দুদিন হলো স্কুলে ইন্টার স্কুল খেলা শুরু হয়েছে। খেলার প্র্যাকটিস চলছে স্কুল মাঠে। ছেলেরা মাঠে খুব সুন্দর বল খেলতেছে। নাজমুল তেমন খেলা না পারলেও নেমেছে। খেলতেছেও দারুন সবাই। খেলা চলছে এমন সময় নাজমুলের চোখ পড়েছে নীলার চোখে লজ্জ্বায় আর মুখ তুলতে পারছে কেউ ই। খেলার অর্ধটাইমে নাজমুল দেখল নীলা যেখানে বসে ছিল সেখানে নেই। দেখা যাচ্ছিল যে নীলা খালি পায়ে হেঁটে যেখানে সবার জুতা ছিল সেইদিকে যাচ্ছে।নাজমুল কিছুই বলতেছে না। শুধু মৃদু হাসছে। এটা কিন্তু নীলা দেখতে পায় নি।
খেয়াল করে দেখল নাজমুল সেদিন ৫০০ টাকা দিয়ে যে জুতাগুলো কিনেছে সেই জুতা গুলো নীলা পায় দিয়ে এক দৌড়ে যেখানে বসে ছিল সেখানে বান্ধবীদের পেছনে গিয়ে জুতা গুলো লুকিয়ে রাখল। নাজমুল মাঠের মধ্যে হেসেই ফেলেছে। তো তখন নাজমুল জোরে চিৎকার দিয়ে বলল. জুতা চোর জুতা চোর।নীলা ইতিমধ্যেই সেখান থেকে কেটে পড়ছে। নাজমুল জুতা গুলো নিতে যাওয়া মাত্রই সবাই দৌড়ে পালাল। সেখানে শুধু দাড়িয়ে আছে একটি মেয়ে মিলা নীলার বান্ধবী।
নাজমুল : সেদিন ৫০০ টাকা দিয়ে জুতা কিনেছি। এগুলো এখানে আনার মানে কি?
মিলা : জুতা গুলো খুব পছন্দ হয়েছে নীলার।
নাজমুল : পছন্দ হয়েছে ভালো কথা এগুলো আর নীলা পড়তে পারবে না।
মিলা : পড়ার জন্য নয়। ছিড়ে ফেলার জন্য.
নাজমুল : ১ সপ্তাহ হয় নি কিনছি জুতাগুলো চাইলেই ছিড়তে দিব আমি কি পাগল?
মিলা : পাগল হতে যাবেন কেন। দিন না জুতা গুলো একটু ছিড়ে দেই।( ইত্যিমধ্যেই জুতা গুলো পড়ে ফেলছে নাজমুল)
নাজমুল : আপনারা জুতা ছিড়তে পারবেন না বুঝতে পারছি ১০ মিনিট যাবৎ জুতা গুলো আপনাদের কাছে তাই কিছু করতে পারলেন না। এখন পারবেন না।
মিলা : আচ্ছা। সাহস থাকে তো দিয়েই দেখান।
নাজমুল : ৫০০ টাকা দিয়ে কিনছি। ছেড়ার জন্য না পায়ে দেয়ার জন্য।
মিলা : আপরি এত কৃপন কেন গো ভাই।
নাজমুল : ৫০০ টাকা। কোনো ভাবেই সম্ভব না।
মিলা : কৃপন ভাই আমাদের। ভাইয়া একটা বলি।
নাজমুল : হুমম।বলো?
মিলা : আমি বলব না নীলা বলবে।
নাজমুল : ভালো।
মিলা :পরে দেখা করবেন ছুটির পর তখন বলবে।
নাজমুল : আচ্ছা করব তা কোথায়?
মিলা : ওই পরিত্যক্ত রুম টায়।
নাজমুল : আচ্ছা।
এ কেমন মেয়ে এগুলো এত ঝগড়াটে কেন। এইসব ভাবছে নাজমুল। পরিত্যক্ত রুমে যাওয়ার আগে পরিচয় টা দিয়ে নেই আমি নাজমুল দশম শ্রেনিতে পড়ি আর নীলা নবম শ্রেনিতে পড়ে।
নাজমুল : বল কি বলবে তোমরা বল তাড়াতাড়ি ।
মিলা : আমি যাই তোরা কথা বল।
নীলা : এই যাসনে দাড়া বলছি।
মিলা : পরে আসব।
নীলা : আর এই যে মিষ্টার আপনি এখানে কি করছেন?
