সকালে কুয়াশার মধ্যদিয়ে হাটতেছি, এমন সময় পিছন থেকে একটি মেয়ের কন্ঠ!!!
– আবীর ভাই….
– জ্বি???
– আমাকে চিনছেন?
– নাতো!
– ওই যে শপিংমলে-যে দেখা হইছিলো!
– ওহ্ আচ্ছা! তো কি চান?
– আপনার মোবাইলটা একটু দিবেন?
– কেন?
– আমার মোবাইলটা খুজেঁ পাচ্ছি না! তাই একটা কল দিব।
– আচ্ছা নিন।
চিনলাম না জানলাম না! কোথাথেকে একটা মেয়ে এসে আমার সাথে কথা বলে চলে গেল!!! আমি বোকার মত দাড়িয়ে রইলাম। রাত ১০টা! হঠাৎ করে আমার মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠলো! রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটি মেয়ের কন্ঠ!
– আপনি এতো বোকা আগে জানতাম না!
– কে আপনি? আমি মেঘা- ভোরবেলা যে আপনাকে বোকা বানিয়েছে!
– তো আবার ফোন দিছেন কেন?
– ওই মিয়া আপনার মুখে রসকষ কিছ্ছু নাই!? একটা মেয়ে নিজের ইচ্ছায় ফোন দিয়েছে! কোথায় একটু মিষ্টি করে কথা বলবেন! নাহ্, উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে যাচ্ছেন।
– আমি মিষ্টি করে কথা বলতে জানিনা।
– তাহলে কি জানেন?
– কিছুই জানিনা।
– বুদ্ধু কোথাকার!!!
বলেই মেয়েটা ফোন কেটে দিলো!! পড়ের দিন সেই রাস্তা দিয়ে হাটতেছি, এমন সময় আলাদিনের প্রদীপের জ্বিনের মত ওই মেয়েটা এসে হাজির। আজকে ওকে খুব সুন্দর লাগছে! আমার সামনে এসে দাঁড়ালো! বলতে লাগলো, – আচ্ছা আপনি এমন কেন?
– কেমন?
– অনুভূতিহীন! আমি একটু হেসে দিয়ে বললাম, অনুভূতিহীন মানুষ হয় নাকি?!?
– হয়! যার দৃষ্টান্ত আপনি নিজেই।
– কিভাবে বুঝলেন?
– এই’যে আমি আপনাকে এতো পছন্দ করি, ভালবাসি!
এই সহজ ব্যাপারটাও আপনি বুঝলেন না। কথাগুলো খুব সহজভাবেই বলে দিলো মেয়েটি, কিন্তু আমি নিরবে চলে এসেছি! কারন প্রেম, ভালবাসায় আমি বিশ্বাসী না। এরপর থেকে আর কোনদিন সেই রাস্তা দিয়ে যাইনি! ১ সপ্তাহ পর মায়ের ফোন…..
– আবীর বাবা ভালো আছিস?
– জ্বি মা, আমি ভালো! তুমি কেমন আছো?
– এইতো আছি কোনোরকম! আচ্ছা বাবা একটা কথা….
– কি কথা মা?
– তুই আগামীকাল একটু বাড়িতে আয়’তো!
– এখোনি বলো না!
– না! আগে বাড়িতে আয়, তারপর…..
একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি, আর সেখানেই থাকি। মায়ের কথামতো পড়ের দিন ঠিক সন্ধ্যা সময় বাড়িতে চলে গেলাম। রাত শেষে সকাল হলো। রান্নাঘরে মা অনেক ধরনের পিঠাপুলি বানাচ্ছে! আমি সেখানে বসে গরম গরম খাচ্ছি। তেলের মধ্যে পিঠা ছাড়তে ছাড়তে মা বললো, – আবীর বাবা, এবার একটা বিয়ে করা দরকার না? এই প্রথম মা আমাকে বিয়ের কথা বলছে। আমি একটু লজ্জা পেয়ে বললাম!
– কিযে বলোনা মা! আমার এখোনি বিয়ের বয়স হইছে নাকি?!! হেসে দিয়ে মা বললো, – তোর বাবা একটা মেয়েকে দেখেছে, আমিও পছন্দ করেছি! তুই কি বলিস?
– তোমাদের যা ভালো মনেহয় তাই করো মা।
– তা বললে’কি আর হয় বাবা?! তোর একটা পছন্দ- অপছন্দ আছেনা?! পছন্দের কেউ থাকলে বল! আমরা নির্দ্বিধায় মেনে নিবো। “আমার মা বাবার কোনো তুলনা হয় না।” আমি একটু মুচকি হেসে বললাম! – নাহ্ মা, আমার কোনো পছন্দ নেই। তোমাদের পছন্দেই আমার পছন্দ।
– তাহলে মেয়ের বাবাকে বলেদিই আগামীকাল আসতে!
– আগামীকাল কেন মা?!!
– আরে তোকে দেখতে আসবে না?
– ওহ্ আচ্ছা…..
মেয়ের বাবা মা আসলো কিন্তু মেয়ে আসলো না। যাইহোক আগামী শুক্রবার বিয়ের তারিখ ফাইনাল করা হলো।”লেখক কিন্তু বিয়ে করছে “!!! আজ আমার বিয়ে। সারাদিনের অনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১০টার পর একটু নিরবতা। আমি ভয়ে বাসরঘরে ঢুকছি না। বেলকোনিতে দাড়িয়ে আকাশ দেখছি! কিছুক্ষন পর সাহস করে ঢুকেই পড়লাম। নতুন বউ আমাকে সালাম করলো, তারপর বিছানায় বসে বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে গেলাম। এ’তো সেই মেয়ে, যে কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে আমাকে বোকা বানিয়েছিলো, যে আমাকে ভালবাসার কথা বলেছিলো। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, – মেঘা তুমি?!!!
– হুম আমি, কোনো সমস্যা?
আবীর- না, কোনো সমস্যা না। কিন্তু কিছুই বুঝতেছি না।
মেঘা- তাহলে শুন, তোমার সাথে যখন আমার বিয়ের কথা চলছিলো, তখন ভাবলাম, একটু পরীক্ষা করে দেখে নিই! কারন আজকালকার ছেলেগুলা’তো খুব বদ!!! তাই.
আবীর- তাহলে পরীক্ষায় কি আমি পাশ করেছি?
মেঘা- নাহ্! গোল্ডেন পেয়েছো!!!
আবীর- তাহলে এখন কি করতে হবে?
মেঘা- মিষ্টি খাওয়াতে হবে!
আবীর- আমি খাওয়াবো???
মেঘা- তাহলেকি আমি?!!
আবীর- হুম!
মেঘা- কেন?
আবীর- কারন আমি কষ্ট করে পাশ করেছি!
মেঘা- তাহলে কাছে এসো চোখ বন্ধ করেন আপনারা সবাই””
আবীর- কেন? মিষ্টি খাওয়াবো। অকৃত্রিম মিষ্টি! যা কোনো টাকা দিয়ে কেনা যায় না। বুঝলে ভবিষ্যতে এই মিষ্টি খেতে পারবেন! না বুঝলে তেতুলও কপালে জুটবে না। হাহাহাহাহহাহাহাহাহাহাহ ভাল থাকবেন সবাই ” আসলে আমার কোনো বিয়ে হই নাই। বসে বসে ভাবছিলাম।