সুন্দরী একটা মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার পর জানতে পারলাম এই মেয়ে আমার সাবেক প্রেমিকার ছোট বোন। মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। এইডা আমি কি করছি। এর বড় বোনের জ্বালায় পাগল হয়ে দুই মাস আগে পাবনা থেকে ছাড়া পাইছি। আবার যদি এই মেয়ের সাথে আমার প্রেম হয়। তাহলে ডাক্তার বলছে “এবার মাথার গন্ডগোল হলে। আমি তাহলে সারাজীবনের জন্য পাগল হয়ে যাবো”।
হঠাৎ দেখি একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন। ফোনের ওপাশ থেকে কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে আর বাকি রইলো না এটাই আমার সেই সাবেক প্রেমিকা। সে চিৎকার দিয়ে বললো “তোর মতো একটা ছাগলের সাথে প্রেম করে আমার জীবন শেষ। আর সেই তোর সাথে প্রেম করে আমার ছোট বোনের জীবন শেষ হতে দিবো”?
ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেলো। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলো না আমার। এমন সময় হঠাৎ করে আব্বার একটা মহান বাণী মনে পড়লো, আব্বা কইছে বিপদে সব সময় সাহস রাখবি। আমি বুকে সাহস এনে বললাম “কও কি! ঐ সুন্দরী মেয়েটা তোমার ছোট বোন? কিভাবে সম্ভব”! সে বললো, কিভাবে সম্ভব মানে? আমি আমতাআমতা করে বললাম, “না মানে তোমার গায়ের রংয়ের সাথে ওর রঙ যায় না”।
সাবেক প্রেমিকা বললো “তুই এইডা কি কইলি? আমার গায়ের রঙ নিয়ে খোটা দিলি? অই তুই চিনস আমারে? আমি কিন্তু সামীম ওসমানের এলাকার লোক। তোর লাশ যদি শীতলক্ষ্যা নদীর মধ্যে না ডুবাইছি তাইলে আমার নাম শিলা না”। মনে মনে তিনবার বিপদের দোয়া পড়ে বুকে ফু দিলাম। খুব মনে আছে একবার রমযান মাসে দিনের বেলায় কি যেন একটা কথায় উত্তেজিত হয়ে ফোনে শিলাকে চুম্মা দিছিলাম বলে সে রমযান পরে আমাকে ৩০ টা রোযা করাইছিল। এইবারে তার বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিছি। সেই সাথে শরীর নিয়েও খোটা দিছি। আল্লাহ জানে কপালে কি আছে।
ভয়ে ফোন কেটে দিয়ে ভাবলাম বাসা থেকে আর বের হবো না। কপালে যা হবার হবে। এই মেয়ের সাথে এখান থেকেই সব শেষ। আমি এখন খুব ভদ্র ছেলে। বাসা থেকে বের হইনা। ঘরেই নামাজ কালাম পড়ি। আম্মা কয়েল আনতে দিলেও আমি বাসা থেকে বের হইনা। ছোট ভাইকে পাঠায় দেই৷ বলা যায় না। শিলা যদি সত্যি সত্যি আমাকে মেরে ফেলে। কি যেন একটা কাজে একটু জন্য বের হইছি।হঠাৎ পিছন থেকে একটা রুমাল দিয়ে কে যেন নাক চেপে ধরলো। তারপর কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফেরার পর দেখলাম চেয়ারের সাথে হাত পা বাঁধা। মুখের মধ্যে একটা কাপড় ঢুকানো। হাত পা একটু এদিকওদিক করার ব্যবস্থা নেই। বুঝলাম মৃত্যু খুব কাছে। সামনে তাকিয়ে দেখি শিলা সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইয়া বড় একটা চাকু নিয়ে। ১০০ পাওয়ারের লাইটের আলো সেই চাকুর উপর পরে চকচক করছে। শিলা সেই চালু নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো, হারামজাদা তুই আমার বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দেস। আর আমার গায়ের রঙ নিয়ে মজা নেস৷ আজকেই তোর জীবনের শেষ দিন। সাথে সাথে চাকুটা আমার পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো। আস্তে আস্তে চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে এলো। মনে হলো আমি মরে গেছি। এখানেই আমার জীবনের শেষ।
আস্তে আস্তে চোখ খুলে বুঝতে চেষ্টা করলাম আমি জান্নাতে, না জাহান্নামে। যতটুকু মনে আছে জাহান্নামে শুধু আগুন আর আগুন। কিন্তু আমার আশেপাশে কোনো আগুন নেই অথচ আমি চোখের সামনে একটা সুন্দরী মেয়েকে দেখতে পাচ্ছি। শাড়ি পরে ঝাটা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। মনে মনে ভাবলাম জান্নাতে ঝাটার দরকার কি? আর এই মেয়ে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন। আচ্ছা এটা জান্নাতের হুর নয় তো? আচ্ছা দেখিতো অর্ডার করে, কথা শুনে নাকি।
মেয়েটাকে বললাম “এই যাও আমার জন্য ছাগলের দুধের চা নিয়ে আসো”। মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ” ভাইজান আমি ছাগলের দুধ পামু কই”? আমি মেয়েটাকে ধমক দিয়ে বললাম ” এই তুমি কোথায় পাবা সেটা আমি কিভাবে জানি, তুমি যেখান থেকে পারো এনে দেও”। মেয়েটা হঠাৎ ও আল্লাহ ও আল্লাহ করে বলে উঠলো “চাচিমা ভাই আবার পাগল হয়ে গেছে।আসেন দেখেন ভাই এসব কি উল্টাপাল্টা বলতেছে। আপনি তাড়াতাড়ি আসেন”। হঠাৎ দেখি আম্মা আমার সামনে। আম্মাকে দেখে কইলাম “আম্মা আপনিও জান্নাত পাইছেন? আপনি মরলেন কবে? আব্বা জান্নাত পায়নাই? আব্বাকে দেখতেছি না যে ? নাকি আব্বা এখনো মরেনাই”?
দুই গালে দুইটা থাপ্পড় দেওয়ার পর আম্মা কইলো” চাইয়া দেখ এইটা জান্নাত না, দুনিয়া। আর আমি এখনো মরিনাই”। আম্মারে কইলাম “তাইলে আমার সামনে শাড়ি পরে ঝাটা হাতে দাঁড়িয়ে আছে এইটা হুর না”? আম্মা আরো দুইটা থাপ্পড় দিয়ে কইলো ” এইটা আমাদের নতুন কাজের মেয়ে সুরমা। তোর রুম পরিষ্কার করতে আসছে”। মনে মনে কইলাম ” তার মানে আমি মরিনাই, স্বপ্ন দেখছি”। আম্মা চিৎকার করে আব্বাকে ডেকে কইলো, পাবনার হটলাইনে কল দিয়ে তারাতাড়ি কও এম্বুলেন্স পাঠাইতে। পোলা আমার আবার গেছে”।