নাজমুল : ভাব নেওয়ার দরকার নাই। যা বলবেন বলুন তাড়াতাড়ি।
নীলা : শুনুন আপনাকে যে কারনে এখানে ডাকা হয়েছে আপনি না স্কুলে পার্ট কম নিবেন।
নাজমুল : না নিলে কি করবেন?
নীলা : খুন করে ফেলব একদম।
নাজমুল : জুতা চোর বলে কি?
নীলা : কি বললি তুই?
নাজমুল : জুতা চোর।
নীলা : তর ভয় করে না।
নাজমুল : কিসের ভয় করবে আমার।আমি তো কোনো কারন খুজে পাই না।
নীলা : তাহলে জোরে চিৎকার দেই?
নাজমুল : দিলে কি হবে?
নীলা : দিয়ে দেখাই?
নাজমুল : আচ্ছা।
নীলা : কে কোথায় আছো গো আমাকে বাচাও ( একটু জোরে চিৎকার করল।কেউ তবে শুনে নাই )
নাজমুল : এই চুপ চুপ একদম চুপ।
নীলা : কেন
নাজমুল : সরি আমার ভুল হইছে।
নীলা : তাহলে বলেন ভাব কম নিবেন।
নাজমুল : আমি ভাব বেশি নিলে আপনার সমস্যা কি?
নীলা : আছে।
নাজমুল : কি সমস্যা বলতে হবে না বললে ভাব বেশিই নিবো।
নীলা : আমি বলতে পারব না।
নাজমুল : কেন?
নীলা : লজ্জ্বা করে।
নাজমুল : কি এমন কথা বলতে লজ্জ্বা করে।
নীলা : পারব না বলতে আমি।( ইতিমধ্যে মিলা এসে উপস্থিত হলো)
মিলা : ভাইয়া আপনার মাথায় কি একটুও বুদ্ধি নাই।
নাজমুল : নাই তো।
মিলা : নীলা আাপনাকে ভালোবাসে। (দৌড়ে চলে গেল সেখান থেকে নীলা)
নাজমুল : কি! শুনতে পাই নাই।
মিলা : কানে সমস্যা আছে কি আপনার?
নাজমুল : জানা নেই আছে কি না।
মিলা : নীলা আপনাকে ভালোবাসে।
নাজমুল : ভালোবাসা আবার কি?
মিলা : ভাব নিতে নিষেধ করছে না, নীলা।
নাজমুল : হুমম। করছে নীলাকে ডেকে নিয়ে আসো যাও।
মিলা : আচ্ছা এক মিনিট দাড়াও তুমি।
নাজমুল : আচ্ছা।
মিলা : ভাই বলেন।
নাজমুল : কি বলব।
মিলা : আমি যেটা বললাম ওটার উত্তর দেন নীলাকে।
নাজমুল : উত্তর দিতে হলে যে নীলার বলতে হবে কথাটা আবার।
মিলা: বল নীলা বল।
নীলা : I Love You…….NAZMUL..
নাজমুল : কি!
নীলা : I Love you….
নাজমুল : তো আমি কি করব। আমি এসব বুঝি না।
নীলা : আমি বুঝিয়ে দিব।
নাজমুল : I Am Sorry.আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। ( নীলার চোখে পানি এসে গেছে)
নাজমুল : তোমাকে পরিক্ষা করলাম। আমি তোমাকে ভালোবাসি।
নীলা : তাহলে যে আরেক জনের কথা বল লা এখন।
নাজমুল : আরে না। আমিও তোমাকে ভালবাসি কিন্তু বলার মতো সাহস পাই নাই।
নীলা : কেন গো।
নাজমুল : যদি থাপ্পড় দাও।
নীলা : আমি জানি।
নাজমুল: তাহলে বলো আর কখনও জুতা চুরি করবা না।
নীলা : এখন জুতা চুরি করে কি করব। মনটাই তো চুরি করে ফেলেছি।