জারাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ২১ দিন ধরে নিখোঁজ। বন্ধু, বান্ধব, আত্নিয়স্বজন সবখানে খোঁজ নেয়া হয়েছে কেউ জানে না জারা কোথায়। ২০ দিন আগে জারায়া গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল ঐ দিন সন্ধ্যার সময়ে প্রেমিক আলিফের হাত ধরে পালিয়ে গিয়েছে। ভাই বোনদের মধ্যে ছোট হবার কারনে জারা ছিল সবার মধ্য মনি। এদিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে জারার বাবা। লজ্জা, অপমান সইতে না পেরে ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন জাবেদিন আলী সাহেব।
জাবেদিন সাহেবর বন্ধুর ছেলে বুয়েট থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার পাত্ররের সাথে ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন।
বাড়ীর ছোট মেয়ের বিয়ে আয়োজনের কোন কমতি রাখেনি জারার পরিবার ঢাকা মেডিকেলের সহযোগী অধ্যক্ষ ইসমিতা জাহানের চেম্বারে বসে আছে মাহাদি হাসান। হাতে বড়সড় ধরনের ইনফেকশন হয়েছে ঘাঁ হয়ে হাতের ভিতরে অনেক অংশ পেকে গেছে প্রচন্ড যন্ত্রণায় পাগলের মত অবস্থা মাহাদির।
ইসমিতা জাহান– আপনাকে খুব পরিচিত মনে হচ্ছে কোথায় যেন দেখেছি। মাহাদি সাহেব আপনার হাতের এই অবস্থা কত দিন ধরে।
মাহাদি –সতের /আঠারো দিন হবে।ম্যাম আপনার সাথে আমার এই প্রথম দেখা আগে কখন দেখা হয়নি।
ইসমিতা– হাতের এই অবস্থা কিভাবে হল দেখেতো কামড়ের মত মনে হচ্ছে।
মাহাদি– পা স্লিপ করে লোহার উপর পড়ে গিয়েছিলাম তারপর থেকে হাতের এরকম অবস্থা।
ইসমিতা–আমার কিন্তু দেখে সেরকম মনে হচ্ছে না। দেখুন আমারা ডাক্তার আমাদের কাছে কোন কিছু লুকান ঠিক না তাতে বরং আপনার ই ক্ষতি হতে পারে। আপনার হাতে অনেক খানি পচন ধরে গেছে এতটাই খারাপ অবস্থা হাতটা কেঁটে ফেলা লাকদেও পাড়ে। না হলে সমস্ত শরীরলে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষের নখ, দাঁতে প্রচুর জীবাণু থাকে এই জীবাণুটা অতি দ্রুত ছড়িয়ে যায়। আসল সত্যটা আমাকে খুলে বলুন আপনার ই ভাল হবে।
মাহাদি– হাত কেঁটে ফেলা লাগবে কাঁদো কাঁদো গলায় কোন ভাবে কি সেভ করা যায় না ইসমিতা মাথে নাড়িয়ে না সম্মতি জানাল।
মাহাদি– আসলে ম্যাম কিভাবে বলি লজ্জার কথা। কিছুদিন হল নতুন বিয়ে করেছি আমায় ওয়াইফের বয়স খুব বেসি না ২৩ বছর হবে।সেক্স মোমেন্টে হাতে কামড় বসিয়ে দেয়।
ইসমিতা– খুবি ক্রিটিক্যাল অবস্থা। আপনি যদি ব্যস্ত না থাকেন অধ্যাপক স্যারের সাথে আলাপ করবো দেখি কিছু করা যায় কিনা না ম্যাম আমি ফ্রি আছি। ওকে স্যারকে তাহলে এখানে আসতে বলি। চা,কফি, কিছু খাবেন।
– কোল্ড কফি হলে ভাল হয়।
