এলাকার সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটার স্বামীর সাথে বনিবনা হচ্ছেনা। শশুড়বাড়ি ছেড়ে বাবার বাসায় এসে উঠেছে। লোক মুখে শোনা যাচ্ছে ডিভোর্স হয়ে যাবে হয়তো। এ খবর পৌঁছে গেছে মেয়েটার কয়েকজন প্রাক্তনের কাছে। তাদের মধ্যে একজন হলো কামরুল।
সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে আড্ডা বসে। এতোক্ষণ জেরিনকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছিলো। কামরুল সিগারেট জ্বালাতে জ্বালাতে দোকানদারের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘বুঝলেন চাচা এদের কপালে শেষে এমনি থাকে। দুইটা বছর সংসার করতে পারলোনা। একটা কথা বলি মাইন্ড কইরেন না। এরা হলো সাতভাতারি। সাতটা ভাতার না হলে এদের চলেনা।’
দোকানদার কামরুলের কথায় মাথা দুলিয়ে হেসে বলল, ‘হুম ঠিক বলছো।’
কামরুল সিগারেটে গভীর টান দিয়ে বলল, ‘আমার সাথে সম্পর্ক ছিলো বুঝছেন। পরে টাকাওয়ালা ছেলে দেখে বিয়ে করে ফেলছে। প্রথমে একটু খারাপ লাগছিলো। পরে বলছি যা তোর মতো লোভীর দরকার নাই। এখন দেখেন দুই পকেটে টাকার বান্ডিল নিয়া ঘুরি।’ জেরিন ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে টিভি দেখছিলো। জারা দরজা ধাক্কাচ্ছে। জেরিন দরজা খুলে বলল, ‘কি হলো বিরক্ত করছিস কেন?’ ‘শাকিল ভাইয়া আসছে। সাথে ভাবিকে নিয়ে আসছে। শাকিল ভাইয়ার ভাগ্য ভালো আপু। না হলে শাকিল ভাইয়ার কপালে এতো সুন্দরী বৌ জুটে।’ ‘আর কিছু বলবি?’ ‘শাকিল ভাইয়া তোকে ডাকতেছে।’ ‘ডাকুক। বল যে আমি ঘুমাচ্ছি।’ ‘এমন কেন করতেছিস। ভাইয়া কি মনে করবে।’ ‘কে কি মনে করলো তাতে আমার কি এসে যায়। তুই যা তো।’
জেরিন দরজা বন্ধ করে এসে বিছানায় বসলো। আবারো কে যেন দরজা নক করছে। জেরিন বিছানা থেকে না নেমেই বলল, ‘কে?’ ‘আমি।’ শাকিল ভাইয়ের কণ্ঠ। অনিচ্ছা সত্বেও জেরিন বিছানা থেকে নেমে দরজা খুললো। জেরিনকে দেখে শাকিল বলল, ‘ঘুমাচ্ছিলি?’ ‘মাথা ব্যাথা করছিলো। শুয়ে ছিলাম।’ শাকিল ঘরের ভেতরে এসে চেয়ারটা টেনে বসলো। জেরিন দাঁড়িয়েই থাকলো। শাকিল বলল, ‘শুনলাম বরের সাথে বনিবনা হচ্ছেনা তোর।’ ‘কে বলল আপনাকে?’ ‘কে বলল সেটা তো বড় কথা না। যা শুনেছি সেটা সত্যি কি না সেটা বড় কথা। আজ যদি আমার প্রস্তাবে রাজি হতি তাহলে এ দিন তোকে দেখতে হতোনা।’ ‘ও আচ্ছা বুঝেছি। আপনি এসেছেন খোটা দেয়ার জন্য।’
‘খোটা দিচ্ছিনা। সত্য কথাই বলছি। আমি দেখতে কালো বলে কখনো আমার ভালোবাসাকে তুই পাত্তা দিসনি। যেই ছেলেটাকে বিয়ে করলি সে খুব সুন্দর? হ্যাংলা। ফু দিলে তো উড়ে যাবে।’ ‘শাকিল ভাই আপনি যান। এসব ফালতু কথা শুনতে ইচ্ছে করছেনা।’ ‘হুম চলে তো যাবোই। এখানে তো থাকতে আসিনি। যাবার আগে আমার বৌকে দেখবিনা? তোকে বলেছিলাম না যে তোর থেকে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করবো। যা একবার দেখে আয়।’ জেরিন রাগী কণ্ঠে বলল, ‘সেটার প্রয়োজন বোধ করছিনা। আপনি এক্ষুণি আমার রুম থেকে বের হন।’ শাকিল জেরিনের মুখের দিকে তাকালো। জেরিনের মুখ দেখে মনে হচ্ছে সে খুব বেশি রেগে আছে। শাকিল রুম থেকে বের হতেই জেরিন সশব্দে দরজা বন্ধ করলো।
এই শাকিল ভাই একসময় জেরিনের জন্য পাগল ছিলো। বহুবার প্রেম নিবেদন করেছে। এমনকি বাসা থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। জেরিন মুখের উপর সোজা না বলে দিয়েছে। একদিন কলেজ থেকে আসার সময় রিকশা থামিয়ে শাকিল ভাই বলেছিলেন, ‘আমি দেখতে ভালো না বলে আমাকে পাত্তা দিচ্ছিস না। দেখিস একদিন তোর থেকে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করবো।’
শাকিল ভাই যা বলেছেন তাই করে দেখিয়েছেন। শাকিল ভাইয়ের মতো অনেকেই এখন জেরিনকে কথা শুনাচ্ছে। যেমন তার বন্ধু হাকিম। সেও কোথা থেকে যেন খবর পেয়েছে স্বামীর সাথে তার বনিবনা হচ্ছেনা। ফোন করে বলে সে নাকি এখনো জেরিনকে ভালোবাসে। এখনো সে জেরিনকে গ্রহন করতে চায়। হাকিমের এমন কথায় জেরিনের গা ঘিনঘিন করে। হাকিমের নাম্বার ব্লাক লিস্টে রেখে দিয়েছে সে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। হাকিম নতুন নতুন নাম্বার থেকে ফোন করছে। জেরিন বাধ্য হয়ে ফোন বন্ধ করে রেখেছে। একটা প্রচলিত কথা আছে ‘হাতি যখন গর্তে পরে চামচিকাও লাথি মারে।’ জেরিনের অবস্থাটা যেন ঠিক সেরকম হয়েছে। বিকালে দোকান থেকে ফোনে ফ্লাক্সি দিয়ে বাসায় আসার সময় কেউ একজন বলেছিলো, ‘গভীর রাতে একা লাগলে ফোন দিয়ো।’ কথাটা শুনে জেরিন তাকিয়ে দেখলো কয়েকটা ছেলে ক্যারাম খেলছে। তাদের মধ্য থেকে একজন কথাটা বলেছে। জেরিনের দিকে তাকিয়ে সবাই হাসছে। জেরিনের ইচ্ছে করছিলো সবাইকে গিয়ে থাপ্পর মারতে। কিন্তু সে মাথা নিচু করে বাসায় ফিরে এসেছে।
ঝগড়া করে বাসায় চলে আসার পর থেকে সজীব একবারের জন্যেও তাকে ফোন করেনি। জেরিন ও ফোন করেনি। দোষটা তো তার ছিলোনা। বেশ কিছুদিন ধরে সজীব কেমন যেন বদলে গেছে। অনেক রাত করে বাসায় ফিরে। ঠিক মতো দুটো কথাও হয়না তাদের। একটুতেই কথা কাটাকাটি হয়। সজীব বাসা থেকে বের হবার পরে জেরিন ব্যাগ গুছিয়ে চলে এসেছে। সজীব কি মান ভাঙ্গানোর জন্য একবার ফোন করতে পারতোনা। ফোন করলে প্রথমে জেরিন কিছুক্ষণ হয়তো রাগ দেখাতো কিন্তু তারপর ঠিক মান অভিমান ভুলে ফিরে যেতো।
জেরিনকে সবসময় বাসায় মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে জারা বোনের জন্য খারাপ লাগে। আজ জেরিনকে সাথে নিয়ে বের হয়েছে জারা। একটু ঘোরাফেরা করবে। টুকটাক কেনাকাটা করে বাইরে ডিনার করে ফিরবে। দুই বোন অন্যসময় একসাথে বের হলে কতো গল্প করতো। আজ জেরিন কোন কথা বলছেনা। জারা গল্প করার চেষ্টা করছে কিন্তু জেরিন চুপচাপ আছে। মাঝে মাঝে হ্যাঁ হুম বলছে। কামরুল বাইক নিয়ে জেরিনের রিকশার পেছন পেছন আসছিলো। জেরিন রিকশা থেকে নামতেই কামরুল জেরিনের গা ঘেষে বাইক থামালো। কামরুলকে দেখে জেরিন দুৃৃ’পা পিছিয়ে গেলো। কামরুল জেরিনের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তোমার সাথে একটু কথা আছে।’ ‘আপনার সাথে আমার কোন কথা নেই।’ ‘কয়েকটা কথা বলেই চলে যাবো। প্লিজ।’ ‘বলুন কি বলবেন।’ ‘কোথাও বসি। বসে কথা বলি।’ ‘না, যা বলার এখানেই বলুন।’
‘আমার কথা মনে আছে তোমার? এক সময় তোমার পেছনে পাগলের মতো ঘুরতাম।’ ‘এখনো তো তাই করছেন।’ জেরিনের কথা শুনে কামরুল উচ্চস্বরে হাসলো। এই হাসির মধ্য দিয়ে এক ধরনের তাচ্ছিল্য প্রকাশ পায়। কামরুল হাসি থামিয়ে বলল, ‘ইস্ অহংকার। অহংকারটা ছাড়তে পারলেনা, তাইনা। তোমার তাই মনে হয় আমি এখনো তোমার পেছনে ঘুরছি।’ কথাটা বলে কামরুল হাসি শুরু করলো। জারা বোনের হাত ধরে বলল, ‘আপু চল তো। এসব ফালতু লোকের কথা শুনছিস কেন।’
জেরিন জারার হাত ছাড়িয়ে বলল, ‘থাম। বলতে দে তাকে। হুম বলেন আর কি বলতে চান।’ কামরুল হাসি থামিয়ে বলল, ‘যখন তোমার পেছনে পাগল ছিলাম তখন আমাকে পাত্তা দাওনি। আমার ভালোবাসা বুঝার চেষ্টাও করোনি। আমার দোষ কি ছিলো? এটাই তো যে আমি গরিব। তোমার পেছনে খরচা করার মতো আমার টাকা ছিলোনা। কিন্তু দেখ এখন আমি সেই আগের আমি নেই। মানুষের বদলাতে সময় লাগেনা। তুমি কি ভাবছো এতো মানুষকে কষ্ট দিয়ে তুমি সুখে থাকবে? কখনোই না। তোমার সাথে এখন যা হচ্ছে তা তোমার কর্মফল। প্রতিটা মানুষের দীর্ঘশ্বাসের হিসেব তোমাকে কষ্টের দীর্ঘশ্বাস ফেলে দিতে হবে।’ ‘তাই? কাকে কাকে কষ্ট দিয়েছি আমি?’
‘কেন তোমার খালাতো ভাই শাকিল। তার সাথে প্রেম করে শেষে অন্য ছেলেকে বিয়ে করলা। ছেলেটার দোষ সে সুন্দর না। অথচ তার টাকাগুলো সুন্দর ছিলো তাইনা?’ ‘আর?’ ‘তোমার বন্ধু হাকিম। তাকেও তো প্রেমের ফাঁদে ফেলে নাচিয়েছো।’ ‘আপনাকে যেভাবে নাচিয়েছিলাম?’ ‘মানে?’ ‘আমি নাকি আপনার সাথে প্রেম করেছি। তারপর টাকাওয়ালা ছেলে দেখে আপনাকে ধোঁকা দিয়েছি। আপনি তো সবাইকে সেটাই বলে বেরিয়েছেন। কি বলেননি? আচ্ছা আপনার সাথে আমি কখন প্রেম করেছি? কখনো আপনার সাথে আমার কেন ধরনের সম্পর্ক ছিলো?’
জেরিনের কথা শুনে কামরুল চুপ করে আছে। জেরিন উত্তরের অপেক্ষায় চুপ থেকে আবারো বলতে শুরু করলো, ‘আপনি আমাকে পছন্দ করতেন। আপনার মতো শাকিল ভাই, হাকিম তারাও পছন্দ করতো। আচ্ছা আপনারা আমাকে পছন্দ করতেন কেন? আমি রূপবতী বলে? আপনাদের পছন্দ হলেই হবে? আমার পছন্দ অপছন্দের কোন মূল্য নেই? আমার পছন্দ না হলেও আপনাদের ভালোবাসায় সাড়া দিতে হবে? সাড়া না দিলে আমি লোভী, আমি খারাপ তাইতো। বাহ্ খুব ভালো যুক্তি। আর প্রেম করতে রাজি হইনি বলে আপনারা আমার নামে বাজে কথা বলে বেরাবেন। আপনি যেমন সবাইকে মিথ্যা বলেছেন যে বিয়ের আগে আপনার সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো। ঠিক তেমনি শাকিল ভাই, হাকিম আপনার মতোই করেছে। মেয়েদের নামে বদনাম ছড়ানো খুব সহজ কাজ। আপনাদের মতো প্রেমিক আর কিছু পারুক বা না পারুক এই কাজটা ভালো পারে তাইনা? সজীবকে আমি টাকার জন্য বিয়ে করিনি। মানুষটাকে আমার ভালো লেগেছে।
একটা মানুষকে যখন ভালো লাগে তখন তার টাকা আছে কি না, সে সুন্দর নাকি অসুন্দর সেটা ভাবিনা। তার সবচেয়ে ভালো দিক কি জানেন? তার মানসিকতা আপনাদের মতো এতো নিচু না। আপনারা মনে করেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সামনে এসে দাঁড়ালে দুঃখ কষ্টে আমাদের বুক ফেটে যায়। ভুল ধারণা। বরং আপনাদের দেখে হাসি পায়, খারাপ লাগে যে আপনারা জীবনে সামনে এগুতে পারেননি। পারেননি নিজের মানসিকতা শুধরাতে। কাউকে ভালোবাসলে প্রথমে তাকে সম্মান করতে শিখতে হয়।’ কথাগুলো বলার সময় জেরিন এতো বেশি উত্তেজিত হয়ে পরেছিলো যে কয়েকজন লোক তাদের আশেপাশে ভীড় জমাতে শুরু করেছে। জারা জেরিনের হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো।
বাসায় ফেরার সময় জেরিন জারাকে জিজ্ঞাসা করেছিলো, ‘তোর কি মনে হয় সেই ছেলেগুলোর দীর্ঘশ্বাসের কারনে আমার এমন দিন দেখতে হচ্ছে?’ বোনের মুখে এমন কথা শুনে জারা বলল, ‘মোটেও না। আপু তুই ভুল কিছু করিসনি। বরং ভালো না বেসে যদি তাদের পাগলামো দেখে সম্পর্কে জড়াতি সেটা ভুল হতো।’ রাত প্রায় দশটায় সজীব বাসায় আসলো। জেরিন দরজা খুলতেই সজীব বলল, ‘এক গ্লাস লেবুর শরবত দাও। গরমে অবস্থা খারাপ।’ এতোদিন পরে দেখা। কেমন আছে সেটা জানতে না চেয়ে শরবত চাচ্ছে। জেরিন শরবত করে এনে দিলো। সজীব এক চুমুকে গ্লাসটা শেষ করে বলল, ‘ব্যাগ গোছানো আছে?’
‘কেন?’ ‘কেন আবার? বাসায় যাবে। একটা মানুষ কতোদিন বেড়াতে এসে কতোদিন থাকে। জলদি ব্যাগ গুছিয়ে নাও।’ ‘আমি যাবোনা।’ ‘দেখ জেরিন টিভি সিরিয়ালের মতো ঢং করবেনা। তুমিও জানো যে ব্যবসায় লস খাওয়ার কারনে একটু রাগারাগি করি। আর রাগারাগি করার কারনে আমি অনুতপ্ত সেটাও জানো। এখন কি সিনেমার মতো সরি বলতে হবে। হাত ধরে অনুরোধ করতে হবে? ওসব পারবোনা বাপু। আমাকে দিয়ে অভিনয় হয়না। স্কুলের এক নাটকে অভিনয় করেছিলাম। রিহার্সেল করে সব রেডি কিন্তু স্টেজে উঠে একটা ডায়লগ দিতে পারিনি। ভয়ে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’
‘বললাম তো যাবোনা।’ ‘যাবোনা বললে তো হবেনা। বাসার যা অবস্থা। সবকিছু এলোমেলো হয়ে আছে। জলদি রেডি হও। আর বাবা মাকে একটু ডেকে দাও। তাদের সরি বলতে হবে।’ ‘তাদের সরি বলতে হবে কেন? আমাকে তো বললানা।’ ‘আহা তুমি আর আমি কি আলাদা নাকি? তোমাকে যদি সরি থ্যাংক ইউ এসব বলে বুঝাতে হয় তাহলে কিসের স্বামী স্ত্রী আমরা। আর বাবা মাকে সরি বলতে হবে কারন নিশ্চই তারা টেনশন করছেন আমাদের মধ্যে কি হয়েছে সেটা ভেবে। আসলে তো কিছুই হয়নি।’ ‘কিছু হয়নি?’ ‘সামান্য ঝগড়া হয়েছে। এটা কোন ব্যাপার হলো? ঝগড়া কাদের হয়না বলো। যাও তো তাড়াতাড়ি রেডি হও, দেরি হচ্ছে।’
জেরিন ব্যাগ গুছাচ্ছে। এর মধ্যে সজীব দরজার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। সজীবের কণ্ঠে সরি শুনতে পেয়ে জেরিন দরজার দিকে তাকালো। জেরিনের দু’চোখ ভেজা। কষ্টের মাঝে হুট করে অনেকখানি সুখ এসে উপস্থিত হলে চোখ ভিজে যায়। জেরিনের চোখ ভিজেছে সেই সুখে।।