বক্ষে আমার তৃষ্ণা

বক্ষে আমার তৃষ্ণা

মা যখন আমাকে রেখে মারা যায় আমার বয়স তখন চার কি পাঁচ। ছোট ভাইটা ছয় মাসের দুধের শিশু। তাই মা মারা গেলে কি হয় বুঝিনি তখন, বুঝেছিলাম কিছুদিন পর। প্রথম প্রথম মায়ের জন্য কাঁদতাম খুব। আমার চেয়ে বেশি কাঁদত ছোট ভাইটা। কান্না শুনে দৌড়ে আসতো বাবা, নানু, দাদু, মামা, খালা, ফুপু, চাচা অনেকেই। কিন্তু যার আসার কথা সেই আসতো না। মা, আমার মা আর আসতো না। আমাদের কান্না থামানোর জন্য মা আর বুকে জড়িয়ে নিতো না। আস্তে আস্তে বুঝতে পারছিলাম মা আর কখনো আসবে না।

আকাশের তারা হয়ে গেছে আমার মা। মৃত্যু কি জিনিস তা একটু একটু করে বুঝে আসছিলে। আমাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে অনেকদিন বাবা নানুর বাসায় ছিলেন। কিন্তু আর কত? বাবার চাকরি ছিলো, আমাদের সাজানো সংসার ছিলো শুধু মা ছিলো না। তাই বাবা আমাদের দুভাইকে নিয়ে ফেরত এলো নিজের সংসারে। সঙ্গী হলেন দাদা দাদী। নিজেদের সংসারে ফেরার মাস ছয়েকের মধ্যে বাবা বিয়ে করলেন। আমার ইয়াং বাবা আমাদের নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তাই বিয়ে করে ফেললেন। শুনেছি, মা মরে গেলে বাবা হয়ে যায় তালই। কথাটা কতখানি সত্যি তা আজ হারে হারে টের পাই। বিয়ের পরই সৎমা দাদা-দাদি কে গ্রামে ফেরত পাঠালেন। বললেন তার সংসার সে সামলে নেবে। আমাদের আর আমাদের মায়ের নিজের হাতে সাজানো সংসারে এলো আরেকজনের নিয়ন্ত্রণ।

শুনেছিলাম আমি নাকি প্রিম্যাচুউরড বেবি। সাত মাসে অনেক কমপ্লেক্সিটি নিয়ে জন্মেছিলাম। ইনকিউবেটরে ছিলাম নাকি মাসখানেক। এতটুকুন ছোট বাচ্চা আমাকে দেখে মা নাকি ভীষণ কেঁদেছিলেন। ইনকিউবেটর থেকে যখন মায়ের কোলে গেলাম তারপর থেকে শুরু হলো আমাকে নিয়ে মায়ের যুদ্ধ। এই ছোট্ট আমাকে বড় করার আপ্রান চেষ্টা। সারাদিন সারারাত আমাকে নিয়েই পরে থাকতেন মা। কিভাবে আমার স্বাস্থ্য ভালো করা যায় – এটাই যেন মায়ের একমাত্র পরীক্ষা। সারারাত জেগে থেকে আমাকে খাওয়াতেন, আমি যখনই কান্না করতাম। ফলাফল, মাস ছয়েকের মধ্যে আমি এতো মোটা হয়ে গেলাম যে আমাকে নাকি কেউ কোলে নিতে চাইতো না। আস্তে আস্তে আমি বড় হতো লাগলাম। ছোট ভাইটি এলো মায়ের পেটে। আমি নাকি সবসময় খুব জ্বালাতাম মাকে। মায়ের অসুস্থ অবস্থায় ও মায়ের বুকের উপর উঠে খুব দাপাদাপি করতাম।

তবুও মা উহ শব্দটাও উচ্চারণ করতো না। অন্যরা বকা দিলেও মা নাকি বারন করতো। বলতো-আমার বাবাটাকে তোমরা কিছু বলোনা। ও এখনো ছোট মানুষ, বড় হলে ঠিকই বুঝে যাবে। এভাবেই মায়ের ভালোবাসার ছায়াতলে চারটি বছর কাটিয়ে দিলাম। ছোটভাই জন্মের মাস দুয়েক পর থেকে মা অসুস্থ হয়ে গেলেন। শুধু বমি হয়,কিছু খেতে পারেন না। কত ডাক্তার, আর কত হাসপাতাল বদল হলো কিন্তু মায়ের অসুখটা কেউ ধরতে পারে না। সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করেও লাভ হয় না। ডাক্তাররা মায়ের আশা ছেড়ে দিলেন। বলে দিলেন, বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ। যতদিন বাঁচবে হাসপাতালেই থাকতে হবে। মাসছয়েক হাসপাতালে থেকে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে মা মারা গেলেন।শুনেছি মা অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন এই ছয় মাস। তার শরীরের এমন কোন জায়গা বাদ যায়নি ইনজেকশনের আঘাত থেকে। মারা যাওয়ার আগে আমাকে মা মাঝে মাঝে দেখতে চাইতো। বাবা আমাকে নিয়ে গেলেন একদিন।

সেদিন আমি মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলাম মায়ের বুকে। মায়ের বুকের গন্ধ নিলাম। কতোদিন পর মাকে দেখলাম! কিন্তু গন্ধ পেলাম কিনা জানিনা? কারন মায়ের বুকে তখন অনেক ফুটো,স্যালাইন চলতো, সেই সাথে মাঝে মাঝে ইনজেকশন। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা তবুও আমার মা সেই ব্যাথা সহ্য করে আমাকে বুকে আগলে রাখতেন ঐ সময়টুকু। বাবা নিতে চাইলেও দিতেন না। বলতেন- আহারে, আমার কলিজাটা, আর কয়েকদিন পর তো আমাকে পাবেনা। থাক একটু আমার বুকে থাক। হাসপাতালের ডাক্তার নার্সরা আমাদের মা ছেলেকে দেখে নাকি চোখ মুছতো। অথচ মা আমার ছোট ভাইকে নাকি কখনো দেখতে চাইতো না। বলতো, মায়া বাড়াতে চাই না। ওকে তো আমি মায়ের আদর দিতেই পারলাম না। আমি ঋনি থাকলাম ওর কাছে। মা হয়ে ওর জন্য কিছু করতে পারলাম না।

‘সৎমা’ শব্দটায় মা নামক পবিত্র শব্দের সাথে যে সৎ শব্দটা জুড়েছে। ওটাই মনেহয় মা শব্দটাকে কলুষিত করে দিয়েছে। মা চলে যাওয়ার কিছুদিন পর আমি মনেহয় বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষটি হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। বাবা মাঝে মাঝে ভালোবাসতেন আবার মাঝে মাঝে অবজ্ঞা অবহেলায় দূরে সরিয়ে দিতেন। তবুও দিনশেষে আমাদের দুভাইকে বুকে জড়িয়ে নিয়েই ঘুমাতেন। কিন্তু বিয়ের পর ওটুকুও করতেন না। বিয়ের পর থেকে বাবা বদলাচ্ছিলেন ধীরে ধীরে। আর কোনোদিন আমাদের দু’ভাই কে বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমায়নি বাবা। এতোদিন শুধু মা ছিলো না, বিয়ের পরে বাবা জীবত থেকেও আমাদের রইলো না। আমি বুঝে গেলাম ছোট ভাইটির আমি ছাড়া আর কেউ নেই এ পৃথিবীতে। তাই সময়ের আগে আগে আমিও বাচ্চামির খোলস ছেড়ে বড় হচ্ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম এ জগতে আমার আর ছোটভাইয়ের আপন আর কেউ রইলো না। ছোট ভাইটিকে আগলে রাখতাম সবসময়। আর বাবা তখন নতুন মাকে নিয়ে ব্যাস্ত।

আচ্ছা! মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা কি বলুন তো? আমি বলছি শুনুন। মানুষ হওয়ার সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা আমাদের খেতে হয়। পেটে খাবার না পড়লে আমরা বেঁচে থাকতে পারি না। এই পেটের দায়েই তো যুগে যুগে মানুষ মাথা নত করেছে বিভিন্ন অন্যায়ের সাথে। এই কথাটাও আমাদের সৎমা শিখিয়েছিলেন আমাদের। সকালে বাবা যখন খেতে বসতো আমাদেরকে ডাকতো খাওয়ার জন্য। কিন্তু মা বসতে দিতেন না। বাবাকে বলতো, তুমি সারাদিন খাটাখাটুনি করবা, তুমি শান্তিমতো খাওতো। ওরাতো বাসায়ই থাকবে। খাবেনে পরে। বাবা একথা শুনে আর উচ্চবাচ্য করতেন না। ওদিকে আমরা দুভাই তখন খিদের জ্বালায় পেট কামরে ধরে বসে আছি।সকালে পানি খেয়ে সেই খিদে নিবারনের চেষ্টা করতাম। ভাইটা আমার কান্নাকাটি শুরু করতো। মায়ের কানে সেই শব্দ যাওয়া মাত্রই হুঙ্কার ছাড়তেন। যাইহোক,বাবা চলে যাওয়ার অনেকক্ষণ পার হওয়ার পরও আমাদের খাওয়ার জন্য ডাক আসতো না।ভাইটি খিদের জ্বালায় এপাশ ওপাশ করতো। বাধ্য হয়ে আমি মাকে যেয়ে বলতাম, মা কিছু খেতে দেবেন?

আমাকে না দিলেও হবে ছোটকে কয়টা ভাত দেন। মা তখন একটুও রাগ হতেন না। শুধু বলতেন, তুমিও খাবা বাবা। শুধু এই কাজগুলো শেষ করো। থালাবাসন গুলো ধুয়ে ঘরটা ঝাড়ু দিয়ে তারপর দুভাই মিলে খাও। আমি মানা করবো না। আমি সানন্দে মেনে নেই। তবুও তো খাওয়া জুটবে পেটে? আমার বয়স তখন সাত কি আট। সৎমা আশার পর থেকেই আমাকে দিয়ে টুকটাক কাজ করাতেন। তাই সাত আটেই আমি ঘরকন্নার কাজগুলো বেশ করতে পারতাম। তো আমি সব কাজ শেষ করে ভাতের পাতিল নিয়ে বসলাম। ছোটভাই খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে ততক্ষনে। আমি ওকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে খেতে বসি।পাতিলে হাত দিলেই ভাত উঠে আসে না। হাতরে হাতরে পাতিলের তলায় কিছু ভাত পাওয়া গেলো। সেটা আমি খাবো না ভাই? দুজনের কারোরই পেট ভরবে না। আমি বাধ্য হয়ে আরো একবার মায়ের কাছেই যাই- মা, পাতিলে তো ভাত নেই। অল্প সামান্য আছে।
ওহ হো বাবা, ভুল হয়ে গেছে। আজ বেশি ভাত রাধিনি তো। আপাতত ঐটুকু খেয়ে নাও। দুপুরে না হয় একটু বেশি খেয়ে নিয়ো?

মায়ের সহজ সরল উত্তর। আমি আর কিছু বলি না। জানি বলে লাভ নেই। বললে যেটুকু ভাত কপালে জুটেছে সেটুকুও জুটবে না। তাই বাধ্য হয়ে ফিরে আসি। তলা নিঙরে ভাতটুকু ভর্তা আর ডাল দিয়ে চটকে ছোট ভাইকে খাইয়ে দিই। আর আমি পানি খেয়ে পেট ভরাই। মায়ের কথা ভেবে কান্না আসে। মা কি বুঝতে পেরেছিলেন যে, কোনো একদিন সে এই পৃথিবীতে থাকবে না। তার ছানাটা খাবারের জন্য কষ্ট পাবে। তাই মা আমাকে দিনরাত জেগে জেগে শুধু খাইয়ে গেছেন! আমি মনে মনে অস্ফুটে স্বরে মাকে ডেকে যেতাম, মা ওমা কই তুমি? আমাকে এট্টু ভাত খাওয়ায়ে দিয়ে যাও মা! খুব খিদা লাগছে মা! আচ্ছা! মা কি আমার ডাক শুনতে পেতো? আকাশের ওপারে কি আমার আওয়াজ মায়ের কাছে পৌঁছাতো? আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে?

এভাবেই দুঃখ কষ্টে দিনগুলো কেটে যাচ্ছিলো।স্কুল করে এসে ঘরের কাজ করতাম তারপর দিনশেষে কখনো একটু ভালো খাবার জুটতো কখনো জুটতো না। অল্পদিনেই আমার শরীরের হারগুলো দৃশ্যমান হলো, পেট ভিতরে চলে গেলো।আমাকে যে দেখতো সেই আফসোস করতো, আক্ষেপ করতো।মায়ের সাজানো সংসারে আমরা দু’ভাই অতিথির মতো ঘরের এককোনে পড়ে থাকলাম।

মাঝে মাঝেু নানুর বাসায় আমাদের দাওয়াত দেয়। সেদিন নানু আমাদের খাওয়ানোর জন্য অনেক অনেক কিছু রান্না করে কিন্তু আমি আর ভাই কিছু খেতে পারি না। কিভাবে পারবো? না খেতে খেতে পেটে চরা পরে গেছে যে! ভালো খাবার আমাদের পেটে রুচে না যে! নানু আমাদের অবস্থা দেখে আমাদের বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদেন। আমাদের তখন কান্নাও আসে না। এতোদিনের দুঃখ কষ্ট আমাদের পাথর বানিয়ে দিয়েছে। আমরা কাঁদিনা, কাঁদতে পারি না।এরমমধ্যে আমাদের সৎমা একটা ফুটফুটে ছোট ভাই জন্ম দিলেন। বাবার সে কি আদর ভাইটিকে কোলে নিয়ে? তাই দেখে প্রথমবারের মতো আমি কাঁদলাম। আচ্ছা! আমি যখন হয়েছিলাম, তখনও কি বাবা আমাকে কোলে নিয়ে এভাবে আদর করেছিলেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে আমার।

ভাই হওয়ার পর আমাদের কষ্ট আরো একটু বাড়লো। আগে বাবা মাঝে মাঝে আমাদের খোঁজ নিতেন এখন ওটুকু ও করেন না। আমরা দু ভাই খেলাম কি খেলাম না, স্কুলে গেলাম কিনা কোনো খোঁজ নিতেন না।সে তার নতুন সন্তান নিয়ে মহা ব্যাস্ত থাকতো। মায়ের মন পাওয়ার জন্য আমি সংসারের কাজে আরো মনোনিবেশ করলাম। মন পেলাম কিনা জানিনা কিন্তু কেউ বাসায় বেড়াতে এলে আমার খুব প্রশংসা করতেন। বলতেন, আমার আদিলটা খুব ভালো। আমাকে কোন কাজ করতে দেয় না। নিজে নিজেই সব কাজ করে। আমার কোন বুয়াও রাখতে হয় না! মায়ের প্রশংসা শুনে বেড়াতে আসা মানুষটি হয়তো আমার দিকে ছলছল চোখে গভীর মায়া নিয়ে তাকাতেন। মনে মনে হয়তো বলতেন, আহারে মা মরা এতিম বাচ্চাটা।

এভাবেই দিনগুলো কাটছিলো। স্কুলে যেতাম, স্কুল সেরে এসো বাকি সময়টুকু মন দিয়ে কাজ করতাম আর রাতে পড়তে বসতাম। দিনে পড়তে বসার কোনো উপায় ছিলো না। আমি যখনই পড়তে বসতাম মা আমাকে ডেকে এটা ওটা কাজ ধরিয়ে দিতেন। যখন কোন কাজ থাকতো না তখন ছোট ভাইকে কোলে নিতে বলতেন। আমি ভাইটিকে ভালেই বাসতাম। হাজার হোক রক্তের একটা টান থেকে যায়। আমার আপন ছোটটা খুব জেদি আর দুষ্টু হয়েছিলো। ও মাঝে মাঝেই ধরে ধরে পিচ্চিটাকে মেরে দিতো। মা তার ঝাল তুলতেন ওকে বাথরুমে আটকে রেখে। তারপর বাবা এলে বাবার কাছে বিচার দিয়ে মার খাওয়াতেন আচ্ছা মতো। আমি ঠেকাতে যেতাম বলে আমার পিঠেও পড়তো দুচার ঘা।

আমি ক্লাস সিক্সে থাকাকালীন মায়ের আবারও একটা ছেলে হলো। বাবার খুব মন খারাপ হয়েছিলো সেবার। বাবার যে একটা মেয়ের খুব শখ! তখন আমি ভেবেছিলাম, আমি কেন মেয়ে হলাম না। তাহলে হয়তো বাবা আমায় একটু ভালোবাসা দিতো! আমাদের খাওয়া দাওয়ার ভাগ আরো বাড়লো। পরিমাণে আরো কমলো। ছোট ভাই দুটো বড় হচ্ছিল আর বুঝতে পারছিলো ঔ সংসারে আমরা উচ্ছিষ্ট। তাই তারাও তাদের মায়ের মতো আমাদের দুভাইকে কাজের অর্ডার করতো। ছোটটা গোয়ার ছিলো তাই শুনতো না। ওরা তো মায়েরই ছেলে তাই বাবাকে বানিয়ে বানিয়ে কথা লাগাতে ছারতো না। ছোট তাই এই জীবনভর শুধু বাবার মারই খেয়ে গেলো। আমার অবশ্য অতো কিছু মনে হয় না। যে আমাকে যা করতে বলে আমি তাই করি। দেখতে দেখতে আমি এসএসসি, এইচএসসি পাশ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। আজ আমার ক্লাসের প্রথমদিন।

আমি মাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে বের হলাম ক্লাসের উদ্দেশ্যে। মা এবারও আমার মাথায় হাত রাখলেন না। তবুও আমি হাল ছারবো না। মনে আছে প্রতিবার পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে আমি মাকে সালাম করে গেছি। মা আমার মাথায় কখনও হাত রাখেনি। তবুও আমি কখনো হাল ছেড়ে দেইনি। সৎমাকে আমি সারাজীবনে মা বলেই ডেকে এসেছি। হাজারো অত্যাচারে সেই ডাক কখনে থামিয়ে দেইনি। এই আশায় আছি, কোনো একদিন মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেন। কপালে চুমু দিয়ে বাবা বলে ডেকে বুকে জড়িয়ে নেবেন আমার মায়ের মতো করে। আমার তৃষ্ণার্ত বুক জুড়িয়ে যাবে। আমার বুকে মায়ের ভালোবাসার জন্য আজন্ম যে হাহাকার তা একদিন দূর হবে। আমি যে এই আশায়ই আছি!

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত