আমাদের ছোট ফ্যামিলিতে আমি আম্মু আর আব্বু।এক মেয়ে থাকে কাজের জন্য।কলেজ,পড়াশুনা আর সকাল সকাল বাইরে হাটতে যাওয়া ছাড়া তেমন কোন কাজ নাই।সকালে উঠে হাটাহাটি, কলেজ,কলেজ থেকে ফিরে হালকা পাতলা পড়াশুনা করে সারাদিন বাসায় একা সময় কাটে।আব্বু অফিসের জন্য সপ্তাহের ছয়দিন ই বাইরে থাকে। আম্মুর সাথে আমার সম্পর্ক তেমন খোলামেলা না।তাই আমি একা থাকি।আম্মুও ব্যস্ত মানুষ। তাই দুজনের কথাবার্তা খুব কম হয়।
একদিন বিকালে বসে ফোনে দাবা খেলছি, আম্মু এসে পাশে বসলো।আমি একটু অবাক ই হলাম। এমন নরমালি হয় না তাই! আম্মু সাথে একটা ফটোএলবাম এনেছিল।ফোন টা হাত থেকে নিয়ে ফটোএলবাম টা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বল্লো দেখতো,ছোটবেলায় কত দুষ্টু ছিলি।আর এখন কথাই বলিস না! আমি একটু স্মিত হাসলাম। জিজ্ঞেস করতে চাইলাম আজ হঠাৎ ফটোএলবাম দেখাচ্ছে কেন,,কিন্তু কি যেন ভেবে আর জিজ্ঞেস করা হলো না। আনমনে সেটা নিয়ে ছবি গুলো দেখতে থাকলাম।
সবচেয়ে বেশি নজর কাড়লো আম্মুর একটা ছবি! হায়! এটা কি আম্মু ছিল! নিজের অজান্তেই আম্মুর দিকে তাকালাম।নাহ! আগের চেহারা আর বর্তমান চেহারায় কোন মিল নেই! আই মিন, আগে কত লম্বা চুল ছিল! সুন্দরী ছিল। আর এখন! ভাবতেই মন টা খারাপ হয়ে গেল। ভাবছি ইশ! আম্মুকে যদি আগের মতো সুন্দরী করে দিতে পারতাম! আম্মু পাশেই বসা ছিল।জিজ্ঞেস করলাম, নিজের যত্ন নাও না কেন? দেখোতো কি চেহারা বানিয়েছ।এমন কথা শুনে আম্মু আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলো। চোখ ভেজা।বুঝতে পারলাম আজ অনেক দিন পর একটা ঘুমন্ত সম্পর্ক জেগে উঠলো। আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম।
ইদানিং ভোররাত ৩ টা বাজতে না বাজতেই আমার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। এক বা দুইদিন হলে ব্যাপারটা নরমাল থাকতো কিন্তু টানা ৮ দিন!! তাও কাটায় কাটায় তিনটা?? স্ট্রেঞ্জ! আজ রাতে আবার ঘুম ভাঙায় বেশ বিরক্ত হলাম।ভাবলাম গিয়ে আম্মুর কাছে শুই।পরে ভাবলাম থাক। ডায়নিং রুমে যেতেই দেখলাম একটা বিড়াল টেবিলে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।একটু ভয় পেলাম।।পিছন ফিরে লাইট অন করে তাকাতেই দেখি সে গায়েব! ক্রিপি! নাহ! ব্যাপারটা ভাল্লাগলো না। আম্মুর কাছেই গিয়ে শুয়ে পড়ি। আম্মুর রুমে যেতেই দেখি আম্মু কাগজে কিছু লিখালিখি করছে। আমাকে দেখে একটু অবাক হলো। বল্লো কি ব্যাপার! এতো রাতে,,ভয় পেয়েছিস? আমি বললাম,হ্যা। একটা কালো বিড়াল ছিল টেবিলটায় লাইট অন করতেই উধাও! আম্মু হাসলো বল্লো আয় আজ এখানে শো। অবশ্য ভোর হয়েই গেছে।ভাবলাম কি লিখছিলো জানতে চাইবো। তারপর সেই চিন্তা বাদ দিয়ে আম্মুর পাশে শুয়ে পড়লাম।
কিছুদিন পর আবার সেই তিনটায় ঘুম ভাঙলো। আজ অবশ্য একটা আওয়াজ পেয়েই ভেঙেছে। উঠে সোফার রুমে গিয়ে দেখি উত্তর দিকের জানালাটা খোলা।লাগাতে যাবো এমন সময় আম্মু পিছন থেকে ডাক দিলো।ভয়ে চমকে উঠে পিছনে তাকিয়ে দেখি আম্মু হাসিমাখা মুখে দাঁড়িয়ে আছে। বল্লো এতো রাতে কি করছিস এখানে? বললাম কিছু নাহ।বিড়াল এসেছিল বোধ হয়। আম্মু বল্লো তুই ঘুমো,আমি লাগাচ্ছি।
আম্মুকে কেমন যেন লাগলো! মানে একটু অন্যরকম। তারপর থেকে ঘুমোনোর আগে সব জানালা আমি ঠিক করে লাগানো আছে কিনা চেক করে ঘুমাতাম।তাও মাঝে মাঝে রাতে শব্দ পেয়ে জেগে দেখতাম কোন না কোন রুমের জানালা খোলা। ভেরি স্ট্রেঞ্জ! ব্যাপারটা কি আম্মুকে জানাবো? নাহ। কলেজ পড়ুয়া মেয়ে হয়ে এসবে ভয় পাওয়া নিশ্চয় বাহাদুরি কোন কাজ না।তাই ব্যাপার টা ভোলার চেষ্টা করলাম।
একদিন রাত দুটায় জাগলাম। ওয়াশরুম যাবো।দেখলাম রিডিং রুমে লাইট জ্বলছে,নরমালি আব্বু ছুটিতে বাসায় এসে রিডিং রুমটায় সারাদিন কাটায়।কিন্তু আজ এই সময়ে! দরজার কাছে যেতেই দেখি এক লম্বা চুলওয়ালা মহিলা চেয়ারে বসে কিছু লিখছে! আই ওয়াজ শকড! ইনি কে! তাই তাড়াতাড়ি দরজার পিছে লুকিয়ে গেলাম। আবার ভালো করে দরজার পর্দা সড়িয়ে তাকাতেই দেখি আম্মু!! কিন্তু একটু আগেই যে একটা অন্য মহিলাকে দেখলাম!! ভয়ে ভাবলাম আম্মুর কাছে গিয়ে শুই।কিন্তু….