– এখনো কি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে বকো?
– না।
– ফুস্কা পেলে ঝাপিয়ে পড়োনা?
– না।
– আঙুলে নেলপলিশ মাখতে গিয়ে ছড়িয়ে ফেলে আগের মতন চুল ছেড় না?
– না।
– মায়ের ভ্যানিটি হাতিয়ে টাকা মেরে দাও না?
– না।
– একপাশ করে ঐভাবে কেমন কেমন করে সিঁথি?
– না।
– এখনো কি এই হাসতে হাসতে হুট করে কেঁদে দাও ভীষণ?
– না।
– আকাশ তো নিশ্চয় আগের মতন ভালবাস?
– না।
– এখনো কি ইন্সোমনিয়াক?
– না।
– রবীন্দ্র সংগীত?
– না।
– আর্ট ফিল্ম?
– না। না। না। না। আগের কোনকিছুই আমি আর ভালবাসিনা। একফোটাও না।
– আর আমাকে?
– আমি ফোন রাখছি।
– ভালবাসো এখনো আমায়?
– মা ডাকছে।
– হ্যালো। কেমন গলা জড়ানোর আওয়াজ শুনলাম বোধয়৷
– তোমার কানে সমস্যা আগেই ছিল। কম শুনতে কিংবা বেশি।
– তুমি বলতে চাচ্ছ তুমি কাঁদছ না?
– আমার ঠ্যাকা খুব?
– একরোখামি গেল না?
– সেটা দেখেই মুগ্ধ হয়েছিলে। ভুলে গেছ?
– শুভ জন্মদিন শায়া।
– এভাবে আর প্রত্যেকবছর অভিনয় করে ফোন দিয়ে লোক দেখানো উইশ করার কোন কি দরকার আছে?
– কতদিন তোমাকে দেখিনা জানো?
– আমার দেখতে ইচ্ছে করেনা তোমাকে এক ফোটাও।
– আচ্ছা, এত এত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। হাইকোর্টের বছরের পর বছর পড়ে থাকা মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যায়৷ কিন্তু আমাদের দুজনের সমস্যাটা কেন মেটেনা?
– এই কথাগুলো আর ভাল লাগেনা এখন। আমি ফোনটা রাখি? মা ডাকছে। আমার কাজ আছে।
– বিয়ে করবেনা তুমি?
– প্লিজ, উদ্ভট প্রশ্নটা আর করবেনা আমাকে।
– এড়িয়ে যাচ্ছ?
– তুমি নিজে করেছ? করোনিতো। তবে আমাকে কেন জিজ্ঞাসা? ওহ বুঝেছি, আমি অন্য কাউকে বিয়ে করে নেয়ার পরের দিন আমাকে বেইমান বলে বিয়ে করে নেবার চিন্তা? তো করে ফেলনা। ধরে রাখেনিতো কেউ।
– আমার জন্যে এক ফোঁটা অপেক্ষা বেচে নেই তোমার?
– একদম না। মরে গেলেও না। তোমাকে আমার সহ্য হয়না, এক বিন্দুও না।
– শায়া।
– বলে ফেল শুনছি।
– বরফ গলে পানি হয়ে যায় একসময়। তোমার মন কি বরফের চেয়ে শক্ত? এত রুক্ষ?
– মেয়েদের মন থাকে প্রথমে পানির মতন নরম, শীতল। সেই মন কে অবহেলা দিয়ে দিয়ে তোমরা পুরুষরা রুক্ষ বানিয়ে দাও। একবার রুক্ষ হয়ে গেলে মন বরফ হয়ে যায়। যাকে বলে ড্রাই আইস।
– কিন্তু ড্রাই আইস ও তো গলে যায় একসময়।
– কিন্তু এই ড্রাই আইস তো কেবল পানি থেকে জন্মায়নি। তাতে যে মিশে আছে অনেক ইন্সোমনিয়াক রাতের চোখের জল।
– প্লিজ। ক্ষমা কর শায়া। ফিরে এসো। প্লিজ।
– আমি ফোন রাখছি। আর ফোন করবেনা।
– শায়া।
– প্লিজ। আমাকে একা ছেড়ে দাও।
– প্লিজ শায়া।
– পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর অমিমাংসিত শব্দের নাম কি জানো?
– কি?
– অভিমান।
– শায়া!!!!
– আমাকে তুমি অভিমানের অসুখ দিয়েছ। ভাল থেকো।
– হ্যালো শায়া। হ্যালো। শুনছ? হ্যালো। হ্যালো। হ্যালো। হ্যালো। আমি কাঁদছি শায়া। আমি খুব কাঁদছি। আমার বুকে তীব্র ব্যাথা হচ্ছে।