আটকে দিবি” | হ্যাংলা একটা খালি বোতলের ছিপি খুলে এক হাতে ধরে জড়ানো গলায় বললো…”তোর চিন্তা নেই | আমি রেডি | তুই ডাক ভূত কে” || প্যাংলা চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে ছড়া কেটে মন্ত্রোচ্চারণ করে বললো…..”ওম হর বর চর বর হ্লিং ক্লিং ফট / বাড়ির সব ভূত পেত্নী হাজির হো ঝটপট” || বলা মাত্রই বাড়ির ছাদে দুম দুম আওয়াজ শুরু হলো | হ্যাংলা বোতলের ছিপি খুলে রেডি | ভূত বোতলে ঢুকলেই সাথে সাথে ছিপি এঁটে দেবে |
কয়েক মূহুর্ত চলে গেলো | কোন কিছু হলো না | হঠাৎ দেখা গেলো একটা লোক হাতে বোতল নিয়ে টলতে টলতে হ্যাংলা প্যাংলার দিকে এগিয়ে আসছে | তাদের সামনে এসেই সে জড়ানো কন্ঠে বললো….”কি জ্বালা মাইরি || একটু নিরিবিলি তে মদ খাবো তার জো নেই | তা চাঁদুরা তোমরা আবার কোথা থেকে এলে”? ? প্যাংলা হুঙ্কার দিয়ে বললো….”খবরদার || কে তুমি”? ? সাথে সাথে লোকটা …”হোঃ..হোঃ..করে হেসে উঠে বললো….”বুঝেছি তোমাদের নেশা হয়েছে | আমাকে চিনতে পারলে না” !! প্যাংলা চিৎকার করে বললো….”না পারলাম না | কে তুমি”? লোকটা মুচকি হেসে বললো…”যাহ বাবা || যার জন্য ওই বাঁকাচাঁদ কালো টাকার লোভ দেখিয়ে তোমাদের এখানে পাঠালো তাকেই চিনতে পারছো না ? শোন শোন ওই বাঁকাচাঁদ কে বলে দেবে কালো টাকার গরম আমায় যেন না দেখায় | আমার কাছেও বিষ মদ খাওয়ার জন্যে সরকারের দেওয়া দু লাখ টাকা আছে” ||
আর সেটা বাঁকার মতো কালো নয় | পাক্কা সাদা “| প্যাংলা যেনো কিছু বুঝতে পারলো | তার শরীর দিয়ে ভয়ে দরদর করে ঘাম ঝড়তে লাগলো | হঠাৎ হ্যাংলা চিৎকার করে বললো….”ওরে প্যাংলা দেখ আমাদের মদের বোতল গুলো নেই” || লোকটা বিদ্ঘুটে অট্টহাসি হেসে বললো….”ওই গুলো তো আমার কাছে” | হ্যাংলা রেগে ধমক দিয়ে বললো…..”তোমারলজ্জা লাগে না | লোকের জিনিস চুরি করে খাও | আবার দাঁত কেলিয়ে হাসো “|| লোকটা কথা গুলো শুনেই আবার ….”হোঃ…হোঃ…করে হেসে উঠলো” | প্যাংলা হ্যাংলার গায়ে চিমটি কেটে ফিস ফিস করে বললো….”চুপকর…চুপকর” | লোকটার হাসির আওয়াজে বাড়িটা গম গম করতে লাগলো | প্যাংলার দিকে চেয়ে লোকটা বললো…”বল !! আমাকে কি জন্যে ডেকেছিস”?
হ্যাংলা দাঁত চিড়বিড় করে বললো….”কে তোমাকে ডেকেছে”? আমরা তো ভূত কে ডেকেছি | তুমি কি ভূত”? হ্যাংলার কথা গুলো শুনে লোকটা আবার …হোঃ…হোঃ..করে হেসে উঠলো | তারপর মুন্ডুটাকে দু হাতে করে খুলে কয়েকবার লোফালুফি করে বললো…”কি !! এবার কি মনে হচ্ছে” ?? হ্যাংলা লোকটার কান্ড দেখে …ভূ…ভূ..করে চোখ উল্টে ফেললো | প্যাংলা নিজেকে সংযত করে একটা খালি বোতল সামনে রেখে বললো….” তুমি তো দেখি খুবই মদ খাও | তা তুমি এই মদের বোতলের ভিতর ঢুকে দেখাতে পারবে”? প্যাংলার কথা শুনে কিছুক্ষণ লোকটা নিশ্চুপ হয়ে মিটি মিটি হাসতে লাগলো | তারপর বললো…”বটে | আমি এতো বড় শরীরে ওই বোতলটার ভেতর কিভাবে ঢুকবো ! আমাকে কি বোকা পাঁঠা পেয়েছো ? তুমি আগে ওই বোতলে ঢুকে দেখাও | তারপর আমি ঢুকবো” | প্যাংলা পরলো চরম বিরম্বনায় | সে তোঁতলা তে তোঁতলা তে বললো…”না মানে ইয়ে | তা কি করে সম্ভব”? লোকটা বাজখাঁই গলায় ধমকে বললো…”তবে !
আমি তাহলে কেমনে ঢুকবো? ইয়ার্কি পেয়েছো? শ্লা তোমাকে আমি ওই বোতলে ঢুকিয়েই ছাড়বো | বলো কোন দিক দিয়ে ঢুকবে ? নাক দিয়ে হ্যঁ নাক দিয়েই তোমাকে বোতলে ঢুকাবো” | এই বলে প্যাংলার নাকে মদের বোতলের মুখটা চেপে ধরলো | প্যাংলা পরিত্রাহী চিৎকার করে …বাঁচাও…বাঁচাও.. চিৎকার করতে লাগলো | আর ঠিক তক্ষুনি কারোর দৌড়ে আসার পায়ের শব্দ পাওয়া গেলো | হঠাৎ দেখা গেলো একজন মহিলা ঝাঁটা হাতে দাঁড়িয়ে আছে | রাগে গর গর করতে করতে নাকি কন্ঠে চিৎকার করতে করতে বললো এঁই যেঁ মিঁনসেঁ | সঁকাঁল থেঁকেঁ পাঁত্তাঁ নেঁই কেঁনোঁ ? যঁখঁন বেঁচেঁ ছিঁলিঁ তঁখঁন তোঁ সঁকাঁল বেঁলাঁই চাঁলের হাঁড়িতে লাঁথি মেঁরেঁ দেঁখেঁ নিঁতিঁস চাঁল আঁছে কিঁ নাঁ | সঁরকাঁর দুঁ টাঁকাঁ কেঁজিঁ চাঁলঁ দিঁতোঁ বঁলেঁই সাঁরাঁ দিঁন মঁদ গিঁলে বুঁলতিঁস |
এঁখঁনঁও সঁরকাঁর তোঁকেঁ সেঁই সুঁবিঁধেঁ দিঁয়ে রেঁখেঁছেঁ নাঁ কিঁ ? মঁরেঁ ভূঁত হঁয়েছিঁস জাঁনিঁস নাঁ সঁংসাঁরেঁর দিঁকেঁ নঁজঁর দিঁতে হঁবেঁ | তাঁ নাঁ তুঁই এঁখঁনঁও মঁদ গিঁলছিঁস | দাঁড়া তোঁকে দেঁখাঁচ্ছিঁ || এই বলে মহিলাটি নাকি গলায় প্রচন্ড রকমের গালি গালাজ করতে করতে ঝাঁটাই করে লোকটাকে পিটতে শুরু করলো | লোকটা মার সহ্য করতে না পেরে …”বউ ছেড়ে দে আমায় | ওরে বাবা রে গেছিরে বলে দৌড়তে লাগলো | আর তার পেছনে পেছনে ওই মহিলা ঝাঁটা মারতে মারতে দৌড়তে লাগলো | আর এই সুযোগে প্যাংলা সমস্ত কিছু গুটিয়ে নিয়ে হ্যংলার চোখে মুখে জল ছিটিয়ে হুঁশ ফিরিয়েই বললো….”ভাই তাড়াতাড়ি পালা | না হলে আর জীবন থাকবে না | এই বলে হ্যাংলার হাত ধরে প্যাংলা এক দৌড়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলো | তখনও নাকি কন্ঠের গালাগালির আওয়াজের সাথে …বাঁচাও…বাঁচাও…চিৎকার ভেসে আসছে |
বট গাছের তলায় প্যাংলা হ্যাংলা দুজনে বসে আছে | বেশ কিছুদিন তারা মদ খায় নি | তাদের একটা শিক্ষে হয়েছে | বউয়ের হাত থেকে কি কোথাও নিস্তার নেই ? শ্লা মরে ভূত হয়েও বউয়ের হতে ঝাঁটা খেতে হয় | নাঃ | সংসারটা একটু গুছিয়ে ভালো ভাবে করতে হবে | তাহলে আর কোন জ্বালা থাকবে না | এমন সময় খবর কাগজ হাতে ফটকে এসে উপস্থিত হলো | তাদের দেখেই বললো “কি রে তোদের কাজ সফল হলো ? বাঁকাচাঁদ বাবু টাকা দিলো” ? প্যাংলা বলে উঠলো আর টাকা | ওই টাকা আমাদের চাই না |
আমরা ভালো ভাবে গুছিয়ে সংসার করতে চাই” | প্যাংলার কথা শুনে ফটকে বলে উঠলো “সে কি রে ? এ যে দেখি ভূতের মুখে রাম নাম | ব্যপার খানা কি” ? পাশ থেকে হ্যাংলা বলে উঠলো সে তুমি যায় বলো | ভূত বলো বা রাম বলো | আমরা কিন্তু আর মদ মুখো হবো না” | হ্যাংলা প্যাংলার কাছে ফটকে সমস্ত কথা শুনে বলে উঠলো”বলিস কিরে ভাই ! মদের জন্য তাহলে ভূতের সংসারেও অশান্তি লেগে গিয়েছে”? হ্যাংলা প্যাংলা সমস্বরে বলে উঠলো “একদম” ||