—-মা, তোমার ব্যাটাকে আজ একটা মেয়ের সাথে রিকশায় করে যেতে দেখেছি ৷ তোমার ছেলে মেয়েটার কাঁধে হাত রেখেছিল ৷ এই বয়সে সে প্রেম করুক আর লেখাপড়া ভাতে সিদ্ধ করে খাক!
—-আম্মু, তোমার মেয়ে আস্ত একটা মিথ্যুক! আমি জীবনেও আজ রিকশায় চড়িনি ৷ তাছাড়া রিকশায় চড়লে আমার বমি আসে, তাই রিকশাতে চড়িনা ৷
—-মা, বাঁদরটার কান টাইনা ছিঁড়মু নাকি? আমার কিন্তু মিথ্যা কথা একদম সহ্য হয়না ৷ ও কিভাবে আমার মুখের সামনে মিথ্যা বলে!
—-আম্মু, আমি কারো সাথে রিকশাতে ঘুরিও নি ৷ কারো সাথে প্রেমও করছিনা ৷ আমি যা বলছি সেটা মোটেও মিথ্যা না ৷ একটা গোপন সত্য শোনো আম্মু, তোমার মেয়ে সাজু ভাইয়ের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করছে সেটা ধরে ফেলেছি ৷ এখন সে নিজের দোষ ঢাকতে আমার নামে মিথ্যাচার করছে!
—-রাফাত থাপ্পর খাবি? আমি কার সাথে প্রেম করি সেটা তুই বলার কে?
—-আমিও কার সাথে রিকশায় ঘুরি সেটা তোর বলতে হবে কেন?
—-দেখছো মা, তোমার ছেলে কলেজে ভর্তি হতে না হতেই প্রেম করা শুরু করে দিয়েছে ৷ দেখবে এইচএসসি পরীক্ষায় সবগুলো সাবজেক্টে ফেল করছে সে!
—-চুপ কর ৷ ফেল করলে করবো ৷
তাতে তোর কি?
—-আব্বা আসুক বাসায়, তোকে সাইজ কেমনে করতে হয় দেখাবো!
—-আব্বু আসলে আমাকে মাইর দেওয়া তো দূর আরো খুশি হবে যখন শুনবে যে আমি একজনের সাথে প্রেম করছি ৷
—-তারমানে তুই সত্যিই প্রেম করছিস?
—-ইয়েস! সবাই করে, আমি বাদ থাকবো কেন? তবে ভাবিস না আমি যেন তেন মেয়ের সাথে প্রেম করতেছি না ৷ মেয়েটা যেমন সুন্দরী তেমনি মেধাবী ৷ আর ওর বাবা খুব বড়লোক ৷ আর তুই তো বাজে চরিত্রের একটা কাল্লু পোলার সাথে সম্পর্ক করছিস ৷ পুরা একটা বদ লোক সে!
—-চুপ কর!
—-আপু আমাকে সাবধান না করে নিজে সাবধান হ ৷ সাজু মোটেও ভাল ছেলে না ৷ কয়দিন পরই টের পাবি!
—-বলছি না চুপ থাকতে?
আম্মু এতক্ষণ চুপ থেকে আমাদের ভাই বোনের ঝগড়া শুনছিল ৷ এবার নিরবতা ভেঙ্গে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—-কি রে, তোরা কি শুরু করেছিস? আক্কেল বুদ্ধি সব কি বানের জলে ভাসিয়ে দিয়ে আসছিস? মায়ের সামনে কি সব বিষয় নিয়ে ঝগড়া করছিস হুহ? আর তানিয়া, তুমি প্রেম করো আর যাই করো বিয়ে তোমার বাবার পছন্দমত হবে ৷ সে তোমার জন্য পাত্র দেখছে ৷ তাই উল্টাপাল্টা কাজ করোনা ৷ পরে পস্তাতে হবে ৷ বলে দিলাম ৷ আর নবাবজাদা হাত পা একটু বড় হয়েছে এতেই প্রেম করার ইচ্ছা জেগে গেল? তোমার বাবা আসুক, হাত পা যেন না ভাঙ্গে?
আম্মুকে জোরালো কন্ঠে বললাম,
—-আম্মু তুমিও দেখছি আপুর মত কথা বলছো ৷ তোমার মেয়ে যা বললো তাই কি বিশ্বাস করবে? রিকশায় করে আমার ক্লাসমেটের সাথে একটা জায়গায় গেছিলাম এতেই প্রেম হয়ে গেল? আশ্চর্য!
—তার মানে তুই প্রেম করছিস না? কিন্তু একটু আগে যে বললি?
—-ওটা তো তোমার মেয়ের ক্যাচালের জন্য জিদে বলছি ৷
—-বেঁচে গেলি!
আপু আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো এরপর ভেংচি কেটে চলে গেল!
৭দিন পরঃ
আমার ৫০০ টাকা লাগবে ৷ বন্ধুর থেকে ধার নিয়েছিলাম ৷ ওর আজকে টাকাটা লাগবে ৷ কিন্তু আমার নিকট কোনো টাকা নাই ৷ এখন একটাই উপায় আপুর থেকে টাকা চাওয়া ৷ কিন্তু আপুর সাথে ঝগড়া লেগেই আছে ৷ তার কাছে টাকা চাইলে কি দিবে? দেয় না দেয় আগে তো চাইতে হবে ৷ আপুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ৷ আপু বিছানায় শুয়ে হাঁটুর উপর পা তুলে হুমায়ূন আহমেদের একটা উপন্যাস পড়ছিল ৷ অনুরোধের স্বরে আপুকে বললাম,
—-আপু ও আপু, আমাকে ৫০০ টা টাকা দিবি?
আপুর চোখে চশমা ছিল ৷ চশমাটা খুলে আমাকে কেমন কেমন করে দেখছিল ৷ তারপর বিদ্রুপের স্বরে বলল,
—-তুই না কালই বললি আমাকে তোর কোনো দরকারে লাগবে না? এখন টাকা চাইতে আসছিস কেন?
—-এত কথা বলিস না তো ৷ টাকা থাকলে দে, নইলে গেলাম ৷
—-যা টাকা নাই ৷ থাকলেও দিতাম না ৷
—-সত্যিই টাকা নাই?
—-ফেক্সিলোড করবো সেই টাকাও নাই ৷
—-বুঝছি ৷ টাকাটা যদি সাজু চাইতো তাহলে খুশিতে গদগদ হয়ে টাকা দিয়ে দিতি!
—-যা তো সামনে থেকে ৷ পড়তে দে!
—-টাকাটা তাহলে দিবিনা?
—-নাই টাকা ৷
—-আচ্ছা থাক লাগবেনা!
মন খারাপ করে আপুর রুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম ৷ আর মনে মনে বললাম আপু আমাদের ঝগড়াটাকে বোধহয় সিরিয়াসলি নিয়েছে ৷ তাই হয়তো এখনো রেগে আছে আমার উপর!
১ঘন্টা পর আমার বন্ধু ফোন দিয়ে বলল,
—-দোস্ত টাকাটা পেয়ে গেছি ৷ তোর বোন টাকাটা বিকাশে পাঠিয়ে দিয়েছে!
আপু আমার বন্ধুকে টাকাটা দিয়ে দিয়েছে শুনে মনটা প্রশান্তিতে ভরে উঠলো ৷ আপুর প্রতি ভালবাসা বেড়ে গেলো ৷ উচ্ছ্বসিত মন নিয়ে আপুর রুমে গেলাম ৷ আপু আয়নার সামনে বসে মাথার চুল আচড়াচ্ছিল ৷ ধীরস্থির ভাবে তার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম ৷ এরপর খপ করে আপুর চোখ চেপে ধরলাম ৷ আপু চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—-বাঁদর! চোখ চেপে ধরেছিস কেন? ছাড়! বাঁদরামী তোর দিন দিন বেড়ে চলছে!
আমি অবাক হয়ে বললাম,
—-এত সহজে কেমনে বুঝলি যে আমিই তোর চোখ চেপে ধরেছি?
—-গাধা, বাসায় এখন আম্মা আর তুই ছাড়া আর কে আছে? অাম্মা আমার সাথে মজা করবে কি কারণে? চোখ ধরলে তুই ই ধরবি ৷
—-তাও ঠিক ৷ আপু তোকে থ্যাংকস টাকাটা দেবার জন্য!
—-হয়েছে এত ধন্যবাদ দিতে হবেনা ৷ এমন ভাবে বলছিস যেনো আমি অচেনা কেউ, আর তোকে টাকা দিয়ে হেল্প করছি!
—-না না সেজন্য না ৷ তুই যেরকম ভাবে রেগে ছিলি আমার উপর তাতে মনে হয়েছিল তুই কিছুতেই টাকাটা দিবিনা ৷
—-ওহ তাইতো, আমি তো ভুলেই গেছিলাম তোর সাথে ঝগড়া চলছে ৷ যা, আমার রুম থেকে বেড়িয়ে যা ৷ তুই না বলেছিস আমার রুমে ভুলেও আসবি না ৷ এখন এসেছিস কেন?
—-আরো বেশি করে আসবো ৷ আমি নজরদারীতে রাখবো তোকে ৷ সাজুর বাচ্চা তোকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ভ করে কিনা এটা দেখতে!
—-আবারো সাজুকে নিয়ে লাগলি? আর কোনো টপিক পাস না কথা বলার? যা রুম থেকে বেড়িয়ে যা!
পিছন থেকে আপুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
—- মিষ্টি বোনটার ভাল মন্দ দেখার অধিকার আমার আছে ৷ আমি কিছুতে সাজুর মত ফালতু লোকের সাথে সম্পর্ক মেনে নিবোনা ৷ আমি তোর চেয়ে যতই ছোট হই না কেন ভাল মন্দ বোঝার জ্ঞান আমার আছে!
—-অনেক কথা বলছিস, এবার যা ৷ আমি মার্কেটে যাবো, শপিং করবো ৷ এখন আমি ড্রেস চেঞ্জ করবো যা তুই!,
—-আমিও মার্কেট যাবো ৷ আমার একটা টিশার্ট কেনা দরকার ৷ টাকা হাতে নেই , তুই কিনে দিবি!
—-আচ্ছা ঠিক আছে!
মার্কেটে এসে পৌঁছেছি ৷ অাপু কসমেটিক্সের দোকানে ঢুকলো প্রথমে ৷ যে দোকানে দাঁড়ালাম সেখান থেকে পূর্ব দিকে তাকালাম৷ তাকিয়ে দেখি সাজুও আসছে ৷ মনে মনে বললাম পিসটা এখানে কি করে? আপুর সাথে দেখা করতে এলো নাকি? সাজুর দিকে নজর রাখছিলাম ৷ কিছুক্ষণ পর দেখলাম সে একটা মেয়ের হাত ধরলো ৷ এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠলাম ৷ পিসটা দেখি আরেকটা মেয়ে নিয়ে ঘুরছে ৷ আপুর কাঁধে হাত দিয়ে নিচুস্বরে বললাম,
—-পূর্ব দিকে তাকাও, তাড়াতাড়ি ৷
অাপু পূর্ব দিকে তাকাতেই শক খেলো বলে মনে হলো ৷ মুহূর্তে তার হাস্যজ্জ্বল মুখটা ফ্যাকাশে রুপ নিলো এবং বিষাদময় চেহারাটা দৃশ্যমান হলো ৷ আপুর চোখে পানি টলমল করছিল! বুঝতে পারলাম সে অনেক কষ্ট পেয়েছে ৷ তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম,
—-অাপু প্লিজ তার জন্য কষ্ট পেওনা ৷ ওরকম মানুষের জন্য কষ্ট পাওয়া বোকামী ৷ ওর মত লোককে শুধু ঘৃণা করতে হয়!
আপু আমার কথামত সাজুর নিকট গিয়ে সরাসরি একটা থাপ্পর মারলো ৷ এরপর আমাকে বলল চল ৷ মার্কেট থেকে বের হয়ে গেলাম!
বাসায় পৌঁছে আপু আমাকে বারবার বলছিল, “তোর কথায় ঠিক হলো ভাই ৷ জানোয়ারটা এতদিন আমার থেকে অনেকগুলো টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ৷ ওর মতলব আমি ধরতে পারিনি ৷ আজ তুই না থাকলে হয়তো ওর আসল রুপটা ধরতে পারতাম না!
আমি ক্ষীণস্বরে বললাম,
—-যা হবার হয়েছে ৷ এখন আমি চাইবো, তুই আর এসব প্রেম ট্রেমের মধ্যে জড়াবিনা ৷ সময় হলে আমিই তোর জন্য বর এনে হাজির করবো!
আপু ফিক করে হাসলো!
দেখতে দেখতে দু বছর পার হয়ে গেল ৷ আপুর বিয়ের সমন্ধ আসছিল কিন্তু বাবা, মায়ের নিকট পাত্র পছন্দ হচ্ছিলনা ৷ অবশেষে একটা সমন্ধ এলো, তারা আপুকে পছন্দ করলো ৷ কিন্তু পাত্র সরাসরি আপুকে দেখেনি ৷ আবারো সেই পাত্রপক্ষ আপুকে দেখতে অাসলো পাত্রকে সাথে নিয়ে ৷ আপুকে প্রথমবার দেখার পরই তারা পছন্দ করেছিল ৷ আজ পাত্রও পছন্দ করলো ৷ কথা চলতে লাগলো ৷ পাত্রপক্ষ কথা বলা শেষ করলে আপু কথা বলতে লাগলো ৷ আপু পাত্রকে বলছিল,
—-আমাকে যদি বউ করে নিতে চান তাহলে একটা শর্ত মানতে হবে!
পাত্র বলল,
—-কি শর্ত?
—-আমার ভাইকেও ঐ বাড়িতে রাখতে হবে ৷ আমি আসলে ভাইটাকে ছাড়া থাকতে পারিনা ৷ কখনো ওকে ছাড়া একা থাকিনি ৷ আত্মীয়ের বাসায় গেলেও ওকে সঙ্গে নিয়ে যেতাম ৷ ওর সাথে ঝগড়া না করলে ভাললাগেনা! তাই আমি চাইবো আমার বিয়ের পর যেন ভাইটাও আমার সাথে থাকে ৷ আপত্তি করতে পারবেন না!
আপুর কথা শুনে পাত্র বিষয়টা হাসি মুখে মেনে নিয়ে বলল,
—-হ্যাঁ, আমি আপনার শর্ত মানলাম ৷ আর রাফাত তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে ৷ আমার বাসার পাশেই ভার্সিটি, ওর জন্য সুবিধা হবে!
অবশেষে আপুর বিয়েটা ঠিক হয়ে গেল!
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ৷ বিয়ের দিন আমার হবু দুলাভাই ব্রেনস্ট্রোকে মারা গেল! তার মৃত্যুর খবর শুনে আপু নিজেও মরার মত হয়ে গেল ৷ সকালে মৃত্যুর খবর এলে তারপর থেকে আপু শুধু কান্না করে যাচ্ছিল ৷ কান্না করতে করতে কখনো অজ্ঞানও হলো ৷ আপুর কান্না দেখে নিজেকে শামলাতে পারিনি ৷ আপুকে সান্ত্বনা দেবার ভাষাও ছিলনা ৷ আসলে নির্মম কিছু ঘটনা ঘটে গেলে সেসময় আহত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা থাকেনা ৷ এরপরও আপুকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললাম,
—-আপু কিছু সত্যকে মেনে নিতে হয় ৷ তোকেও মেনে নিতে হবে ৷ তুই নিজের মনকে একটু শক্ত কর ৷ তোকে বাঁচতে হবে হাসি মুখে ৷ এভাবে কান্না করলে আমি কেমনে ভাল থাকি বল? তোর কান্না কি আমার সহ্য হয় বল? প্লিজ আপু তুই আর কান্না করিস না ৷ আমার যে সহ্য হচ্ছেনা ৷ বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে!
আপু আমার কথা শুনে কান্নার আওয়াজ বাড়িয়ে দিলো ৷ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
—-কি হয়ে গেলোরে ভাই, আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেল ৷ এখন কেউ আমাকে বিয়ে করতে চাইবেনা ৷ লোকে বলবে আমি অলক্ষণে, অপয়া নারী!
আপুর চোখের কোণ বেয়ে ঝরতে থাকা অজস্র অশ্রুজল দেখে নিজেকে সংবরণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল ৷ অশ্রুশিক্ত চোখ দুটো আমাকেও অঝোরে চোখের জল ফেলে কাঁদতে বাধ্য করছিল ৷ আপুর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম,
—-আমার বোনকে কে এমন কথা বলবে? তার হাত পা ভেঙ্গে দিবনা? আর আমি কথা দিলাম ১ মাসের মধ্যে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করবো ৷ আমি এতটুকু না হই আমার ক্ষমতা আছে ৷ প্লিজ আপু তুই এভাবে ভেঙ্গে পড়িস না ৷ সারাদিন কিছু খাসনি, চল আমার সাথে খাবি ৷ তোর জন্য আমিও কিছু খাইনি ৷ আমার ক্ষিধা লেগেছে ৷ চল!
আমি খাইনি শুনে আপুর কান্না বন্ধ হয়ে গেল ৷ স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছে আমার হাত ধরে চললো খাবার টেবিলের দিকে!
টেবিলে খাবার রেডি ছিল ৷ ভাই বোন মিলে টেবিলের সিটে বসে পড়লাম ৷ আপু আমার প্লেটে ভাত দিলো ৷ আমিও আপুর প্লেটে ভাত দিচ্ছিলাম ৷ তখন আপু বলল,
—-লাগবেনা, আমি তোর প্লেটেই খাবো!
আপু মাংসের ঝোল ভাতের সাথে মাখিয়ে এক টুকরা গোশত মিশিয়ে আমার মুখে তুলে দিলো ৷ আমিও আপুর মুখে ভাত তুলে দিলাম ৷ আপুর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো ৷ জানি এই অশ্রু সুখের অশ্রু ৷ শত দুঃখের মুহূর্তেও আমার বোনটা ভাইকে ভাল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায় ৷ আপুকে শক্তকন্ঠে বললাম,
—-খবরদার! আমার বোনটার চোখে পানি দেখতে চাইনা ৷ তার মুখে আমি মিষ্টি হাসি দেখতে চাই!
আপু মুচকি হাসলো ৷ বুকে ভাললাগার পরশ অনুভূত হলো!