তুমি আমার শরীরটা ভোগ করে চলছো রিয়া সাগরের বুকে মাথা রেখে বলছে, এদিকে আমি না তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি! সাগরের বুকে এতো ক্ষন পরম শান্তিতে মাথা রেখে শুয়েছিল রিয়া! কথটা শোনা মাত্র সাগরের বুকে ঢেউ শুরু হয়ে গেল। উথাল পাথাল ঢেউ! সেই ঢেউয়ের তান্ডবের প্রচন্ডতায় সাগরের বুকে শুয়ে থাকা রিয়া ছিটকে পড়ে। সাগর রিয়াকে ঠেলে দেয়। রিয়া প্রায় বিছানা থেকে পড়ে যাচ্ছিলো! সাগর তার হাত ধরে পতন রোধ করে। রিয়া আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে কি হলো তোমার?
আমার এই অবৈধ সন্তান চাই না। তুমি আগে কেন কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করলেনা? রিয়া আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে তুমি আমায় ভালোবাসো না? ভালোবাসা আর সন্তান নেওয়া এক নয় রিয়া। তোমায় ভালো লাগে তাই তোমায় ভালোবাসি! তাই বলে বিয়ে না করে সন্তান নিতে হবে? কেন প্রেম করে প্রেমিকার শরীর ভোগ করা অবৈধ নয়! হ্যা! অবৈধ কিন্তু সেটাতে তোমারও মত আছে আমারও আছে তাই তোমার শরীর আমাকে দিয়েছো! কিন্তু সন্তান নেওয়াতে তোমার মত থাকতে পারে আমার নেই!
রিয়া সাগরের দিকে তাকিয়ে অনুরোধের সুরে বলে, আমার ভুল হয়ে গেছে! সাগর বলে ভুল শুধরে নাও। রিয়া আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে, তুমি কি আমাকে বাচ্চা ফেলে দেবার কথা বলছো? সাগর ওর দিকে না তাকিয়ে পাষাণের মতো বলে, হ্যা! কিন্ত এখন তো তা করা যাবেনা। সাগর চোখের রঙ পাল্টে দিয়ে বলে, অসম্ভব হলেও করতে হবে রিয়া! এতে আমার মৃত্যুর ঝুঁকি আছে! একটু ঝুঁকি তো নিতেই হবে সোনা! কিন্তু এতো মহাপাপ! সাগর হেঁসে বলে এতোক্ষণ কোন পূন্য করছিলাম দুজন মিলে? সাগর এত পাষাণ হয়োনা! বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে রিয়া।
সাগরের পাষাণ হৃদয় গলে না! আমি এই পাপ গোপনীয় ভাবে নষ্ট করে দিতে চাই। রিয়া বলে, তুমি আমায় যখন ভালোবাসো তখন বিয়ে করে নিলেই তো আমাদের সন্তান আর অবৈধ থাকেনা? সাগর হেঁসে বলে এই তোমরা মেয়েরা কি মনে করো ভালোবাসলেই বিয়ে করতে হবে? তাহলে তুমি এতদিন ধরে যে আমার দেহ ভোগ করেছো ভালোবাসার নামে? সাগর হেঁসে বলে ভালো আমি এখনো তোমাকে বাসি তাই বলে তোমাকে বিয়ে করবো এমন কোন ওয়াদা তোমাকে আমি দেয়নি!
আর তুমি যে বলছো রিয়া তোমার দেহ আমি ভোগ করেছি! তুমি আমাকে ভোগ করনি? রিয়া,কান্নায় ভেঙে পড়ে জবাব দেয়, না আমি তোমার দেহ ভোগ করিনি! তোমার খুশির জন্য নিজের দেহ বিলিয়ে দিয়েছি! তুমি তো বলতে আমাকে ছাড়া তুমি বাঁচবে না? হ্যা ঠিক কথাই তো! তাই বলে কি আমি কোনদিন তোমাকে বলেছি তোমাকে বিয়ে করতে না পারলে বাঁচবো না! বলো জবাব দাও? রিয়া কি বলবে ভেবে পায়না। সাগর বলে যায় তোমাকে ভালোবেসে আমার পকেট থেকে হাজার হাজার টাকা খরচ করেছি। এরকম দামী হোটেলে এনে রাত কাটিয়েছি দামী দামী খাবার খাইয়েছি। যা তোমার মতো মেয়ে কল্পনা করতে পারেনা!
আমি এখনও বলছি আগেও বলেছি তোমাকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি! কিন্তু তাই বলে, বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার বাবা-মা কোনদিন তোমাদের মতো পরিবারের মেয়েকে মেনে নিবেনা। এখন তুমি যদি মনে মনে আমার সাথে তোমার বিয়ের স্বপ্ন দেখে থাকো তবে তা তোমার ভুল। এখানে আমি অপারগতা স্বীকার করছি তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছিনা! রিয়া, এবার চোখ মুছে বললো তবে আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় নেই! সাগর হেঁসে বলে এটা কোন সমাধান নয়। কিন্তু তবুও আমাকে তাই করতে হবে। সমাজের মানুষের কাছে মুখ দেখাবার আমার কোন রাস্তা নেই! আমি এখন এই হোটেলের ছাঁদে যাবো এবং নিচে লাফিয় পড়ে প্রাণ বিসর্জন দেব।
তা না করে আমি তোমাকে অনেকগুলি টাকা দিচ্ছি তা দিয়ে সমাধান খুঁজে দেখ? আর হোটেলের ছাঁদে তোমাকে যেতে দেবেনা কারণ তোমার আগে একজন এমন কাজ করেছিল! রিয়া সাগরের গালে ঠাস করে একটা চড় মেরে বলে, টাকা দিয়ে পৃথিবীর সব কাজ হয়? সাগর গালে হাত দিয়ে বলে, অনেক কাজই হয়। যেমন তোমাদের মতো মেয়েদের আকর্ষণ করা যায়। টাকা না থাকলে তোমার মতো সুন্দরী আমার কাছে আসতে না!
এতো বড় কথা তুমি আমায় বলতে পারলে! আমি টাকার জন্য তোমার সাথে সম্পর্ক করেছি। ঠিক আছে আমার ভুলের মূল্য আমিই দেব! আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত আমিই করে যাবো! কিন্তু পাপ তোমাকেও ছাড়বেনা মনে রেখ?সাগর হাসতে হাসতে বলে, সে যখন হবে দেখা যাবে। এই বলে হোটেল থেকে বেড়িয়ে এলো সাগর তার পিছু পিছু রিয়া! রিয়া পেছন থেকে ডেকে বলে সাগর হোটেলের ছাঁদে উঠা নিষেধ কিন্তু এখানে কোন বাঁধা নেই।
একটা কথা তোমাকে বলি মনে রেখো, সবাই টাকা দেখে নয় মনটাকেই ভালোবাসে! তোমাদের মতো মানুষ টাকার অহংকারে বুঝতে পারোনা অথবা বুঝতে চাও না! এই বলে রিয়া দ্রুত গামী একটা বাসের নিচে ঝাপিয়ে পড়ে। আর সাথে সাথে একটা রক্তপিণ্ডতে পরিনত হয়! শত শত মানুষ আফসোস করে ছুটে যায়। সাগর ও সিট বলে, তার প্রাইভেট কারের সিটে বসে পড়ে। ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দেয়!