প্রায় ৪০ মিনিট থরে ডাঃ ইসমিতা এবং মাহাদি অনেক বিষয় নিয়ে গল্প করে যাচ্ছে। দরজা নক করে ভিতরে ঢুকলেন মেজর আরমান মির্জা ডাঃ ইসমিতার স্বামী সাথে আর তিন চার জন লোক। মাহাদি হাসানের কপাল বেয়ে বেয়ে ঘাম পরছে মাহাদি সাহেব ভয় পাচ্ছেন কেন ভয়ের কিছু নাই ওনারাই আপনার ট্রিটমেন্ট করবে। মিঃ মাহাদি হাসান আলিফ আমি শুধু ডাঃ ইসমিতা জাহান না আমার আর একটা পরিচয় আছে আমি জারার বড় বোন ইসমিতা জাহান জান্নাত। প্রথম দেখাতে চিনতে না পারলেও পড়ে ঠিকি চিনতে পেরেছি।
– আপনি জারার বড় বোন, জারা তো আমাকে বলেছে ওর পরিবারে আমাদের সম্পর্কের কথা কেউ জানেনা তার মান আমাকে মিথ্যা বোলেছে।
– আমার বোন ঠিকি বলেছিল আমার কেউ কিছু জানতাম না। বাসা থেকে যেদিন চলে যায় আমার ম্যাসেনজারে একটা ছবি, নাম আপনাকে ভালবাসে এটুকুই লেখা ছিল। আপনার সম্পর্কে আর কিছুই জানতাম না এই ২১ দিনে কতই না খুঁজেছি আপনাদের কে কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। আমার বোনটাকে কোথায় রেখেছেন? একদিন পরে…
অজানা–স্যার হারামজাদারে গরম পানির থেরাপি, বাঁশ ডলা সবইতো দিলাম কোন কিছুতে কাজ হচ্ছে না ও মুখ ই খুলছে না শালার গন্ডারের চামড়া ।
আরমান মির্জা — ডিম থেরাপির ব্যবস্থা কর আমি আসতেছি। স্যার আসতেছে তোরে আন্ডা থেরাপি দেবে আন্ডা থেরাপি কি জানিস। প্রথমে আন্ডা গরম পানিতে সিদ্ধ করতে হবে তারপরে তোকে ল্যাংটা করে গরম ডিমগুলা পা মধ্যে দিবে। রাশেদ ভাই ২ হালি ডিম সিদ্ধ দেন কিছুক্ষনের মধ্যে স্যার এসে পরবে।
আরমান মির্জা — সাউন্ড বন্ধ কর মাত্র তিনটাতেই কাজ হয়ে গেল.. বলা শুরু কর।
মাহাদি — আটমাস আগে জারার সাথে C U তে পরিচয় হয়। কিছুদিন পড়ে বুঝতে পারি ও আমার প্রতি দুর্বল আমি আর দেরি না করে প্রপোজ করি জারাও এক্সেপ্ট করে।
আটমাসের মধ্যে অনেক বার ফিজিক্যাল রিলেশনের কথা বলি কিন্তু ও রাজি হয় না। জারার এক কথা বিয়ের আগে এসব কিছুই করবে না। এক মাস আগে ও আমাকে ফোন দিয়ে জানায় বাসা থেকে বিয়ের জন্য ছেলে দেখতেছে। আমাকে বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে বলে আমি আর কোন যোগাযোগ করি নাই। যখন জানতে পারি জারার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ১২ তারিখে বিয়ে কথাটা শোনার পরে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি ৮ মাস ধরে ওর দেহটা ভোগ করার জন্য এত কিছু করলাম সে কিনা ২ দিন পরে অন্যের সাথে রাত কাটাবে অনেক কাঠখোড় পুড়িয়ে ওকে রাজি করি হলুদের দিন পালিয়ে জাবার জন্য। ১১ তারিখে জারাকে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবন আমাদের পুরান বাগান বাড়ীতে নিয়ে যাই। আমরা ৫ জন বন্ধু মিলে তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করি পড়ে গলা টিপে হত্যা করি।
আমি জানতাম আমার বন্ধুরা ছাড়া আমাদের রিলেশনের আর কেউ জানতো না। তার পরেও কোন রিস্ক নিতে চাইনি এসিড দিয়ে ওর মুখটা ঝলসে দিয়েছিলাম যেন কেউ চিনতে না পারে। প্রথমে ভেবেছিলাম লাশ নদীতে ফেলে দিব কিন্তু পরে আমাদের বাগান বাড়ির সামনে নদীর পাড়ে গর্ত করে পুঁতে ফেলি। লোকজনের বসবাস না থাকার কারনে কাজটা সহজে করে ফেলতে পেরেছিলাম। ঐ দিন আলিফ কে সাথে নিয়ে বান্দরবন চলে যায় আরমান মির্জা । ভোর রাতে নদীর পাড়ের গর্ত থেকে জারার লাশ উত্তোলন করে বালির মধ্যে রাখার কারনে লাশটা অনেকটাই অক্ষত অবস্থাতে থাকে। ওরা জারাকে এতটাই নির্মম ভাবে অত্যাচার করছিল কোন জানোয়ার ও মনে হয় এমটা করতে পাড়তো না।
জারার সমস্ত শরীরে কামড় আর সিগারেটে দাগ ছিল শুধু মুখ না সাথে লজ্জাস্থানও এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল সকালে ব্যস্ততার কারনে সংবাদপত্র পড়ার সময় পায়নি ইসমিতা দুপুরে লাঞ্চ করে পত্রিকার পাতা চোখ বুলাতে শুরু করে প্রধান শিরোনাম বান্দরবনে একটি বাগান বাড়িতে আগুন লেগে ৪ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে কিভাবে আগুন লেগেছে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি চার মাস পরে চারিদিকে পাখির কলরব বাহিরে ঠান্ডা হিমেল হাওয়া বইছে । তুরাগ নদীর পাড়ে মানুষের ভিড়
একটি গলিত লাশ পরে আছে প্রচন্ড গন্ধে নাক মুখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে সবাই লাশটির চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। ফল পচে গেলে ভিতরে যেমন পোকা ধরে লাশটির বিভিন্ন স্থানে সেরকম পোকা ধরেছে। লাশটি কার তা শনাক্ত করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে, লাশটির ডি এন এ টেষ্ট করান হবে। ব্রেকিং নিউজ টেলিভিশন খুলেই একটি নিউজ দেখা যাচ্ছে। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মাইনুল হাসানের কনিষ্ট পুত্র C U এর সাবেক ভিপি মাহাদি হাসান আলিফের গলীত লাশ পাওয়া গেছে।
আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অন্যায় কিন্তু সমাজের জানোয়ার, মানুষ নামের কীঁট পতঙ্গ মেরে ফেলা অন্যায় না অন্তত জারার মত অনেক জীবন বাঁচে যাবে। ঐ দিন জারার পরিবার কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়নি তারা বুঝতে পেরেছিল আলিফের হাত অনেক বড় লম্বা জেলখানাতে নিলেও ছাড়া পেয়ে যাবে। তার কুকর্ম চালিয়ে যেতে কোন আসুবিধা হবে না। জারা নামের মেয়েটার ধর্ষণের পরে খুন কেসটা চাপা পরে যাবে ক্ষমতার আড়ালে। আলিফ কে আটকিয়ে রেখেছিল একটি বদ্ধ ঘরে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মারবে বলে। ইসমিতা বুঝতে পেরেছিল হাতের ঘাঁটা বিশাক্ত পয়জনে ভরা আলিফের শরীরে ছড়াতে বেশি দিন সময় লাগবে না।
আমাদের দেশটিতে সাধারণ জনগনের আন্দোলনের মুখে পরে ধর্ষণকারি , খুনি সন্ত্রাসী গুলোকে আইনের আওতায় নেয়া হয়, ফাঁসির রায় ও দেয়া হয় কিন্তু আর কখন ফাঁসির রায় কার্যকর হয় না । বছর খানেকের মধ্যে ঘটনাটি মাটি চাঁপা পড়ে যায়। অপরাধী গুলো ক্ষমতার মাধ্যমে জেল থেকে বেরিয়ে আসে আবার শুরু করে নষ্টামি…