Revenge of Death

Revenge of Death

“”পর পর চারটা খুন, ভিন্ন ভিন্ন যায়গায়। খুনের পর তাদের লাশ পাওয়া যায় উলঙ্গ অবস্থায়। তাদের সাথে ছিলো না কিছুই, এখনও পর্যন্ত পুলিশ কিছুই বের করতে পারছে না শোনা যায়। কেস নাকি এখন সি আই ডি কে সপে দেওয়া হবে। নিজস্ব প্রতিবেদন জালাল উদ্দিন”” এই পত্রিকা ওয়ালারাও না, কিছু একটা পেলেই হেড লাইন বানিয়ে দেয়। আর পুলুশ না পুলিশ কি বলবো। কোন কেস সলভ করতে না পারলেই আমাদের ঘারে দিয়ে দেয়। ও হ্যা আমি একজন সি আই ডি অফিসার। নাম তো জানেন-ই।

পরিবার বলতে মা ছাড়া কেউ নেই। স্যার বড় স্যার আপনাকে ডাকতাছে” ব্যাস হয়ে গেলো, জুনিয়র এসে বলে গেলো স্যার ডাকছে। আমিও বুঝি না বাপু এই অফিসে কি আমি একাই আছি। মারাত্মক কোন কেস আসলেই তিনি আমাকে দেয়, সালায় রিটায়ার্ড করে না ক্যান বুঝি না। “মে আই কাম ইন স্যার” (মি) yes yes তোমাকেই তো, খুজতাছি। [মনে মনে: বলি দিবেন?] কি ভাবতেছো? কিছু না সার? আজকের পেপার পরেছো? কই নাতো (মিথ্যা) কি হইছে স্যার?

শোন নতুন কেস আসছে, আর আমি চাই সেটা তুমি-ই হ্যান্ডেল করো। কারন তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে যে,এক মাত্র তুমি-ই পারবে আর আর কি স্যার?? আর এই কেসটাতে আমার মেয়ে জান্নাত তোমাকে হেল্প করবে। [ ব্যাস হয়ে গেলো যেমন বাপ তার পাগোল মেয়ে, ঐ পাগোল রে নিয়া কেস সলভ করা লাগবে। কিছু বললে চাকরি যাওয়ার আশংকা। ধুর বাল। মনে মনে ] কি ব্যাপার সিয়াম চুপ হয়ে গেলে ক্যানো? কই নাতো? ঠিক আছে তাহলে কাল থেকেই কাজে লেগে পরো,, আমি তোমায় সব ডিটেলস পাঠিয়ে দিবো।।

আমাদের মত লোকদের এই এক জালা ভালো মত কাজ করলেও বিপদ না করলেও। যাই হোক কেস যখন নিয়েছি সলভ তো করবোই। কিন্তু প্রশ্ন “কে/কারা খুন করছে “? কেন করছে,, কিভাবে করছে।। যাই হোক সেটা পরে ভাবা যাবে কিন্তু এখন বাসায় যেতে “মা” একটু অসুস্থ তো তাই,,।। “কিরে কেমন আছিস”  বাসায় এসে রিতি মত আমি অবাক, কারন যেই বন্ধুর প্রায় এক বছর ধরে কোন খোজ খবর নেই সে আজ হঠাত করে বাসায় এসে হাজির। বাসায় ঢুকে দেখি আমার বন্ধু “সান্ত” এসে বসে আছে।

কিরে কথা বলতে আছিস না কেনো? কি করে বলবো, এক বছর পরে যদি কেউ এসে বলে, “কিরে কেমন আছিস” তখন কি করা উচিত তুই-ই বল।? আপাদত খাতির যত্ন কর, পরে কিছ করিস। সালা তোরে?? কই ছিলি হারামি তুই? সব-ই বলবো,। মাত্র আসছি, আর তুইও তো কেবল বাহির থেকে আসলি, একটু বিশ্রাম নে। হুম তাই ভালো, রাতে তোর ক্লাস নিচ্ছি? সান্ত আর আমি এক সাথেই লেখা পড়া শেষ করছি, আমি হইলাম সি আই ডি আর ও একটা ব্যাংকে জব করতো, কিন্তু হঠাত করে ও কই জানি উধাও হয়ে। আর বিগত এক বছরে ওর সাথে কোন যোগাযোগ-ই হয় নি। আর আজ সে কিনা একদম আমার বাসায় সো ফানি। যাই হোক আমার চিন্তা এখন এক্টাই, খুন গুলা কে করতাছে, কেন, কিভাবে?

“রাতে খাওয়ার পরে, আমি আর সান্ত ছাদে গেলাম। অনেক দিন পরে এক সাথে হলাম, তাই একটা না হলেই নয়। তা দোস্ত শুনলাম তোদের শহরের নাকি একের পর এক খুন হয়েই চলেছে? (সান্ত) আর বলিস না দোস্ত। কে জানে, কে/কারা খুন করতাছে,। সব ঝামেলা আমার মাথায় এসেই পরে।। বাদ দে,,। এখন বল তুই এতদিন কই ছিলি? আর বলিস না, ডাক্তার বলছিলো বায়ু পরিবর্তন করতে, আর সেই চক্করেই সিলেট গেছিলাম,,। আর সেখানে একটা মেয়ের চক্করে পরে, অনেক ঝামেলা।। হাহাহা , কি বলিস? । তা এখানে যে একটা ছিলো তার কি খবর ব্রেক আপ হইছে? ঘুম পাইছেরে পরে কথা বলি? ও সিউর,, তুই ঘুমা, আমার কিছু কাজ আছে। আমি পরে ঘুমাবো। আচ্ছা আমি গেলাম।

ওর কথা আমার ভালো মনে হলো না। কিছু একটা লুকাচ্ছে, নিশ্চই। যাই হোক সে পরে দেখা যাবে। আপাদত কেস নিয়ে ভাবি। ফাইল দেখতে দেখতে অনেক রাত হয়ে গেলো। প্রত্যেক নিহত ব্যাক্তির মধ্যে একটা মিল দেখছি সবাই-ই একই পার্টির লোক। এটা অবশ্য কোনন কারন বলে কেউই ধরবে না। কিন্তু নাই মার থেকে কানা মা ভালো। এটাকেই গুটি বানাতে হবে, কাজেই প্রথমে সবার বাড়ি যেতে হবে। কাল সকাল থেকেই কাজে লাগতে হবে। সকাল সকাল অফিসে চলে আসলাম। মায়ের জন্য বেশি চিন্তা করতে হবে না। কারন বাসায় তো সান্ত আছেই। স্যারের কাছ থেকে সকল পারমিশন নিয়ে কাজে লেগে পরলাম। সাথে স্যারের পাগল মাইয়া, রিফাত(আমার ফ্রেন্ড ও সহপাঠি), শাওন(জুনিয়র)।

এক এক করে সবার বাড়িতেই গেলাম, তেমন কোন সন্ধান পেলাম না,সবাই-ই অল্প বেতনের চাকরি করতো, তবে কমন ব্যাপার এটা যে, সবাই জনাব নাহিদুল ইসলাম এর লোক। ও হ্যা ইনি আমাদের শহরের একজন বড় নেতা কর্মি। এবং বর্তমান মেয়র এর ছেলে। লোক হিসেবে তেমন কোন শুনাম তার নেই। কেস্টা বার বার তার দিকেই কেনো ঘুরে যাচ্ছে? শাওন আমাকে জনাব নাহিদের সব খবরাখবর দিবে, পুরো নজরে রাখবে ওনাকে (মি) জি স্যার রিফাত তুই আমার সাথে চল আমি কি করবো?(জান্নাত) অফিসে গিয়ে ফাইল দেখো যাও(আমি) না আমিও যাবো আপনাদের সাথে। আমরা কাজে যাচ্ছি ।

তো আমি কি ঘুরতে যাইতে চাইছি? আব্বু বলছে আপনার প্রত্যেক্টা স্টেপ ফ্লো করতে। কি বিপদে ফালাই লা মাবুদ কি আর করার ওনাকে নিয়েই যেতে হলো। প্রথমে নাহদ সাহেব দেখা করতে চায় নি, কিন্তু সি আই ডি বলাতে। দেখা করতে বাধ্য হলো। “তো মি. নাহিদ আপনার কর্মিদের মৃত্যুর ব্যাপারে আপনার কি কিছু বলার আছে, কে/কারা করতে পারে এমনটা,? এটা তো সিম্পল ব্যাপারা, যেহেতু তাদের লাশ উলঙ্গ পাওয়া গেছে, তার মানে সব কিছু ছিন্তাই করা হয়েছে,। এটা তো সিম্পল।

নাহিদ সাহেব সব কিছু এত সহজ না। তাদের কাছে এমন কিছুই ছিলো না যেটা নিয়ে কেউ বড় লোক হবে। এটা হয়তো কোন রাজনইতিক ব্যাপার নতুবা কেউ বদলা নিচ্ছে,। ধুর মিয়া ফাও পেচাল মারেন ক্যা আমার সময় নাই, যান তো। নাহিদ বাবু, বদলার কথা শুনে কেমন একটা ঘাব্রে গেলো। তবে কি???? সব যায়গায় যেতে যেতে রাত হয়ে গেলো বাসায় এসে দেখি। সান্ত নেই। কই জানি যাচ্ছে, বলে মাকে যানিয়ে-ছে। কিন্তু ও কই যাবে। অনেক্ষন পর ছাদে কারো শব্দ পেলাম গিয়ে দেখি, সান্ত!! কিরে তুই নাকি কই গিয়েছিলি? হ্যা সিগারেট আনতে, সেটা কি আর আন্টিকে বলা যায় ( বলেই হেসে দিলো) ওর হাসি আজ আমার মনে ধরলো না। তুই উপরে কখন আসলি? তোর আসার আগেই তাহলে মাকে বলিস নি ক্যানো?

সাথে সিগারেট ছিলো তো তাই আর কি?? আচ্ছা নিচে আয়, খাবি আমি আর ওকে কিছু বললাম না। আমি নিশ্চিত ও আমাকে মিথ্যা বলতাছে। “পঞ্চম খুনের শিকার হলেন ভার্সিটি প্রফেসর রাকিবুল ইসলাম, এই খুনটিও ঠিক আগের মতই হয়েছে, ভীষন নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে, নিজস্ব প্রতিবেদন জালাল উদ্দিন।”” সকাল বেলা পেপার খুলতেই দেখি, আবারো খুন একই ভাবে। আর ইনি তো ভার্সিটির প্রফেসর। খুনটা হয়েছে কাল রাত্রে। সান্ত বেরিয়েছিলো কাল রাত্রে। একই সময়। কিছুই বোধ গম্য হচ্ছে না। আমি কিনা আমার বন্ধুকেই সন্দেহ করছি? । কিন্তু আমাদের যে আত্মিয়তা দেখলে চলে না।

অফিসে গিয়ে শাওন তোমাকে যা বলে ছিলাম। খোজ নিছো স্যার প্রথম চার জন মৃত ব্যাক্তি, মি. নাহিদের খাস লোক ছিলো। সব সময় তার সাথেই থাকতো। আর এই পাচ নাম্বার জন নাহিদের কাজিন হয়। আচ্ছা খাস লোক ছিলো মানে? মরার আগে ছিলো না? না স্যার। এক বছর আগে একটা ধর্ষনের মামলায় তাদের কে জড়ানো হয়ে ছিলো। যদিও তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রমান না থাকায় ছাড়া পেয়ে যায়। কিন্তু সেই থেকেই তারা আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু প্রফেসর কে কেনো??? এখানেই শেষ সিয়াম (রিফাত) মানে? সেই ধর্ষিতা মেয়ে টা যেই ভার্সিটির ছাত্রি ছিলো, সেই কলেজের প্রফেসর-ই কিন্তু গত রাতে মারা গেছে। কি বলিস?? তার মানে এখানে কেস দুটা না, একটা। শাওন ঐ কেসের ফাইল থেকে সাজেসটেড সবার নাম এবং ডিটেলস আমাকে দিবে।

রিফাত তুই মি. নাহিদের উপর কড়া পাহারা বসানোর ব্যাবস্থা কর। কেনো? আমার সন্দেহ ঠিক হইলে, সে খুনির পরবর্তি টার্গেট নাহিদ। আর আমি আসছি একটু আমার কাজ আছে। কোথায় যাস? বললাম না কাজ আছে, তোকে যা বলছি তাই কর। “আমার কেন যানি মনে হচ্ছে সান্ত এই সব খুনে ইনভলব আছে ” বাসায় এসে দেখি সান্ত নেই কোথায় গেছে মাকে বলে যায় নি, সেই সকালে বেরিয়ে ছে আর এখনও ফিরে নাই। এরি মধ্যে রিফাতের ফোন হ্যা বল কি খবর.। হ্যা শোন ঐ কেসের ফাইল্টা তো দেখলাম সাজেস্টেড লোক গুলার নাম নোট কর।

নোট কইররা আর কি হবে ক্যানো? যারা যারা সাজেস্টেড তাদের বলতে গেলে তো সবই মারা গেছে,। আর একজন আবার নিখোজ। মানে কিছুই তো বুঝলাম না। মানে বিগত কয়েক দিনে যাদের লাশ গুলা পাইছি তারাই সাজেসটেড। ওহ মাই গড। আর নিখোজ যে বললি? ঐ যে নাহিদ সাহেব ওহ আর পরিবার?? মেয়েটি নাকি অনাথ ছিলো, তবে? তবে! তবে কি?? আবির নামে নাকি কারো সাথে তার সম্পর্ক ছিলো।যেই প্রফেসর মারা গেছে ওনি বলেছিলেন।আবির নামে ছেলেটিই নাকি মেয়েটির খুন করে। সেই থেকেই ছেলেটির কোন খোজ পাওয়া যায় নি। আর তাই কেসটিও এত দিন বন্ধ ছিলো।

ওকে রাখ পরে ফোন দিবো, নাহিদের লোকেশন পেলে জানাস। এবার আমি ক্লিয়ার কারন সান্তরও আরেক নাম আবির আছে সেটা আমি যানি। তাহলে কি সান্তই?? বাসা থেকে বের হতে যাবো তখনই ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো, আমি সাধারনত ম্যাসেজ চেক করি না, কিন্তু এই ম্যাসেজটা একটা নাম্বার থেকে আসছে তাই পরলাম ম্যাসেজ কিরে আমায় নিশ্চই খুজতে ছিস। চিন্তা করিস না মাত্র একটা কাজ বাকি , তার পরেই আমি নিজে এসে ধরা দিবো। যানিস আজ আমি কেনো খুনি,। হাহাহা, জানিস না, খুব ভালোবাসতাম রে আমি “নেহাকে” ওকে না দেখলে আমার রাতে ঘুম হতো না। তুই তো জানিস আমার মা-বাবা কেউ নেই, জানিস ওর ও না কেউ নেই, সেই জন্যই আমরা ভালো বন্ধু হয়ে ছিলাম আর বন্ধুত্ব থেকেই ভালোবাসা।

আমরা ছিলাম একে অপরের প্রান। একদিন কথা না বললে শান্তি পেতাম না। তোর মনে আছে আমি বিকালে তোদের সাথে কিন্তু কোথাও যেতাম না। কারন ঐ সময়টা আমি নেহাকে দিতাম। আমার চাকরি পাওয়ার পরেই বিয়ে করার প্লান ছিলো, সব ঠিক, সেই দিন ওদের ভার্সিটিতে একটা প্রোগ্রাম ছিলো, কথা ছিলো আমিও যাবো কিন্তু যেতে যেতে অনেক দেরি করে ফেলি। গিয়ে আর আমি আমার নেহাকে পাই নিরে। ঐ শয়তান গুলা ছারে নি আমার নেহাকে, ঐ প্রফেসর সবটা জান্তো কিন্তু কোটে গিয়ে সে মিথ্যা শাক্ষি দেয়। তাও ওরেও পাঠিয়ে দিছি ” এবার নাহিদের পালা”” ম্যাসেজটা পরে খুব খারাপ লাগলো। আমরা অনেক ভালো বন্ধু ছিলাম কিন্তু ও আমাদের কাউকেই কিছু বলে নাই। এরি মধ্যে আবার শাওন ফোন দিছে। স্যার মি.নাহিদের লোকেশন পেয়ে গেছি। ওহ গুড, তাইলে গাড়ি নিয়ে বের হও আমি আসছি।

লোকেশন মত যায়গায় আসলাম উনি একটা জংগলের ভিতরে বাংলোতে পলাতক আছেন। আমাদের দেখে পালাতে গেলেন কিন্তু কেউ ওনার পায়ে গুলি করলো, কিন্তু আমাদের মধ্যে তো কেউ নয়, অন্য দিকে তাকিয়ে দেখি এটা তো সান্ত। সান্ত প্লিজ গুলি নামা, দেখ যা হওয়ার হয়েছে, ওর ব্যাবস্থা আইন নিবে। আরে রাখ তোর আইন, কোথায় ছিলো তোর আইন, সেদিন তো টাকার জোড়ে এই কু ার বাচ্চা বেচে গেছিলো, কিছুই তো করতে পারে নি, দেখ এবার আমি কথা দিচ্ছি, আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে ওর শাস্তির ব্যাবস্থা করবো, তুই যদি না মানিস তবে তোকে গুলি করতে বাধ্য হবো। মৃত্যুকে তো আমি ভয় পাই নারে।

বলেই সান্ত নাহিদের মাথায় গুলি করলো আর মুহুর্তের মধ্যে আমার ফোর্স সান্তর দেহো ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিলো। এন্ড দা কেস ইস ওভার। এই প্রথম কোন কেস সলভ করে আমি কাদলাম। কারোনটা তো জানা নেই। ভাবছি চাকরিটা আর করবো না। কিন্তু আমার যে বাসায় “মা” আছে। এই চাকরির উপার্জন থেকেই তো আমরা চলি, আমরা যে মধ্যবিত্ত।আমাদের ভালোবাসার মুল্য নেই, আমাদের কেউ খুন হলে তার বিচারও হয়না ঠিক মত। টাকার জোড়ের কাছে হেরে যায় আমাদের আকাঙ্ক্ষা, না পাই বিচার। আর এর থেকেই বেরিয়ে আসে সান্তর মত হাজারো খুনি।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত