ও দিদার, তুমি তো বাজান একটা চোর বিয়া করছো। এই মাইয়্যাতো চোরের মাইয়্যা চুরি কইরা আমার সংসার আন্ধা করবো। আন্ধা সংসার ভালা না। তুমি বাজান এই চোর মাইয়্যার একটা বিহিত করো। কি হয়েছে মা, জুলেখা তোমার সাথে বেয়াদবি করছে?
না রে বাজান, বেয়াদপি করে নাই। চুরি করছে। এই মাইয়্যা চোর। আমারতো মনে হয় মাইয়্যার বাপ এককালে বড় চোর আছিল। মা জুলেকার আব্বা রতনপুর স্কুলের মাষ্টার ছিল। ঐ যে, আমি যে স্কুলে পড়েছিলাম সেই রতনপুর স্কুল। সেই স্কুলের বাংলার মাষ্টার ছিলেন তিনি। তিনি কেন চোর হবেন? তুমি বাজান আমারে ভুল বুইঝো না। মাষ্টারের মাইয়্যা চোর হয় কেমনে? এই মাইয়্যা আমাগো সব চুরি কইরা শেষ করবো।
ঠিক আছে মা, আমি আগামি সপ্তাহে বাড়ি আসছি। তখন জুলেখার বিচার করবো। তুমি এখন এই নিয়ে টেনশন করো না। আর তোমার পায়ে রোজ রাতে ঐ তেলটা মালিশ করবে। এই তেলের অনেক গুণ। তুমি জানো না মা, এই তেল আমি কত কষ্ট করে জোগাড় করেছি। সাবধানে মালিশ করবে। জুলেখারে বলবে, তেলটা একটু গরম করে দিতে।
আম্মার সাথে কথা বলে আমি ফোনের লাইনটা কাটলাম। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। মাঝে মধ্যে মা জুলেখাকে আদর করে এটা ওটা বলে। আমার সামনে বকাঝকাও করে। এটা নানা দোষ ত্রুটি থাকে বলেই। তবে কখনো ফোন দিয়ে আমাকে জুলেখার বিষয়ে অভিযোগ করেনি। আজ কেন করলেন। আজ কেনই বা জুলেখাকে চোর বললো।
আজ অফিস থেকে তাড়াতাড়ি মেসে ফিরলাম। জুলেখার সাথে কথা বলা দরকার। বাড়িতে নিশ্চয় খারাপ কিছু একটা হয়েছে। মনে মনে ভাবি, খারাপ কিছু হলে জুলেখা আমাকে জানানোর কথা। নিজের ভেতর ভয়টা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। আমি সব সময় চেয়েছি আমার স্ত্রী আর মায়ের মধ্যে খুব মধুর একটা সর্ম্পক থাকবে।
জুলেখার সাথে আমার বিয়ের আট মাস হলো। আমার তিন বোন। ভাই নেই। আমি সবার ছোট। বোনগুলোর বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। আব্বা আর বড় দুলাভাই পছন্দ করে জুলেখার সাথে আমার বিয়ে দিলেন। পাশের গ্রামের রতনপুর স্কুলের মজিদ মাষ্টারের বড় মেয়ে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে জুলেখা সবার বড়। মেট্রিক পাশ করে পড়ালেখা আর করেনি। জুলেখার আব্বা স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়েছেন প্রায় বছর দুয়েক। সামান্য কিছু জমির ধান আর পেনশনের টাকায় তাদের সংসার চলে। জুলেখার দুই ভাইয়ের একজন ক্লাস নাইনে আর অন্যজন ফোরে। সংসারটা বেশ টেনে টুনেই চলে। বড় দুলাভাই বললেন, ভালো মানুষের মেয়ে। এই মেয়ে সংসারের জন্য ভালো হবে। তাছাড়া দেখতে শুনতে বেশ ভালো। এমন ভালো মেয়ে খুঁজে পাওয়া কঠিন।
বড় দুলাভাই জুলেখাকে বেশ পছন্দ করলেন। আব্বাও। আমি আর না করলাম না। আমার তেমন কিছু চাহিদাও নেই। শুধু মেয়েটা ভালো হলেই চলবে। বাবা মায়ের সাথে মিলেমিশে থাকবে। আমি শহরের মেসে থাকি। বাবা মা যতদিন বেঁচে আছে আমার স্ত্রী বাবা মায়ের সাথেই থাকবে। সবকিছু মিলিয়ে জুলেখা বেশ ভালো। আমি আর না করলাম না। মেসে এসে জুলেখাকে ফোন দিলাম। জানতে চাইলাম কি হয়েছে? জুলেখা কিছু বলছে না। কাঁদছে। শুধু বললো, আমাকে মাফ করে দাও। তুমি বাড়ি আসলে আমি সব বললো। আমি জুলেখার কাছে বার বার জানতে চাই কি হয়েছে। জুলেখা চুপ করে কাঁদে। কিছুই বলে না। আমার বুকের ভেতর বিশাল এক ভয় সবকিছু অস্থির করে তুলছে। আমি দিন গুনতে থাকি কখন বাড়ি যাব।
গতকাল মাঝ রাতে আমি বাড়ি আসলাম। সবকিছু স্বাভাবিক। জুলেখা মন দিয়ে বাড়ির কাজকর্ম করছে। সকালে আব্বার জন্য অজুর গরম পানি করেছে। আমার জন্য দুই পদের পিঠা বানিয়েছে। সেই পিঠা আম্মা আগে খেয়ে জুলেখাকে আদর করে ডাকলো। ডেকে বললো, ও বউ, পুলি পিঠাত তো মিষ্টি একটু কম হইয়্যা গেল। আমার মানিকতো মিষ্টি একটু বেশি খাইতে চায়। তুমি একটুখানি গুড় বাড়ায়ে দেও।
জুলেখা আমাকে এখনো কিছু বলেনি। আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আম্মার কাছে গিয়ে বসে আছি। আম্মা আমাকে নানা কথা বলে কিন্তু জুলেখাকে নিয়ে কিছুই বলছে না। আমি ইনিয়ে বিনিয়ে নানা কথা বলি কিন্তু আম্মা এই নিয়ে মুখ খুলেন না। তাছাড়া জুলেখার প্রতি তার এত মায়া দেখে আমার বেশ ভালো লাগলেও হঠাৎ ঐদিন আম্মার এত পরিবর্তন দেখে মনে মনে খটকা লাগলো। কাল সকালেই আমি চলে যাবো। এখন এই বিষয়ে কিছু একটা বিহিত না করে গেলে আবার যদি এই নিয়ে বাড়িতে অশান্তি লাগে তবে সেই একই কষ্ট নিয়ে আমার সময় কাটাতে হবে শহরে।
আমি জুলেখার কাছে জোর করে জানতে চাইলাম। জুলেখা অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর বললো, তুমি আম্মার কাছে শুনো। জুলেখার কথা শুনে আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি এবার আম্মার কাছে গিয়ে সরাসরি জানতে চাইলাম মা ঐ দিন বাড়িতে কি হয়েছিল। মা বললেন, বাজান এই নিয়ে তোমার আর চিন্তা না করলেও হইবো। তুমি মন দিয়া কাজকর্ম করো। বেটা মানুষের মন ঠিক রাখতে হয়। মন বেঠিক বেটা মানুষ হইলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় বাজান।
আম্মা আমাকে আর কিছু বলতে দিলেন না। আমি মন খারাপ করে সারাটা দিন পার করলাম। কিন্তু আম্মা, জুলেখা সবাই দেখি খুব হাসি খুশি। কোথাও কোন সমস্যা নাই। বরং আমি দেখছি আম্মা আগে জুলেখার উপর একটু আধটু রাগ করলেও এখন দেখছি বেশ আদর করছে।
রাতে এশার নামাজের পর আম্মা আমাকে ডাকলেন। আব্বা মসজিদ থেকে এখনো ফেরেননি। আমি আম্মার সামনে বসে আছি। আম্মা পায়ে গোড়ালীতে ব্যথার তেল লাগাচ্ছেন। আম্মা অনেকক্ষণ চুপ করে আছেন। আমি কিছু একটা বলতে যাবো অমনি আম্মা বললেন, ষোল বছর বয়সে আমার বিয়া হয়। আমরা পিটেপিটি দুই বইন। ছোট আরো এক বইন আর দুই ভাই। ভাই দুইখান ছোট। আমার চেয়ে অনেক ছোট। এই দুই ভাই আছিল আমার খুব আদরের। তহন আব্বার ব্যবসাপাতি ভালা। আমার বিয়ার পর আস্তে আস্তে ব্যবসাপাতি বেশ মন্দা হইয়্যা গেল। আব্বার সংসারে একটু টানাটানির মইধ্যে গেলেও কোন রহম চইল্যা যাইতাছিলো।
স্কুল বন্ধ দিলেই আমার দুই ভাই এই বাড়ি আইস্যা পরতো। আমার সংসারে ভালামন্দ রান্না অয়। দুই ভাই ভালা কিছু রান্না পাইলে খুব খুশি। তোমাগো ছোট মামারতো খাবার্ পাইলেই আর কিছু দেহন লাগতো না। আমি জানি বাড়িতে আমাগো সংসারে আগের মতন খাওয়া দাওনের চলন নাই। আব্বার পয়সাপাতির দিন কাল মেলা খারাপ যাচ্ছে। ভালা খাওন দাওন পাইবো কই।।
আমার বাড়িতে কিছু ভালোমন্দ রান্না হইলে ভাই বোনদের কথা খুব মন টানতো। এক সময় আমরা সব ভাইবোন মিইল্যা কত কিছু খাইতাম। খাসির মাংস আব্বার খুব প্রিয়। মাংস রান্না অইলে আব্বা ভাত খাইতো মেলা। ঐদিন আম্মা ভাতও বেশি কইর্যা রাধতো।
বিয়ার পর এই বাড়িত খাসির মাংস রান্না অইলেই আমার মনডা খারাপ অইতো। আব্বার কথা খুব মনে অইতো। মাঝে মাঝে তোর ছোট মামার কাছে একটু মাংস পাঠাই দিতাম আব্বার জন্য। সেই মাংস পাইয়্যা আব্বা যে কি খুশি অইতো।
কথাগুলো বলতে বলতে আম্মা কেমনজানি হয়ে গেলেন। তার চোখ দুটি পানিতে টলমল করছে। আমি জানি কথাগুলো বলতে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। হয়তো তার ভীষণ কান্না পাচ্ছে। আমি কিছু বলিনা। আম্মা বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন। আমি জানিনা আম্মা কেন এসব আমাকে বলছেন। আমি মনে মনে ভাবি, আম্মা কি কোন কারণে মনে কষ্ট পেয়েছেন। জুলেখা কি আম্মার সাথে এমন কিছু করেছে।
মনে হলো আম্মা চোখের পানি মুছলেন। আম্মার চোখের পানি দেখে আমার বেশ কষ্ট হচ্ছে। আম্মা এবার হুট করে কেঁদে দিয়ে বললেন, বাজান জুলেখা মাইয়্যাটা খুব ভালা। খুব ভালা বাজান, খুব ভালা। আমি বললাম কি হয়েছে মা?
মা বললেন, ভুলটা আমারই বাপ। জুলেখার বাপের বাড়ির অবস্থা বেশ খারাপ। ছোট ছোট ভাইগুলান খাওন দাওন নিয়া বড্ড কষ্ট করতাছে। আমি কি আর এসব জানি। এই মৌসুমে ভালা ধান টানও হইলো না তাগো। শুনছি জুলেখার বাপের অসুখ। বেশ কদিন নাকি খাওন দাওন ঠিকমত নাই। জুলেখার ছোট ভাইটা দেখি দুইদিন পর পর বাড়ির উত্তর পাড়ে আইস্যা দাঁড়ায় থাকে। ছোড পুলা। আমি ভাবি বইনরে দেখতে মন চায় বইল্যা আসে। ধুর থেইক্যা আমি বাড়িত ডাকি। একদিন দেহি জুলেখা ছেলেডারে লুকায়ে চাল দিতাছে।
আমি কি আর তাগো সংসারের খবর জানি। আমার খুব রাগ হইলো। বউ মানুষ। বাড়ির জিনিস লুকায়ে বাপের বাড়ি পাঠান খুব অন্যায়। অন্যায় কাজ আমি ঘৃনা করি। অপছন্দ করি। আমি খুব রাগ হইলাম। তোমারে ফোন দিলাম। বাজে বাজে কথা কইলাম। এটা ঠিক হইলো না বাজান। আমি জানি জুলেখা না জানায়ে লুকায়ে বাপের বাড়ি চাল দেওন ঠিক করে নাই। আমারে কইলে আমি না করতাম না। তারপরও আমার এমুন করা ঠিক হ্য় নাই বাজান। ছোট ছোট ভাইগুলা না খাই্য়্যা আছে জানলে সবাই এমন করবো। আমার ভাই দুইটা আমার বাড়ি আইস্যা খাওন দাওন করলে আমার মনটা যে খুশিতে ভইরা যাইতো তা আমি জানি। এই আমি আব্বার জন্য খাসির মাংস রান্না কইরা দিতাম। আব্বা একটু মাংস খাইছে শুনলে মনটা আনন্দে ভরে যেত।
তোমারে ফোন দেওনের পর জুলেখা আমার কাছে আইস্যা সবকিছু খুইল্যা বলছে। বউটার কথা শুনে আমি খুব লজ্জা পাইছি বাপ। মেয়েটা আমার কাছে ক্ষমা চাইলো। তার ক্ষমা চাওয়া দেইখ্যা আমার কষ্ট লাগছে। মাইয়্যাটার তো কোন দোষ আমি দেহি না। খুব ভালা মাইয়্যা। জুলেখা খুব ভালা মাইয়্যা।
আম্মার কথা শুনে কখন যে আমার চোখ গড়িয়ে পানি ঝরছে আমি বুঝতেই পারিনি। জুলেখার জন্য আমার মায়া হচ্ছে। ভীষণ মায়া। আম্মা আমার চোখে পানি দেখে বললেন, আমি জানি জুলেখার জন্য তোমার কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট হওয়া ভালো। এতে বউয়ের প্রতি মায়া বাড়ে। সংসারে মায়ার খুব প্রয়োজন। এই মায়া স্ত্রী সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব বাড়ায়।
আমি আম্মার দিকে তাকিয়ে আছি। আম্মা আমার হাতে একটা কাগজ গুজে দিলেন। বাজারের লিষ্ট। আম্মা বললেন, আমি জুলেখার বাপের বাড়ি কিছু ধান পাঠায়ছি। বিষয়টা তোমার বাপ জানে। শহুর থেইক্যা পরের বার আসার সময় তুমি এই লিষ্ট ধইরা বাজার নিয়া আসবা। তুমি বাজার নিয়া আসলে আমরা সবাই মিইল্যা জুলেখার বাপের বাড়ি যাবো। যাবার সময় কাসেমের দোকান থেকে খাসির মাংস নিয়া যাব। সেই বাড়ি রান্না বান্না হবে। সেই বাড়ির পাতিলে হইবো রান্না। আমি জানি ঐ বাড়িতে ভালো রান্না বান্না খুব একটা হয় না। রান্না বান্না হয় না বইল্যা তোমার আর জুলেখার যাওনও হয় না। এবার আমরা সবাই মিইল্যা যাব। ঐ বাড়িত ভালো রান্না বান্না হইলে জুলেখার ভাইগুলার মনটা বড় হইবো। বাবা মায়ের মনডা বড় হইবো। তারা আমাগো আত্নীয়। আত্নীয় স্বজন আমাগো কাছে ছোট মন নিয়ে থাকবো তা কেমন কইর্যা হয়। মানুষের মনডা বড় হওনের বেশ দরকার। মনডা বড় না হইলে মানুষের ভেতর সাহস কইম্যা যায়। সাহসের খুব দরকার বাজান। এই সাহস নিয়া তারা একদিন মানুষ হইবো।
আমি বসে আছি জুলেখাদের বাড়ির উঠানে। রান্না বান্না হচ্ছে। বিশাল পাতিলে রান্না। জুলেখা একবার এদিক একবার ওদিক দৌড়াচ্ছে। খুশিতে জুলেখা মাঝে মাঝে লুকিয়ে ঘরের ভেতর গিয়ে কাঁদছে। একটু খানি কেঁদে আবার বাইরে আসছে। আমি জুলেখার চোখ দেখে ঠিকই বুঝতে পারছি। একটা হাত প্যারালাইজড হওয়া বাবাকে জুলেখা জোর করে জুস খাওয়াচ্ছে। উনি খেতে চাইছে না। তারপরও জুলেখা খাওয়াবে। এই জুস আমি শহর থেকে নিয়ে এসেছি। আমের জুস।
জুলেখাকে এত খুশি আমি আগে কখনো দেখিনি। কত চঞ্চল হযে উঠলো মেয়েটা। আম্মা জুলেখাকে দেখিয়ে আমাকে বললো, দেখছো বাজান মাই্য়্যাটা কত ভালা। আমি বাইচ্যা না থাকলেও তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করবা বাজান। এটা তোমার দায়িত্ব। তোমার উপর জুলেখার বাপ মায়ের হক আছে। তোমার এই হক পালন করা লাগবো। তোমার সাধ্যে যতটুকু কুলায় তুমি করবা।
রাতে আমি আর জুলেখা বসে আছি উঠানে। উঠানের কোণায় একটা বাতাবি লেবু গাছ। বিশাল বড়। এত বড় বাতাবি লেবুর গাছ আমি আগে কখনো দেখিনি। এই জায়গাটা একটু অন্ধকার। জোছনার আলো বাতাবি লেবুর পাতা গলে একটু আধটু আমাদের গায়ে পড়ছে। জুলেখা কাঁদছে। চাঁদের আলোয় জুলেখার মুখটা দেখা যাচ্ছে। আমি জানি জুলেখার এই কান্না খুশির। বাবা মা, ছোট ভাইদের একটু ভালো থাকতে দেখার খুশির কান্না। দিন দিন এই মানুষগুলোর জন্য নিজের ভেতর জমাট বাঁধা কষ্ট আজ কান্নার স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। ।
আমি জুলেখার একটা হাত মুঠো করে ধরে বললাম, এই প্রাপ্তি কখনো ভুলবে না। আমার মা যেমনটি করে ভুলেনি। সত্যিকারের একজন মানুষ হওয়ার জন্য নিজের অতীত মনে রাখাটা ভীষণ ভীষণ জরুরী। আজ তুমি একজন স্ত্রী এবং একটি পরিবারের বউ। একদিন তোমার এই জায়গাটা যে পাবে তাকে তোমার জায়গায় রেখে ভালোবাসবে। মনে রাখবে ওটা তোমার জায়গা ছিল একদিন। দেখবে এই ভালোবাসা কখনো ফুরাবে না। তাকে ভালোবাসা মানে তুমি নিজেকে ভালোবাসছো। নিজের জন্য ভালোবাসা কখনো ফুরোয় না।