এক্সকে গিফট

এক্সকে গিফট

চার বছর প্রেম করলাম, কিন্তু আমার প্রেমিকার মন জয় করতে পারলাম না, তার মনের মত হতে গেলে হয়তো আমাকে আবার মায়ের পেটে ঢুকে আল্লাহর কাছ থেকে সব শিখে তারপরও জন্ম নিতে হবে, নয়তো জাদুটোনা করে তার মন মত হতে হবে, আর এগুলো করেও যদি না হয় তবে তাকে জাদুটোনা করে আমার মন মত করতে হবে ভেবেছিলাম।

কিন্তু সে কোন প্রকৃতির আর কেমন করে স্রস্টা হ্যারে বানাইছে আমার বুঝে আসে না, হয়তো আমি বুড়া হয়ে যাব তবুও তারে বুঝতে পারবো না, এতদিন তার মন মত হতে গিয়ে (জ্যাকি স্যাং এর ছবি) এখন নিজেকেও বুঝতে পারি না, নিজেই নিজেকে জিগ্যেস করি who am i শেষ মেষ সে আমায় না জানাই এক টাকাওয়ালা তার বাবা মার পছন্দ মত ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছে, আর সেই চিন্তায় নিজেকে ছেকা খোরের খাতায় নাম লেখাইছি, কিন্তু না সে আমার সাথে যা করেছে তার জন্য আর নিজেকে কষ্ট দিতে চাই না, এজন্য আগের মত অগোছালো গেও হয়ে থাকি যাতে প্রেম ভালোবাসার কথা বলে।

কিন্তু প্রমিকা আমার দাওয়াত দিতে ভুল করলেও আমি যাইতে ভুল করবো না ( ম্যাসে থাকা কালিন কত জনের বাড়িতে যে দাওয়াত ছাড়াই খাইছি তার তো ঠিক ঠিকানা নাই, আর ম্যাসে থাকা খাওয়া যে কত কষ্টের যারা থাকে তারাই জানে, আর দাওয়াত ছাড়া খাওয়া কত মজার যারা খাইছে তারাই জানে, আর এখন এক্সএর টা কি করে বাদ দি, থাক সেসব কথা, সেগুলো বললে সবাই শুনে হাসবে, কেউ আবার গালিও দিতে পারে ) তাই নিয়ত করছি যামু ইচ্ছা মত গলা পর্যন্ত খুমু আর ঢেকুর তুলতে তুলতে বিয়ে বাড়ি থেকে আমু।

তাই এক্সের বিয়েতে যথা সময়ে গোসল করে বন্ধুর নতুন ফগ পারফিউম গায়ে মাখলাম বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য,
কিন্তু বিষয় হয়ছে গিফট দাওয়াত ছাড়া বিয়ে তো খাওয়া যাবে। কিন্তু গিফট ছারা তো চলে যাওয়া যাবে না, হাজার হলেও এক্স বলে কথা, কিন্তু পকেট খালি, একটা কানা কড়িও নেই, মাস শেষ, তাই ভাবলে কি আর চলে, এমন কিছু দিতে হবে টাকায় কম হলেও মনে যেন থাকে। তাই বন্ধু ওলির কাছে থেকে কিছু টাকা চেয়ে নিলুম। কিন্তু ভেবে পাচ্ছি না কি দিব, যা যা লাগে সবাই তো দিয়ে দিতেছে, অনেক কষ্টে অনেক সময় ধরে চিন্তা করে একটা জিনিস মাথায় আসলো। অবশেষে তা কিনে গিফট বক্স ( ৩/৪ টা রেপিং পেপার দিয়ে যাতে খুলতে সময় বেশি লাগে আর মনে হয় খুব দামি কিছু) খুব সুন্দর করে সাজিয়ে একদম হাতে নিয়ে গেলাম। ঢুকতেই এক্সের বাবা+ভাই মানে আমার এক্স শশুড় আর এক্স শালা বড় বড় চোখ করে তাকাল। ( হয়তো বিয়ে বাড়ি বলে কিছু বলছে না, নয়তো এতখনে হাসপাতালে থাকতে হত) কিছু বললো না, তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম।

খিদে পেট চো চো করতেছে তাই খাওয়া দাওয়ার জায়গায় প্রবেশ করলাম, প্রবেশ করে দেখতেই চোখ জাম্বুড়ার মত বড় আর পেট বস্তার মত প্রসস্ত হতে লাগলো, টেবিলের উপর ইয়া বড় বড় বোলে করে ভূনা গোসত কোরমা পোলাও ডিম সালাত আরও নানান পদের খাবার রাখা, না দেখে তাড়াতাড়ি চেয়ার টেনে হাত না ধুয়েই গপাগপ গিলতে লাগলাম, ইচ্ছা মত খেয়ে দেখি দই মিষ্টি, তাই সেগুলেও মেরে দিলাম। (আজ অনেক দিন পর এত আরাম করে ইচ্ছে মত খাওয়া দাওয়া করলাম। আসার সময় প্যাক করে নিয়ে আসতে চাইছিলাম রাতের জন্য, কিন্তু কি মনে করে আনলাম না।)

এবার যেখানে গিফট দেওয়া হবে সেখানে গেলাম, দেখি এক্স আমার দিকে তাকায় আছে, তাই তার কাছে গিফট আর ভালোমন্দ জিগ্যেস করতে গেলাম, কিন্তু সে আমাকে তার কলেজের বড় ভাই হিসাবে পরিচয় করে দিল। (এমন সময় আবেগ প্রবন না হয়ে চোখের পানিকে আটকিয়ে রাখলাম, বিএফে ভাই, ভাবা যায় এগ্লা, কেউ মোর কয়টা বেলুন ফুলায় দাও মুই চান্দে উইড়া চইলা যাই.)

মুই জিএফ এর দিকে অসহায়দের মত চাইয়া রইছি আর জিএফ আমার দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে আছে তাই কিছু না বলে সেখানে বেশিক্ষন না থেকে হাতে গিফট দিয়ে চলে আসলাম, বেশিক্ষন থাকলে হয়তো একটা ক্যালেকারি হয়ে য়েত। দুদিন পর এক্স ফোন করছে, হয়তো সান্তনা দিবে নয়তো তারে ভুলে যেতে বললে তাই হয়তো ফোন করেছে এই ভেবে যেই না রিসিভ করছি, জিএফ তো রাগি কন্ঠে আকাশ পাতাল ফাটাইয়া কইতাছে—

 কুত্তা তুই কিপটা বলদ এটা জানতাম। আর বিয়ের দিন তাই তো বলি তোর মন এতো বড় হয় কেমনে ? হারামজাদা, চামচিকা বান্দর স্বর্ণের গিফট বক্সে এটা কি দিছিস।

কেন ফেমিকন, তোদের পরিবার পরিকল্পনায় সহযোগিতার জন্য। দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে তার জন্য সরকার কি বলেছে জানিস না, দুটো সন্তানের বেশি নয় একটি হলে ভালো হয়, আর এর জন্য কত ধরনের পদ্ধতি গ্রহন করেছেন আমাদের বঙ্গমাতা, দেশের শান্তি আর পরিবারের ভালোর জন্য।

 বান্দর কুত্তা হারামজাদা তাই বলে এই গুলো কেউ কাউরে গিফট দেয়, তুই আমার সামনে আয়।

 কেন তুই ফেমিকন খাস না, ঠীক আছে কাল আমার ডাক্তার চাচার কাছে পরামর্শ নিয়ে সামনে দিন দেখা হলে বা তোর শশুড় বাড়ির ঠিকানা দে এর বদলে অন্য একটা দিয়ে আসব। আর পেট ভরে খাওয়া ও হবে।

 কুত্তা বান্দর শয়তান তোরে যেন জীবনেও সামনে না দেখি।

এজন্য বলে কারোর উপকার করতে নাই। উপকার করলে দোষ না করলেও যা কেটে দিল তো।

এখন মনে মনে কইতাছি আর ভাবতেছি মানুষ মানুষের বিয়েতে কত কি না দেয় তাদের কাজে লাগবে বলে আর আমি ও তো তাদের সবচেয়ে ভালো জিনিস দিছি যেটা কেউ দেয়নি, যেটা সবার আর সব দম্পতির জন্য আবশ্যক , কিন্তু আমি এটা ভেবে পাচ্ছি না এটার জন্য আমারে সে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত