সিগারেটের ধোঁয়া

সিগারেটের ধোঁয়া

ছেলেটা ফেসবুকে ঢুকেই অবাক হয়ে গেলো! ! আজ এতো দিনপর সেই চিরোচেনা ব্লক করা id থেকে মেসেজ এসেছে। আজ এতো দিন পর কি মনে করে আবার মেসেজ দিলো মেয়েটা ।সেই চিন্তায় ছেলেটা অন্য মনস্ক ছিলো। হঠাৎ সেই id থেকে আবার মেসেজ আসলো।

মেয়ে -কেমন আছো?

ছেলে-ভালো, , , আপনি?

মেয়ে-আমিও ভালো, , , আপনি করে বলছো কেনো।

ছেলে- তো কি করে বলব।

মেয়ে- কেনো তুমি করে বলবা।

ছেলে- তুমি ডাকটা সবার জন্য না।

মেয়ে- ওওও।

কিছুখন অপেক্ষা। ছেলেটাও মেয়েটার মেসজের অপেক্ষা করছে। আর অপর পাশে মেয়েটাও ছেলেটার মেসেজার অপেক্ষা করছে।

মেয়ে- তো কি করছো।

ছেলে- তেমন কিছুনা ছাদে বসে আছি।, , আপনি?

মেয়ে- এই তো তোমার কথাই ভাবছি। ছাদে বসে আজও সিগরেট খাচ্ছো।

ছেলে- হু।

মেয়ে- তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে। তুমি কক্ষনো সিগরেট খাবেনা তাহলে কেনো খাচ্ছো। তুমি তোমার কথা রাখনি।

ছেলে- এই কথা রাখার কথাটা আপনার মুখে মানাই না।

মেয়ে- (চুপ)

ছেলে- তো এতো দিন পরে কি মনে করে আনব্লক করলেন?

মেয়ে- কিছু বলার ছিলো।

ছেলে- তারাতারি বলেন।

মেয়ে- এখনো কি আমার কথা ভাবো । আমাকে কি এখনো ভালোবাসো।

ছেলে- হ্যা অনেক ভালোবাসি তোমাকে । তোমার কথা এখনও সব সময় ভাবি ।মনের মাঝে এখনো তুমিই আছো। এখনো তোমাকে নিয়ে লিখতে ভালো লাগে। এখনো আড্ডার ফাকে বন্ধুদেরকে তোমার সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা মাঝে মাঝে ভুল করে বলে ফেলি। তখন সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। আগের স্মৃতি গুলো মনে করে এখনো রোজ রাতে বালিশ ভিজে। মেসেজ টা লিখে আর সেন্ড করা হলো না।। মেসেজ টা ডিলিট করে আবার নতুন করে লিখলো।

ছেলে- না আর তোমাকে ভালোবাসিনা।

মেয়ে- মিথ্যা বলছো?

ছেলে- আপনি যাই ভাবান না কেনো আমি এখন আর মিথ্যা বলিনা।

মেয়ে- যদি একটা সূযগ চাই । তবেকি তোমার জীবনে ফিরে আসার অনুমতি দেবে?

ছেলে- সেই জায়গাটা আর খালি নেই।

মেয়ে- মানে?

ছেলে- সেই জায়গাটা এখন অন্য কেউ নিয়ে নিয়েছে।

মেয়ে- ও কে সে?

ছেলে- আমার স্ত্রী ।

মেয়ে- ও। আচ্ছা সেকি আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে তোমাকে?

ছেলে- নিশ্চয় । কারণ সে আমার সাথে আপনার মতো ছলনা করে চলে জায়নি। সে সব সময় পাশে থাকে। আপনার সাথে যে সব স্বপ্ন গুলো দেখেছিলাম । সেই গুলো এখন সে পূরণ করে।

মেয়ে- ও আচ্ছা।

ছেলে- হু।

ছেলে-আচ্ছা আপনি তো একটা সুন্দর ভবিষ্যত এর জন্য আমাকে ছেরে চলে গেছিলেন । তবে আবার কেনো আমার কাছে ফিরতে চাইছেন? ?

মেয়ে- আমি বুঝতে পারিনি যে আমার সুন্দর ভবিষ্যত টা তুমিই ছিলে। কিন্তু যখন বুঝলাম তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে তাই না?

ছেলে- জ্বী। আচ্ছা আর কিছু বলবেন? আসলে অনেক রাত হয়ে ঘুম আসছে।

মেয়ে- একটা শেষ ইচ্ছে পূরণ করবা?

ছেলে- কি ?

মেয়ে- একবার তোমার সেই প্রিয় নামটা ধরে ডাকবে আমায়।

ছেলে- কেনো ? সেই নামটা ডাকলে তো আপনি রেগে যেতেন তবে আজ কেনো শুনতে চান সেই নামটা?

মেয়ে- এমনি তেই। খুব ইচ্ছে করছে নামটা তোমার থেকে শোনার। প্লিজ ডাকো না একবার।

ছেয়ে- সরি। পারবো না। ওই নামটা অন্য কাউকে উপহার হিসেবে দিয়ে দিয়েছি।

মেয়ে- ওওও।

ছেলে – আচ্ছা বাই। ভালো থাকেন। আর হয়তো কোনো দিন কথা হবেনা।

ছেলেটা মেসেজটা সেন্ড করেই ফেসবুক ডি এক্টিভেট করে দিলো। আজকের পর আর সে ফেসবুকে আসবে না। যখন আমার হাতে সময় ছিলো তখন আমাকে ছেরে চলে গেছিলে তুমি। আর আজ যখন ফিরে আসতে চাও তখন না আমার হাতে সময় আছে না আছে বেঁচে থাকার ইচ্ছে। তাই ইচ্ছে থাকা সত্তেও তোমাকে ফিরিয়ে আনতে পারলাম না। কারণ আজ যদি তোমাকে ফিরিয়ে আনি আমার জীবনে। তাহলে যখন আমাকে সারা জীবনের জন্য হারাবে তখন আরো বেশি কষ্ট পাবে তুমি। আর তোমার কষ্ট আমি আগেও সইতে পারতাম না। আর মরার পরেও পারবো না।

:- ছেলেটা সিগারেটের ধোঁয়া ওরাছে আর কথা গুলো মনে মনে ভাবছে। আসলে ছেলেটা এখনো বিয়ে করেনি। সে মিথ্যা বলল মেয়েটাকে। কারণ তার ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে। ছেলেটার হাতে সময় খুব কম। খুব তারাতারি সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে হারিয়ে যাবে ওই দূর আকাশে। তাইতো ইচ্ছে থাকা সত্বেও মেয়েটাকে আজ ফিরিয়ে নিতে পারলো না।

আর ফোনের অপর পাশে মেয়েটা ছেলেটার শেষ মেসেজটা দেখে চোখের জল ফেলছে। আর ভাবছে সেই দিন যদি ছেলেটা গরীব বলে ছেরেনা চলে যেতো এক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। তাহলে আজ সে কতই না সুখে থাকতো তারে ভালোবাসার মানুষটার সাথে। মেয়েটা ছেলেটাকে ছেরে জেয়ে অনেক ভালো থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সে পারেনি। সে ব্যর্থ হয়েছে ভালো থাকতে । তাইতো আজ আবার এতো দিন পর ছেলেটার জীবনে ফিরে আসতে চাইছে।

বিঃদ্র- সুন্দর ভবিষ্যত তো সবাই চাই। আর একটা সুন্দর ভবিষ্যতও সবারির প্রাপ্য। আমরা সবাই একটা সুন্দর ভবিষ্য এর জন্য এতো কষ্ট করে কাজ করি। তাই বলে সুন্দর ভবিষ্যৎ মানে তো এটা নই যে আপনার প্রিয় মানুষ টাকেই ছেড়ে চলে যেতে হবে. সেই প্রিয় মানুষটার সাথে থেকেও তো একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ বানানো যায়।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত