যা যা এই দুনিয়াই থাইক্কা লাভ নাই,মোবাইলের মধ্যে ডুইক্কা যা। আম্মুর কথায় পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখি আম্মা শিকারি চিল এর মত ওত পাইতা খারাইয়া আছে।। চোখ দুইটা রাগে টমেটোর মত টকটকে লাল হয়ে আছে,মনে হইতাছে যেই কোন সময় বাইর হইয়া যাইবো।বাহির হইলে ভালোই হবে এই অসীজনে টমেটো খাওয়া যাবে। এই যে হারাডা দিন মোবাইল লইয়া বইসা থাকোস, পড়াশুনা করোস কখন???? পরীক্ষায় তো শুন্যও পাবিনা।সেই যোগ্যতাও তো তোর নাই।
— আম্মু পড়া শেষ কইরা মাত্র মোবাইলটা নিলাম। হইছে তোরে আমি চিনি,তুমি যে কখন মোবাইল লইছো তা আমি জানি। হুদায় মিথ্যা বলার দরকার নাই।
— না আজকে মনে হইতাছে আবহাওয়া পুড়াই গরম।কি করা যায় ভাবতে ভাবতেই মাথায় একটা সেই আইডিয়া চলে আসলো।। আম্মা কি হইছে???
–আজকে কি গাঞ্জা বেশি খাইছো নাকি,চোখ এত লাল হইয়া রইছে কে ????
আম্মার অবস্থা বেগতিক, যেই কোন সময় ব্লাস্ট হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় এখানে থাকা ঠিক হবে না, দৌড়ে বাথরুমে ঢুকলাম। না,এই ভাবে কি জীবন চলে। আম্মার জ্বালায় মোবাইলটাও শান্তি মতো চালাতে পারি না। এমন নিঃশব্দে চলা ফেরা করে টেরই পাইনা কখন আসে কখন যায়। টুম্পার লগে প্রেমটা হইব হইব করতাছে, অহন যদি এমনে জালায়, তাইলে প্রেম তো সুপারি গাছে গিয়া উঠবো। লাঠি দিয়ে গুতাইয়াও নামানো যাইবো না।
প্রাইভেট পড়া শেষ করে মাত্র বের হলাম।মনটা হালকা খারাপ হয়ে আছে।সকালে আম্মুরে ওই ভাবে না খেপাইলেও পারতাম। কি করা যায় ভাবতে ভাবতেই সামনের দোকানের নুপুর চোখে পড়লো। একজোড়া নুপুর কিন্না খিচ্চা বাসার দিকে দিলাম দোড় বাসায় ডুকতেই দেহি আম্মা মন খারাপ কইরা বইসা আছে। কাছে গিয়া আম্মারে কইলামঃ- আম্মু সকালের জন্য আমি সরি। আমি তো একটু দুষ্টুমি করছিলাম তোমার সাথে।। বদের বদ মার লগে কেউ এই রকম দুষ্টুমি করে ফাজিল পোলা। হইছে আম্মা আর করমু না।দেহ তোমার লাইজ্ঞা কি আনছি??? কি আনছোত???? নুপুর আনছি।। বদ পোলা আমার কি নুপুর পরার বয়স আছে নি।। আম্মা যে কি কও না নুপুর পরা কি কোনো বয়স আছে নাকি। যখন ইচ্ছা তখন পড়া যায় আর তোমার বয়সই বা কত হইছে এই ধর ৫০-৬০ বছর।এ আর এমন কি বয়স?? হারামজাদা আবার আমার লগে মশকরা করোছ???
হইছে হইছে আর রাগ দেখাইতে হইবো না দাও তো তোমার পা গুলা,নিজের হাতে পড়াইয়া দেই।। বাহ কি সুন্দর মানাইছে তোমার পায়ে।আর তুমি কি না কি কইলা হইছে আর তেল মালিশ করতে হইবো না।যা ফ্রেস হইয়া খাইয়া পড়তে বস।আর যদি দেখছি পড়ার সময় মোবাইল টিপস।তাইলে কিন্তু খবর আছে ওকে আম্মা তুমারে কথা দিতাছি, পড়ার সময় আর আমার হাতে মোবাইল দেখবে না। ওরে আমার কথা ওলা আইচ্ছা দেয়া যাইবো নে কদ্দুর কি কর??? রাত ১১ টা, খাইতে বসছি।এই সময় আম্মা আব্বারে কইতাছেঃ- তোমার পোলাই আজকে যা করসে, আমিতো বিশ্বাসই করতে পারতেছি না কেমনে এমনডা করতে পারল????
আব্বাঃ- কি করছে কও। হারামজাদারে আজকে আর আস্তা রাখমু না।। চিকন পিনের চার্জারটা লইয়া আহো তো..
আম্মাঃ- চিকন পিনের চার্জার দিয়া কি করবা??
আব্বাঃ- ওহ সরি,ভুল ডায়লগ দিয়া দিছি চিকন চ্যালাডা নিয়া আসো, আজকে ওর খবর আছে???
আম্মাঃ- আর চেত কেন??? চেতের কিছু নাই ভালা কাম করছে।।
আব্বাঃ- কস কি মুমিন। থুক্কু কও কি মুমিনা।আমার পুলাই ভালা কাম করছে,এত অসম্ভব। অবশ্য যেই হারে জলিল ভাইয়ের ছবি দেহে সম্ভব হতেও পারে।।।। তারপরেও মশকরা করতাছ না তো….
আম্মাঃ- আরে না, তুমি কি আমার বেয়াই লাগো নাকি যে মশকরা করমু। তোমার পুলাই কথা দিছিলো পড়ার সময় মোবাইল টিপবো না।সে তার কথা রাখছে।।। সন্ধার পর থাইক্কা যখনি ওর রুমে গেছি, গিয়া দেহি পড়তাছে।।দেইক্ষা কি যে ভালা লাগছে তোমারে কি কমু।পরাণডা জুরাইয়া গেছে এই দৃশ্য দেইখা….
আব্বাঃ- বাহ এইটা তো খুশির কথা।এহন যদি একটু মানুষ হয়।।
রাত ১২ টা টুম্পার লগে লুতুপুতু প্রেম চলতাছে যান বেবি (পাঠকরা পড়বেন টেম্পু) আজকাতো সে একখান কাজ করছি।যাকে বলে এক ডিলে দুই পাখি মারা।। কেমনে বাবু???? আর কইয়ো না। আম্মার ঝালায় তো তোমার লগে ঠিক মত কথায় কইতে পারি না।কহন যে আইয়া পড়ে টেরই পাই না।তাই আইজকা আম্মারে এক জোড়া নুপুর কিইনা দিছি।তাতে আম্মাও খুশি আর যহনি আম্মা আমার ঘরে আসতে লয় তহনি আমি টের পাইয়া যাই।অমনি মোবাইল থুইয়া পড়ায় মনযোগ দেই। আম্মাও খুশি,আমিও খুশি।। হেহেহেহেহেহ….