উপহার

উপহার

এখন বাজে রাত ১১ টা। ফোন অনবরত বেজেই যাচ্ছে। কি মুশকিল! সারাদিন অফিসের পর যখন শান্তির একটা ঘুম দিব সেই সময় এমন যন্ত্রণা মোটেও ভালো লাগছে না। চোখ বন্ধ রেখেই হাতড়ে হাতড়ে ফোন হাতে নিলাম।
একটা চোখ সামান্য একটু খুলে ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকালাম। বুঝতে পারলাম অফিসের বস কল করছেন।
এটা দেখা মাত্রই আর দশজন চাকুরিজীবির মত আমারও ঘুম হারাম হয়ে গেল।

আর কোন উপায় না পেয়ে বসের ফোন রিসিভ করলাম,ফোনের ওপাশ থেকে ভীত কন্ঠ ভেসে এলো, হ্যালো, জামিল সাহেব? জ্বি স্যার বলছি। আপনি এখনি আমার বাসায় চলে আসেন।আমার বাসায় ভয়ানক এক ঘটনা ঘটে গেছে। কি ঘটনা স্যার? আপনি আগে আসেন বাসায়। তারপর নিজেই দেখতে পাবেন। ফোন কেটে গেল। আমার মাথায় এখনো ঢুকছে না খন্দকার ঠিক কি বলল? “খন্দকার” আমার বসের নাম। সামনাসামনি তো নাম ধরে ডাকতে পারি না, তবে আমার ধারনা রেগে গেলে আড়ালে আবডালে সবাই তার বসকে নাম ধরেই ডাকে।

আমার পাশে আমার স্ত্রী ঘুমোচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে খুব শান্তির ঘুম। হয়ত মিষ্টি কোন স্বপ্ন দেখছে। ঘুমালে কেন জানি তনুকে দেখতে খুবই মায়াবী লাগে। আমার তনুর ঘুম ভাঙাতে ইচ্ছা হচ্ছে না। ভাবলাম নিশ্চুপে উঠে চলে যাব,তবে যাওয়ার আগে একটা চিরকুট লিখে যাব, তনু আমি জরুরি কাজে বসের বাসায় যাচ্ছি,তুমি দুশ্চিন্তা করো না। মাত্রই বিছানা ছেড়ে উঠেছি ,ঠিক তখনই তনু বলল, জামিল কোথাও যাচ্ছ? তুমি কখন উঠলে? উঠব আর কখন, ঘুমই আসছে না। কেন? কোন খারাপ স্বপ্ন দেখেছ ? না তেমন কিছু না। তবে কেন যেন মনে হচ্ছে তোমার সাথে অনেকদিন আমার দেখা হবে না।

কি যে বলো তুমি। এমন কিছুই হবে না। আচ্ছা আমি আসি। গিয়ে দেখি আমার জন্য কোন মহাকান্ড অপেক্ষা করছে। চা খেয়ে যাও। রাতের বেলা গাড়ি ড্রাইভ করবে। চা খেলে ঘুম আসবে না। তনু উঠে গিয়ে চা করে দিল। চা খেয়ে বেরিয়ে পরলাম। আমি গাড়ি ড্রাইভ করছি সাভারের উদ্দেশ্যে।ইংরেজিতে গাড়িকে আমরা বলি প্রাইভেট কার। আমরা কেন জানি বাংলা শব্দ গুলোকে বিলুপ্ত করে দিচ্ছি। এই যে আমি খন্দকার সাহেব তথা আমার বসকে “স্যার” সম্মোধোন করি। অথচ বাংলাতে একটা শব্দ আছে “জনাব”।

আমি ভাবলাম আমি খন্দকার সাহেবের বাসায় গিয়ে বলব ” জনাব কি কান্ড ঘটেছে বলুন”। একেবারে বাংলা শব্দের যথার্থ প্রয়োগ।আমার পরিচয় খুব ছোট আঙ্গিকে দেওয়া যাক। আমি শাহরিয়ার কবির জামিল।টেক্সটাইল ইনজিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে এখন খন্দকার ম্যানশন নামের প্রাইভেট কম্পানিতে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছি। বলা যায় আমার খুব ছোট সংসার। আমি আর আমার স্ত্রী। আমার স্ত্রীর পুরো নাম তাছরিন তনু। আমি অবশ্য তনু বলেই ডাকি। আমাদের বিয়ে হয়েছে ২ মাস হলো। কিন্তু অফিসের কাজের চাপে এখনো তনুকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় নি।

এটা ভাবলেই একটু মনটা খারাপ হয়ে যায়।তবে তনু কখনো এই ব্যাপারটা নিয়ে অভিযোগ করে নি। আমি ৪৫ মিনিটের মাঝেই সাভার এসে পৌঁছালাম। উত্তরা থেকে এই দূরত্ব যদি দিনের বেলায় পাড়ি দিতে হতো তবে ৩ ঘন্টা লেগে যেতো এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপলাম।সাথে সাথে খন্দকার সাহেব দরজা খুললেন। আমাকে দেখা মাত্রই বলা হলো, জামিল ভিতরে আসো। বিরাট কান্ড ঘটে গেছে। জ্বি জনাব। কি কান্ড বলুন? আর বলো না। আমার ছোট মেয়েটা দেখি ঘুমের মাঝে হাসে। আবার ঘুমের মাঝেই হেঁটে বেড়ায়। আমার তো মনে হয় জ্বীনের আছর লেগেছে।

খন্দকার সাহেব যে আমাকে এত রাতে উঠিয়ে এনে এমন একটা কথা বলবে আমি কল্পনাই করি নি। এই স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে কেউ জ্বীনের আছর কিভাবে বলতে পারে আমার জানা নেই। আমি নিজেকে স্বাভাবিক করলাম। তারপর বললাম, জনাব, আপনি হয়তো জানেন না এটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। অনেক মানুষ আছে যারা ঘুমের মাঝেই হাটে। কি বলো আমি তো জানি না। হ্যাঁ সত্যি বলছি। যাক বাঁচা গেল। আমি খুব ঘাবড়ে গেয়েছিলাম। থ্যাংকু। চা খাবে নাকি? না জনাব।আমি বরং আসি এখন। আচ্ছা জামিল শোন। তোমার কাল অফিস আসার প্রয়োজন নেই। তোমাকে পরশু কলকাতা যেতে হবে ১১ দিনের জন্য।কয়েকটা সেমিনার আছে,এটেন্ড করতে হবে। আমি কথাটা শুনে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। প্রশ্ন করলাম, জনাব আমাকেই যেতে হবে? হ্যাঁ, আমি ফাইনাল করে ফেলেছি। তোমার না করা ঠিক হবে না। জ্বি, আচ্ছা ঠিক আছে। আমি যাব। অনিচ্ছাসত্ত্বেও খন্দকার ব্যাটাকে হ্যাঁ বলতে হলো।

গাড়িতে এসে বসলাম। মনটা খারাপ হয়ে গেছে। পরশু তনুর জন্মদিন,অথচ আমি থাকতে পারব না। কেন জানি এই ব্যাস্ততাকে বিষাদ লাগছে। গাড়ির জানালা খুলে দিয়েছি। ঠান্ডা বাতাস এসে শরীরে লাগছে। এই ঠান্ডা বাতাসও মনকে শীতল করতে পারছে না। আমার কেন জানি খুব অসহায় লাগছে নিজেকে। যত সময় যাচ্ছে নিজের ইচ্ছাগুলো গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে। এর শেষ কি আদৌ হবে কি না কে জানে? বাসায় পৌঁছে গেলাম। কড়া নাড়তেই দরজা খুলে দিল তনু। বুঝলাম তনু জেগেই ছিল। সে একটি গল্পের বই পড়ছিল। এটি হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস। নাম “বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল”। ফ্রেশ হয়ে বেডরুমে ঢুকে ঘড়ি দেখলাম, ২ টা ১০ বাজে। আমি তনুকে বললাম, তনু তোমার কি খুব ঘুম পাচ্ছে? না, ঘুম পেলে কি তুমি বাসায় ডুকতে পারতে? হ্যাঁ তাই তো। চলো আমরা এখন আর না ঘুমাই। জেগে থেকে কি করবে? তোমার সাথে গল্প করব। অনেকদিন আমরা একসাথে গল্প করি না। কেমন যেন রোবট হয়ে যাচ্ছি। ঠিক আছে কফি করে আনছি। তারপর একসাথে গল্প করব।

তনু কফি করে আনতে গেল। আমি সোফায় বসে থাকলাম। আচ্ছা তনুকে কিভাবে কথাটা বলা যায়। ও নিশ্চয়ই অনেক মন খারাপ করবে। কিন্তু আমাকে বুঝতে দিবে না। কি অদ্ভুত ব্যাপার! এই মেয়েটা আমাকে কতই না ভালোবাসে। আচ্ছা তনুকে একটা চিরকুটে লিখে দিলে কেমন হয়। কঠিন কথা গুলো কেন জানি আমরা নিজের মুখে বলতে পারি না। পৃথিবীতে আরেকটি কঠিন কাজ হলো মানুষের আবদারকে প্রত্যাখান করা। আর ভালোবাসার মানুষের আবদার হলে তো কথাই নাই। এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম জানি না। যখন উঠলাম তখন সকাল হয়ে গিয়েছে। দেখলাম তনু আমার পাশে বসে আছে। আমি প্রশ্ন করলাম, তনু ঘুমাও নি তুমি? না। ঘুমাই নি। কেন?? তোমাকে দেখছিলাম। আমাকে দেখার কি আছে? আছে অনেক কিছু তুমি বুঝবে না। আমাকে বুঝিয়ে বললেই বুঝব। বল কি দেখে কি বুঝেছ তুমি? বুঝলাম তুমি কোন কিছু আমাকে বলতে চাচ্ছ কিন্তু পারছ না।

আমার মুখটা পাথর হয়ে গেল। শুনেছি ভালোবাসা মনের সাথে মনের যোগসূত্র সৃষ্টি করে। এটা কি তারই ফল?
তনুর সামনে নিজেকে ছোট বাচ্চাদের মত মনে হচ্ছিল। অথচ তনু আমার থেকে ৪ বছরের ছোট। কি বলব ভেবে পাচ্ছি না,তখন তনু আবার বলল, জামিল সাহেব কি ভাবছেন এত?? আমার কি মনে হয় জানো? কি? তোমাকে জ্বীনে আছর করেছে। কবিরাজ দেখাতে হবে। হিহিহি।

তনু হাসছে। কি মায়া ভরা হাসি। আমার সকল সুখ যেন এই হাসিতে লুকিয়ে আছে। ১১ টা দিন এই হাসি দেখতে পাব না ভেবেই বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। আমি মাথা নিচু করে বললাম, তনু আমি তোমার জন্মদিনে থাকতে পারব না। অফিসের কাজে কলকাতা যেতে হবে। তনু খুব স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করল, কতো দিনের জন্য? ১১ দিন। কবে যাবে? কালই যেতে হবে। আমি চুপ করে বসে রইলাম। সব কথা যেন হারিয়ে গেছে। তনু বলল, জামিল যাও ফ্রেশ হয়ে নাও,নাস্তা করবে। আমি কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।একেবারে গোসল সেড়ে যখন বের হলাম তখন আবিষ্কার করলাম তনু আমার ব্যাগ গুছিয়ে ফেলেছে।আমি বললাম, এখুনি বিদায় করে দিচ্ছ?

হ্যাঁ, কিছুটা সেইরকমই ভাবতে পার। হিহিহি। কি আর করা। তাহলেতো চলেই যেতে হবে। শোন জামিল,তোমার বসকে এখুনি বল ট্রেনে দুইটা সিট যেন বুকিং দেয়। তোমার পাশে যেন কোন মেয়ে বসতে না পারে। কেন। মেয়ে পাশে বসালে তো ভালো। সমস্যা কোথায়? তাই নাকি??তোমার জন্য আমি বয়েজ ট্রেন সার্ভিস চালু করব। এখন যাও জলদি তোমার অফিসে বলো। ঠিক আছে, বলছি।

আমি বারান্দায় চলে গেলাম। আকাশের দিকে তাকালাম। মৃদু হাসিতে মন থেকে বেড়িয়ে এলো তনু আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই কথাটা কেন জানি কখনো তনুকে সামনাসামনি বলা হয় নি। অনেক বেশি ভালোবাসা থাকলে হয়ত এমনি হয়। মাঝরাতে বুঝতে পারলাম,ঘুম আর আসবে না। কেন জানি মনে হলো তনুও জেগে আছে।আমি ডাকলাম, তনু জেগে আছো?

হুম। কিছু বলবে? না। কিছু না, এমনি। আমি কিছুক্ষন চুপ করে থাকলাম,মধ্যরাত পার হয়ে গেছে। তারমানে তনুর জন্মদিন আজ। আমি ফিসফিস করে বললাম, শুভ জন্মদিন তনু।এই দিনে তুমি এসেছ বলেই তুমি আমার হয়েছ। থ্যাংকু। আচ্ছা জামিল, তোমার জন্য সবথেকে বড় উপহার কি হতে পারে? আমার জন্য সবথেকে বড় উপহার তো তুমি। শোন,আমার এই জন্মদিনে আমিই তোমাকে একটা উপহার দিব। তোমার দিতে হবে না। তাই নাকি। কি উপহার?? just wait and see!!

আমাদের আর তেমন বিশেষ কথা হলো না।সকাল ৮ টা ১৫ তে আমার ট্রেন ছাড়বে।তনুকে বিদায় জানিয়ে স্টেশনে এসেছি মাত্র। তনুকে বলে এসেছি “আমি তোমাকে খুব মিস করব”। তনুর উত্তর ছিল খুব স্বাভাবিক ” চিন্তা করো না আমায় নিয়ে,সব ঠিক থাকবে”। আশা করছি ট্রেন সঠিক সময়ে চলে আসবে।ট্রেন ৫ মিনিট দেরিতে স্টেশনে চলে এলো।আমি ট্রেনে উঠে সিট খুঁজে পেতে বেগ পেতে হলো না। আমার সিট নাম্বার w-27. অর্থাৎ জানালার ধারে ২৭ নাম্বার সিট। তনু বলেছিল দুই সিট নিতে। কিন্তু এই কথা আমি অফিসে বলি নি। এরকম ইনফরমাল কথা অফিসে বলা যায় না। খন্দকার ব্যাটা যে ধরনের মানুষ তাকে বলার প্রশ্নই উঠে না।

আমার সামনের সিটে এক বৃদ্ধ লোক বসে আছে। তারপাশে বোরকা পড়া একজন মহিলা। খুব সম্ভবত বৃদ্ধ লোকটির স্ত্রী। আমার পাশে ছোট কম বয়সী এক ছেলে বসেছে।বয়স ১২ বা ১৪ হবে। ছেলেটির নাম অনিক।অনিক তার দাদু আর দাদীর সাথে কলকাতা বেড়াতে যাচ্ছে। যাত্রা বেশ ভালোই চলছিল,এমন সময় প্রথম বিড়ম্বনায় ফেলে দিল বৃদ্ধ লোকটির স্ত্রী। মহিলাটি আমার উপর পানি ফেলে দিয়েছেন।আমি বললাম, দয়া করে একটু সাবধানে পানি খান। এই কথা শুনেও যেন না শুনার ভান করে থাকলেন বৃদ্ধ মহিলা। সমস্যা আরও বাড়ল যখন বৃদ্ধ লোকটি চা খেতে গিয়ে আমার প্যাণ্টে চা ফেলে দিল। কি মুশকিলে পড়লাম রে বাবা!!

আমার কেন জানি মনে হলো তনুর অনেক মন খারাপ তাই এমনটা ঘটছে। এটা বোধহয় আমার শাস্তি। তনুকে কোন গিফট দিয়ে আসি নি। এখনকার ছেলেমেয়েদের জন্মদিন অবশ্য শুধু গিফটে আবদ্ধ। কিন্তু আমি এমনটা চাই নি। ভাবলাম কলকাতা থেকে ফিরে তনুর মন যে করেই হোক ভালো করতে হবে। তনুকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসব।
বিকাল ৫ টায় ট্রেন কলকাতা স্টেশনে এসে পৌঁছে গেল। আমি নেমে ভাবলাম স্টেশনে শেষপ্রান্তের দিকে যে চা এর দোকান আছে সেখানে গিয়ে এক কাপ চা খেয়ে নিব। খুব মাথা ধরেছে । আমি হাঁটতে হাঁটতে ফুটপাতের দিকে যেতে লাগলাম, আর মানুষের ভীর ধীরে ধীরে কমতে লাগল। যখন আমি স্টেশনের কর্নারের দিকের করিডোরে হাটছিলাম,তখন খেয়াল করলাম কেউ একজন আমাকে অনুসরণ করছে। পিছনে ফিরে অবাক হলাম। এতো সেই বোরকা পরা মহিলা তথা বৃদ্ধের স্ত্রী। আমি বিস্ময় নিয়ে বললাম, আপনি আমাকে অনুসরণ কেন করছেন? কোন উত্তর আসল না।আমি আবার ব্যার্থ চেষ্টা করলাম, আপনি কি হারিয়ে ফেলেছেন কাউকে? এবারও কোন উত্তর পেলাম না।

—আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?  মহিলাটি হ্যাসূচক মাথা নাড়ল। আমি বললাম কাকে? মেয়েটি আমার দিকে আঙুল তুলে ইঙ্গিত করল। এসব কি হচ্ছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।আমি বললাম আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে এই বলে চলে আসতে যাচ্ছি এমন সময় পিছন থেকে যে কন্ঠ ভেসে এলো তা আমার কান বিশ্বাস করতে পারছিল না।

জামিল সাহেব কোথায় চলে যাচ্ছেন?  আরে, কে আপনি বলুনতো। আমি আপনার জন্য আমি একটি উপহার এনেছি। দেখবেন না? কি বলছেন? কিসের উপহার? তখনি মেয়েটির মুখ যে কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল তা সরিয়ে দিল। আমি দেখতে পেলাম আমার তনু দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে। তনু হেসে বলল, এই নাও তোমার উপহার। তনু,তুমি কিভাবে আসলে এখানে? তোমার ইমেইল চেক করো। আমি ইমেইল চেক করলাম। জনাব খন্দকার সাহেব আমাকে লিখেছেন, “আমার কম্পানির সবথেকে স্কিলফুল মানুষের জন্য এই ছোট প্রচেষ্টা। এই ১১ দিন তোমার কোন কাজ নেই।

তোমাকে সানন্দে ছুটি দেওয়া হলো। তনুর সাথে আমি অফিস থেকে যোগাযোগ করে এসবের ব্যবস্থা করেছি। আমার পক্ষ থেকে এই হলো তোমার গিফট ” আমি কি বলব খুঁজে পেলাম না। এত ভালো সময় যে অপেক্ষা করবে আমার জন্য সত্যি ভাবি না। আসলে আমাদের কখনও হতাশ হওয়া উচিত না। কষ্টের সময় পার করার পর অবশ্যই সুখের সময় আসে। তনু বলল, জামিল সাহেব উপহার পছন্দ হয়েছে তো? আমি উত্তরে কিছুই বললাম না। শুধু তাকিয়ে থাকলাম তনুর চোখের দিকে। অনেক সময় মুখে কিছু বলতে হয় না। চোখ অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়। আমি জানি তনু আমার চোখের ভাষা পড়তে পেরেছে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত