বিলকিছের কথা আর জিকাইয়া কী করবেন দাদা, বিলকিছ মরছে কপালের দোষে। শুধু বিলকিছ না দাদা, বিলকিছের মতো কতো বিলকিছ, তনু যে প্রতিদিন কতো ভাবে নির্যাতন হচ্ছে, মরছে কে তার হিসেব গুনে? কী কইমু দাদা, কইলে কথার শেষ নাই। মাইনষে কয়– কথায় কথা বাড়ে আর মাখনে বাড়ে ঘি। তয় দাদা আজকাল কথা কওয়াও বিপদ। মাইনষে কয়– সব কথা কইতে নাই। কী এক সময় আইছে দাদা সব কথা কওয়া যায় না। কেউ কেউ কয়– নাম বললে চাকরি থাকবে না। এই দেশে এখন কেউ কথা কয় না চাকরি হারাবার ভয়ে, কেউ কথা কয় না চাকরি না পাবার ভয়ে। তয় দাদা আমার এসব ডর-ভয় নাই। আমার পাইবারও কী আছে হারাইবারও কী আছে? আমি দিন নেই, দিন খাই।
দেশে হাহাকার চলতাছে দাদা। চাইর দিকে শুধু হাহাকার আর হাহাকার। মাইনষের চোখে মুখে সীমাহীন হাহাকার। মানুষ এখন আর ভাল নাই। সবার ইয়া নফসি, ইয়া নফসি। মাইনষে কইতেও পারে না, সইতেও পারে না। মাইনষের হালত দেখছেন, জীবনটা তামাতামা হই যাইতাছে। সকালে বুক ভরা আশা নিয়া বাহির হইলে বিকালে ফিরে ব্যাগ ভরা হতাশা নিয়া। রুজিরোজগার নাই তার ওপর জিনিষপত্রের কী দাম বাড়ছে, আগুন দাদা আগুন। বাজারে এখন তরু তরকারিতেও হাত দেয়া যায় না। মাছ মাংসের কথা বাদই দিলাম। কী কইমু দাদা যা দিনকাল আইছে কয়দিন পর হয়তো মাছের ফ্লেভার বাহির হইবো। গরিবরা তরকারির সাথে দু এক ফোটা ফ্লেভার মিশাইয়া মাছের স্বাদ নিবো…।
হাইসেন না দাদা হাইসেন না। চতুর্দিকে দিকে আকাল আর আকাল। এমন সময় আইছে, যে যারে মারিয়া বড় হইতে পারে। বাজারে মজুতদাররা ইচ্ছা করিয়াও এখন দাম বাড়ায়। গরিবের রক্ত চোষে। পুঁজিপতিদের এখন অনেক দাপট দাদা। তারা মিডিয়া পোষে, ক্ষমতা চালায়। তাদের সাথে এখন কে পারবো। আর দেশ ভরিগেছে চাটুকারে। সবাই এখন চাটাচাটিতে ব্যস্ত। গরিবের অবস্থা কাহিল। গরিবের কথা কেউ কয় না। টিভি খোললে দেখবেন, বালপাকনা চাটুকাররা টকশোতে কী ধাপ্পা মারে। দেশ নাকি সিঙ্গাপুর হইগেছে!
আচ্ছা দাদা আপনিই কন, গরিবের জীবন যদি তামাতামা হই যায় তয় উন্নয়ন কিসের? গরিব লুটিয়া সরকারি চাকর-বাকরদের বেতন বাড়ানোর নাম কি উন্নয়ন? উন্নয়ন হইছে দাদা অস্বীকার করি না। দেশও আগাইছে। তয় হইছে কি দাদা, এই উন্নয়নের নামে বড়লোকেরা আরো বড় হইছে, গরিব আরো নিঃস্ব হইছে। সম্পদ চলি গেছে কতিপয় রাঘব বোয়ালদের হাতে। গরিবদের আজকাল ছোটখাটো পুঞ্জি নিয়া ঠিকমতো ব্যবসা করা দায় হয়ে পড়ছে। বড় বড় রাঘব বোয়ালরা গিলে ফেলে। শহরের কথা ধরেন, এতো টাকা দিয়া দোকান ভাড়া নিয়া পুঁজি খাটিয়ে গরিবরা পারবে ব্যবসা করতে?
এই দেখেন সেদিন কাঁচাবাজারে লাগলো আগুন। ব্যবসায়িরা কেঁদে জারে জার। মাল-পুঁজি হারাইছে সাথে দোকানও হারাইছে। সেইখানে করলো বিশাল বড় মার্কেট। তয় হইলো কি সেখানে রাঘব বোয়ালরা এসে দখল নিলো। এতো টাকা ভাড়া আর এডভান্স দিয়ে সেখানে কি গরিব ঢুকতে পারে? গরিব করবো কী, পেট বাঁচাইতে হইলে রাঘব বোয়ালদের প্রতিষ্ঠানের সেবাদাস হইতে হবে। গেল তারা চাকরির জন্য। কয় হইবো না কমপক্ষে ইন্টার পাশ লাগবো। তারা করবো কী, পাঠাইলো তাদের ছেলেপুলেদের। তারাও ফাইল কাগজ নিয়া ফেরত। বাপে জিকায় হইলো কী? পোলায় কয় হইবো না, তিন বছরের অভিজ্ঞতা চায়। দেখছেন দাদা কি তাল শুরু হইছে।
আর চাকরিরও আজকাল যা অবস্থা দাদা মুনাফালোভীদের এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে জীবন আর জীবন থাকে না। তারা গরম কড়াইয়ে তুলে জীবনটারে কই মাছের মতো ভাজে। জীবন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। টাইম-টেবিল নাই, দিয়া দেয় টার্গেট। তাদের টার্গেটের নিশানায় পড়ে দিনরাত কুকরের মতো খাটতে হয়। ঘুম, খাওয়া, বউ-বাচ্ছার কথা ভুলি যাইতে হয়। এই আমার পাশের বাসার একলোক। ওষুধ কোম্পানীতে চাকরি করতো। সকালে বাহির হইতো– ডাক্তার আর ফার্মেসীওয়ালাদের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে মাঝ রাইত হইতো। এইদিকে তার বউ সারাদিন পার করে রাতে বিছানায় উচাইট উচাইট করতো। কয়দিন আগে করলো কি, আড়তদারের পোলার সাথে ভাগিয়া গেছে। বেচারা স্বামী কি আর করবো। বউ হারাইয়া হইলো আরো বেফানা। তিনদিন আগে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে…।
আপনি যখন ধরাইছেন আমারেও একটান দিয়েন দাদা। আজকাল এসব ছেড়ে দিছি। দেখলে একটু সখ জাগে। পুরনো অভ্যাসতো। এই বিড়ি সিগারেট দেশ থাকি তুলে দিলে ভাল। আমি এটার পক্ষে। আমরা যা নষ্ট হইবার হইছি, আমাদের পোলাপানরা নষ্ট হোক না। দেন আগে দু টান খাইয়া লই।
উন্নয়নের কথা আর কী কইমু দাদা। এই যে শহরে ভবনগুলা দেখতাছেন– এখানে মানুষ বাস করে চিতার উপরে। আগুন লাগলে বেরোনোর রাস্তা নাই। মানুষ পুড়িয়া মরলে পরে তদন্ত কমিটি গঠন করে। রাস্তায় বাহির হইলে গাড়ি চাপা দিয়া মারি ফালায়। খুন-গুমতো আছেই। আচ্ছা দাদা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তাটা যদি না থাকলো উন্নয়ন দিয়া কী হইবে? আরেকটা কথা কই দাদা, এই দেশতো গেরাম প্রধান দেশ। তয় গেরাম এলাকা বাদ দিয়া কি দেশের উন্নয়ন সম্ভব? শহরের বাইরে রাস্তাগুলার অবস্থা দেখছেন। জেলা শহরের রাস্তা আর রাস্তার মতো নাই। মৌলভীবাজার-চাতলা চেকপোস্টের রাস্তার কথা যদি কই– এই রাস্তা দিয়া কোন গর্ভবর্তী মহিলা গেলে মাঝপথে খালাস হই যাইবো। হেই দিন গেরামে এক ছেলেরে সাপে কাটছে। গাড়িতে তুলছে সদরে নিয়া যাইবো। মাঝপথে আসি গাড়ি রোডে, চাকা পাশের জমিনে। হাসপাতালে নিতে হইলো না। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়া নিলেন। গেরামের মানুষ সুখে নাই দাদা। সেখানে এখন সুদখোর আর এনজিওকর্মীদের শোষণ বাড়ি গেছে। মানুষ না নিয়া পারে না, নিলেও উপায় থাকে না। গরু-ছাগল এমনকি ঘরের টিন, টিউবল খোলে দিয়েও নিস্তার পায় না। সুদের তান্ডবে এক সময় আর ভিটাও খুঁজে পায় না। রুজি-রোজগার নাই। দুই টাকা আয় হলে ব্যয় বাড়ে পাঁচ টাকা। মানুষ করবো কী? জান বাঁচাইতে বিদেশ খুঁজে। তয় বিদেশ যাইতেও তো টাকা লাগে। টাকা পাইবো কই? দালালের খপ্পড়ে পড়ে সর্টকাটে সাগরে ঝাঁপ দেয়। কেউ পার হয় কেউ ডুবে মরে। যে মরলো সে না হয় মুক্তি পাইলো কিন্তু পরিবারের কান্না থামাইবে কে?
গেরাম ছেড়ে শহরে কি সাধে যায় দাদা? উদাস্তু হইয়া জীবন বাঁচাইতে শহরে যায়। এখানে ওখানে ঠাঁই নে, বস্তি গড়ে। কাজ করে খায়। কিন্তু দাদা শহরে গরিব থাকলে মনে হয় হেদের ইজ্জত থাকে না। তারাতো বাস করে সিঙ্গাপুরে! গরিব খেদাইতে বোলডোজার পাঠায়। বস্তি ভাঙ্গিয়া করে মিসমার। মানুষ করে হায়, হায়। হয় আরো ছন্নছড়া। পেটের ক্ষুধা আল্লাহর দোহাই মানে না। অপরাধের সাথে জড়ায়। মাঝে মধ্যে শুনা যায় বন্দুক যুদ্ধের খবর।
এই দাদা কিছুদিন আগের ঘটনা। আমি যাইতাছি রিক্সা নিয়া। দেখি একদল মানুষের জটলা। তারা গাড়ি থামাতে চেষ্টা করে। আমারে টানমারি থামাই দিছে। একটারে ধোলাই দিয়ে তক্তা বানাই দিছে। আমার রিক্সায় ফালাইয়া কয়, সদর হাসপাতালে নিয়া রাখি দে। লোকটারে শুইয়ে রাখা হইছিলো। আধা পথে সে বসিয়া যায়। পেছন থাকি আমারে কয়-হাসপাতালে নিয়া লাভ নাই। মরি যাইমু। মরার আগে দুইখান কথা কইয়া যাই। এ দেশের কতো টাকা, কতো সম্পদ কতোজন কতো ভাবে লুটি নিচ্ছে। বিদেশে পাচার করছে। আঙ্গুল ফুলে কতোজন বটগাছ হচ্ছে– কই তাদেরতো কেউ ধরে না। হেদের বিচারতো কেউ করে না! আর আমি পেটের জ্বালায় দুইটা রুটি নিয়া দৌড় দিছিলাম…! লোকটা আর কথা পুরাতে পারে না। পড়িয়া যায়। কোনমতে তারে হাসপাতালের সামনে রাখি রিক্সা নিয়া পালাইয়া আইছি।
তয় দাদা আপনিতো অনেক দূর যাইবেন। দু মিনিট বসেন আমি একটু মুতিয়া আসি। তাড়াতাড়ি চলিয়া আইমু।
মুততে বসিয়া আরেক ঘটনা মনে হইছে। কই দাদা শুনেন– আমার বউর কথা। হে যাইবো বিদেশ। কী করমু আমার একলা কামাই দিয়া সংসার টানিয়া লইয়া যাওন মুশকিল হই যায়। ছেলে মেয়ে দুইটা লেখাপড়া করে। আশপাশের দু তিনজন মহিলা বিদেশ গেছে। হেদের সাথে কেমনে কী করি আমার বউও ব্যবস্থা করে ফেললো। তারে নিয়া গেলাম মেডিকেল করাইতে। তিনহাজার টাকা দিলাম। রিপোর্ট আসার পর ডাক্তার কয়– আমার বউর পেশাবের সমস্যা! ডায়বেটিকস আছে। আমার বউ কয় আল্লাগো আল্লা এখন কী হইবো। এতো টাকা খরছ করি এখন যদি মেডিকেলে ধরা খায় সব মাটি। বউ যেন অর্ধেক মরিয়া গেলো। আমি কই চিন্তা করিছ না। ডাক্তাররে আবার জিকাইলে কয়– আরো একবার টেস্ট করেন। আগের দিন থেকে আমার বউর খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। গ্লুকোজের পানি খাইতে খাইতে আবার গেলো। তিন হাজার টাকা দিলাম। রিপোর্ট আইলো। এখন কয় ঠিক আছে। আচ্ছা দাদা টাকা কি গাছে ধরে?
শান্তি নাই দাদা শান্তি নাই। একটা কাজ করাইতে গেলে ঘাটে ঘাটে জিল্লতি। ঘাটে ঘাটে ডাকত, টেবিলে টেবিলে ডাকাত! ছুরি নিয়া বসি আছে। আপনি যাইবেন আর কাটবো। পাসপোর্ট করাইতে গিয়াও যা শিক্ষা পাইছি। একজনরে শেষে রাগ দেখাইয়া কইলাম কিসের টাকা মিয়া? উঠিয়া কয়– আর্জেন্ট চাইছেন না, পরে একমাস ঘুরতে হইবো! মনেমনে কই কোনদিকে যে প্যাঁচ লাগাইবো পরে ভিসাটাও হাতছাড়া হইবো। পাঁচশো টাকা মুখে দিয়া কই– সালাম!
তারপরেও দাদা রেহাই নাই। পুলিশে দুই হাজার না দিলে ক্লিয়ারেন্স দেয় না। আবারও সুদ করি আনি হের মুখ বন্ধ করলাম। কি যে কইমু দাদা জীবনটা তামা তামা। স্কুলের মাস্টার আর মাস্টার আমার মেয়ের এডমিট দেয় না। সরকারি ফি পনেরশ টাকা হে চায় চার হাজার। এই ফি, সেই ফি কতো ফি আমারে দেখায়। কনতো দাদা, ছাত্র-ছাত্রীরা শিখবো কী? এইসব দেখে দেখে আর দিতে দিতে চাকরি পাইয়া মনে করে ইনভেস্ট করিয়া আইছি এখন তুলতে হইবো। কেউ টেবিলে বসে বাঁশ দেয়, কেউ রডের বদলে বাঁশ দেয়।
হাইসেন না দাদা হাইসেন না। এখন বাঁশযুগ শুরু হইছে।
পোলা মাইয়াদের অনার্স মাস্টারর্স পড়েও চাকরি নাই। বিসিএস আর নিবন্ধনের গ্যাড়াকলে ফেলে আবার পয়লা থাকি মুখস্থ করায় আর দৌড়ের ওপর রাখে। পোলামাইয়ারা মুখস্থ করতে করতে জীবন দিয়া দিতাছে। এই দেশে বিজ্ঞানী, গবেষক, দার্শনিক তৈরি হয় না ক্যান? গ্যাঁড়াকলে সব শেষ দাদা। মুখস্থ করতাছেই করতাছে। মুখস্থ বিদ্যায় যে পারদর্শী সে আগাইয়া। সৃজনশীল মানুষের দাম নাই। মুখস্থবিদরা চাকরি পাইয়া বুক ফুলাইয়া চলে আর মেধাবিরা চাকরি না পাইয়া মাথা নোয়াইয়া হাঁটে। কপাল দাদা কপাল! একেবারে যে বুঝি না তা না। দু অক্ষর লেখা পড়া করছি। কইবার জায়গা পাই না। সবাই তেল চায় তেল। আচ্ছা দাদা, আমাদের ভার্সিটিগুলাতে অয়োলজি একটা সাবজেক্ট যোগ করলে কেমন হয়?
হাইসেন না দাদা হাইসেন না। যা দিনকাল পড়ছে। আপনি একটু খাড়ান। রিক্সার চেইন পড়ি গেছে। তুলিয়া লই। হেও আর সময় পাইলো না…।
হ দাদা মনে আছে, বিলকিছের কথা জিকাইছিলেন। হের কথা তুলে কতো কথা কইয়া ফেলছি। কইলে কথা থামে না, কি কইমু। দেশে দেশে খালি ঠাডা পড়ে। ঘটনার নীচে ঘটনা চাপা পড়ে। মানুষ কোনটা রাখি কোনটা মনে রাখবে? আর বিলকিছদের নিয়া কে এতো মাথা ঘামায় বলো? টিভি খোললে দেখবেন শুধু তেলতেলে সুখিসুখি মানুষ। কী সুন্দর করিয়া হাসে। দেখলে কি মনে হয় যে দেশে ক্ষুধা-দরিদ্র আছে? এইসব এখন চলি যাচ্ছে জাদুঘরে। রাস্তাঘাটেও ফকির নাই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। তিনবেলা এখন বিরানী খায়। বিরানী খাইয়া ঝিলের পারে গিয়া সেলফি তুলে আর ফেসবুকে ছাড়ে। উন্নয়নের উপড়ে বসি বসি নেট চালায়। রাতে চাঁদ দেখে চাঁদের বুড়ির সাথে কথা কয় আর বিরানীর ঢেকুর দেয়। তয় এই সময়ে তুই ভাত পাইবে কোথায়? মাইয়াটার নাকি সাধ জাগছে ভাত খাইবো। বিরানী খাইবে তুই ভাত পাইবে কই? ভাতের লাগি সে গেলো বড়লোকের বাসায় কাজ করতে। হাভাতে মেয়ে হইলে কী হইবে দাদা, রূপ বাহির হয় টিকরে টিকরে। দেখিয়া পোলারও খাড়া হয় পোলার বাপেরও খাড়া হয়। মহিলারও সন্দেহ হয় তার স্বামী যদি তারে থুইয়া হেরে বিয়া করি ফালায়! মেয়েটা ভাতের আশা ত্যাগ করিয়া ইজ্জত লইয়া পালায়। যেখানে গিয়া ভাত চায় সেখানে ভাতের লালছ দেখিয়ে হাত বাড়ায়। কি আর করবো দাদা, জিল্লতি সইতে না পারিয়া গলায় দড়ি দিলো। এইসব খবর এখন আর ফলাও করি প্রচার হয় না। মানসিক ভারসাম্যহীন কিংবা অপমৃত্যুর দায় নিয়া মাটি চাপা হয়…।
ছিত্তমের কথা কি কইমু। কাছাকাছিও চলি আইছি। এইসব কইলে শেষ হয় না। হেইদিন গেছি এক বাজারে টিপ নিয়া। দেখি একটা পাগল। একহাতে তার একটা ভাঙ্গা ঝাড়– আর একহাতে ছেঁড়া জুতা। সে বাজারের একমাথা থেকে অন্য মাথায় যায় আর বলে–
শিয়াল-কুকুরে দেশ ভরিগেছে
লি-য়ে, লি-য়ে, লি-য়ে…!
হাইসেন না দাদা হাইসেন না। লোকটা পাগল হইলেও কথাগুলো কিন্তু ভাবার মতো।
তয় দাদা আপনার গন্তব্যে আসি পড়ছি। নামিয়া ভাড়াটা দিয়া দেন। আমার আবার ফিকির করতে হইবো। আর দাদা আপনার সাথে অনেক কথা কইয়া ফালাইছি। মনে কিছু নিবেন না। আর কাউরে কইয়েন না কিন্তু। আমার আবার পোলা মাইয়া দুইটা আছে। নিজে দেখভাল করতে হয়। আমার কিছু হইলে পরে ওরা বেফানা হই যাইবো।