বোলের মইধ্যে কাপড় বিজাইতে যাইয়া বাতরুমে সাবের প্যান্টডা দেইখ্যা তত্তরি কইরা পকেট ছেক করলাম।যদি দুই একটা টেহার বড় নোট পাইয়া যাই!না আইজ ভাগ্যডা খারাপ।পাইলাম না কিছুই।হুদা কতডি টিস্যু পকেটে থুইয়া দিছে কীপটা বেডা!
সাবের প্যান্ট ধুইতে দিলে পেরায় সময়ই কিছু না কিছু পাই। এই বাসায় একবছরের লাহান কাম করি।আমি আবার এক বাসায় দুই-তিন মাসের বেশি কাম করতে পারিনা।মেডামরা না কইরা দেয়।তাছাড়া আমারও মেজাজডা চড়া!মেডামরা কিছু কইলে কামের পাছায় লাত্তি মাইরা থুইয়া আইয়া পড়ি।এই বাসার ম্যাডামডাও যে ভালা তাও না।হারাডাদিন বেডি আমার লগে ক্যাঁওম্যাঁও করে।
”বুয়া ডাইনিং টেবিলের নিচটা ঝাড়ু দাওনি কেন?দরজার পেছনে মোছনি কেন?ড্রেসিং টেবিলে ধুলো কেন?কাপড়ে সাবানের ফেনা রইল কেন?এক কাপড়ের উপর আরেক কাপড় রোদে দিলে কেন?কাপড়ে ক্লিপ দেয়ার কথা আর কতবার বলতে হবে তোমাকে?হাঁড়িপাতিল ধুলেই দেখি ভিম লাগিয়ে রাখো,ভিম বার একটু কম নিয়ে মাজলে কি হয়?এত পিঁয়াজ,রসুন যায় কই?কম করে কাটতো!তেলও দেখি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়!”
কীপটা বেডী!এতো পিঁয়াজ,রসুন,তেল যায় কই?কই আবার যাইবো?তোগো পেডেই যায়!আমি আর কতডি নেই!
পত্তেকদিন তিনডা পিঁয়াজ,একখান রসুন,দুইডা আলু আর এক ছডাক তেল নেই।আমার একদিনের রান্ধনে আর কি লাগে?আবার বেডি একবেলার বাত-তরকারি দিয়াই দেয়! কাপড় সিলাইন্না বেডিরে দিয়া ছায়ার মইধ্যে দুইডা পকেট বানায়া লইছি!হেই পকেটে ঢুকাইয়াই সব নেই!মাছ,মাংসও নেই!তয় হেই লাইগ্গা আবার আলাদা টেকনিগিরি করন লাগে।টেকনিগিরি করন লাগলেও করি,করুমনা?মাছ-মাংস কি আমগোর খাইতে মন চায় না!গরুর মাংসের যে দাম!
আমি করি কি -মাছ-মাংস পলিতিনে প্যাঁচাইয়া পথ্থম ময়লার ঝুড়ির এক্কেরে নিচে রাখি।হেরপর যাওয়ার সময় ঝুড়ি থেইক্কা ময়লা পলিতিন ব্যাগে ডুকাইয়া হালানোর নাম কইরা একবারে নিয়া বাইর অই।নিচে নাইম্মা ময়লা হালাইয়া আমার মাছ-মাংসের ব্যাগ নিয়া বাড়ির পতে হাডা ধরি।তয় আফসোস!মুরগির মাংস নিতে পারিনা।ইচ্ছা কইরাই নেইনা!বেডি একটা কইরা মুরগি নামায়!আট-দশডা টুকরা অয়।হেইথ্থেকা সরাইলে আবার শয়তান বেডি টের পাইয়া যাইবো!তহন আমার আমও যাইবো,ছালাও যাইবো!হেইল্লাইগা লোভ কমই করি!আর এমনেও অন্য বুয়াগো লাহান আমার অত লোভও নাই!
এই দুই একটা জিনিসের লাইগ্যাই এই বাসায় এতোদিন ধইরা পইরা রইছি।নাইলে এই বেডির ক্যাডক্যাডানি কেডা সহ্য করবো!এই ধলার মা’তো নাই-ই! এমনেই বেডির ঢং দেখলে গতর জ্বলে!দুইডা পোলাপানের মা অইছে অহনও স্বামীর লগে হেটকাইতে হেটকাইতে ঢইল্লা পড়ে!সকালে পোলাপাইন ইস্কুলে দিয়া শুরু অয় রেজ্জেক-শাপানার খোশ-গল্প!এমুন রং তামশা দেখলে মনে অয় শইলডায় আমারে কেউ আগুন জ্বালাইয়া দিছে!!বেডারও আছে হ্যাবলাপানা!খালি বউ বউ করে!
-‘লিসা,কোথায় গেলে!টাওয়েল টা দাওতো!’
-‘লিসা,এদিকে আসোতো!আমার ঘড়িটা পাচ্ছিনা!চশমাটা কোথায় রাখলাম,দেখোতো!’
-‘লিসা,দেখোতো এই শার্টের সাথে কোন টাই টা ম্যাচ হয়?’
-‘লিসা,তোমাকে বলেছিনা আমি অফিসে যাওয়ার সময় তুমি রান্নাঘরে যাবেনা!’
লিসা,লিসা,লিসা!হুউম!সব কামে লিসারই ডাকন লাগব!আমারে ডাকলে কি আমি চশমা আর গরিডা নিয়া দিমুনা!ম্যাউন্যা বেডা জানি কোনহানকার! আইজকা কয়ডা টেহার দরকার।হেইলেলাইগা পরিস্কার কইরা কাম করলাম।বেডিও আইজকা কাম দেইখ্খ্যা খুশি অইয়া কইল-
-‘বুয়া,তুমি মাঝে মাঝে এতো পরিষ্কার করে কাজ করো যে মন ভরে যায়!সব সময় করোনা কেন?’
-‘আফা আমনের মনডা বালা দেইখ্খ্যা আমারে বালা কন!নইলে অন্য মেডামরা হারাদিনই আমারে বকাবকি করতো!আমনের আর সাবের মেলা-মেশা,কতাবার্তা কত যে বালা লাগে আমার!আল্লাহয় য্যান আমনেগো এমনি মিল মহব্বতের মইধ্যে রাহে!আফা পোলার ইস্কুলের পরীক্ষার ফিস দেওন লাগবো,নাইলে মাস্টররা পরীক্ষা দিতে দিবনা!পোলাডা বাপের কাছে কান্দে!হের বাপের কি আর হেইদিকে নজর আছে?পোড়া কপাল আমার!যদি কয়ডা টেহা দিতেন।’ বেডি পাঁচশ টেহা দিছে!আইজ ধলার বাপ আইলে ধলার বাপরে কইয়া ৬-৯ ডার শোয়ে ছাকিপ-অফুর একটা বই দেখতে যামু।এইল্লাইগাই টাকাডা নিলাম। ধলার বাপ আইজ রাইত কইরা বাড়িত আইছে।বাংলা খাইয়া টাল!আইয়ায় আমার চুলির মুঠি ধইরা পিডের মইধ্যে কিল গুশি!
-‘ওই চুন্নিমা* ,দুইআজার টেহা দে!’
-‘কিল্লাইগা দিমু আমনেরে ?জুয়ায় উরানের লেইগ্গা!মদ খাওনের লেইগ্গা?খা**মা* কো কাছে যাওনের লেইগ্গা?’
-‘চুন্নিমা* তোর মুহে এতবর কতা?তুই চুরি করলে দোষ নাই!চুরির লেইগা যেই বাসায় যাস হেই বাসার থেইক্কাই তরে গার দাক্কা দিয়া বাইর করে!তর লেইগা বস্তিতে আমার কুনো ইজ্জত নাই!’
-‘ছারেন কইতাছি কিন্তুক বালা অইবনা!আমি চুরি করি আমার লেইগা?আমি হুদা খাই আর তুই আ কইরা থাহস! গামলা ভইরা ভইরা অডি কি খাস?গু!ছার আমারে কইতাছি!ঢেমনা ব্যাডা!বউ খাওয়ানের মুরোদ নাই!মা*গো কাছে যাইয়া টেহা ঢালে!’
-‘মা*তোর চোপা যদি আইজ না ভাঙছি!আমিও বাপের গরের পোলা না’!