আজ সকাল পর্যন্ত মনে হয়েছিল, ইরা কে বিয়ে করাটা আমার ভুল হয়েছিল, মস্ত বড় ভুল।কিন্তু এখন সেটা মনে হচ্ছে না, এখন মনে হচ্ছে কাজ টা করে খুব ভাল করেছি। আজ সকালে ঘুম ভাঙল কলিংবেলের শব্দে। গেট খুলেই দেখি ইরা দাড়িয়ে, সাথে ওর বিশাল দুটো সুটকেস।দেখেই বোঝা যাচ্ছে হল থেকে ও পার্মানেন্টলি চলে এসেছে। ওকে দেখে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। তাই দেখে ইরা বলল,
-কি ভেতরে যাব না? নাকি এখানেই দাড়িয়ে থাকব। ওর কথাতে আমার তন্দ্রা ভাঙল.
-হুম আসো।
-রাস্তা ছাড়ো,,গাধার মত দাঁড়ায়া আছ কেন?
-হুম।
(অন্য সময় গাধা বললে ওকে অনেক কিছুই বলতাম কিন্তু এখন কিছুই বললাম না কারণ এখন আমি যথেষ্ট খুশি।খুশি হওয়ার কারণ ও আমাকে তুমি করে বলতেছে। গত কাল কে ও তুই করে বলছে) আমি গেট থেকে সরে দাড়ালাম। ইরা ভেতরে ঢুকে বলল,
-এখনো ব্রেকফাস্ট করিনি, কিচেনে কিছু আছে কি খাওয়ার?
-হুম,,খাওয়ার মত অনেক কিছু আছে।
ইরা সাথে সাথেই কিচেনের দিকে গেল। দু একবার এসেছিল আমার এখানে তাই কিচেন চিনতে ওর ভুল হলনা। আমি সুটকেস গুলো ভেতরে নিয়ে আসলাম।দু মিনিট পর কিচেন থেকে বেড়িয়ে আসল ইরা,ওর হাতে বাজারের ব্যাগ।ও বাজারের ব্যাগটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
-যাও কিছু বাজার করে নিয়াসো।
আমি ব্যাগ টা হাতে নিয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে রইলাম।ওকে একটা কথা জিজ্ঞেস করা দরকার।কিন্তু করব কি করব না সেটা ভাবছি। ইরা মনে হয় আমার মনের কথাটা বুঝল। ইরা সুটকেস খুলতে খুলতে বলল,
-কিছু বলবে?
-হুম,আসলে কি কি নিয়ে আসবো?
-কেন আগে বাজার করনি?
-না মানে,বাইরেই তো খেতাম।
-আচ্ছা,,যা যা খুশি তাই নিয়ে এসো।
-আচ্ছা।
-যাও এখন আর তাড়াতাড়ি ফিরিও,,
আমি ভেবেছিলাম ইরা আমাকে রাগী মুখে বিদায় দিবে কিন্তু না ও আমাকে হাসি মুখেই বিদায় দিল। আমি ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম।নিজেকে কেমন জানি অন্যরকম লাগছিল? এই প্রথম ব্যাগ হাতে বের হয়েছি, আলাদা অনুভুতি।এরকম অনুভূতি হয়েছিল ইরাকে বিয়ে করার দিন। সেদিন ও সকালে ঘুমাচ্ছিলাম, ১১ টায় চাকুরীর ইন্টারভিউ ছিল,উঠব উঠব ভাব তখনই কানের কাছে রাখা ফোন টা খুব উচ্চসরেই বেজে উঠল। আমি ঘুম ঘুম ভাবেই ফোন টা হাতে নিলাম,, স্ক্রিনে দিকে তাকিয়ে দেখি ইরা।আমার ঘুম নিমিষেই উবে গেল।
ইরা আমাকে ফোন দিয়েছে ভাবতেই পারা যায়না।গত সপ্তাহে ইরা কে প্রপোজ করেছিলাম তখন ও আমার গালে এক থাপ্পড় মেরেছিল, আমি ভেবেছিলাম ধান্দা দেখছি কিন্তু না ধান্দা না সত্যিই থাপ্পড় মেরেছিল।আমি যে ওর বন্ধু এটা ও ভুলেই গেছিল। যদিও ইরা জাতীয় ভার্সিটিতে আর আমি পাব্লিক ভার্সিটি তে পড়তাম। ও আমাকে বুঝাতে পারত, কিন্তু না ও সবার সামনেই থাপ্পড় মেরেছিল। স্ক্রিনে ওর নাম দেখে মনে হতে লাগল সপ্ন দেখছি,কারণ থাপ্পড় মারার পর থেকে ওর সাথে আর আমার কথা হয়নি।ফোনে সরি বলেছিলাম তবুও শোনেনি। আমি ফোন ধরে বললাম,
-হ্যালো,,
-তুই কি আমাকে ভালবাসিস তন্নয়? ওর কথাটা শুনে হঠাৎ কান টা ঝন ঝন করে বেজে উঠল।আমি বললাম,
-হুম,,
-বিয়ে করবি?
-হুম?কোনদিন?
-আজ,এখন। আজ এখন,,আমার মনে হল ইরা পাগল হয়ে গেছে।আমি বললাম,
-১১টায় ইন্টার্ভিউ আছে।
-তাহলে বাদ দে,দেখি অন্য কাওকে পাওয়া যায়না।
-অন্য কাওকে পাওয়া যায় মানে কি?
-আসলে যারা যারা আমাকে ভালবাসে তাদের লিস্ট করেছি,যে রাজী হবে তাকেই বিয়ে করব।
-পাগল হয়ে গেছিস নাকি,
-হুম,,,আচ্ছা তুই ইন্টার্ভিউ দে ভাল করে।
-আমি কয় নাম্বার সিরিয়াল এ ছিলাম।
-মোবাইলের ফোন বুকে তোর নাম্বার প্রথমে ছিল তাই তোকে প্রথম কল করেছি,,,
-আচ্ছা, কোন কাজী অফিস,
-মীর বাগ।
-সাক্ষী আছে।
-হুম,
-আচ্ছা,,আমি আসছি।
এই বলে ফোন রাখলাম।ইন্টার্ভিউ দেয়ার চিন্তা বাদ দিলাম কারণ ইন্টার্ভিউ আবার দেয়া যাবে কিন্তু ইরার বিয়ে হলে ওকে আর পাওয়া যাবেনা।অনেক চাকুরী আছে দুনিয়াতে কিন্তু আমার ইরা একটাই। আমি মুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম, কাজী অফিস যেতে প্রায় আধাঘন্টা লাগবে, ভয় হতে লাগল যদি এ সময়ের মধ্য অন্য কাওকে ফোন দিয়ে ডেকে নেয়। কাজী অফিস যেতে প্রায় ১ ঘন্টা লাগল। ভেবেছিলাম এই প্রথম হয়ত জ্যামের কারণে কারো বিয়ে ভেঙে যাবে কিন্তু কাজী অফিসের গেটে নেমে মন টা ভাল হল।ইরা আর ওর বান্ধবীরা রাস্তাতেই দাড়িয়ে ছিল। আমি রিকশা থেকে নামতেই ইরা আমাকে বিরিক্ত ভরা কন্ঠে বলল,
-এতক্ষন লাগে তোর?
-হুম,,একটু জ্যম ছিল।
-আচ্ছা,,চল।
বিয়ে হল ১১ টায়। বিয়ে করার কারণ জানলাম ১১.৩০টায় কাজী অফিসের বাইরে এসে।ইরার বাবা ইরার জন্য অন্য ছেলে ঠিক করেছে, আর ইরার সে ছেলে পছন্দ নয় কিন্তু ওর বাবা সেই ছেলের সাথেই ইরার বিয়ে দিবে। আজকে ইরাকে নিতে আসার কথা ওর বাবার তাই ওর বাবার হাত থেকে বাঁচতেই ও আমাকে বিয়ে করেছে। কাজী অফিস থেকে বেড়িয়ে এসে আমরা রিকশা নিলাম।রিকশায় উঠে আমি বললাম,,
-এখন কোথায় যাচ্ছি?
-আমার বাবার কাছে
-মানে?
-মানে আবার কি, বাবাকে দেখাব তুই আমার হ্যাসবেন্ড। আমি ওর কথা বলার ধরণ দেখে অবাক হলাম।এই মেয়ে তুই তুই করে কেন বলছে।আমি বললাম,
-তুমি আমাকে তুই তুই করে কেন বলছো ইরা?
-কেন,, তোকে কি এখন আপনি আপনি করে বলব?
-না তুমি করে বলবে,আমাদের বিয়ে হল। ইরা মনে হয় আমার কথায় অবাক হল। ও বলল,
-এই বিয়ে নিয়ে সিরিয়াস হওয়ার কিছু নাই,তুই নতুন বিয়ে করার আগে আমার কাছে আসবি আমি তোকে ডিভোর্স দিয়ে দিব। আমি ওই কথার পর আর কিছু বললাম না। শুধু ভাবছিলাম আমার প্রথম বিয়ে আর প্রথম বউ এভাবে জলে গেল। ইরার বাবা আমাদের বিয়ে মেনে নিলেন না, উনি ইরাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন। ইরার বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি ওকে বললাম,
-এখন কোথায় যাবা?
-কোথায় আবার,হলেই থাকব।পরীক্ষা কদিনের মধ্যই শেষ হবে।তারপর কোন না কোন ব্যাবস্থা হয়ে যাবে।
-তুমি চাইলে আমার বাসায় থাকতে পার!আমি একা থাকি।
-কেন তোর সাথে থাকব,তুই কিন্তু বিয়ে নিয়ে সিরিয়াস হচ্ছিস,আর এ বিয়ের কথা অন্য বন্ধুদের বলবিনা।
-আচ্ছা,তোমার কাছে টাকা আছে।
-আছে,,
আমি ওকে হল এ নামিয়ে দিয়ে চলে আসলাম। এর পর রোজ কথা হত।ওকে আমি তুমিই করেই বলতাম কিন্তু ও আমাকে তুই করেই বলত।এটা আমার মোটেও ভাল লাগত না।যাই হোক আমি ওর হ্যাসবেন্ড ,সিরিয়াস না হলেও হ্যাসবেন্ড, সিরিয়াস হলেও হ্যাসবেন্ড। চাকুরী পেয়েছি গতকাল কে !! তাই গতকাল ওর কাছে গিয়ে বললাম,
-চাকুরী পেয়েছি ব্যাংকে,, খবর টা শুনে ইরাকে খুব খুশি মনে হল,ইরা হাসতে হাসতে বলল,
-ভাল খবর,মিষ্টি খাওয়া,,
-তুমি কি একটু সুন্দর করে কথা বলতে পারো না,,
-না পারিনা
-আচ্ছা,,তুমি চাইলে আমার বাসায় এসে থাকতে পারো,, ইরা আমার দিকে সন্দেহ নিয়ে তাকালো আর বলল,
-কেন?
-আমি চাকুরী পেয়েছি,তোমার হয়ত এখানে অসুবিধা হচ্ছে। আমার ওখান থেকেই না হয় লেখাপড়া করলে।
-আমার কথা তোর ভাবতে হবেনা,,,
-ভাবব,তুমি আমার স্ত্রী, তোমার ভাল মন্দ দেখতে হবে।
-আমি তো বুঝি তুই কেন থাকতে বলিস তোর বাসায়,,
-কি বুঝ তুমি?
-ওই সব করবি তুই তোর বাসায় গেলে,
-কোন সব?আমি কিছুই বুঝতেছিনা তোমার কথার?
-ন্যাকামি করবি না,সব বুঝিস তুই।
-একটু ভাল করে কথা বল না,,
-না বলব না,, তুই যা। আমি একটু অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম,
-তুমি একমাত্র মেয়ে যে তার হ্যাসবেন্ড কে তুই করে বলে।
-হুম,,আমি এই রকম ই।
-আমি তোমাকে ভালবাসি।
-আমি বাসিনা যা এখন,,
আমি চলে আসলাম ওর হলের সামন থেকে। বাসায় এসে ইরার উপর প্রচন্ড রাগ উঠল। ওর মধ্য কোন কোন বউ বউ ভাব পাচ্ছিলাম না। তাই মনে হতে লাগল ওকে বিয়ে করে ভুল করেছি। কিন্তু এখন ভাল লাগছে। বাজার করলাম ঘন্টা দেড়েক ঘুরে, ব্যাগ ভর্তি করে বাসার দিকে হাটা দিলাম।যে হোটেলে এসে খাবার খাই ওই হোটেলে কিছু টাকা বাকি পরে গেছিলো তাই ভাবলাম পরিশোধ করে যাই,আর তো আসবনা।বউ থাকতে হোটেল এ কেন খাব। হোটেলে ঢুকতেই দোকানী হাতে ব্যাগ দেখে জিজ্ঞেস করল,
-ভাইজান,বউ তাহলে আসছে?
-হুম,,
-তাহলে তো আমাদের লস,
-হুম,,কি আর করবেন।বউ তো আর বাইরের খাবার খেতে দিবেনা।
-ওইটাও ঠিক কইছেন।তবে দাওয়াত দিবেন কিন্তু আমাগোরে।
-হুম অবশ্যই দেব।
আমি টাকা দিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে পড়লাম।একা একা ইরা বাসায় কি করল কে জানে? বাসায় ঢুকে মনে হল,অন্য কারো বাসায় এসে গেছি। ঘন্টা দেড়েক এর মধ্য বাসার এত চেঞ্জ হবে ভাবতে পারিনি। ইরা কে খুজে পেলাম বেড রুমে,ও আমাকে দেখেই বিছানা থেকে উঠে এসে বলল,
-দাও ব্যাগ দাও,কি কি আনছ দেখি। আমি ওর দিকে ব্যাগ টা বাড়িয়ে দিলাম।ও ব্যাগ টা ভাল ভাবে দেখে বলল,
-ভাল,অনেক কিছুই তো আনছ।কিন্তু আসল জিনিষ আনো নাই।
-কি আনি নাই?
-কিছু না।যাও গোসল করে আসো, লাঞ্চ এক সাথে করব।কয়েক দিন পর তো আর করা হবে না।
-কেন করা হবে না?
-তুমি তো তখন সারাদিন ব্যাংকেই থাকবা।
-হুম তাও ঠিক।
আমি ওর মাঝে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি।আগে যেমন চোখে চোখ রেখে কথা বলত এখন আর বলছে না।মাটিতে তাকিয়ে বলছে তার মানে ওর মাঝে বউ বউ ভাব এসে গেছে,যেটা আমি চাচ্ছিলাম। গোসল করে আসলাম ,এসে কিচেনের দিকে গেলাম।কিচেনে ঢুকতেই ইরা বলল,
-চা খাবে,
-হুম,
-আচ্ছা,,তুমি ঘরে যাও আমি আনছি!
-আচ্ছা,
আমি ঘরে এসে ২ মিনিট টিভি দেখতেই ইরা ঘরে ঢুকল হাতে চায়ের কাপ। আমার দিকে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
-তুমি কি অবাক হচ্ছ যে আমি এত ভাল হলাম কি করে? আমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বললাম,
-না তো,অবাক কেন হব?
-এই যে তোমাকে না বলেই চলে এলাম,
-না তো,,এটা তো তোমার ও বাড়ি।তুমি যখন চাও তখনই আসতে পারো।
ইরা আর কিছু বলল না চলে গেল।ঘন্টা খানেক বাদে ঘরে ভালই সুগন্ধ পাওয়া শুরু করলাম।অনেক রান্না হয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। আমি ডাইনিং টেবিল এ গিয়ে বসলাম।ইরা এসে আমার পাশে দাড়াল।আমি ওর দিকে তাকালাম,ওকে যে কি সুন্দর লাগছে।ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে।নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম,কাজ করে ওর অবস্থাই খারাপ। ও আমি ওর দিকে তাকালাম,ওকে যে কি সুন্দর লাগছে।ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে।নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম,কাজ করে ওর অবস্থাই খারাপ। ও চাইলে আমি হোটেল থেকে রোজ এনে ওকে খাওয়াব।তবু আর কাজ করতে দেয়া যাবেনা। আমি বললাম,
-কিছু বলবে কি?
-এখন খাবে নাকি,শাওয়ার নিয়ে আসব।
-হুম,,তুমি অনেক ক্লান্ত।শাওয়ার নিয়ে আস,আমি অপেক্ষা করছি। একটা শাড়ি পরতে পারো। ইরা যেতে যেতে বলল,
-শাড়ি পড়তে পারিনা,আর শাড়িও নেই। আমি একটু চিৎকার করে বললাম,
-আমার ড্রয়ারে তোমার জন্য কেনা একটা শাড়ি আছে।ওটা পরতে পারো।যেভাবে পরবে ওতেই তোমাকে ভাল লাগবে। ইরা জবাব দিলনা, শুনল কি শুনল না বুঝলাম না। কিছুক্ষন বাদে বোঝা গেল ও শুনেছে।ও গোসল শেষে ঘর থেকে বের হল নীল শাড়ি পরে। যেটা কিনে ছিলাম দু মাস আগে,ওকে দিয়েছিলাম গিফট হিসেবে কিন্তু থাপ্পড়ের সহিত সেটা ফেরত দিয়েছিল। ওকে নীল শাড়িতে দারূন লাগছে।একটু মেকাপ করলে আরো ভাল লাগত।ইরা আমার সামনে এসে দাড়াল না সোজা কিচেনে গেল, একে একে সব খাবার এল।কিন্তু প্রবলেম টা হল, চার প্রকারের তরকারী এল কিন্তু ভাত এলনা। আমি বললাম
-ভাত নেই,
-না,, ভাত রান্না করতে পারিনা,
-কি বলতেছো,এত কিছু পারো ভাত পারোনা। ইরা আমার সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,
-কিভাবে পারব?চাল আনছিলা? ওহ শিট,,চাল আনতেই তো মনে নাই।আমি বললাম,
-এখন তাহলে?
-এখন আবার কি?এগুলাই দিয়ে খাব।
-কিভাবে?
-জানিনা।
-আচ্ছা। ইরা চেয়ারে বসতে বলল,
-কেমন লাগছে আমাকে ?
-ভাল,,
-আসলে শাড়ি পরতে পারিনা,, বাট তুমি বললা তাই একটু চেষ্টা করলাম,
-আমি শিখিয়ে দেব নে,
-তুমি কি ভাবে পারো,,
-দেখছি,,
-কার দেখছ?
-তোমার,,
-তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছ,,
-হুম,,,
-তুমি তো ভালই……
-কি আমি?
-কিছুনা? আমি হাসলাম,হাসি থামিয়ে বললাম,
-শোন আমি বুঝতে পারছি তোমার কালকের কথা,
-কি কথা?
-গত কাল যে ওই সব এর কথা বললা,,
-কোন সব,,
-ওই সব,যে সব এর কারণে তোমাকে বাসায় থাকতে বলি।
-ধেৎ, তুমি আরেকবার এসব বললে আমি কিন্তু আবার হলে চলে যাব। আমি হাসলাম।হেসে বললাম,
-আমি জানি তুমি তা পারবেনা,,
-তুমি কচু জান,,
-নাহ আমি জানি,,
-কেন যাবনা ?
-কারণ তুমিও আমাকে ভালবাস। ইরা হাসল আমার কথা শুনে তারপর হাসি থামিয়ে বলল,
-তুমি কি ভাবে বুঝলে?
-আমার নাম তন্নয়,তোমার ফোনবুক এ আমার নাম আগে কিভাবে আসল।বল এটা কিভাবে সম্ভব?আমার জানা মতে তোমাকে এ নামের অনেকেও ভালবাসে।যাদের নাম্বার তোমার ফোনে সেভ করা আছে।
-তো,
-তো কি?সিরিয়াল করলে প্রথমে তাদের কাছে কল যাবে।আমার কাছে কেন আসলো?
ইরা আর কোন জবাব দিলনা।একটু মৃদু হাসল আর তরকারী বাড়তে লাগল। আমি আবার বললাম,,
-তুমি আমাকে ভালইবাসতা তবে থাপ্পড় কেন মারছিলা?
-তোমার কি এখনো রাগ আছে, এমনি মারছিলাম।দেখলাম তারপরে ও তুমি আমাকে ভালবাসো কিনা।
-আচ্ছা,,কিন্তু তুমি আমাকে তুই তুই করে কেন বলতা?
-পরীক্ষা করলাম, তুমি আমাকে কত টা ভালবাস?
-কি বুঝলে,,
-যা বোঝার বুঝেছি,,
আমরা শুধু তরকারি দিয়ে লাঞ্চ করতে লাগলাম।রাত্রে অবশ্যই অনেক কিছু হবে,ওই সব কিছু হবে যে সব ইরা চায়নি। আমি রাত হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলাম, ইরাও হয়ত করছে।