আমেরিকাতে প্রায় এগারো বছর ধরে আছি,মাঝে মাঝে মনে হয় এগারটি বছর স্বপ্নের মধ্যেই কেটে গেল,আব্বু সবসময়ই একটা কথা বলে “মানুষ যখন সুখের সাগরে ভাসতে থাকে সময়ের চাকা দ্রুতবেগে ছুটতে থাকে” আমারও ঠিক তাই মনে হচ্ছে।২০০৮ সালে বড়মামা আম্মুকে আমেরিকাতে নিয়ে আসে তারপর আম্মু আমাদের নিয়ে আসে।উন্নত লাইফস্টাইল প্রথম প্রথম বেশ ভালো লাগলেও এখন আর আগের মত ভাল্লাগে না। মন চায় আগের মত ছোট্ট কুটিরে থাকি,সকাল সকাল লবম ছিটিয়ে পোড়া মরিচ দিয়ে পান্তা ভাত খাই,তারপর সারাদিন প্রচুর ঘোরাঘুরি করে দুপুরের খা খা রোদ পাড়ি দিয়ে ক্লান্ত পথিকের বেশে বাসায় ফিরে গামছা,লুঙ্গি কাঁধে নিয়ে দিঘির জলে সাঁতার কাটি।
আমেরিকাতে পড়ে থাকলেও নিজের দেশ,শেকড়ের মায়া আমায় চুম্বকের মত টানে।প্রায় দুবছর ধরে ভাবছি বাংলাদেশে যাবো,একসপ্তাহ থাকবো,পুরো দেশটা ঘুরে ঘুরে দেখবো।সবসময় টিভির পর্দায় দেখি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।মহাকাশে সেটেলাইট পাঠাচ্ছে, নিজের টাকায় পদ্মা নদীর উপর সেতু বানাচ্ছে,লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে থাকতে দিয়েছে ইত্যাদি প্রায়শই চোখে পড়ে।বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া দেখলে বেশ ভালো লাগে।
আমেরিকার টেক্সাসে থাকি,ছোট্ট একটি কোম্পানির জুনিয়র মার্কেটিং অফিসার,বেতন অতবেশি না হলেও বেশ আরাম আয়েশের চাকরি,কোম্পানির কাজে আজ এই রাজ্যে তো কাল অন্য রাজ্যে,ঘুরে ঘুরে জনসাধারণের কাছ থেকে প্রোডাক্ট ফিটব্যাক ডেটা কালেক্ট করি,ভোক্তা কোন পন্যের উপর ফোকাস দিচ্ছে,কেন দিচ্ছে,তাদের কথার উপর ভিত্তি করে রিপোর্ট করি তারপর কোম্পানি প্রোডাক্ট আপডেট করে বাজারজাত করে।সুখেই কাটছে দিনকাল।যে রাজ্যেই যাই প্রথম সপ্তাহ ইচ্ছামত দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখি তারপর রিলাক্স মুডে কাজ করি।কাল নিউইয়র্ক যাব।অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বুক করলাম।
সকাল ছয়টায় ঘুম ভাংলো,রাতে ভালো ঘুম হইছে,শরীরটা পুরাই চাঙা লাগছে,ফ্রেশ হলাম,কি খাওয়া যায় তাই ভাবছি,বাসায় পোষা বেড়ালটি ছাড়া কেউ নেই আব্বু-আম্মু বোস্টন সিটিতে,টেক্সাসে যখন প্রচুর শীত পড়ে তখন আমরা বোস্টন সিটিতে চলে যাই ওখানে এসময় বর্ষার মৌসুম শুরু হয়।আমারও বোস্টন সিটিতে থাকার কথা বাট কোম্পানির কাজে যাওয়া হয়নি।ফ্রিজ থেকে পেঁপে নিলাম,সকাল সকাল পেঁপে জুস খাওয়াটা ঠিক হবেনা তারপরও খেলাম,ব্যাগ ঘুছিয়ে নিলাম এবার স্টেশন যাওয়ার পালা,আমেরিকাতে ট্রেন আটটায় মানে আটটায়,দুমিনিট আগেও না পরেও না।পাঁচ মিনিট আগে ট্রেন স্টেশনে চলে এলাম,কাউন্টারে গিয়ে অনলাইন কোর্ড দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহ করলাম,গতকালই অনলাইনে টিকিট কাটলাম।আমেরিকাতে ট্রেনে যাতায়াত করার মজাটাই অন্যরকম।
নিজের সীটে গিয়ে বসলাম,দুমিনিট পর ট্রেন ছাড়বে,নিউইয়র্ক গিয়ে কোথায় উঠবো,রিসোর্টে নাকি হোটেলে!!নাকি ফ্ল্যাট বাসায় উঠবো তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে ট্রেন ছাড়লো টেরই পেলাম না।আমার পাশের সীটে কে বসেছে তাও খেয়াল করিনি,তাই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখি মার্কিন অভিনেতী রুসো,মুভিতে বেশ অশ্লীল কাপড়চোপড় পরলেও আজ বেশ ভারী পোষাক পরে আছে,অতিরিক্ত শীতের জন্য এমনটি হয়েছে,গরমের মৌসুম হলে ছোট একটা আন্ডারওয়্যার আর ব্রা পড়ে থাকতো। রুসো লাখো মার্কিন তরুনের ক্রাস,কোটি কোটি ফ্যান ফলোয়ার।
আমার দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো কিছু একটা বলতে যাচ্ছে।হাই হ্যালো এরকম কিছু একটা রুসোকে দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি স্বাভাবিক ব্যাপার,,এমন একটা ভাব দেখালাম। রুসো রীতিমতো চমকে গেল।আমি কোন কথা বললাম না। ধরুন আপনি ট্রেনে করে যাচ্ছেন হঠাৎ দেখলেন পাশের সীটের লোকটি রাষ্ট্রপতি,উনি আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন মজার ব্যাপার হলো আপনি রাষ্ট্রপতিকে দেখে এমন একটা ভাব দেখালেন আপনি উনাকে দেখে মোটেও অবাক হননি,এটা স্বাভাবিক কোন ঘটনা,রাষ্ট্রপতি নির্ঘাত মন খারাপ করবে এমনটাই ঘটেছে রুসোর সাথে।
রুসো হয়তো ভেবেছে পাশের সীটের লোকটি চিৎকার চেচামেচি করে বলে উঠবে ও মাই গড় রুসো আপনি!!আমার কি সৌভাগ্য আপনার সাথে দেখা হয়ে গেল, জানেন!!আমি আপনার কত বড় ফ্যান,হ্যানত্যান রুসোর মুভি নিয়ে কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে পড়বে,তারপর বলবে প্লিজ সেলফি। কিন্তু না এমনটা কিছুই হলোনা।
আমি ট্রেনের জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম,বাইরের দৃশ্য দেখার মত,পাহাড়ি এলাকা দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে,মনে হচ্ছে পাহাড়গুলো দৌড়াদৌড়ি করতেছে।আমার জায়গায় কোন কবি থাকলে নির্ঘাত এতক্ষণে পাঁচ ছয়টা কবিতা লিখে ফেলতেন আর রুসোকে নিয়ে কি ভাবতেন তা নিয়েই আমি ভাবতেছি।রুসোর দিকে তাকালাম উনার মনটা খারাপ তার চোখ মুখতো তাই বলছে,নিজ থেকে কথা বলবো কিনা তাই ভাবছি।থাক অভিনেত্রী হইছে তো কি হয়েছে গায়ে পড়ে কথা বলা ছেলে আমি না।কিছুক্ষণ পর..
-হাই আমি রুসো নিউইয়র্ক শুটিংয়ের কাজে যাচ্ছি আপনি??
-জ্বি আমি আরমান,বিজনেসের কাজে নিউইয়র্ক যাচ্ছি।
-আমাকে চেনেন??
-জ্বি আপনাকে চিনি।আপনি অভিনেত্রী রুসো না??
-হুম কিন্তু আপনি এমন একটা ভাব ধরলেন যেন আমাকে চেনেনই না,যাগগে আমার কয়টা মুভি আপনি দেখেছেন??
-আপনার একটি মুভি দেখেছি প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর আগে।
-আমার ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত ৫৭টি মুভি করেছি তারমধ্যে আপনি মাত্র একটি মুভি দেখেছেন,সো ফ্যানি আচ্ছা কোন মুভিটি দেখেছেন??
-জ্বি মুভির নামটা ঠিক মনে পড়ছে না তবে মুভিটা বেশ উত্তেজনাকর,আপনি পুরো মুভিতে কখনো নায়কের সাথে বিছানায়,কখনো পার্টির বন্ধুদের নিয়ে বিছানায়,মুভিটির বেশিরভাগ অংশে আপনাকে প্রায় উলঙ্গ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
-কোন মুভি আমি নিজেও বুঝতেছি না আমার সবগুলো মুভির মধ্যেই তো এসব দৃশ্য থাকে,আমার সবগুলো সিনেমা উত্তেজনাকর এটাতো ছোট ছোট বাচ্চারাও জানে।আচ্ছা আমি কি ঐ সিনেমায় লাল রঙের আন্ডারওয়্যার পড়েছি,প্লিজ একটু চিন্তা করে বলুন।
-না আসলে আমি পুরো মুভিটা দেখেনি তবে ৫৭ মিনিট পর্যন্ত দেখার পর বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলাম,নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কোন দূর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারি তাই পুরো মুভিটি দেখেনি।তবে ৫৭ মিনিটের মধ্যে যতদূর মনে পড়ে তিনটা আইটেম সং ছিল।আপনি উলঙ্গ হয়ে নাচানাচি করেছেন।
-ওও আপনি দ্যা রোমাঞ্চ মুভিটি দেখেছেন।মুভিটি আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে।এ মুভিটির পর রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসি।যাই হোক ভালো করেছেন সবাই আসলে আমার সিনেমা দেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
-আচ্ছা আমি কি আপনাকে কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি??
-শিওর,আপনার যা মন চায় তাই জিজ্ঞেস করুন,নিউইয়র্ক পৌঁছাতে আরো আট ঘন্টা লাগবে,আমি আবার চুপচাপ বসে থাকতে পারিনা।প্লিজ প্রশ্ন করুন।
-আচ্ছা আপনি মিডিয়াকে এবং মিডিয়ায় কাজ করে তাদের কোন চোখে দেখেন??বা আপনি নিজেকে কিভাবে দেখেন??
-মিডিয়াতে আসলে আপন বলতে কেউ নেই,দেওয়া নেওয়ার উপর দাড়িয়ে আছে পুরো ইন্ডাস্ট্রি,আপনি চাইলেই ভালো পড়াশোনা করে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,বড় পদের সরকারি কর্মকর্তা হতে পারেন,কিন্তু চাইলেই মিডিয়াতে কাজ করতে পারবেন না,যারা মিডিয়াতে কাজ করে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা গল্প আছে।বিশেষ করে নারীদের।
-প্লিজ আপনার মিডিয়াতে আসার গল্পটি শেয়ার করুন।
-আমি তখন কলেজের টপার ছিলাম,ভালো পড়াশোনা করে ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন কিন্তু সিনেমার রঙিন আলো আমাকে গ্রাস করে ফেলে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে মডেল হওয়ার স্বপ্ন জাগে।নাচ,গান,অভিনয় এসবের উপর ফোকাস করি,আমার মধ্যে ট্যালেন্টের বিষয়টি ছিল,তাই খুব সহজে অভিনয়ে পারদর্শী হই,নামীদামী মিডায়া ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ করি মিডিয়াতে একটি সুযোগ দেওয়ার জন্য..
-সুযোগ দিয়েছিল??
-না কেউই সুযোগ দেয়নি,,আমার এখনও মনে পড়ে পরিচালক রবার্ট হ্যারিসের সাথে দেখা করেছি তার সিনেমাতে ছোট্ট একটা ক্যারেক্টার দেওয়ার জন্য,এই ধরুন ১-২ মিনিটের কোন একটা ক্যারেক্টার হলেও চলবে।পরিচালক খুবই নম্র স্বরে বললো সমস্যা নেই পরেরদিন তার অফিসে ডাকলেন আর আপত্তিকর সব প্রস্তাব দিল,আমি সঙ্গে সঙ্গে না করে দিয়েছিলাম,পরে ভাবলাম মিডিয়াতে নারীদের জন্য এসব তো কমন একটা সিস্টেম। পরিচালকের কথায় রাজি হয়ে যাই।আমাকে আশা দিয়ে দিয়ে বিছানায় নিতো এরকম প্রায় মাসখানেক চলতে থাকে পরে একদিন রাতে সরাসরি বলে দেয় রুসো তোমাকে দিয়ে হবে না,আমি বেশ মন খারাপ করে চলে যাই।
এর পরে আরো কিছু পরিচালকের সাথে দেখা করি সবাই বিছানায় ডাকে,আমিও রাজি হই বাট কেউই কোন সুযোগ দেয়নি।বুঝতে পারলাম বড় বড় পরিচালকদের সাথে দেখা করে লাভ নেই সিনেমার ক্যামরাম্যান,প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে মেকাপম্যান ওদের সাথে যোগাযোগ করি হয়তো কোন এক সময় সুযোগ পেলেও পেতে পারি।
মিডিয়ার ছোট থেকে বড় সবাই নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেনা,সবাই একইরকম।কেউ টাকা চায় কেউ বিছানায় চায়,সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এরা কথা দিয়ে কথা রাখেনা,আজকে বিছানায় গেলেন সুযোগ না দিয়ে কাল আবার বিছানায় ডাকবে,আপনি যেতে বাধ্য।এমনটাই ঘটেছে আমার সাথে,,একটা বছর পতিতা-দের মত কখনো এর সাথে কখনো ওর সাথে বাট কেউই কোন সুযোগ দেয়নি।আমি হতাশ হয়ে পড়লাম,নিজের মধ্যে সততা মনুষ্যত্ববোধ অনেক আগেই হারিয়ে পেলে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ি।
একদিন খবরের কাগজ উল্টাতে উল্টাতে চোখে পড়ে “মিস ওয়ার্ল্ড আমেরিকান”।এটা একটা রিয়েলিটি শো, যার মধ্যে থেকে প্রকৃত ট্যালেন্ট অভিনেত্রী খুঁজে বের করবে এবং পরবর্তীতে মিডিয়াতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে,আমি ঐ রিয়েলিটি শোতে অংশ গ্রহন করি,প্রথম যেদিন অডিশন দিই তার আগে আমার পুরো শরীর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে,শরীরের সবগুলো অঙ্গের সাইজ নেয়,বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাই,যাই হোক,প্রথম রাউন্ডে বিচারক প্যানেলের সবাইকে চমকে দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাই তারপর বেশ কয়েকজন বিচারক আমার সাথে যোগাযোগ করে অনৈতিক কাজের অফার দেয় বিনিময়ে টপ টেনে যেতে পারবো।আমিও রাজি হয়ে যাই, মিডিয়ার ভাবভঙ্গিটাই এমন বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে,সবাই মেধার চেয়েও শরীরের কদর একটু বেশি করে। ঐ রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসি,অবশ্য এর পেছনে রয়েছে গল্পের ভেতরে গল্প।সবাইকে খুশি রাখতে পেরেছি বলেই হয়তো রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসতে পেরেছি।
২০০৬ সালে প্রথম সিনেমাতে কাজ করার সুযোগ পাই,তারা আমাকে বেশকিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য সিলেক্ট করে,যদিও গল্পের সাথে সেক্সুয়াল দৃশ্যের কানেকশন নেই বললেই চলে,সেক্সুয়াল দৃশ্য দিয়ে সিনেমা হলে দর্শক টানতে চেয়েছে বিশেষ করে তরুণদের।সিনেমাটি রিলিজ হওয়ার পর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয়করা টপ ওয়ানের খাতায় নাম লেখায়।সিনেমাটিতে কাজ করার সুবাদে মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে পরিচয় হয়।তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আমি মনোযোগ দিয়ে রুসোর মিডিয়াতে আসার গল্পটি শুনলাম,আসলেই মিডিয়ার সব নারীরই আলাদা আলাদা গল্প আছে হয়তো অপ্রকাশিত ডাইরির পাতায় লিখে রেখেছে কিংবা ভুলে গেছে।
-আচ্ছা আমেরিকান বেশিরভাগ অভিনেত্রীকে দেখি তারা বিয়ে করেনা আর করলে ও ৪০ পেরোলে,এটা কি করে সম্ভব??আপনি তো এখনও বিয়ে করেননি,বিষয়টি কি এমন না আপনি ক্ষুধার্থ কিন্তু আপনার সাথে বেশ মজাদার খাবার দাবার দেওয়া হলো কিন্তু আপনি খাচ্ছেন না,,,এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?
-হুম একথা সত্যি আমাদের ক্যারিয়ারে সমস্যা এড়াতে আমরা বিয়ে করিনা,বিয়ে করলে নানাবিধ সমস্যায় পড়তে পারি।ধরুন আমার স্বামী আছে,এখন আমার বিচরণ ক্ষেত্রটা কমে যাবে আমি চাইলেই অন্য আটিষ্টদের সাথে যখন তখন রাত কাটাতে পারবো না সবচেয়ে বড় কথা আমাদের যারা ফলোয়ার তারাও চায় আমরা সিঙ্গেল থাকি,এতে হয়কি তারা আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে সুবিধা হয়। আপনি একটি উদাহরণ দিলেন ক্ষুধা ঠিকই আছে সমানে খাবার ও রাখা আছে কিন্তু খাবে না। আসলে বিষয়টি এমন না মিডিয়ার মেয়েরা যে শুধু সিঙ্গেল এমনটা নয় মিডিয়ার ছেলেরাও বেশিরভাগই সিঙ্গেল,হয়ে যায়,আজ এর সাথে তো কাল ওর সাথে। আচ্ছা আমি যদি আপনাকে বলি আমাকে বিয়ে করুন আপনি করবেন??
-না।
-কেন??আমাকে বিয়ে করার জন্য তো হাজার হাজার মার্কিন তরুণ একপায়ে খাঁড়া,আপনি কেন না??
-দেখুন আমি জেনেশুনে ভার্জিনলেস মেয়েকে কখনোই বিয়ে করবো না আর মিডিয়ার নারীকে তো প্রশ্নই ওঠে না।আচ্ছা যাই হোক। আচ্ছা আপনি তো প্রায় সব সিনেমাতেই অশ্লীল রোল প্লে করেন,ধরুন কোন এক সময় আপনার মনে হলো কারো সঙ্গে সুখের সংসার পাতি,আপনি বিয়ে করলেন তারপর আপনার ঘর আলো করে বাচ্চাকাচ্চা আসলো,তারা একটু একটু করে বেড়ে উঠছে,বেশ সুখের সংসার,হঠাৎ দেখলেন আপনার ছেলে আপনার মুভি দেখছে,আপনার অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখে সে বেশ উত্তেজিত,তখন বিষয়টি কিভাবে দেখবেন??
-নো আইডিয়া।তবে মিডিয়ার লাইফস্টাইল এখন আর ভালো লাগে না,শরীর কেন্দ্রীক জস খ্যাতি দিয়ে কি হবে,যারা অশ্লীল রুচিবোধের তাদের কাছে আমাদের কদর থাকলেও ভালো মানুষের কাছে আমাদের দাম দু’পয়সা ও না,,ভাবতেছি সিনেমার রঙিন জগৎ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিব।
রুসোর সাথে কথা বলতে বলতে নিউইয়র্ক পৌঁছে গেলাম,রুসো অনেক করে বললো ওর ফ্ল্যাটে আজকের রাতটা থেকে যেতে,আমি সোজা না করে দিয়েছি।স্টেশনে দুজন নেমে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম,রুসোর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হ্যাভেন রিসোর্টে গেলাম,সাতদিন এ রিসোর্টে থাকবো,পুরো নিউইয়র্ক শহরটা ঘুরেঘুরে দেখবো।
সমাপ্ত