Story Breakup

Story Breakup

ল্যাপটপ দিয়েই ফেইসবুক ব্যবহার করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ সপ্ন কন্যা নামের আইডি থেকে মেসেজ আসলো। “হ্যাপিবার্ডে টু ইউ” সময়টা ছিলো ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ কিছুটা অবাক হয়ে মনে মনে বললাম, কি আজব ব্যাপার! আজ আমার জন্মদিন অথচ আমি নিজেরি কোনো খেয়াল নেই।

নিলয়- ধন্যবাদ আপনাকে।

নিলিমা- শুধুই ধন্যবাদ?

— মানে?

— না কিছু না ,এখন বলেন…কেমন আছেন.?

— জ্বী আলহামদুলিল্লাহ্। আপনি.?

— আমি ভালো নেই..।

— ও ঠিক আছে তাহলে..!

— আপনি তো খুব আজব মানুষ…!

– জ্বী আমি আবার কি করলাম আপনাকে.?

— একটি বারও তো জ্ঞিগাসা করলেন না ,আমি কেনো ভালো নেই?

— আপনি ভালো নেই তা জেনে আমি কি করবো…?

— কি করবো মানে.?

— আচ্ছা ঠিক আছে দরকার নেই।

— হুমমম বাই।

অতঃপর কিছু দিন ভালো যাচ্ছিল এরপর একটু অন লাইনে গেলাম হঠাৎ আবার নিলিমার মেসেজ আসে।

নিলিমা- কেমন আছেন.?

— ভালো আপনি.?

— জ্বী এতক্ষন ভালো ছিলামনা কিন্তু, এখন অনেক ভালো আছি।

— আচ্ছা তো এতক্ষন ভালো ছিলেন না কেনো.?

— আপনার জন্য.।

– কি.?

— বললাম না আপনার জন্য।

–আরে ,আমি কি করলাম আবার?

— অনেক কিছু করেছেন আপনি!

— যেমন.?

— আমি আপনাকে ভালবাসি!

— তো আমার মধ্যে আপনি কি পেলেন শুনি?

— ছাগলের ডিম আচ্ছা আপনার আগের নাম্বারটা অফ কেনো.?

— আমার আগের নাম্বার মানে.?

— আগের নাম্বার মানে ০১৭★★★★★★★★ ঐ টা..!

এখন আর আমার চিন্তে বাকি রইলোনা ,এই সেই নিলিমা যাকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম।
নিলিমা আর আমার প্রথম পরিচয় হয় সেই কলেজ লাইফে । কখন যে ওকে ভালবেসে ফেলি নিজেও জানতে পারেনি। হঠাৎ একদিন নিলিমা আমাকে ফোন করে বলে।

নিলিমা- হ্যালো নিলয়! তুমি আমাকে বিয়ে করতে পারবে?

নিলয়- হুমমম পারবো তো।

— আজকের মধ্যেই বিয়ে করতে পারবে?

—তুমি কি বলছো এই সব?

— হুমমম ঠিক বলছি।কারণ বাসা থেকে আমার বিয়ে ঠিক করছেন এই মাসের ১২ তারিখে।

— আচ্ছা ঠিক আছে।

তারপর আমরা দুজন প্ল্যান করলাম রাতে পালিয়ে যাবো । সেদিন আমি বাসস্টান্ডে সারারাত অপেক্ষা করি কিন্তু, নিলিমার সেদিন কোন দেখা পায়নি। প্রায় ২ বছর কোনো প্রকার যোগাযোগ হয়নি নিলিমার সাথে। অনেক দিন পর আবার নিলিমার সাথে কথা হচ্ছে ।

নিলিমা- এই কথা বলছোনা কেনো.?

নিলয়- হ্যা বলো.!

— আচ্ছা তুমি আমার সাথে আজ দেখা করতে পারবে? প্রথম যেখানে আমাকে প্রপোজ করেছিলে।

— এখন দেখা করে আর কি করবে?

–প্লিজ না করোনা তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে। অনেক রিকুয়েষ্ট করার পর রাজি হলাম। আমি সেখানে গিয়ে দেখি অনেক আগে থেকেই নিলিমা অপেক্ষা করছে।

নিলয়- হুম বলো কেনো ডেকেছো.?

নিলিমা- আচ্ছা আগে বলো তুমি কেমন আছো.?

— হুম অনেক ভালো আছি.! কেনো ডেকেছো আগে সেটা বলো?

— আচ্ছা নিলয় তুমি কি এখনো আমাকে আগের মত ভালোবাসো?

— সেইটা তুমি জেনে কি করবে?

–দরকার আছে, বলোনা।

— হুম বাসি আর সারাজীবন বেসেও যাবো কারণ, আমার ভালোবাসায় কোনো প্রকার ছলনা ছিলোনা।

— আচ্ছা এখন যদি আমি তোমার কাছে আমি চলে আসি।
তুমি কি ঠিক আগের মতো আমাকে ভালোবেসে তোমার কাছে টেনে নেবে?

— নেবো কিন্তু, তুমি সেদিন আসোনি কেনো?

— সেদিন তোমার সাথে পালাবো কথাটা আমার বাবা জেনে গিয়েছিলো। বাবা বলেছিলো তোমার সাথে যদি আমি কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখি তাহলে তোমাকে মেরে ফেলবে। তাই সেই দিন আর তোমার কাছে আসতে পারিনি।

—-ওহ। তো এখন এসে কি করবে?

— কারণ তোমাকে আমি ভালোবাসি।

— আ হা হা, ই হি হি হি, ও হো হো হো ভালোবাসা বাহ ভালো তো । যদি বাসতে তাহলে অন্য জনকে বিয়ে করলে কেনো.?

— না সেদিন আমার বিয়ে হয়নি। আমার বাবা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ঐ ছেলেটার আরো একটি বউ আছে…।

— তাহলে এত দিন আসোনি কেনো.?

— ভয় ছিলো যদি বাবা তোমাকে সত্যি মেরে ফেলে।

নিলিমার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আগের চেয়ে অনেকটা শুকিয়ে গেছে মেয়েটা ।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে হয়তো এতদিন আমার কথা চিন্তা করে কান্না করতে করতে হয়তো চোখের জলে বালিশ ভিজিয়েছে।

নিলয়- তুমি কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না তো.?

— না যাবো না!(নিলয় কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো)

— আরে পাগলি কান্না করছো কেনো.?

— হুম এইটা তো সুখের কান্না। তোমাকে এতদিন পর কাছে পাওয়ার সুখ আমার।

— ও তাই। এভাবে চলতে থাকলো ওদের বাকিটা জীবন।

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত