দুপুরের খাঁ খাঁ রৌদ্রময় সময়। মিলি টিফিন ক্যারিয়ার ও ভ্যানিটিব্যাগ হাতে গুটিগুটি পায়ে সিড়ি বেয়ে চার তলা থেকে নিচ তলায় নামল। সিড়ি থেকে উঠানামা করলে তার জুতায় সবসময় ঠকঠক শব্দ হয়। আজ কেন হলো না? সে অবাক হয়ে পায়ের দিকে তাকাতে তাকাতে রাস্তার পাশে এল। একটা খালি রিকশা তার সামনে থেকেই যাচ্ছে। সাথে সাথে মিলি ডাক দিলো, “এ্যাই খালি।”রিকশাওয়ালা একবার তার দিকে বিরক্ত ভঙ্গিতে তাকিয়ে চলে গেলেন। মিলির খুব মন খারাপ হল। সে অসম্ভব রুপবতী এক মেয়ে। এমন কখনও এর আগে হয়নি যে রিকশাওয়ালা তাকে দেখে রিকশা থামায়নি। সে ভার্সিটিতে পড়ে বলে এলাকার সিনিয়ার জুনিয়র ছেলেপুলে তাকে দেখলে সিগারেট ফেলে দেয়। আজ তার সাথে এমন কেন হচ্ছে? আজ কি তার খারাপ দিন? সে পায়ে হেঁটে হেঁটে সামনের বাসস্ট্যান্ডের দিকে এগুলো। সেখানে নিশ্চিত খালি রিকশা পাওয়া যাবে। মিলিকে অবাক করে দিয়ে বাসস্ট্যান্ডেও কোনো খালি রিকশা আজ পাওয়া গেল না।
মিলি হাঁটতে শুরু করল। সে মনে মনে ঠিক করে ফেলল আজ সে হাটঁতে হাঁটতে হাসপাতালে যাবে। যেয়ে কিছুক্ষণ আমানের সাথে গল্প করবে। গতপড়শু সে যেয়ে মাত্র পাঁচ মিনিট বসেছিল। ন’দশটা বাসি গোলাপ ফুল আমানের পেইন বেডের পাশে রেখে বলেছিল, “শুভ জন্মদিন।” এমন জন্মদিন পালন আগে কোনো বছর হয়নি। প্রতিবছর আমানের সাথে তার জন্মদিন হত খুব সুন্দর করে। একসাথে কেক কেটে বাহারি পোশাক পড়ে দু’জনে বিশেষ বিশেষ জায়গায় ঘুরতো। পাঁচবছর তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক মাত্র পাঁচমাসে কতটা বদলে দিয়েছে। গত পাঁচ মাস ধরে আমান হাসপাতালে আছে। ভাবতেই অবাক লাগে একজন এইচআইভি পজেটিভ মানুষের সাথে এখনও মিলি সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছে।
প্রথম দিকে বন্ধুরা দেখা করতে এলেও এখন এক দুঃসম্পর্কের মামা ছাড়া আর কেউ আসে না আমানকে দেখতে। কাছের ও দূরের আত্নীয়স্বজনরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। প্রথম দিকে সে পড়ে থাকতো হাসপাতালের বারান্দায়। মিলি কোনোমতে একটা পেইন বেডের ব্যবস্থা করেছে এখন সেখানেই আমান মৃত্যুর প্রহর গুনছে। হাসপাতালে সিড়ি বেয়ে ওঠার সময় সবসময় মিলি চোখ মুছে। আজও তাই করল। আমানের সামনে যাওয়ার আগে নিজের চেহারা হাসিহাসি করে ফেলে। ভালোবাসার মানুষের এতটা খারাপ সময় কখনোই তাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না, “আমি খারাপ আছি! তোমাকে ছাড়া খুব খারাপ আছি।”
মিলি আমানের পাশে যেয়ে বসল। একসময় কালো ঝড়ঝড়ে চুলের সেই সুদর্শন যুবকের এখন শরীরের প্রত্যেকটি হাড় একএক করে গোনা যাচ্ছে। আমান উঠে বসার চেষ্টা করতে করতে বলল, “কেমন আছ মিলি?” মিলি কপালের ঘাম মুছতে মুছতে টিফিন ক্যারিয়ার খুলে বলল, “ভালোই আছি। আজ হাসপাতালে হেঁটে হেঁটে এসেছি।” “কেন?” “মোটা হয়ে যাচ্ছি। তুমি তো আর আগের মতো লক্ষ করো না আমাকে।” আমান দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে বলল, “তুমি রোজরোজ আমার জন্য খাবার কেন আনো? সরকারি হাসপাতালে যা খাবার দেয়, তাতেই আমার চলে যায়। ক’দিনই বা আর আছি পৃথিবীতে।” মিলি সে কথার জবাব দিল না। টিফিন ক্যারিয়ার খুলে বলল, “তোমার পছন্দের কয়েকরকম ভর্তা এনেছি। তোমার আবার ভর্তা-টর্তা খাওয়া নিষেধ নাতো?”
“না। তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞাস করবো করে?”
“কী কথা?”
“তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজি হবে?”
মিলি হাসতে হাসতে বলল, “বিয়ে করার জন্য তো অনেক সময় পড়ে আছে। তুমি যে’কটা দিন বেঁচে আছ, তোমার পাশাপাশি না হয় থাকি।” “হাসছ যে? তোমার খারাপ লাগে না?”
“লাগবে না কেন? অবশ্যই খারাপ লাগে। খারাপ না লাগলে কী আর বাসার মানুষকে ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে তোমার জন্য রান্না করে নিয়ে আসি?” আমান নিশ্চুপ ভঙ্গিতে মিলির আনা টিফিন ক্যারিয়ার থেকে খাবার খেল। খাবার শেষ হওয়ার সাথে সাথে মিলি বলল, “তোমার ইচ্ছে সামনের সপ্তাহে পূরণ হবে। বড় ফুফু যে ছেলে আমার জন্য ঠিক করেছিলেন তার সাথেই আমার বিয়ে হবে। আজ আমি আসি। বিয়ের আগের প্রত্যেকটা দিন আমি তোমাকে দেখতে আসবো।” আমান জবাব দিল না। মিলি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসার সাথে সাথে তার চোখ ভিজে উঠল। ঝাপসা চোখে রাস্তা পাড় হওয়ার সময় সে খেয়ালই করল না যে একটা ট্রাক বাম দিক থেকে তুখোর গতিতে আসছিল। মুহূর্তে কী ঘটল তা বুঝে ওঠার আগেই মিলি জ্ঞান হারালো।
মিলির যখন জ্ঞান ফিরল তখন সে বসে আছে তাদের নানাবাড়ির গ্রামের বাড়ির উঠোনে। উঠোনের মাঝখানে অর্ধবয়স্ক এক মহিলা টিউবয়েলে শব্দ করে কাপড় কাঁচছে। একজন বৃদ্ধা মহিলা পুকুর ঘাট থেকে ভেজা অবস্থায় কলসি ভর্তি করে পানি নিয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চা ছেলেমেয়েরা ছোটাছুটি করছে। মিলি একটা জিনিস খেয়াল করল সবার চেহারা অসম্ভব রকম আলোকিত। তাদের হাঁটাচলার ধরন পৃথিবীর মানুষ থেকেও আলাদা। মিলির দিকে ব্যস্ত মানুষজন বিচিত্র ভঙ্গিতে তাকাচ্ছে। হঠাৎ সে অনুভব করল তার পিছন থেকে ঘাড়ে কোমল এক হাত। মিলি পিছনে তাকাল। তার দশবছর বয়সে হারানো নানীজান তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন। নানীজানকে সে অসম্ভব রকম ভালোবাসতো। বাবা মা দু’জনে চাকুরীজীবি হওয়ায় ছেলেবেলা তার নানীজানের সাথেই কেটেছে। মিলির চোখে তীব্র আলো পড়লেও সে নানীজানকে ঠিকি চিনতে পারল। সে তার বাম হাত চোখের উপর ফেলে বলল, “নানীজান এত আলো কেন?”
নানীজান সাথে সাথে রিমোর্টের মতো কিছু একটা বের করে টিপ দিতেই তার চেহারার আলো কিছুটা কমে গেল। নানীজান মাথার চুল মুছতে মুছতে বললেন, “তুই এখানে কেন?” “আমি তো জানিনা নানীজান। আমি কি স্বপ্ন দেখছি? কতবছর পর তোমাকে দেখলাম।” নানীজান মিলির গাল আঙ্গুল দিয়ে টিপ দিয়ে বললেন, “ও আল্লাহ, তোর তো এখনও সময় হয়নি। তুই ভুল করে চলে এসেছিস। এখুনি যা, তুই এখুনি বের হ।” মিলি হতভম্ব হয়ে বলল, “কীসের সময় হয়নি? আমি কোথায় চলে এসেছি?” নানীজান মিলির হাত ধরে টানতে টানতে একটা কুঁড়েঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। পাশ থেকে নানীজানের বয়সি আরেক বৃদ্ধা বলে উঠল, “ও ছকিনা, এই রুপবতী মাইয়্যাডা কেডা?”
নানীজান বললেন, “পরে বলতেছি সই। এইডা আমার নাতনী। সময়ের আগে ভুল কইরা চইল্যা আইছে। দেহনা, শরীরে এহনও লাল রক্ত টসটস করতেছে।” নানীজানের সই পান চিবুতে চিবুতে বিস্মিত স্বরে বললেন, “বলো কী জীবিত মাইয়্যা নাকি? সন্ধ্যা হওয়ার তো বেশী বাকী নাই তারাতাড়ি পাঠাও।” নানীজান মিলিকে কুঁড়েঘরে নিয়ে বসিয়ে বললেন, “এহন ক, ব্যাপারটা কী?” মিলি বাসা থেকে বের হয়ে হাসপাতালে যাওয়া এবং হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ট্রাকের সামনে পড়া পর্যন্ত সব নানীজানকে খুলে বলল। নানীজান সব শুনে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, “তুই মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলি আমান যেদিন মারা যাইবো সেইদিন বিষ খাবি?” মিলি অস্পষ্টস্বরে বললেন, “তুমি কীভাবে বুঝলে?”
“তোর কাছের মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে আমি তোর কাছের ছিলাম তাই বুঝেছি।”
“আমানকে ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে পৃথিবীতে বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব না নানী।”
“তাইলে কী চাস আর পৃথিবীতে যাবি না?”
মিলি অবাক হয়ে বলল, “আমি এখন কোথায়?” “তুই এহন বেহেশতে আমার সাথে।” মিলি চারদিকে একনজর তাকিয়ে বলল, “বেহেশতে এমন কুঁড়েঘর কেন? আর আমাদের নানাবাড়ির উঠান কেন? আমি তো খুব সুন্দর টুন্দর হয় শুনছিলাম।”
নানীজান ফিক করে হেসে বললেন, “বলদা ছেমরি। তুই যতটা শুনছ তার চেয়েও বেহেশত সুন্দর। কিন্তু এখানে যারা আসে তাদের মন মতো জায়গা আর জিনিসপত্র দেওয়া হয়। তুই তো জানো আমার গ্রামের জীবন আগে থেকেই পছন্দ। তাই ফেরেশতাগো বইল্যা এহানে আছি। যখন আবার যাইতে ইচ্ছে করব, যাইতে পারমু ওইডা কোনো ব্যাপার না। এহানে যারা আছে সবারই গ্রাম পছন্দ।” মিলি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, “নানীজান। আমি এখানেই থাকি। আমানের জন্য অপেক্ষা করি।”
নানীজান বললেন, “থাপ্পড় দিয়া তোর দাঁত ফালাই না যেন। এহুনি তোরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি।” নানীজান উঠে চলে যাচ্ছিলেন। মিলি বলল, “নানী যাও কই?” নানীজান সেকথার উত্তর না দিয়ে চলে গেলেন। প্রায় কয়েকমিনিটের মধ্যে আবার ফিরে এলেন। মিলি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন, “নানীজান আমি যাবো না। আমি তোমার কাছেই থাকি। পৃথিবীতে গেলে আবার কষ্ট বাড়বে। আমানের মৃত্যু চোখের সামনে দেখতে না পেরে আত্মহত্যার মতো পাপ করে আমি দোজখে যেতে চাই না।” নানীজান ফিসফিস করে বললেন, “আমানের এইডস কেন হয়েছে জানিস তুই?” মিলি আরেকদিকে মুখ করে বলল, “সবাই বলে ওর আজেবাজে মেয়েদের সাথে যোগাযোগ ছিল। আমি বিশ্বাস করিনা। আর কোনোদিন করবও না।” “তুই যা ভাবছিস তাই। আমান যখন বিদেশে গিয়েছিল। একবার অসুস্থ হয়ে পড়ার পর এক বিদেশি ছোকড়া রক্ত দিছিল সেই ছোকড়ার শরীরের রক্তে ওই হাবিজাবি জীবানু ছিল।” “বলো কী?”
“হু। আমান নিজেও তা ভুইল্যা গেছে। আমি এই মাত্র জাইন্যা আইলাম। যেহেতু আমানের কঠিন কোনো পাপ নাই। আমরা সবাই মিলে দোয়া করমু ও যেন সুস্থ হইয়্যা যায়।” মিলির চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল, “নানীজান আমি শুনেছি এইডস রোগের পৃথিবীতে কোনো ঔষধ নাই।” নানীজান মিলির কান মলা দিয়ে বললেন, “ছেমরি আমরা বেহেশত বাসীরা দোয়া করমু আর আল্লাহ যদি চান তোগো ওই গোলআলুর মধ্যে কারোর বাঁচতে আবার ঔষধ লাগবে নাকি?” মিলি বলল, “গোলআলু কী?” নানীজানের সই কখন কুঁড়েঘরে এসে দাঁড়িয়েছেন মিলি টেরই পেল না। তিনি খিলখিল করে হেসে বললেন, “তোমাগো পৃথিবীরে আমরা হাসিতামাশা করে গোলআলু কই ! এহন চলো নাতি বউ তোমারে গোলআলুর মধ্যে দিয়া আহি।” মিলি নানীজানের হাত ধরে হাঁটছে। সামনে নানীজানের সই হেলেদুলে হাঁটছে। মিলি আস্তে করে নানীজানের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল, “নানী উনি আমাকে নাতি বউ বলল কেন?”
নানীজানও মিলির মত ফিসফিস করে বললেন, “আরে উনি আমানের দাদী।” নানীজান এবং তার সই মিলিকে মেঘের উপর নিয়ে গেলেন। তারপর সত্যি সত্যি শূন্য ভাসছে এমন একটা ছোট গোলআলুর সামনে দাঁড় করালেন। মিলি বলল, “এ কেমন রসিকতা নানী?” নানী বললেন, “আরে এটাই তোদের পৃথিবী। এতো ছোট আলুর মধ্যে বসেও তোরা কত অহংকার করো।” মিলির বিস্ময়ের সীমা রইল না। সে চোখ বড় করে বলল, “এত ছোটর মাঝে আমি ঢুকব কী করে?” নানীজান বললেন, “চোখ বন্ধ কর মিলি তারপর বিসমিল্লাহ বলে ঢুকে যা।” মিলি বিসমিল্লাহ বলার আগে নানীজানকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল, “আবার তোমার কবে দেখা পাব নানী? কথা দাও তুমি আমার আশেপাশে সবসময় থাকবে।”
নানীজান বললেন, “ও আল্লাহ আমি মারা গেছি সেই কবে আর তুই এখন মরা কান্না কাঁদছিস? গোলআলুতে আমরা সবাই মেহমান একদিন সবাই এখানে আসবো। এত কান্নাকাটির কী আছে?” নানীজানের সই (আমানের দাদী) এই ফাঁকে আরেকগাল পান মুখে দিলেন। মিলি ফোঁপাতে ফোপাঁতে তীব্র আলোতে চোখ বন্ধ করল। তার মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। সাথে সাথে সে চোখ খুলে ফেলল। এবার তার চোখের আলো হালকা লাগছে। মাথার উপর শাঁ শাঁ করে সাদা সিলিং ফ্যান চলছে। চারদিকে সাদা পর্দা ঘেরা কেবিন। নার্সেরা ছোটাছুটি করছেন। মিলির মুখ দিয়ে অক্সিজেনের নলা ঢুকানো। পাশে মিলির মা জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে উঠলেন, “আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন। আমার মেয়ের জ্ঞান ফিরেছে।”
পাঁচ বছর পর। আজ বুধবার। মিলি আমানকে এই নিয়ে তিনবার ফোন করেছে। আমান ফোন রিসিভ করেনি। মিলি তার দু’বছরের মেয়ে আলিয়া’কে বেশকিছুক্ষন ধরে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করেছে। মেয়ে তার বাবা না আসলে কিছুতেই ঘুমাবে না। চতুর্থবার ফোন দিয়ে মিলির চোখেমুখে বিরক্তির রেখা ফুটে উঠেছে। ঠিক তখনই বাসার কলিংবেল বেজে উঠল। আলিয়া খেলনা ফেলে ‘বাবা এসেছে’ – বলে হুরমুর করে দরজা খুলতে গেল। সে কখনোই দরজার ছিটকানি খুলতে পারে না। তারপরও বৃথা চেষ্টা করে। মিলি দরজা খোলার সাথে সাথে আমান পিছনের হাতে লুকিয়ে রাখা লাল গোলাপের গুচ্ছ সামনে এনে বলল, “শুভ জন্মদিন।”
মিলির চোখমুখ থেকে বিরক্ত ভাব দূর হল। সে আহ্লাদী কন্ঠে বলল, “তোমার মনে ছিল? আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আজ আমার জন্মদিন।” আমান ঘরের ভিতরে ঢোকার পরই আলিয়া বাবার কোলে ঝাপিয়ে পড়ল। আমান বলল, “তুমি জন্মদিন ভুলে গেছ এটা কোনো ব্যাপার না। মানুষ মাত্রই ভুল। একবার ভাবো, পাঁচ বছর আগে ডাক্তার আমার রোগের কী ভুল রিপোর্টই দিল। সামান্য জ্বর, গাঁ ব্যাথায় আমার এইডস্ ধরা পড়েছিল।” আমান হো হো করে হাসছে। মিলি গভীর মমতা নিয়ে সেই হাসি দেখছে।
‘সমাপ্ত’