মিষ্টি মেয়ে

মিষ্টি মেয়ে

পড়ালেখার সুবিধার জন্য মেসে থেকেই পড়ালেখা করি । গ্রীস্ম কালের ছুটিতে মেসের সবাই তাদের গ্রমের বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু আমি যেতে পারবো না।। আম্মু ফোন করে বললেন । বাড়িতে কি একটা সমস্যা হয়েছে তাই বাড়ি আসতে মানা করলেন। তাই আমিও আর গেলাম না।। কিন্তু ভাবছি কি করবো কিভাবে সময় কাটাবো এমন সময় রাকিব(আমার রুমমেট) এসে বললো কিরে তুই বাসায় যাবি না ?

তুই দেখি এখনো কাপর গোছাসনি! আমি তারপর ওকে সব বললাম । রাকিব একটা হাসি দিয়ে বললো তুই আমার সাথে আমার গ্রামের বাড়ি চল অনেক মজা হবে। আমি রাকিবকে না করলাম ।কিন্তু রাকিব অনেক জোর করছে। তাই রাজি হয়ে যাই। আমারো অনেক ভাল লাগে গ্রামের পরিবেশ। তাই আমিও ব্যাগ গুছিয়ে রাকিবের সাথে যাওয়ার জন্য বের হলাম । গাড়িতে বসে আছি। চলুন পরিচয়টা দিয়ে দেই আমার নাম রনি। আমার একটা ছোট বোন আছে বয়স ১৫ । আর আমার বয়স ২০ । অনার্স ২য় বর্ষে পরছি। আমার বন্ধুর নামতো জানেনি। ।।

আল্লাহ গ্রামে এসে পৌছেছি। অনেক লম্বা পথ ছিল। কিন্তু গ্রামের পরিবেশের মজাই আলাদা। আমার অনেক ভালো লাগছিল । তার পর আমরা রাকিবের বাড়ি যাই। রাকিবের আম্মু আমাকে দেখে অনেক খুশি হন । আমার অনেক ভাল আপ্পায়ন করেন । তার পর রাতের খাবার খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দিলাম ।সকালে উঠেই রাকিবের সাথে ঘুরতে বেরোলাম। অনেক ভাললাগছিলো । বিকেলের দিকে একটু খেলতে গেলাম ।বিসাল বড় মাঠ। যা সহরে নেই বললেই চলে। তখনো রাত হয়নি। বাসায় আসবো এমন সময় দেখলাম কিছু মেয়ে পুকুরের ধারে দারিয়ে হাসা হাসি করছে। আমি তাদের পাস দিয়ে যাওয়ার সময় একটা মেয়ে বলে উঠলো ওর বান্ধবিদের ,দেখ দেখ সহরের পোলাটা কি সুন্দর।।

আমি কথাটা শুনতেই ওদের দিকে তাকাই। এমন সময় একটা মেয়ে পিছন ফিরে আমার দিকে তাকায়। আমি মেয়েটাকে দেখে পুরাই ফিদা। মেয়েটা দেখতে অনেক মিষ্টি এবং সুন্দর। অনেক মায়া ভাব আছে চেহারায়। একদম সাধারন জামা পরে আছে । আমি চোখ ফেরাতেই পারলাম না । মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে মুখটা আবার ফিরিয়ে নিয়ে বললো সুন্দর নাকি ছাই । চুল কাটার টাকা হয়তো নাই। কেমন উচু উচু এলোমেলো হয়ে আছে। আমি শুনেই থ। (যেইটা আমরা স্টাইল বলি মেয়েটা বললো তা নাকি চাই) তারপর বন্ধুর ডাকে বাস্তবে ফিরে আসি তারপর বাড়িতে ফিরে আসি । কিন্তু আমার কিছুই ভাল লাগছে না। শুধু মেয়েটার কথা ভাবছি । রাতে কোনোমত ঘুমিয়েছি। সকালেও মেয়েটাকেই ভাবছি।। এমন সময় রাকিব এসে জিজ্ঞেস করলো -কিরে কি হয়েছে তোর ? এত কি ভাবছিস গতকাল থেকে? আমি তারপর সব খুলে বলি । রাকিব শুনেই হেসে দেয়। বলে তুইকি মেঘার কথা বলছিস !

আমিঃমেয়েটার নামকি মেঘা?

রাজিবঃহুম ।

আমিঃবাহ সুন্দর নামতো।

তারপর রাকিবের থেকে সব জানলাম । মেয়েটা নাকি অনেক ভাল। আর ssc পাস করেছে। (গ্রামের মেয়েতো ,আর গ্রামে এর বেশি পড়ার সুযোগ ছিল না তাই আর পড়তে পারেনি ) আমি রাকিবকে বললাম মেয়েটার সাথে কথা বলতে চাই। রাকিব বললো দেখছে কি করা যায়। পরেরদিন রাকিব আমাকে একটা যায়গায় নিয়ে যায় । সেখানে দেখলাম সেই মেয়েটা । রাকিব আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। মেয়েটা অনেক সুন্দর করে কথা বলে । আমি ১০ দিন গ্রামে থাকি । আমি মেঘার সাথে প্রতিদিন ঘুরতে যেতাম । কিন্তু এখন চুলগুলো চিরুনি দিয়ে আচরিয়ে নামিয়ে যাই যাতে আর ছাই না শুনতে হয়। মেঘার সাথে কথা বলতে অনেক ভাল লাগতো । কিন্তু মেঘার কোনো ফোন ছিল না তাই আমরা দিনের সময় একটা নির্দিষ্ট স্থানে দেখা করতাম । একদিন মেঘা আমকে জিজ্ঞেস করলো-

মেঘাঃতোমার কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে?

আমিঃ না কেনো?

মেঘাঃএমনি( একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে) ।

মেয়েটা যেন খুশি হলো শুনে যে আনার গার্লফ্রেন্ড নেই। আর ২ দিন আছি গ্রামে কিন্তু আজো বলা হলো না মেঘালে আমি তাকে ভালবাসি(অনেক ভয় যদি না বলে দেয়)। যেইদিন চলে যাব ওইদিন সকালে –

মেঘাঃতুমিকি কিছু বলবা ?

আমিঃনাতো ! (যদিও চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে ভালবাসি)মেয়েটা যেন কেদে দিবে। আমি জিজ্ঞেস করি তোমার চোখে পানি জমছে কেন ?

মেঘাঃ কিছুনা এমনি ।তুমি ভাল থেকো ।আর নিজের খেয়াল রেখো ।বলেই একটা দৌড় দিয়ে চলে গেল।আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি। মেঘা কাদছে কেন ? মেঘাকি আমাকে ভালবাসে!ভাবতে ভাবতে আবার গাড়ি করে বাসায় চলে আসি । এসেই আম্মুকে সব বলি ,আম্মু শুনেতো অনেক খুশি। আম্মু বলেন যে তো কবে আনছিস আমার বউমাকে?

আমিঃতোমরা যখন বলবা।

আম্মুঃআচ্ছা তোর বাবার সাথে কথা বলে দেখছি ।

আমিঃ love you ammu .

তারপর ভাবতে থাকি কিভাবে বলবো মেয়েটাকে । তার পর ১ সপ্তাহ কেটে যায়। হঠাত একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে —

আমিঃহ্যালো?কে বলছেন ?

মেঘাঃআমি মেঘা ।

আমিতো শুনেই অবাক৷ আর অনেক খুশি। বলি তুমি কল দিছ ।কেমন আছো? মেঘা শুধু বললো তার বিয়ে ৪দিন পর । আর আমি যেন তার বিয়েতে থাকি। বলেই ফোনটা কেটে দিল। আমি বেক করি কিন্তু ফোনটা অফ । আমিতো থ। কি করবো এখন। মেঘা অন্য কারো হতে পারে না। পরেরদিন সকালের বাসেই চলে যাই মেঘার গ্রামে গিয়ে দেখি মেঘার বাড়িটা সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে ।আমি মেঘাকে খুজতে থাকি এবং একজনের কাছে শুনি ও কোথায়, দৌড়ে ওইখানে গেলাম । গিয়েই মেঘাকে জরিয়ে ধরি ।মেঘা চমকে যায় ।আমি বলি —

আমিঃমেঘা তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি । তুমি অন্য কারো হতে পারো না। আমাকে ছেরে যেও না।
মেঘা চপ করে আমাকেও জরিয়ে ধরে। পিছন থেকে আমাকে একজন বলে তোর ভালবাসাকি আমি অন্য কারো হতে দিতে পারি। পিছনে তাকিয়ে দেখি রাকিব ।

আমিঃ মানে?

রাকিবঃমানে আজকে মেঘার না ।মেঘার বড় বোনের বিয়ে।

আমিঃতাহলে মেঘা যে বললো

রাকিবঃসেটা আমার প্লেন ছিল । তুইতো মেঘাকে বলতে ভয় পাস তাই আমি সব প্লেন করি যাতে তুই নিজেই সব বলিস। আমি মেঘার দিকে তাকালাম দেখলাম মেয়েটা মাথা নামিয়ে রেখেছে ।

আমিঃঅনেক ভালবাস আমায়?

মেঘাঃহুম (সরম পেয়ে মাথা নামিয়ে রেখেছে)

আমি তার পর হাটু গেরে বসে প্রোপোজ করি । মেঘা আমাকে আবার জরিয়ে ধরে বলে আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। রাকিব পাস থেকে বলে। তোরা থাক আমি গেলাম । তোদের মাঝখানে আমার কোনো কাজ নেই।
পরে আমার ফেমেলি বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। তারা রাজিও হয়ে যান। ২ মাস পরে ধুম ধাম করে আমাদের বিয়ে হয়। মেয়েটা আমাকে অনেক ভালবাসে । এবং আমার পরিবারকেও আপন করে নেয় খুব দ্রুত । খুব সুখেই কেটে যাচ্ছে দিনগুলো।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত