—–আর কতক্ষন কান দরে একপায়ে দারাবো,,,
—–যতক্ষন না আমার রাগ কমবে,,,
—-আমি তো আর পারছি না,,
এবারের মতো ক্ষমা করে দেন,,
—–তোর কোনো ক্ষমা নেই,,,বেসি কথা বললে শাস্তি আরো বেরে যাবে,,
আমি জাহিদ হাসান জনি আমাকে শাস্তি দেওয়া মেয়েটা হলো বাড়িওয়ালার ছোট মেয়ে আরোহি,,
কোন কুক্ষনে যে এই বাসা ভাড়া নিয়েছিলাম কে জানে,,,
বাড়িওয়ালা একজন আছে,, সলা পেট মোটা,, কিছু হলেই বাবা জনি,,
ওনার বাতরুমের ট্যাবের পানি পরছে না,তাও জনি,,
বাঝার নেই, তাও জনি,আবার উনিসের থেকে বিশ হলে তার ছোট মেয়ে আছে নানা রকম শাস্তি দেবে,,
এখন আমাকে শাস্তি দেওয়ার একটাই কারন,আমি নিচ তলার ভাড়াটিয়া পাপিয়ার সাথে এক রিক্সায় মার্কেটে কেনো গেলাম,,,
——কি হলো কান ছারছো কেনো,কান দরো,,
—–আমি আর পারছি না,,,
—–ওই মেয়ের সাথে ঘুরার সময় মনে ছিলো না,
—-আর ঘুরবো না,, (মাথা নত করে বললাম,,)
——আচ্ছা এবারের মত মাপ করে দিলাম,,এর পর যদি দেখি তখন বুঝবি এই আরোহি কি জিনিস,,,এখন ফ্রেস হোয়ে আমাদের বাসায় খেতে আয়, আমি নিচে গেলাম,,
আসলে আরোহির বাবার সাথে বেস ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে,,তাই রাতে ওনার বাসায় খেতে হয়,,আরোহির নির্দেশে সকালে করতে হয় ব্রেকফাষ্ট,,
দুপুরে কম্পানি থেকে খেয়ে আসি,,
আর বাসায় থাকলে আরোহিই জোর করে খাওয়ায়,,
আমি মাএ দুপুর পর্যন্ত কম্পানিতে কাজ করি,,,বাকি সময় বাসায়ই কাটাই,,
আরোহির এমন আচারন দেখে কখনো মনে হয় আমাকে ভিষন ভালোবাসে, আবার মনে হয় ভালোই যদি বাসতো তাহলে এত শাস্তি কেনো দেয়,,,
।
নিচে ওদের বাসায় খেতে গেলাম,,
আমি আরোহি, ওর বাবা বসেছে খেতে,,
ওর মা মারা গিয়েছে আরো দশ বছর আগে,
আরোহি খাবার বেরে দিচ্ছে,,
তখন আরোহির বাবা বললো,,
বাবা জনি কালতো আমার মেয়ের সেমিস্টার পরিক্ষা,,
—–ও,আপনি সাবধানে আরোহিকে নিয়ে যাবেন,
:——আব্বু নিয়ে যাবে কেনো,,
—–তো কে নিয়ে যাবে
:—–কেনো তুমি,, কাল তোমার অফিসে যাওয়া বন্ধ,,
—–আমি
:—–কাল কেনো, যে কয়দিন আমার পরিক্ষা চলবে সে কয়দিন তুমি নিয়ে যাবে নিয়ে আসবে,, কোনো না শুনতে চাইনা,,
——আমার বসের সেই কড়া হুংকারের কথা মনে পরে গেলো,,একদিন বন্ধ দিলে দিগুন কাজ করতে হবে,,
ভাবতেই জানি কেমন লাগছে,, মনে হয় চাকরি টিকাতে পারবো না,,
:—–কি হলো, এত ভাবাবাবির কিছু নেই,,যা বলেছি তাই,,এর যেনো হেরফের না হয়,,
——বাবা জনি, তুমিই নিয়ে যেও,, মনা বলো না,
——আমি কোনো রকম মাথাটা উপর নিচ করলাম,,
সালার কপালই খারাফ,, চাকরি মনে হয় হাড়াতে হবে,,,
সকাল বেলা কলিংবেলের শব্দে ঘুম থেকে উঠতে হলো,,
এটা অবশ্য আরোহি নিত্যদিন করে,,
দরজা খুলে দিলাম,
:—–কি এখনো ঘুমুচ্চো কেনো,,
আমি তোমার রুম গোছাচ্ছি, তুমি ফ্রেস হোয়ে আসো,,
কি আর বলবো, এতো নিত্যদিনের কাজ,,
সকালে নাস্তা করে ওকে নিয়ে বের হলাম,,
এক রিক্সায় করে দুজন যাচ্চি,,
কলেজের সামনে এসে দুজন নামলাম,,
:—–এক্সম দিয়ে বের হোয়ে যেনো তোমাকে এখানেই পাই,,আর যদি দেখেছি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে,, তাহলে সোজা
এক্সাম থেকে বের হোয়ে পিটাবো,,
কি বলেছি মনে থাকবে তো,,
——হুম থাকবে,,
আরোহি এক্সাম দিতে চোলে গেলো,, এটা করলো বারাবারি,, এতক্ষন এ রোদে কি আর দারিয়ে থাকা যায়,,,
আরোহি পরিক্ষা দিয়ে বের হোয়ে বললো,,চলো,
—–এক্সাম কেমন হোয়েছে
—–:ভালো,,
আরোহিকে নিয়ে প্রতিদিন এক্সাম হলে যাই,,,
আজ হলের বাহিরে দারিয়ে থাকার সময়,এক মেয়ের সাথে পরিচয় হয়,, মেয়েটিও এসেছে ওর বোন নিয়ে,,
হাতে সময় যেহেতু আছে তাই বেস কতক্ষন ওর সাথে নানা বিষয় নিয়ে গল্প করলাম,,
আরোহি সেটা হল থেকে দেখে,,
এক্সাম শেষ হওয়ার এক ঘন্টা আগে বের হোয়ে আসলো,,
এসে সোজা এই লোকালয়ে আমার কলার দরলো,,
:—–ওই তোকে কি বলে গিয়েছি,,
এত কিসের আলাপ এই মেয়ের সাথে,,
মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললো,,ওই আপনার লাজ সরম নেই, একটা অপরিচিত ছেলের সাথে এত কথা বলছেন,,যান এখান থেকে,, মেয়েটি মেয়েটির সম্মান বাচাতে সেখান থেকে চোলে গেলো,,
:—–কানে দরে উটবস কর,,
——এত লোকের সামনে
: হুম এটাই তোর শাস্তি,,
——দেখুন এটা কিন্তু বেসি বাড়াবারি হোয়ে যাচ্ছে,,বাসায় চলুন বাসায় গিয়ে কানে দরবো,
:——না এখানে ই দরতে হবে,
——-দেখুন এটা সম্বব না,, আমার একটা সম্মান আছে,,,বাসায় চলুন সেখানেই দরবো,,,
——:রাখ তোর সম্মান,, ওই মেয়েটার সাথে কথা বলার সময় মনে ছিলো না,,এখন কানে দরবি কি না বল,,
—–না দরবো না,,
——:আমি কিন্তু রেগে গেলে উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলবো,,তখন সম্মান
সব যাবে,,
তাই ভালোয় ভালোয় বলছি,,
কানে দর,,
নিজের সস্মান বাচাতে কানে দরলাম,,
সবাই তাকিয়ে আছে, আমি কানে দরে উটবস করছি,,
লজ্জায় মাথা দার করাতে পারলাম না,,,.
এিশবার উটবস করার পর আরোহি ক্ষান্ত হলো,,
রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে,,
ওকে বাসায় দিয়ে আমি অফিসে চোলে আসলাম,,
অনেক দিন বন্ধ দিয়েছি অফিস,
আজ বস কল দিয়ে সরাসরি দেখা করতে বললো,,
অফিসে গিয়ে বসের কিছু তেতো তেতো কথা শুনে মেজাজ আরো বিগরিয়ে গেলো,,
বসের করা হুংকার, চাকরি বাচাতে হলে ডে -নাইট কাজ করতে হবে,,না পারলে চাকরি শেষ,আর আসতে হবে না,,
রাত অনেক হোয়েছে,, এখনো বাসায় ফিরিনি, আরোহি বেস কয়েকবার কল দিয়েছে, রিসিব করিনি,,
শেষমেস শিদ্ধান্ত নিলাম বাসা ছেরে দেবো,,
এই বাসায় থাকলে, চাকরি বাচাতে পারবো না,,
বাসার পথে রওয়ানা দিলাম,,
পথেই আংকেল কল দিলো,,
——কি ব্যাপার তুমি কোথায়,,
—–এইতো চোলে এসেছি,,,.
শিরি দিয়ে উঠতেই দেখি আরোহি দরজার কাছে দারিয়ে,,
:কি ব্যাপার এত রাত কোথায় ছিলে,,এত রাতে কেউ বাহিরে থাকে,,,
আমি কিছু না বলে ভিতরে গেলাম,,
আংকেলের কাছে গেলাম,,,
—–এত রাত করে ফিরেছো কেনো,,
বসো বসো খেতে বসো,,
——না আংকেল আমি খাবো না,,
আমার খিদে নেই,,আমি আপনাকে একটা কথা বলতে এসেছি ,,,
—–কি কথা বলো,,
——আসলে আঙ্কেল আমি বাসাটা ছেরে দিতে চাচ্ছি,,এবং পরসুই ছারবো,,
আংকেল অবাক হোয়ে বললো,,
সেকি, কোনো সমস্যা হোয়েছে,, ছারতে চাচ্ছো কেনো,,
——আসলে আমার অফিসের কাছে একটা বাসা পেয়েছি,সেখানেই উঠতে চেয়েছি,,,
——আসলে কি বলবো,, তোমার সুবিধাতো আর আমার কি বলার।,,
আরোহি শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,,ও ভাবতে পাচ্ছে না, এরকম কিছু বলবো,,,
সেখান থেকে চোলে আসলাম,,
আরোহি কোনো শব্দও করলো না,,
সকাল সকাল বেরিয়ে পরলাম,,
একটা বাসা দেখতে হবে,,
সেদিও রাতে ফিরলাম,,,
আমি সবে বাসার দরজার লক খুলবো,, কিন্তু দেখি লক আগে থেকেই খোলা,,
ব্যাপারটা কি, ভিতরে কে হতে পারে,,,
কিছুটা ভয় ও লাগছে,,
দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম,,
ভিতরে গিয়েতো আমি অবাক,,
আরোহি ভিতরে বসে আছে,,
আমার ভিতরে আসার শব্দ পেয়ে আমার দিকে তাকালো,,
মুখটা শুকিয়ে গিয়েছে,,চোখটা ও কেমন লাল,,
আমি কাছে যেয়ে বললাম,, আরে আপনি এখানে,,,
——-আমার জন্য বাসা ছেরে দিচ্ছো,
—–??
—–আসলে তোমার সহজ সরল মন,,
সহজ সরল কথা দেখে আমি আমি কখন যে তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি নিজেই জানি না,,হয় তো মেয়েটা আমি খারাফ,,কিন্তু তোমাকে বেসি ভালোবাসি বলেই এতটা শাষন করি,
(আরোহি বলছে আর কাদছে,)
খুব ভালোবাসি তোমায়,,শুধু এতটুকু শুনে রাখো,,তোমায় ছারা বাচবো ঠিকি কিন্তু এতটুকুও ভালো থাকবো না,,,
হয়তো ভালোবাসি বলে একটু বেসি বারাবারি করি,,বেসি কিছু আর বলার নেই,,চোলেযেতে চাচ্ছো যাও,,বাধা দেবো না,,
আরোহি চোলে যাচ্ছে, আবার ফিরে বললো,,ও হ্যা খাবারটা খেয়ে নিও,,
আরোহি কাদতে কাদতে দৌরে রুম থেকে চোলে গেলো,,,
সামনে তাকিয়ে দেখি সুন্দর করে খাবার বেরে রেখেছে, ,একক্ষন খেয়াল করিনি,,,
সকালে আংকেল কে বলার জন্য আরোহিদের বাসায় গেলাম,,
আংকেল ছোপায় মাথা নিচু করে কপালে হাত দিয়ে বসে আছে,,
–আংকেল
আংকেল আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,ওহ জনি, বসো বসো,,
——না আংকেল ঠিক আছে,,
আসলে আমি একটু পর চোলে যাবোতো, তাই বলতে আসলাম,,
——চোলে যাবে যাও, তোমাকে আটকে রাখার মতো সাধ্য আমার নেই,,তবেকি জানো তোমাকে কখন অন্য কেউ বা বাড়াটিয়া
ভাবিনি,, নিজের পরিবারের একজন ভেবেছি,,
তোমার অফিস এখান থেকে এতটা দুরে না যে তোমার মেলাক্ষন সময় লাগে,, বা ভাড়া বেসি লাগে,, আমার জন্য না থাকো,আরোহির জন্যতো থাকতে পারো,,
মেয়েটা তোমার যাওয়ার কথা শুনে পরশু রাত থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খাবার মুখে তুলেনি,,,গত কাল পরিক্ষাটা পর্যন্ত দেয়নি,,,
—???
—আমি চাই তুমি আমার ছেলে হোয়ে এ বাসায় থেকে যাও,,
অনতত আরোহির জন্য থাকো,,
—-আরোহি কোথায়
—-দেখো হয়তো রুমে বসে কাদছে,,
আমি আরোহির রুমে ঢুকে দেখি ও হাটুবাজ করে মাথা ঘুজে বসে আছে,,
আমি গিয়ে ওর কাদে হাত দিলাম,,
ও চমকে গিয়ে মাথাটা তুলে আমার দিকে তাকালো,,
মেয়েটার চোখ দিয়ে অনর্বত পানি পরছে,,
আরোহি অন্য দিকে মুখ করে বললো,,
কি ব্যাপার তুমি এখনো যাওনি,,
এই খারাফ মেয়েটার কাছে পরে আছো,,
—??
—-জানো আমার কপালটাই খারাফ, তোমার ভালোবাসা পেলাম না,,চোলে যাও চোলে যাও, আমার মতো খারাফ মেয়ের কাছে থাকা দরকার নেই,,
আমি আরোহির মুখটা আমার দিকে ঘুরিয়ে চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে দিলাম,,,
আরোহি সাথে সাথে বুকে জাপিয়ে পরে বুকের ভিতর মুখ লুকিয়ে আরো জোরে কাদতে লাগলো,,
—-এই আরু রেডি হোয়ে নেও,,
একটু পর এক্সাম শুরু হবে,,,
—-তুমি চোলে যাবে না,,
—–এখন থেকো পার্মানেন্টলি থাকবো,,এখন চলো,,এক্সাম দিবে,,
—– না ওভাবে থাকতে ভালো লাগছে, যাবো না,
—–এই বুকে সারা জীবন থাকতে পারবে,, এখন চলো,,
……….সমাপ্তা