ভার্জিন

ভার্জিন

দোস্ত কত দিন ধরে উপোষ করে আছি । একটা খুজে দে না।

– তোকে আমি বলতে চাচ্ছিলাম ।কিন্তু তুই আগে বলে বসলি । যাক ভালই হলো। একটা পাইসি বুচ্ছস। পুরো ভার্জিন – ধুর একটা হলেই হলো । তবে দোস্ত কবে কোথাই কখন বল তাড়াতাড়ি।
– আরেহ ব্যাডা থাম। আজকে রাত্রে কন্ফার্ম হয়ে তোকে জানাবো । কিন্তু মামা,,,,
– কি কিন্তু ,,,তারাতারি বল
– মাল যে বেশি চাই
– ধুর,,,,তোর সাথে কি আমার মালের হিসাব । যা চাই দিবো । এখন বল কবে ঠিক করে দিবি।আর তুইতো এইসবের ব্যাপারি ,,হাহাহাহাহা
– আচ্ছা কথা বলে দেখি,,,

আর তর সইছে না । কত দিন পর বেড শেয়ার। সেই তিন সপ্তাহ আগে লাস্ট হয়েছিল। তারপর আর পাওয়া যায়নি । মানে খুঁজে দেইনি । আজকে আবার একটা নিউ । এইসবের মজাই আলাদা । লাইফটা ইন্জয় না করলে হয় নাকি।

– কিরে দোস্ত খবর পাইলি।
– হুম কালকে রাত্রে । হোটেল লাইটে।কালকে রাত্রে ওকে ভদ্রামোড় থেকে উঠিয়ে নিবি । আর এই নে কন্টাক্ট নম্বর।
– থাংকু,,দোস্ত । নেক্স টা রেডি রাখিস বুঝলি

সেই কন্টাক্ট নম্বরে কথা বলেছিলাম মেয়েটার সাথে । মেয়েটার ছবিটাও নিয়েছি । উফফফ দেখতে যা জোস । মনে হচ্ছে কালকের রাতটা খুউব জমবে।

পরের দিন ,, কথা মত ভদ্রাই ওয়েট করছি গাড়ি নিয়ে । ওকে বলা হয়েছিল কালো একটা প্রিমিয় গাড়ির সামনে কালো শার্ট পরে দারিয়ে থাকবো আমি । ঠিক ৯:০০ বাজে ও আমার সামনে হাজির । বাপরেহ পুরো একটা পরি দারিয়ে আছে আমার সামনে । আগে এমন কোনো মেয়ে পাইনি ।কিন্তু দেখেতো মনে হচ্ছে পুরো নিউ । মানে ভার্জিন ,,,,তাহলে কনক ঠিকি বলেছে। কিন্তু ঐ এইসব পাই কোথাই থেকে। ধ্যাত অত সত ভাবার সময় নাই। কিন্তু মেয়েটার দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছি না।

– কি দেখছেন এভাবে
– না মানে ,,,দেখছি যে তুমি ছবির চেয়েও মারাত্মক সুন্দরি । মেকাপ করে এতো সুন্দরি হয়ে এসেছো নাকি।
– না এটা ন্যাচারাল । ছুয়ে দেখতে পারেন কিন্তু তার গায়ে হাত দিতে মনটা ইতস্তবোধ করলো।

– কি লজ্জা পাচ্ছেন নাকি । ছুয়ে দেখেন
– এখানেই কি সব কাজ শেষ করে ফেলবে নাকি । গাড়িতে ওঠো ,তারপর

গাড়িতে ওঠার পরে সেও একটা শব্দ করেনি । আমিও কোনো রা করিনি। ব্যাপারটা কেমন যেন ঘোলাটে লাগছে । গাড়িতে ওঠার পর থেকেই কেমন একটা অস্থিরতা ভাব কাজ করছে। আজকে এমন নার্ভাস লাগছে কেন আমাকে । কপালেও ঘামের পানি জট হয়ে আছে । আর একটু পরেই হোটেল লাইট। রাজশাহীর নাম করা একটা হোটেল । ফোর স্টার সমতুল্য। আগে অনেক রাত কাটিয়েছি এই হোটেলে । প্রতি রাতেই একেকটা করে । কত গুলো তা বলতে পারবো না । সেই হিসেবটা রাখার ইচ্ছাও করিনি কখনও । এই ভাবতে ভাবতে কখন চলে এসেছি নিজেও জানি না ।

– কি হলো নামবেন না ।
– নেমে কোথাই যাবো ।
– কেন ,তিন তলায়
– তুমি কি সব রেডি করে রেখেছো নাকি।
– আরেহ আমি কাস্টমার নিয়ে ওটাতেই উঠি । ওটা আমার জন্য বুক করা ।

ভাবতেও অবাক লাগছে । এটাতো ভালই আপডেট । আগের গুলো এমন ছিল না । মনে হয় পার্মানেন্ট এটা ।

– আমার গাড়ি থেকে নামতে ইচ্ছা করছে না ।
– কেন ,আমার সাথে রাত কাটানোর ইচ্ছা নাই নাকি ।
– এমন সব উদ্ভট কথা বলছো কেন ।
– ওমা ,,আমাকে নিয়ে এসেছেন কেন তাহলে।
– জানি না ,,,
– আপনি ঘামছেন কেন। ব্যাপারটা কি বলুনতো। অনেক্ষন ধরে দেখছি আপনি বারবার কপাল মুচ্ছেন । এই শ্বিতে গাড়ির ভেতর কেউ ঘামে ।
– চলেন ভেতরে চলেন

সত্যি আজকে আমার এমন লাগছে কেন । কি হলো আমার । অন্য দিন গুলোতে কত হট হট ভাব থাকে ভেতরে । কিন্তু আজকে আমার প্রতিটি কোষ দুর্বল হয়ে আছে । কোনো অনুভতি কাজ করছে না ভেতরে। পাশ ঘেষে এত সুন্দর একটা মেয়ে হাঁটছে।একটু পরে তার সাথে অনেক কিছু করবো । কিন্তু এইসব ভাবলে ভেতরে কেমন যেন লাগছে । রুমে ঢোকার পরে ,,

– এই নিন ড্রিং করুন ।
– না ভাল লাগছে না ।
– কি বলেন । ভাল লাগছে না মানে । আপনার ফ্রেন্ড তো বললো আপনার নাকি ড্রিংকস ছারা জমেই না ।
– আমার ভাল লাগছে না বলেছি । এত কথা বলেন কেন আপনি। চুপ করে থাকতে পারেন না । সরেন আমি ঘুমাবো।

আমার এই কথা টা শুনে মেয়েটা হাাাাা করে তাকিয়ে আছে । মনে মনে হয়ত বলছে এমন কাস্টমাল কখনও সে দেখেনি । রাত টা মোজ মাস্তি করার নাম করে সে ঘুমিয়ে পরছে । এ কেমন রে। কিন্তু আমার কিছু করার নাই । আমার ভেতরে কোনো অনুভতি কাজ করছে না । কিচ্ছু ভালো লাগছে না । মনে চাচ্ছে একটা বিশাল ঘুম দিই। খুউব দুর্বল লাগছে। পুরো রাজ্জের ঘুম চোখে ঝেকে বসেছে। আমি আর কোনো কথা না বলেই শুয়ে গেলাম ।
ঘুমের ভেতরেও অস্থিরতা। একটা সপ্ন শুরু হলো ।

কি নীল ,,নারী ভোগ করতে এসেছো । কিন্তু পারবে না । কারন আমি ভার্জিন । আমার সতিত্ব এখনও কোনো পর পুরুষের ছোঁয়া পাইনি । কেউ পারবেওনা ছুতে। তুমিও পারবে না। আর কত কাল এই কাজ করবে । এইবার ভাল হওয়ার চেষ্টা করো। এমন সব হাজারও সপ্নে রাত কাটলো। ঘুম ভাঙ্গা ভাঙ্গা অবস্থা,,,,, ঘুম ভেঙ্গে গেলো । মাথাই কারো নরম হাতে স্পর্শ অনুভব করছি । মনে হচ্ছে কত মায়া ভালবাসা নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।এমন কার হাত হতে পারে । কারো কথাই ঘোরটা ভেঙ্গে গেলো।

– উঠেন ,, নামাজ পরবেন না ।

আমি ধরফর করে উঠে পরলাম । উঠেই দেখি মেয়েটা ।তার কোলে আমার মাথা ছিল । সেই তাহলে আমার মাথাই হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। কি সুন্দর লাগছে তাকে । হিজাব পরে আছে । সেই জন্য কি বেশি সুন্দর লাগছে,,?

– একি তোমার কোলে আমার মাথা কেন।
– আমি টেনে নিয়েছি আমার কোলে।কেন কোনো আপত্তি আছে নাকি আপনার ।
– আচ্ছা তুমি আমি এখানে কেন এসেছি বলোতো। মেয়েটা কান্না শুরু করে দিলো।

– একি কানছো কেন তুমি ।
– আসলে আমি পতিতা বা কোনো বেশ্যা মেয়ে নই । আমি একজন ভার্জিন মেয়ে । আমি কোনো দিন এইসব কাজে অভ্যস্ত নই। আজ শুধু টাকার প্রয়োজনে আপনার কাছে নিজের সতিত্ব নষ্ট করে দিচ্ছিলাম । শুধু টাকার প্রয়োজনে, আমি হা করে তাকিয়ে তার কথা গুলো গিলছি।

– তাহলে আমাকে রাত্রে বললে যে। এই তিন তলা তোমার ফেভরেট । তোমার কাস্টমারকে তুমি এখানেই নিয়ে আসো

– আমাকে এইসব কথা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে । আমি সত্যি বলছি বিশ্বাস করেন । আমি কোনো পতিতা নই। আমার এক বান্ধবি এই কাজে আমাকে ঠেলে দিয়েছে । আমার বাবা নেই । মা আর ছোটো ভাই । ছোটো ভাইয়ের অপরেশন করা লাগবে । অনেক টাকার দরকার । এত টাকা পাবো কোথায় । সেই বান্ধবি কে বললে সেই আমাকে এইসব শিখিয়ে দিলো । আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না । পরে টাকার নেশায় আর টিকতে পারিনি । আপনার সাথে রাত কাটাতে রাজী হয়ে গেলাম । আমি আসলে এইসব কাজ জীবনেও করিনি । তার প্রত্তেকটা কথা মাথার ওপর দিয়ে গেলো। মেয়েটাও প্রচুর কাঁদছে।

– আমি মান্নত করেছিলাম । যদি খোদা আমাকে আজ রক্ষা করে । তাহলে আমি এক মাস রোজা রাখবো । খোদা আমার কথা রেখেছে । কিন্তু আপনি যে এতটা নরম হয়ে যাবেন তা কখনও ভাবতে পারিনি । আমাকে আমার বান্ধবি আপনার নামে যা শুনিয়েছে। তার কোনো কথার সাথেই আপনার মিল নাই। ভেবেছিলাম রুমে ঢুকেই হয়ত আমার সব শেষ হয়ে যাবে।

– কেমন মিল চাচ্ছিলে তুমি । যা যা শুনেছিলে তাই ,,?? আর তোমার কোন বান্ধবি এইসব কথা বলেছে তোমাকে

– আমি চাচ্ছিলাম না বলেই খোদা আমার সতিত্ব রক্ষা করেছে । সেও আপনার সাথে রাত কাটিয়েছে । নাম মিথিলা
– ধুর চিনি না ঐ সব মেয়েকে। তোমার ভাইয়ের অপরেশনের কত খরচ পরবে
– তা অনেক । আমার দেওয়ার সাধ্য নাই আবার ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলো,,

– এই চুপ করো । কান্না থামাও ,,,। আমার সামনে এভাবে ভ্যাাা করে কান্না কাটি করবা না । এখন কত বাজে ।
– কেবল ৫:৩৪ ফজরের সময় এখন ।
– এত আগে ডেকেছো কেন তাহলে আমাকে ।
– ভেবেছিলাম এক সাথে ফজরের নামাজ পরবো ।
– ইসস কি শখ । আমরা কি স্বামি স্ত্রী যে একসাথে ফজরের নামাজ পরবো ।
– সেই অধিকার তো একজন পতিতা পাই না ।
– পতিতা মানে ।
– আমিতো এখনও আপনার কাছে একজন পতিতা সমতুল্যই হয়ে আছি। আমি তার পাশে ঘেষে বসতে চাইলাম । কিন্তু সে উঠে গেলো ।

– দেখেন আমি এখন এইসব কাজ আর করতে পারবো না । রাত অবদি আমার মন মানসিকতা একটা পতিতার মতই ছিলো । কিন্তু এখন আমি আমার সতিত্ব নষ্ট করতে পারবো না ।
– একটা কথা বলবো ।
– বলেন ,,,
– তুমি কি সত্যি ভার্জিন ।
– হুম ,,,এখনও টিকে আছে ।
– কিন্তু আমিতো ভার্জিন নই,,,। তোমার সাথে কি সারা জীবন থাকার অনুমতি পাওয়া যাবে ।

মেয়েটা মনে হয় একটু শক খেয়ে গেলো । নাকি আমার কথাটাই বোঝেনি । আসলে কাল রাত থেকে কি যে হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না । এমনটা আমার জীবনে কোনো দিন হয়নি । রাতে এসেছি কাওকে নিয়ে সকালে তাকে নষ্ট করে ছেরে দিয়েছি । কিন্তু গত কয়েক মিনিটের মধ্যে মনে হলো । আমি একে সাথে না নিয়ে গেলে হয়তো বাঁচবো না। জানি না তার কোন জিনিস টা আমাকে এতটা টানছে । তবে আমি তাকে সারা জীবনের জন্য নিজের কাছে চাচ্ছি । এখন মনে হচ্ছে তার খোদাই আমাকে এই কাজ থেকে বিরত রেখেছে ।

– আমি তোমার উত্তর এখনও পাইনি
– এ কাথার মানে কি বোঝাচ্ছেন
– আমি তোমাকে বিয়ে করবো ।
– আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারছি না ।

খোদা সব কিছু মিলিয়ে দিল কি করে এক রাতের মধ্যে । আমি আপনাকে দেখেই প্রথমে চেয়েছিলাম সারা জীবনের জন্য । কিন্তু কালকে আপনার সাথে গাড়িতে ওঠার পরে সব সপ্ন ছাই হয়ে গেলো । ভাবলাম হয়ত নিজের ইজ্জত নিয়েও ফিরতে পারবো না । কিন্তু সব উল্টিয়ে গেল ।

– আমি যে ভার্জিন নই ,,,,
– আপনি না হতে পারেন । কিন্তু আপনার মনটা এখনও ভার্জিন আছে ।
– উফফফ তাহলে আমার মায়ের বউমা পেয়ে গেছি ।

আসলে সত্যি মেয়েটার কথা তার খোদা শুনেছিল । এখনও আমাকে অবাক করে সেই রাতের কথা গুলো ভাবলে। কি করতে গেছিলাম তার সাথে । আর কি হয়ে গেলো । সে সম্পুর্নই আমার হয়ে গেলো । আসলে ও খুউব ভাল একটা মেয়ে । নামাজি পর্হেজগারি। সব দিক দিয়ে অনেক ভাল । শুধু টাকার প্রয়োজনে নিজের ইজ্জতটা বিক্রি করতে বাসেছিল । শুধু ও নই । এমন অনেক ঘটনা আছে । যা আমার নিজেরই সাথে ঘটে যাওয়া । টাকার জন্য ভাল একটা মেয়ে নিজের সব কিছু নষ্ট করে ফেলে । ও এখন আমার স্ত্রী। ওহ তার নামটাই বলতে ভুলে গেছি । সুরাইয়া ওর নাম ।
আসলে এমন অনেক কাহিনী কিন্তু আমাদের মাঝে ঘটে যায় । যা চাপা পরে থাকে । কেউ হয়ত গল্প লিখে প্রকাশ করে কেউবা মুখে বলে । সে আসার পরে আমার জীবনটাও বদলিয়ে গেছে । যা আমাকেই ভাবিয়ে তোলে,,

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত