জীবনের পরিসীমা টা দেখা যায় না পরিমাপ করা যায় না তবুও চেষ্টা করা হয় শেষ টা দেখার…
-ভালবাসাটাও এর ব্যাতিক্রম নয় এটার কোন সীমা নেই কোন মাপ নেই….
-তবে জীবনের শেষ যেখানে সেখানে ভালবাসার শেষ না…অনেক সময় জীবনের শেষেই শুরু হয় ভালবাসা……
—-বেশিদিন না হবে ২/৩ বছর হবে বাসার পাশেই থাকতো শুভ্র নামের ছেলেটা।হ্যা দেখতে ছিলো ভালোই কিন্তু যেটা লক্ষণীয় ছিলো তা হলো ওর ব্যবহার টা খুব বেশি আন্তরিক না হলেও কেমন যেন একটা আন্তরিকতা ছিলো।ছেলেটাকে দেখতাম রোজ বিকালে বাইক নিয়ে বের হতো তারপর ৮/৯ টার দিকে বাসায় ফিরতো।ওর ফ্যামিলি বলতে ছিলো বাবা মা একটা ছোট বোন আর ওর দাদী।সবাই খুব ভাল ছিলো।একটা ভাল সম্পর্ক ছিলো ওদের সাথে আমাদের।
-ছেলেটাকে মনে মনে খুব ভাল লাগতো আমার কিন্তু কখনই বলা হয় নি কেননা আমাদের এলাকার ১০ টা ছেলে কে পছন্দ করা হলে ১/২ এ ও থাকবে।তাছাড়া সে তার মনে কোন শুভ্রী কে জায়গা দিয়ে রেখেছে কিনা তাও জানতাম না।কিন্তু ভাল লাগতো আর ও নিজেও বুঝতো যে আমার কাছে তাকে ভাল লাগে।
-প্রায়ই ছাদে উঠতাম বিকেল কাটানোর জন্য উঠলেও ইচ্ছে টা থাকতো,ইশ ওকে যদি একটাবার দেখতাম।অবশ্য মাঝে মাঝে সে ছাদে থাকতো তখন বেশ কথা হতো আমাদের।ভা ল লাগতো খুব উনার সাথে কথা বলতে।একটা সময় ভাল লাগাটা পরিনতি নিলো ভালবাসায় আমিও হয়তো এটাই চেয়েছিলাম।ভাল লাগতো ওর জন্য অযথা ছাদে অপেক্ষা করতে,ভালোই লাগতো ওকে ভালবাসতে…..
-যেদিন জানতে পারলাম সে একটা নতুন রিলেশনে গিয়েছে খুব বেশি কষ্ট হয়েছিলো আমার।অনেক দিন তো কথাও বলি নি।খুব রাগ হতো যখন দেখতাম রাত ১২/১ টা বাজে বারান্দায় বসে হেসে হেসে ফোনে কথা বলছে।কিন্তু তবুও দারিয়ে থাকতাম কারন ওইজে ভাল লাগতো…!মেয়েটার জন্য কখনো রাগ ছিলো না আমার কারন এই মেয়েটার জন্যই ওকে রোজ বেশ খানিকটা সময় হাসতে দেখতাম কষ্ট হলেও মেয়েটাকে ভাল্লাগতো আমার….
-তারপর অনেক দিন হঠাত করেই শুভ্র বারান্দায় আসা বন্ধ করে দিলো,ছাদে যায় না বাইক নিয়ে বের হয় না।শেষে আর টিকতে না পেরে আমি একদিন ওদের বাসায় গেলাম,সাথে আম্মুও গেলো।গেলাম আন্টির সাথে কিছুটা সময় কাটাতে কিন্তু আমার উদ্দেশ্য ছিলো ওকে।দেখবো যাই হোক,দেখলাম ঘরে শুয়ে আছে। আমাকে দেখেই কেমন একটা চমকে গেলো।সেদিন অনেক কথা বললাম হয়ত প্রথম বার আমি জানিও না আর কখনো এত কথা হবে কিনা তার সাথে।
-শুনলাম মেয়েটার সাথে ব্রেকাপ মনে মনে খুশি হতে পারলাম না কারন ব্রেকাপের পর শুভ্র কেমন জানি একটা হয়ে গিয়েছে এখন আর হাসিটা আগের মতো না কেমন একটা জোর জোর ভাব থাকে কথা বলার সময় কেমন একটা বিরক্তি ভাব থাকে হাসিটার মধ্যে।বাসায় ফেরার পর কিছুই ভালো লাগছিলো না আমার।শেষে সিদ্বান্ত নিলাম আমি উনাকে প্রপোজ করবো….
-২/৩ দিন পর সাহসে যদিও কুলায় না তাও বলে দিলাম,”হ্যা আমি তোমাকে ভালবাসি! সবচেয়ে বেশি না হলেও আমার মতো করে ভালবাসি তোমাকে,খুব বেশি না হলেও আমার সাধ্যের শেষ সীমানায় গিয়ে ভালবাসি তোমাকে….”আর বলতে পারলাম না ইচ্ছাকৃতই হয়তবা কেঁদে ফেললাম আমি কারন কিছু জানি না শুধু শুধুই কেঁদে ফেললাম….
-তারপর আমাকে রিফিউজ করে দিলো অবশ্য এটা জানাই ছিলো আমার তাইই কষ্টটা কম পেয়েছিলাম।নিজের মতো করেই ভালবাসছিলাম আমি তাকে।নিঃস্বার্থ ভালবাসা কি এটাই…?হয়তবা কিন্তু এখানে আমার স্বার্থ ছিল আমার ভাললাগা ডিপেন্ড করতো ওকে ভালবাসার মধ্যে…
-কিন্তু যেই কারনটা দেখিয়ে আমাকে রিফিউজ করলো সেটা মেনে নিতে পারলাম না শেষ পর্যন্ত আর সামলাতে পারলাম না নিজেকে।একটা মেয়ে ধোকা দিলে কি সব মেয়েই ধোকাবাজ হয়ে যায়. আসলে কি বিশ্বাস একজন ভাংগে আর বিশ্বাস উঠে যায় সবার থেকে।এমনি একটা কিছু ঘটেছিলো শুভ্র’র জীবনে।আর হয়তো এর মাঝেই পরিসমাপ্তি ছিলো আমার জীবনের……
-আমি তোমাকে অনেক ভালবেসেছি শুভ্র।হয়ত বলতে পারি নি।হয়ত সব কিছু করতে পারতাম না তোমার জন্য কিন্তু কখনোই হারাতে দিতাম না আমার মাঝে তোমাকে আমি।তুমিও একদিন আমার ভালবাসা বুঝবে যেদিন অন্যকারো মাঝে আমাকে খুজবে।
–আমি শুভ্র কখনোই ভাবতে পারি নি আমার হাতে কারো ডায়েরী থাকবে আর যেটা আমি বহুবার পড়ে বহুবার চোখ ভেঝাবো।কখনো ভাবিনি রূপা নামের এই মেয়েটি আমাকে এমন করে ভালবাসবে।সত্যি কখনো ভাবিনি আমারও একদিন এই মেয়েটির ভালবাসা পেতে খুব ইচ্ছে হবে,কখনো এই মেয়েটিকেও যে আমার ভালবাসতে ইচ্ছে হবে তা ভেবে দেখা হয় নি………
-কেউ ভালবাসলে তাকে ভালবাসার চেষ্টা করুন। না ভালবাসলেও তাকে অন্যের দোষে দোষারোপ করবেন না কারন অনেকেই হয়ত আপনাকে তাদের মতো করে খুব সুন্দর করে ভালবাসছে।জীবনে একটা অভিজ্ঞতা কে সব কিছুর সাথে তুলনা করবেন না।মনে রাখবেন যদি আপনি কাউকে মোনাজাতে চেয়ে না পেয়ে থাকেন তাহলে অন্য কেউ আছে যে তার মোনাজাতে আপনাকে চাইছে আর তার চাওয়ার জোর আপনার থেকে বেশি…………….!