অফিস থেকে এসে খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিলাম আর একটু ফেসবুক চালাচ্ছি তো কিছুক্ষণ পর দেখি আম্মু আমার ঘরে আসলো আর বল্লো—->
আম্মু: বাবা এখন তো করে ফেল ?
আমি: ছি ছি আম্মু কি বলছো কি করে ফেলবো ?
আম্মু: হারামজাদা বিয়ের কথা বলছি ?
আমি: ওহ আচ্ছা আমি ভাবলাম কি না কি করে ফেলবো ?
আম্মু: তুই তো সারাদিনই অনেক কিছু ভাবিস এবার বিয়েটা করে ফেল ??
আমি: আম্মু কি যে বলো এখনো তো বড়ই হলাম না দেখো নাক টিপ দিলে দুধ পরবে ?
আম্মু: দেখ জাহিদ ফাইজলামি করবি না আর তুই এখনো ছোট আছিস নাকি সেই কবে পড়াশুনা শেষ হলো ভালো ও চাকরি ও করিস এখন যদি বিয়ে না করিস তাহলে করবি কবে বল ??
আমি: আম্মু তোমরা আমার এতো বিয়ে নিয়ে পরছো কেনো বলোতো বল্লাম তো বড় হয়ে নেই পড়ে বিয়ে করবো ||
আম্মু: তুই একটু বস তোর জন্য উপহার নিয়ে আসি ?
আমি: হ্যা আম্মু অনেক দিন ধরে উপহার পাই না যাও নিয়ে আসো|
অতঃপর আম্মু ঘর থেকে বের হয়ে গেলো আর আমি শুয়ে শুয়ে ফোন চালাচ্ছি কিছুক্ষন পর দেখি আমাকে কে জানো ঝাড়ু দিয়ে মারছে আর এটা আর কেও না আমার আম্মু পরে আমি বল্লাম—–>
আমি: এই ব্যাথা লাগছে তো ?
আম্মু: হারামজাদা বিয়ে করবি কি না বল ?
আমি: আজ একটা শিশুকে বিয়ে করানোর জন্য নির্যাতন করতেছো?
আম্মু: তুই বিয়ে করবি না তো তোর বাপ বিয়ে করবে ?
আমি: তা করালে করাতে পারো নতুন একটা মা আসবে |
তখন আম্মু রেগে গিয়ে বল্লো—–>
আম্মু: তাহলে থাক তুই একা কথায় ভাবলাম বাকি জীবনটা বউ নাতি নাতনির সাথে কাটাবো সেটা মনে হয় আর হবে না ||
অতঃপর রাগ করে চলে গেলো দূর আম্মু মনে হয়ে কষ্ট পেলো
[যাইহোক আপনাদের জানতে ইচ্ছা হচ্ছে আমি কে তাহলে বলি আমি জাহিদ পড়াশুনা শেষ করে একটা কোম্পানিতে জব করি আর যে এখন আমাকে বকা দিলো আর পিটালো এটা আমার আম্মু এখনো বিয়ে করি নিতো তাই উঠে পরে লেগেছে ]
যাইহোক এখন গল্পে আসি—->
অতঃপর দেখি আম্মু বসে আছে পরে আমি তার কাছে গিয়ে বসলাম আর বল্লাম—->
আমি: ও আম্মু……….|
আম্মু:…………|
আমি: ও আম্মু তুমি রাগ করলো জানো না আমার কষ্ট হয় ?
আম্মু: সর কথা বলবি না আমার সাথে যা |
আমি: আচ্ছা যাও আমি বিয়ে করবো এখন তো একটু হাসো ?
আম্মু: সত্যি তুই বিয়ে করবি ?
আমি: সত্যি তিন সত্যি এখন আর রাগ করে থেকো না |
আম্মু: আচ্ছা বাবা তুই বল এখন বিয়ে না করলে কি বুড়া বয়সে বিয়ে করবি বল ?
আমি: তাও ঠিক বলেছো তারাতারি বিয়ে করবো তারাতারি তোমাকে দাদি বানাবো ?
আম্মু: হাহাহা যা দুষ্টু আচ্ছা তোর কেমন বউ পছন্দ বল ?
আমি: তোমাদের যেটা পছন্দ হবে তাতেই আমি খুশি |
আম্মু: আজকেই তোর জন্য মেয়ে দেখবো গ্রামের?
আমি: গ্রামের কেনো ?
আম্মু: গ্রামের মেয়েরা খুব ভালো বুঝলি সহজ সরল এবং খুব সম্মান ও করে |
আমি: যেটা ভালো মনে করো তোমরা সেটাই করো |
অতঃপর রুমে চলে গেলাম কি আর করার বলুন জীবনে তো একটা প্রেম ও করতে পারলাম না তাই ভাবলাম বাবা মা যার সাথে বিয়ে দেয় তাকেই করবো |
অতঃপর কাল আম্মু বল্লো—->
আম্মু:দেখ তো বাবা মেয়েটা কেমন ?
আমি: টেবিলে রেখে দাও পরে দেখে নিবো |
তার পর আর দেখা হলো দূর একেবারে বাসর রাত দেখবো অতঃপর আমার বিয়ের দিন তারিখ শুরু হয়ে গেলো বিয়ে হবে শুক্রবার যাইহোক সুন্দর ভাবেই বিয়েটা হলো এখনো ঠিক মতো বউকে দেখতে পেলাম না |
তো আজ আমার বাসর রাত রুমে ডুকতে ভয় হচ্ছিলো অতঃপর আমার বন্ধুরা জোর করে রুমে ডুকিয়ে দিলো রুমে ডুকতেই দেখি আমার বউ আমার পায়ের উপর ঝাপিয়ে পরে সালাম করলো আমি তো ভয়ে পেয়ে গেলাম তখন আমি বল্লাম—>
আমি: হয়েছে হয়েছে হাজার বছর বেচে থাকো সেই দোয়া করি|
অতঃপর পায়ে সালাম করে চলে গেলো ঘাটে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে তোখন আমি ওর পাশে বসলাম তখন ওকে বল্লাম—->
আমি: দেখি তো আমার বউ টাকে |
তখন ওর ঘোমটা টা শরালাম চেহারাটা ততটা সুন্দর না কিন্তু খুব মায়াবি চেহারা আসলে গ্রামের মেয়ে তো তখন ওকে আমি বল্লাম—->
আমি: আচ্ছা তোমার নাম কি ?
বউ: মোর নাম মোমেনা |
কিছুটা অবাক হলাম ভাবলাম অনেক সুন্দর নাম হবে |
যাইহোক তখন বউ কে আবার বল্লাম—->
আমি: জানো তোমার নামটা না অনেক সুন্দর?
বউ: ধন্যবাদ আমনেরে |
এবার তো আরো অবাক হলাম কি ভাষায়ে কথা বলে এগুলা তখন জিজ্ঞাসা করলাম—->
আমি: এই তুমি এভাবে কথা বলো কেনো ?
বউ: ওয়া কি মুই কেরোম কইররা কতা কইতে আছি আয়
এবার তো আমি আকাশ থেকে পড়লাম এরকম ভাষা কখনো শুনি ও না আমার মনে হয় ও আমার সাথে মজা করছে |
অতঃপর বউ কে বল্লাম—>
আমি: আচ্ছা তুমি মনে হয় আমার সাথে মজা করছো ?
বউ: হেইয়া কি কইতে আছেন আয় মুই আমনের লগে কিরফিন্নে তামাসা করতে জামু ?
আমি: আচ্ছা এটা কোন দেশের ভাষা ?
বউ: ওয়া কি আমনে মরে বিয়া হরছেন হেইয়া আমনে জানেন না মোর বাড়ি কম্মে ?
আমি: ব্যস্ততার কারনে আমি সব কিছু জানতে পারি নি তাছারা তুমি যে দেশেরই হও না প্লিজ শুদ্ধ ভাষায়ে কথা বলো ?
বউ: ও মুই পারমু না মোর বাড়ি বরিশাল হে মুই মোর গ্রাইম্মা ভাষা ছারা মুই কতা কইত পারি না |
এবার ওর কথা শুনে আমি বেহুস ঘাটেই অজ্ঞান হয়ে পরি তো কিছুক্ষন পর দেখি ওর কোলে আমার মাথা আর ও আমাকে পানি ছিটা মারছে আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে |
অতঃপর ওর কোল থেকে সজা ওর কাছ থেকে সরে আসি আর বলছি—->
আমি: আচ্ছা আমি কি স্বপ্ন দেখছি ?
বউ: যাক আল্লাহর রহমতে মোর স্বামীর জ্ঞান ফিররা আইছে |
আমি: এই তুমি কিন্তু আমার কাছে আসবা না বলে দিলাম ?
বউ: হেইয়া কি কইতে আছেন আয় আমনে মোর স্বামী আমনের ছাড়া মুই থাকমু কেমনে ?
আমি: উফফ এ আমার কপালে কোন বউ আসলো এর কথা শুনলে আমার মাথা ঘুরায় |
বউ: মোর কোলে আহেন আমনের মাথাডা টিপ্পা দেই ভালো লাগবে আনে|
আমি: না তুমি আমার কাছে আসবে না |
বউ: ও কি মুই ঐলাম আমনের বউ তাছারা মুই কি দেখতে হনতে খারাপ আয় ?
আমি: না তুমি দেখতে শুনতে ভালো কিন্তু যেভাবে কথা বলো সেটা শুনলে আমার মাথা ঘুরায় এই আচ্ছা তুমি পড়াশুনা করো না ?
বউ: কেলাস ফাইব তামাইত পড়ছি হের পর পরতে পারি নাই |
আমি: কি মাত্র ভাইব আর তুমি কি না আমার বউ হায়রে পাগল হয়ে যাবো |
বউ: আমনের মায় কয় নাই আমনের মুই কি তামাইত পড়ছি ?
আমি: সেটাই তো আমার সব থেকে বড় ভুল কি জন্যে যে ভালোভাবে খোজ খবর নিলাম না |
এই দুঃখে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি আর হঠাৎ আমার বউ আমার পাশে এসে বসলো আর বল্লো—->
বউ: আহারে আমনে কানদেন না মুই আছি তো আমনের লগে ?
আমি: এই তুমি আবার আমার কাছে আসছো যাও এখান থেকে |
বউ: এহন কিন্তু মুই কাইনদা দিমু আনে আর মোর শাশুরি আম্মারে কমু আমনে মরে ঝাড়ুইদদা পিডাইছেন ?
আমি: হায় হায় এ মেয়ে দেখি পুরা শয়তানের হাড্ডি |
বউ: এ আমনে মোরে কি কইলেন ?
আমি: যা বলছি তাতে তুমি কি করবা ?
এইরে এটা বলার পর দেখি সত্যি সত্যি কান্না করে দিলো আর কান্না করে বল্লো—->
বউ: ও মোর শাশুরি আম্মা এম্মে আন আমনের পলায় মোরে মারছে|
আমি: এই থামো থামো প্লিজ ||
দূর কার পাল্লায় যে পরলাম এদেখি আরো বেশি কান্না করছে অতঃপর ওর মুখ চাপ দিয়ে ধরলাম আর বল্লাম—->
আমি: প্লিজ কান্না করবা না আমার আম্মু শুনলে আবার আমার কান্না করতে হবে যেভাবে ঝাড়ু দিয়ে পিটায় |
তখন আমার বউ একটু হাসি দিয়ে বল্লো—->
বউ: হাহাহা আমনের মায় এহনো আমনেরে পিডায় ?
আমি: হ্যা আমি যে তার মহা মান্য ছেলে তাই যাইহোক প্লিজ আমার আম্মুকে ডাক দিবা না |
বউ: তাইলে আমনে ওবাইল কইররা কতা কন ক্যা ?
আমি: আচ্ছা বলবো না ঠিক আছে ?
বউ: তয় এহন চলেন মোরা ঘুমামু এক লগে ?
আমি: কি আমি পারবো না তুমি একা ঘুমাও যাও আমি নিচে ঘুমাবো |
বউ: শাশুরি আম্মা…….|
আমি: এই আবার ডাকছো কেনো ?
বউ: তয় আমনে মোর লগে ঘুমাইবেন না ক্যা ?
আমি: না মানে আসলে |
অতঃপর ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপরে ফালিয়ে দিলো আর আমার ঝাপ দিয়ে পরলো তখন ও বল্লো—->
বউ: কি এহন কম্মে জাইবেন ?
আমি: এই প্লিজ আমাকে ছেরে দাও ?
বউ: মুই কি আমনেরে ছাড়ার লইগগা বিয়া করছি ?
আমি: এই ছিলো আমার ভাগ্যে দূর ?
বউ: জানেন আমনের মুই পরথম দেইখখা ভালোবাইসসা লাইছি|
আমি: তোমার কথা শুনতে শুনতে আমার মাথা ব্যাথা করছে প্লিজ আমার উপর থেকে সরো |
যেই বল্লাম সেই আর শক্ত করে জরিয়ে ধরলো দেখলাম সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লো ||
দূর বাসর রাত ভাবলাম কত মজা করবো আর আমার ভাগ্যে পড়ছে এক বরিশালের বউ এই জন্যই চাচ্ছিলাম না বিয়ে করতে কিন্তু কি আর করার আম্মুর জন্য করলাম যাইহোক সেই সাথে আমিও কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম |
অতঃপর সকাল হলো দেখি কে জানো শরিরে পানি মারছে চোখ খুলে দেখি এটা আর কেও না আমার বউ তখন আমি বল্লাম—->
আমি: এই কি করছো পানি মারছো কেনো তাও এত সকালে??
বউঃ ওয়া কি এত বেইন্না হালে আমনে ঘুমাইয়াছেন কা আয়?
আমিঃ এই বেইন্না হাল মানে এটা আবার কি?
বউঃ ও মোর খোদা হেইয়া আমনে কি কইতে আছেন বেইন্না হাল মানে বঝেন না?
আমিঃ হায়রে আমি বুঝলে তো আর তোমাকে বলতাম না?
বউ: বেইন্না হলাম ঐলে সকাল বঝতে পারছেন?
আমিঃ তা সকাল বল্লেই তো পারতে?
বউঃ ও মুই মোগো গ্রাইম্মা ভাষা ছাড়া মুই কতা কইত পারি না।
আমিঃ হায়রে এ কোন গ্রামের মেয়ে যে আমার কপালে আসলো?
বউ: গত কাইলগো ও মুই আমনেরে কইছি মোর বাড়ি বরিশাল?
আমিঃ তা বুঝলাম কিন্তু এত সকালে ডাক দিছো কেনো?
বউঃ ওয়া কি আমনে নাইতে যাইবেন না?
আমিঃ এই নাইতে আবার কি?
বউ: পরালেহা করছেন এইয়া ও জানেন না??
আমিঃ হায়রে আমি পাগল হয়ে যাবো যেটা কখোনো জানি নি এবং শুনি ও নি সেটা জানবো কিভাবে বলো?
বউ: ঐছে ঐছে আর সাধু সাজতে ঐবে না নাইতে মানে কি যানো কয় আমনেগো ভাষায় হয় মনে পড়ছে গোসল করতে জাইবেন না?
আমিঃ কি এই সকালে গোসল করবো তোমার মাথা ঠিক আছে?
বউ: মোগো গ্রামে বেডারা বেইন্না হালে লুঙ্গিহান পিন্দা পুহুর পারে নাইতে যায় বঝঝেন?
আমিঃ মনে হয় আমার পাবনার টিকিট কাটতে হবে এর সাথে থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো।
বউ: ও আমনে জেইহানেই যান এহন তারাতারি কইররা নাইতে যান হেইর ফর তারাতারি কইররা কামে যান!
আমিঃ হায়রে এই কামে মানে কি?
বউ: আমনের মায় দি মোরে কইলো আমনে নাকি ভালো কোনো কাম হরেন?
আমিঃ আরে কাম জিনিসটা কি বলবা তো?
বউ: এ মোর খোদা আমনে কাম হরেন হেইয়া আমনেই জানেন না?
আমিঃ ওহ এখন বুঝেছি তুমি কি আম এর কথা বলছো ওটা কাম হবে না আম হবে?
বউ: মোরে কি বলদ পাইছেন আয় মুই আমনে রে আমের কতা কইছিনি?
আমি: তাহলে?
বউঃ হেরে যে মুই কিবাইল কইররা বুঝামু বঝতে পারতে আছি না তয় হনেন আমনেগো শহরে মানে কামে যায় না হেইয়া থুক্কু কি যানো কয় হয় মনে পড়ছে অপিসে যায় হেইয়ার কতা কইছি মুই!
আমিঃ তাই বলে এত ঘুরিয়ে পেচিয়ে তার থেকে অফিস বল্লেই তো হতো?
বউ: মুই তো আমনেরে কইআহালাইম এহন আমনে না বঝলে মুই কি হরমু?
আমিঃ কেনো যে বিয়েটা করলাম দূর আর এই তুমি জানো না কয়েক দিন আমার অফিস ছুটি?
বউঃ হে তো মুই জানি না?
আমি: দূর এখানে থাকলেই পাগল হয়ে যাবো এর থেকে ভালো নাস্তা করি গিয়ে!
বউ: হেইয়া নাসতা কি?
আমিঃ( রেগে গিয়ে) আমার মাথা…..!
দূর ঘর থেকে চলে গেলাম ডাইনিং রুমে আর দেখি আমার সামনে আম্মু তখন আম্মু বল্লো—–>
আম্মুঃ কিরে বাসর রাত কেমন কাটালি?
রেগে গিয়ে বল্লাম—->
আমিঃ কথা বলবা না আমার সাথে।
আম্মুঃ কেনো বাবা মেয়ে পছন্দ হয়নি তোর জন্য কত সুন্দর মেয়ে আনলাম ¡
আমিঃ কি এইটা মেয়ে?? বিয়ের আগে এক বতল বিষ দিতে তাও খেয়ে মরে যেতাম!!
আম্মুঃ থাপ্পর দিবো ধরে তোকে কত বার বলছিলাম যে আগে দেখতে তুই দেখিস নি কেনো??
আমিঃ তাই বলে একটা বরিশালের মেয়ে??
আম্মুঃ আরে বোকা বরিশালের মেয়েরা খুব ভালো বুঝলি দেখিস তোকে খুব ভালোবাসবে!
আমিঃ কেও আমাকে মেরে ফেলো এদের জন্য আমি পাগল হয়ে যাবো!
এই মূহর্তে আমার বউ আসলো আর বল্লো—->
বউঃ ও আম্মা দেহেন না আমনের পলায় মোর লগে কিবাইল করতে আছে??
আম্মুঃ কি করে মা?
বউ: আমনের পলায় মোর লগে ঠিক কইররা কতা ও কইতে আছে না!
আম্মুঃ জাহিদ তুই নাকি আমার বউ মার সাথে ঠিক করে কথা বলিস না??
আমি: তার আগে বলো আম্মু তুমি ওর ভাষা কিভাবে বুঝো??
আম্মুঃ আরে গাধা তুই জানিস না আমার নানু বাড়ি বরিশাল ছিলো??
আমি: কি তোমার নানু বাড়ি ও বরিশাল?
আম্মুঃ তাই একটু একটু বুঝি!
আমি: হায়রে এদেখি পুরা গুষ্টি বরিশাল?
আম্মু: বেয়াদব ছেলে থাপ্পর দিবো আর জানো না শুনি এসব কথা আর বউ মার সাথে ভালোভাবে কথা বলবি!
এদিকে দেখি আমার বউ হাসছে দূর অতঃপর ফ্রেস হতে গেলাম পানি দিয়ে মুখ ধুলাম তো আম্মুকে বল্লাম—->
আমিঃ আম্মু তয়ালে টা দাও!
এর মধ্যে দেখি বউ হাজির আর বলছে—->
বউঃ এই লন আমনের গামছা!
আমিঃ তোমাকে কি আমি ডাক দিছি?
বউ: আমনের সব দায়িত্ব মোর বঝঝেন?
আমিঃ বেশি কথা না বলে তয়ালে টা দাও!
বউ: ওয়া কি আমনে দাত বেরাশ করবেন না?
আমিঃ আরে খাওয়ার পর করবো!
বউ: হেইয়া মোগো গেরামে মোরা বেইন্না হালে উইটটা তারা তারি কইররা গুরিদ্দা দাত মাঝতাম আর আমনেরে??
আমিঃ কি দিয়ে দাত মাঝতে?
বউ: গুরি চেনেন না?
আমিঃ সেটা আবার কি?
আমি: দেখো ফাইজলামি করবা না আমার দাত এমনেই সুন্দর |
বউ: হয় যে সুন্দার লাগতে আছে মনে ঐতে আছে চান্দের মত সুন্দর|
আমি: দূর তুমি থাকো আমি নাস্তা করতে গেলাম |
অতঃপর নাস্তা খাচ্ছি হঠাৎ কি যানো গলায় আটকে গেছে তখন কাশছি এই মূর্হতে বউ এসে আমার মাথায় থাপ্পর দিলো তখন আমার কাশি থেমে গেলো তখন বউকে বল্লাম—->
আমি: এটা কি হলো তুমি আমার মাথায় থাপ্পর মারছো কেনো ?
বউ: হেইয়া আমনের মাথায়ে থাপ্পর না মারলে আমনের গলায় যেডা আইটকা আছেলে হেইডা আর কোনো দিন ছটতে না |
আমি: তাই বলে এত জরে মাথায় থাপ্পর দিবা ?
বউ: জরে না দেলে উগ্গা যাইত না |
আমি: দূর খাওয়াই নষ্ট করে দিলো |
বউ: ওয়া কি কিছু গিল্লা যান ?
আমি: এই গিল্লা মানে কি ?
বউ: গিল্লা মানে পেডের ভিতরে কিছু হান্দাইয়া যান ?
আমি: বাপের জন্মে ও এসব ভাষা শুনি নি আর তুমি কিনা আমাকে কি সব আবল তাবল বলছো আমার মাথা গুরাচ্ছে |
বউ: হেইয়া কি কইতে আছেন মুই আমনের মাথা টিপ্পা দিমু ?
আমি: এই তুমি কাছে না আসলে আমি শান্তি পাবো |
বউ: দেহেন আমনে ওবাইল কইররা কতা কইলে মোর শাশুরি আম্মারে ডাক দিমু কলম |
আমি: হায়রে এখানে কলম আসলো কথা থেকে ?
বউ: হেইয়া মুই ডাক দিমু কলম এইয়া কইছি?
আমি: দূর তোমার সাথে থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো তুমি থাকো আমি গেলাম |
অতঃপর আমার বউ আমার আম্মুকে ডাকছে—->
বউ: ও শাশুরি আম্মা এম্মে আন আমনের পলায় মোরে ঝাড়ুদ দিয়া পিডাইতে আছে |
আমি: হায় হায় এত বড় মিথ্যা কথা ?
অতঃপর দেখি আমার আম্মু হাজির পরে বল্লো—->
আম্মু: কি হয়ে ছে মা ?
বউ: দেহেন আমনের পলায় মোর লগে কিবাইল করতে আছে ?
আমি: আম্মু ও সব মিথ্যা কথা বলতেছে |
আম্মু: থাপ্পর দিয়ে দাত ফালিয়ে দিবো শয়তান ছেলে আর কখনো যদি আমার বউ মার গায়ে হাত দিছিস তাহলে ঘর থেকে বের করে দিবো |
তখন আমার বউ হাসছে তখন আমি রাগ করে চলে গেলাম দূর জীবনটা মনে হয় তেজ পাতা তো এরকম চলতে চলতে রাত হয়ে গেলো এখন ঘুমাতে যাবো তখন দেখি আমার পাশে আমার বউ কখন যে এটা আসলো তখন বল্লাম—->
আমি: এই তুমি এইখানে কেনো ?
বউ: তয় কি মুই আমনের মাথার উফরে থাকমু আয় ?
আমি: না তুমি থাকো ঘাটে আমি নিচে ঘুমাই |
বউ: হেইয়া তো কহনো চলবে না ?
আমি: কি চলবে না ?
বউ: মুই আমনেরে ছাড়া ঘুমাইত পারমু না |
আমি: না আমি পারবো না |
বউ: মুই কিন্তু এহন আমনের মায় রে ডাক দিমু কলম ?
আমি: এই না ডাক দিও না আচ্ছা তুমি আমার সাথে এরকম করছো কেনো ?
বউ: ও আমনে মোর লগে এবাইল হরতে আছেন কা ?
আমি: আচ্ছা ঘুমাবো কিন্তু মাঝখানে কোল বালিস থাকবে|
বউ: ছি ছি আমনের লজ্জা করে না মোর লাহান এত সুন্দর বউ থাকতে মোগো মাঝে এউগ্গা কোল বালিস হান্দাইবেন ?
আমি: ওকে তাহলে তো ভালোই আমি নিচে ঘুমাই ?
বউ: কোনো সমস্যা নাই একটু পর একটা ঝাড়ু আইবে আনে |
আমি: আবার ঝাড়ু আচ্ছা তোমার সাথেই ঘুমাচ্ছি কিন্তু আমাকে দরবা না কিন্তু |
তো ও আর আমি এক সাথে ঘুমালাম একটু পর দেখি আমার সামনে তেলাপোকা আমি চিৎকার দিয়ে বউ কে জরিয়ে ধরি |
আসলে আমি তেলাপোকাকে ভয় পাই তো তাই
তখন বউ বল্লো—–>
বউ: ওয়া কি আমনে দি মোরে জরাইয়া দরছেন ?
আমি: ঐ যে তেলাপোকা বাচাও |
বউ: হাহাহা এত বড় দামরা পোলা এহনো তেলাছোরারে ভয় পায় |
আমি: তেলাছোরা কি ?
বউ: আমনের প্রিয় বন্ধু তেলাপোকা হেইয়া |
আমি: এই প্লিজ বাচাও আমাকে |
বউ: ঐছে ঐছে খারান মুই হাত দিয়া ঔগ্গারা ফালাইয়া দেতে আছি|
আমি: এই তুমি ভয় পাও না ?
বউ: এ তো কিছুই না মোরা কত বড় বড় খাডাশ মারছি |
আমি: খাডাশ কি ?
বউ: ও আমনে বঝবেন না এহন মোরে ছাড়েন |
আমি: ওহ সরি |
অতঃপর ওকে ছেরে দিলাম আর বউ দেখি হাত দিয়ে তেলাপোকাটা ধরছে এখন আমার সামনে এসে বল্লো—–>
বউ: খাইবেন নি ?
আমি: কি ওয়াক থু তারাতারি এইটা ফালাউ |
বউ: মুই আইজগো এইডা মোর লাগে রাখমু ?
আমি: তোমার ঘৃনা করে না তেলাপোকা তোমার সাথে রাখবা ?
বউ: আমি তো আমনে র লইগ্গা রাখমু
আমি: কি আমার জন্য মানে কি এগুলা ?
বউ:আমনে রাইতে ঘুমাইলে আমনের গায়ে দিয়া দিমু আনে ?
আমি: প্লিজ আমি তেলাপোকাকে ভয় পাই এটা করো না |
বউ: একটা শর্তে করতে পারি |
আমি: কি শর্ত ?
বউ: আমনে মরে জরাইয়া ধইরা হুইবেন ?
আমি: কি আমি পারবো না আমার বয়েই গেছে তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাতে |
বউ:——>
বউ: তয় আর কি আমনের গায় তেলাচোরা হান দিয়া দিমু আনে?
আমি: এই প্লিজ দিও না আমি ভয় পাই |
বউ: তয় মোর শর্তে রাজি আমনে ?
আমি: কি আর করার তাই তো করতে হবে ?
বউ: এহন হপালে হপালে ঘুমাইয়া পরেন বঝঝেন |
তো আর কি ওকে জরিয়ে ধরে ঘুমালাম |
কি মেয়েরে বাবা এ দেখি বরিশালের ডেঞ্জারাস মেয়ে |
এই চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম
হঠাৎ কে যানো ফজরের সময় ডাকছে চোখ খুলে দেখি বউ তো বলছে—–>
বউ: ওয়া কি আয়যান দেছে নামায পড়তে জাইবেন না ?
আমি: হায়রে এখনো সকাল হলো না আর তুমি ঘুমটা ভেঙ্গে দিলো ?
বউ: তারতারি কইররা অযূ কইররা হপালে হপালে নামায পড়তে যান |
আমি: যাচ্ছি যাচ্ছি
অতঃপর অযু করে নামায পড়ে আসলাম ঘরে দেখি বউ শুয়ে আছে বল্লাম—–>
আমি: আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে সে খুব ভালোই ঘুমাচ্ছে ?
বউ: ওয়া কি আমনে আইয়া পরছেন ?
আমি: হ্যা …..|
বউ: আমনের বাড়ির সুন্দার একটা কোলা আছে চলেন আমি আর আমনে হেহিনে হাটতে যাই ?
আমি: এই কোলা আবার কি ?
বউ: ওয়া কি কোলা চেনেন না আমনে শহরে থাহেন হেইয়া জানেন না ?
আমি: ওহ কোলা কি কয়লা আর আমাদের এখানে কয়লার ক্ষনি নেই তো |
বউ: ও মোর খোদা হেরে কিবাইল কইররা বুঝামু ?
আমি: ভালোভাবে না বল্লে বুঝবো কিভাবে বলো ?
বউ: কোলা ঐতে আছে ধান খেত যেইহানে লাগায় না ঐডারে কোলা কয় বঝঝেন ?
আমি: ওটাকে তো মাঠ বলে ?
বউ: হেইয়া এক ঐলে এহন তারাতারি কইররা চলেন যাইয়া হাডি গা শরির সুস্থ ভালো থাকবে আনে|
আমি: সে যে যাইহোক এখন আমি ঘুমাবো তোমার সাথে যেতে পারবো না |
বউ: কাইলগো রাইতে কিন্তু মুই তেলাচোরার বাচ্চাডারে ও পাইছি কলম ভাবতেআছি আমেনেরে উপহার দিমু ?
তখন ভয় পেয়ে বল্লাম—–>
আমি: এই কথায় যানি যেতে হবে তোমার সাথে ?
বউ: এইতো গুড চলেন তারাতারি মোর লগে |
তো আর কি করার ওর সাথে মাঠে হাটছি এই ভোর বেলা |
তো হাটছি হাটছি হঠাৎ ও আমাকে পায়ে লেং মেরে কাদায় ফালিয় দেয় আমার শরির পুরা কাদায় ভরে যায় তখন আমি বল্লাম—->
আমি:এটা কি হলো ?
তখন আমার বউ হাসছে আর বলছে—->
বউ: হেইয়া আমনে কোন দিক ফিররা হাডেন ভালো হইররা হাটতে ও জানেন না ?
আমি: এই তুমি তো আমাকে লেং মেরে ফালিয়ে দিছো ?
বউ: হেইয়া কি কইতে আছেন মেশিনে ডিস্টাব দেতে আছে ?
আমি: এখানে মেশিন আসলো কথা থেকে ?
বউ: আমনে বুঝবেন না আগে আমনের হাতটা দেন টাইন্না উডাই?
অতঃপর ও আমাকে টেনে উঠালো |
মনে হয় বাকী জীবন আর সুখে কাটাতে পারবো না কি কপাল আমার |
তো এই কাদা মাখা অবস্থায় গেলাম বাসায় তো আম্মু আমার বউকে বলছে—–>
আম্মু: কি বেপার এ তুমি কোন টুকাইকে ঘরে এনেছো বউ মা ?
তখন আম্মুর কথা শুনে বউ হাসছে তখন আমি বল্লাম—>
আমি: আম্মু তুমি আমাকে চিনতে পারছো না ?
আম্মু: গলাটা চেনা চেনা লাগছে |
তখন বউ বল্লো—->
বউ: আম্মা এ দি আমনের পলা|
তখন আম্মু আমাকে দেখে হাসছে আর বলছে—->
আম্মু: কিরে কথায় চুরি করতে গেয়েছিলি ?
আমি: চুরি মানে কি বলছো এসব ?
তখন বউ বল্লো—->
বউ: হয় হয় আম্মা আইজগো বেইন্না হালে উট্টা দেহি কেডা জানি কোলায় দৌরাইতে আছে ভাবলাম চোর টোর ঐবে হেইর ফর মুই ও তারে দরার লইগ্গা দৌরাইতে আছি যেই দরতে জামু তহনি হে পইররা গেছে হেইর পর এ দেহি মোর স্বামী ||
তখন দেখি আম্মু আরো জরে হাসছে পরে আমি বল্লাম—->
আমি: আম্মু ও সব বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলছে ঐ আমাকে সকাল বেলা মাঠে নিয়ে গেছে |
আম্মু: হাহাহা বাবা চুরি টুরি একটু ছেড়ে দে |
আমি: দূর তোমাদের সাথে কথাই বলবো না |
অতঃপর চলে গেলাম গসল করতে গসল করে ভালোভাবে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করতে গেলাম দেখি আম্মু আমার বউকে খাইয়ে দিচ্ছে তখন আমি বল্লাম—->
আমি: বা বা এ দেখি মায়ের থেকে মাসির দরধ বেশি |
আম্মু: এই তুই কি বল্লি ?
আমি: না না কিছু না জীবনে তো আমাকে খাইয়ে দিলে না এখন আমার বউকে খাইয়ে দিচ্ছ ভালো তো |
বউ: আহা খাইবেন নি আন্ডাইদ্দা ভাত ?
আমি: আন্ডা আবার কি ?
বউ: পেত্তেক দিন আন্ডাইদ্দা রুডি গেলেন হেইয়া আন্ডা কি জানেন না ?
আমি: আম্মু ওকে চুপ করতে বলো……..
বউ: ওয়া কি আমনে ওবাইল হরতে আছেন কা ?
আমি: তাহলে কি সব বলতেছো এগুলা ?
বউ: মুই তো ঠিকি কইছি আমনের মায় মরে কইছে আমনে নাকি পেত্তেক দিন আন্ডাইদ্দা রুডি গেলেন ?
আমি: কেও আমাকে মেরে ফেল আর বাচতে ইচ্চা করছে না |
তখন আম্মু বল্লো——>
আম্মু: বেয়াদব ছেলে আন্ডা চিনিস না আন্ডা হচ্ছে ডিম |
আমি: তা ও ডিম বলতে পারে না কেনো ?
তখন বউ বল্লো—>
বউ: মোরা ঐডারে আন্ডা কই |
আমি: যেমন দেশ তেমন মেয়ে |
বউ: এ খবর দার মোগো দেশের নামে কিছু কইলে এক্কে বারে হান্দাইয়া দিমু কলম |
আমি: আম্মু তোমার কাছে কি পাবনা যাওয়ার টিকিট আছে ?
তখন আম্মু বল্লো—>
আম্মু: কেনো বাবা কি হয়েছে ?
আমি: তোমার বউ মা দেখো কি সব আবল তাবল বলছে |
আম্মু: ও তো ঠিকি বলছে তুই ওর সাথে এভাবে কথা বলিস কেনো?
আমি: দূর আজকে খাবোই না |
বউ শাশুরি মিলে আমাকে ধংশ করার জন্য আসছে |
অতঃপর না খেয়ে আমার রুমে চলে গেলাম কিছুক্ষন পর দেখি পেলেটে করে খাবার নিয়ে আমার বউ আসছে আর বলছে—->
বউ: দেহি হপালে হপালে মুখটা খলেন আমনেরে খাইয়াইয়া দেই |
আমি: আমি তোমার হাতে খাবো কেনো ?
বউ: তয় কি মাইর খাইবেন ?
আমি: দেখো ফাইজলামি করবা না |
বউ: মুই কি আমনের লগে তামাশা হরতে আছি ?
আমি: এখান থেকে যাবা ?তুমি না আমি যাবো ?
বউ: মুই কলম তেলাচোরা খাওয়াইয়া দিমু আনে?
আমি: আবার তেলাপোকা দূর আর ভালো লাগে না |
অতঃপর ও আমাকে জোর করে খাইয়ে দিলো ভালোই লাগলো কোনো মেয়ে এই প্রথম আমাকে খাইয়ে দিলো কিন্তু ওর ব্যবহার গুলো আমার ভালো লাগে না |
তো এরকম চলতে লাগলো….|
পরের দিন—->
আজ আমার ঠান্ডা লেগেছে গত কাল যে সকালে গসল করছিলাম তাই তো বউ এস বল্লো—->
বউ: ওয়া কি আমনের দি ঠান্ড লাগছে ?
আমি: সব তোমার জন্য গত কাল সকাল বেলা আমাকে ফালিয়ে দিছো কাদায় তার উপর সকাল বেলা গসল করে ঠান্ডা টা লেগেছে|
বউঃ কিরফিন্নে যে চুরি ডা হরতে গেলেন ?
আমিঃ দেখো ফাইজলামি করবা না তুমি আমকে নিয়ে গেছ
বউঃ অইছে অইছে আর ঢঙ হরতে হইবে না মুই আম নের লইজ্ঞা বান ডে হইররা চা লইয়াইই
আমিঃ এই বান ড কি আবার ?
বউঃ ওয়া কি আম নে বান ড চেনেন না ?
আমিঃ চিনেতে পারলে কি তোমাকে বলতাম ?
বউঃ আম নে পেলা চেনেন হেইয়া বজ্জেন ?
আমিঃ আর এ গাদা ঐটা প্লে হবে পেলা না
বউঃ মরে কি বলদ পাইছেন আয় মুই পেলা কইছি বুজ্জেন ?
আমিঃ আর এ পেলা টা কি ?
বউঃ দূর মুই বান ডে হইররা চা লইয়াইয়াই আম নে বইয়া থাহেন
অতঃ পর ও দেখি একটা বাতি তে করে চা নিয়ে আসছে তখন আমি বল্লাম—->
আমিঃ এই তুমি বাটি তে করে চা নিয়ে আসছ কেন?
বউঃ হেইয়া মরা গ্রামে বান ডে হইররা চা খাই বজ্জেন
আমিঃ তার মানে এই পেলেত কে বান ড বল?
বউঃ হয় আহন বোজতে পারছেন
আমিঃ হায়রে কি নাম একেক টার
বউঃ এহন হপালে হপালে চা ডা খাইয়া লন
তো আর কি ওর হাতে চা খেলাম আর খেইএই আমি মুখ থেকে ফালিয়ে দিলাম মানে চায়ের ভিতরে সব লবনে ভরা তখন আমি বল্লাম——>
আমি: এটা চা না অন্য কিছু আমার মুখ টা শেষ |
বউ: ওয়া কি কইতে আছেন আয় মুই দি ভালো হইররা চা বানাইয়া লইয়াইছি |
আমি: আমার মনে হয় কি জানো তুমি মনে হয় আমাকে শেষ করার জন্য আসছো ?
বউ: ও মোর খোদা ওয়া আমনে কি কইতে আছেন আমনে মোর পেরানের স্বামী আমনের মুই মারমু কা ?
আমি: তাহলে এটা কি চা বানাইছো নাকি বিষ ?
বউ: কা চাতে কি হরছে আমনেরে ?
আমি: পুরা লবনে ভরা আর একটু খেলে তো মরে যেতাম |
বউ: ওরে মোর খোদা মুই আমনের লইগ্গা কত সুন্দার কইররা চা বানাইয়া লইয়াইছি আর আমনে কইতে আছেন মুই লবন দিছি এয়া অয় কেমনে ?
আমি: এই নাও খেয়ে দেখো ?
অতঃপর ও একটু খেয়ে ও আমার মতো মুখ থেকে ফালিয়ে দিলো তখন ও বল্লো—->
বউ: কি আর হরার কন চিনি আর লবন দেখতে এক তাই ভুলে লবন দিয়া লাইছি মাফ কইররা দেন মুই এফাক ভালো হইররা বানাইয়া লইয়াইতে আছি |
আমি: এই না না থাক আর খাবো না আর এই ছি তুমি কি বলছো ফাক মানে এগুলা কি বলো ?
বউ: হেইয়া মুই এফাক কইছি ?
আমি: তার মানেটা কি ?
বউ: মানেডা ঐলে এহন হেইয়া বজজেন ?
আমি: তা এখন বল্লেই তো পারো আমি আবার কি না কি ভাবলাম |
বউ: কি ভাবতে আছেন ?
আমি: এই তুমি এখান থেকে যাও তো তোমার কথা শুনলে আমার কান বেথা করে|
বউ: কান বেথা হরলে মুই কউররার তেল লইয়ামু ?
আমি: হায়রে খোদা কেও একটু বলবেন এই কউররার তেল কি ?
বউ: ওয়া মানে রে জিগান লাগবে না ওয়া মুই কইতে আছি |
আমি: কি তেল এটা একটু বলবা ?
বউ:আমনেরা যে মাথায় তেল দেন না হেইয়া |
আমি: মাথায় তো অনেকেই তো অনেক তেল দেয় তা এটা কোনটা?
বউ: আমানেরে যে কিবাইল কইররা বুঝামু হেইয়া শইশশার তেল চেনেন ?
আমি: আরে গাধা এটা শরিশার তেল |
বউ: হয় হেইয়া মোরা কউররা তেল কই |
আমি: আরো যে কত কি বলবা কি যানি |
তো এরকম চলতে চলতে শুক্রবার এসে পরলো তো নামায পড়ে খাওয়া দাওয়া করে দিলাম দুপুরে ঘুম |
অতঃপর বিকাল বেলা কে যানো ডাকছে এটা আর কেও না আমার বউ তো আমাকে বল্লো—->
বউ: চলেন…|
আমি: কথায় আর তুমি আমাকে ডাক দিছো কেনো ?
বউ: হেইয়া আমি আর আমনে বাইরে ঘরতে যামু লন যাইয়া ঘুইররা আই |
আমি: কি তোমার সাথে আমি যাবো ঘুরতে এটা সম্ভব না |
তো এটা বলার পর দেখি আমার বউ আমার আম্মুকে ডাকছে—–>
বউ: ও আম্মা এম্মে আন ?
অতঃপর আমার আম্মু হাজির আর বলছে—->
আম্মু: কি হয়েছে বউ মা ?
বউ: দেহেন না আমনের পলারে মুই কইছি যে আমি আর হে মিল্লা বাইরে যাইয়া ঘরতে যাই কয় যাইবে না |
আম্মুঃ কিরে তুই বলে ওর সাথে যাবি না ?
আমিঃ আমি পারবো না ওর সাথে ঘুরতে এর সাথে গেলে আমি পাগল হয়ে যাবো ।
আম্মুঃ দেখ বাবা মেয়েটা এখানে নতুন বেশি একটা কিছু চিনে ও না তুই যদি ওর সাথে এরকম করিস তাহলে এটা কেমন দেখায় বল ?
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে শুধু তোমার জন্য বের হলাম ।
বউঃ আহা মোরা ঘরতে যামু যে খুশি লাগতে আছে ।
আমিঃ হইছে চুপ করো যাও তারাতারি রেডি হও ।
অতঃপর আজ ওর সাথে ঘুরলাম অনেক জাগায় গেলাম তো পরে রাতে বাসায় গেলাম অতঃপর এরকম চলতো আমাদের দিন কিন্তু ওকে খুব বিরক্তি মনে হতো কারন ওর মতো করে চলতে হতো যখন যে আবদার করতো তখন সেটা করতে হতো তার উপর যে ভাষায় কথা বলে এটা তো আরো বিরক্তি মনে হতো যাইহোক আজ অফিস থেকে বাসায় ফিরলাম খুব ক্লান্ত অফিসে আজ কাজের চাপটা একটু বেশি ছিলো তাই মাথাটা গরম ।
অতঃপর রুম রেস্ট নিচ্ছে কথা থেকে যে আমার বউটা আসলো তো আমাকে বল্লো—->
বউঃ মুই না আমনেরে কিছু কইত চাই ।
একটু অবাক হলাম কি না বলবে কি যানি তো আমি ওকে বল্লাম—->
আমিঃ দেখো আমি খুব ক্লান্ত যা বলার পরে বলো কেমন ?
বউঃ না মুই এহনি কইত চাই ।
আমিঃ কি আর করার আচ্ছা বলো ।
বউঃ এম্মে আন কানে কানে কইতে আছি ?
আমিঃ কানে কানে বলা লাগবে কেনো এখানে বলো ?
বউঃ না মোর শরম হরে মুই কানে কানে কমু ।
তো আর কি করার কানে কানে ও আমাকে বলছে—>
বউঃ মোর গুরাগারা লাগবে মুই গুরাগারার মা ঐতে চাই ।
তখন আমি ওকে বল্লাম—->
আমিঃ এই কি বলছো গুরাগারা কি ?
বউঃ আরে গুরাগারা চেনেন আমনে যহন ছোড ছেলেন তহন গুরাগারা ছেলেন ।
আমিঃ মানে ?
বউঃ এত কিছু জাইন না মোর পোলাপাইন চাই মানে মুই মা হইতে চাই …।
আমিঃ কি এটা কখনো সম্ভব না তাছারা এখনো এক বছর হলো না আর এইসব কথা বাদ দাও । আমি এখন বাবা হতে চাই না ।
বউঃ না মুই মা ঐতে চাই এত কিছু জানি না ।
তো এরকম ও আমার সাথে বারাবারি করতে লাগলো তখন আমি রাগের মাথায় ওকে থাপ্পর দেই ।
আপনারাই বলুন এত কি সহ্য করা যায় ?
তখন ওকে বল্লাম—>
আমিঃ অনেক হইছে অনেক বারাবারি করছো প্রতিদিন এরকম পাগলামি করো আর ভালো লাগে না ভাবছি তোমাকে ডিবর্স দিবো আমি সহ্য করতে পারছি না ।
তো আর কি ও আমার কথা গুলো কান্না করতে করতে চলে গেলো ।
দূর থাপ্পর টা মারা উচিত হয় নি রাগের মাথায় যে কি করলাম ।
তো সেদিন রাতে ঘুমিয়ে পড়লাম সকালে দেখি আমার পাশে বউ নেই প্রতিদিন তো আমার সাথেই ঘুমাতো কি যানি কি হলো কাল মনে হয় রাগ করেছে তো সকালে আম্মু বল্লো—>
আম্মুঃ কাজটা কিন্তু ঠিক করলি না ?
আমিঃ দেখো আম্মু ও অনেক বারা বারি করে তাই রাগের মাথায় যে কি করলাম জানি না ।
আম্মুঃ তাই বলে ঐভাবে থাপ্পর টা মারবি আর জানিস ও কে ?
একটু অবাক হয়ে গেলাম পরে বল্লাম—->
আমিঃ কে মানে ?
আম্মুঃ ও আমার বোনের মেয়ে রাইসা ও এবার ইন্টার পড়া শেষ তাই ভাবলাম তোর সাথে বিয়ে টা দেই …।
আমিঃ কি বলছো এসব কিছু বুঝতে পারছি না ও তো আমাকে বল্লো ওর নাম মোমেনা ও নাকি ক্লাস ভাইব পর্যন্ত পরেছে তাছারা ওতো বরিশালের মেয়ে ।
আম্মুঃ এগুলো সব মিথ্যে ওকেই আমি বলেছি তোর সাথে বানিয়ে বানিয়ে বলতে যাতে তোকে টাইট দিতে পারে আর ও বরিশালের ভাষা পারে তাই ওকে বলেছি এই ভাষায় কথা বলতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুই ওর সাথে এরকম করতে পারলি ।
আমিঃ দেখো আম্মু যা করেছি রাগের মাথায় তাছারা তোমরা আমাকে এই সত্যি টা বলো নি কেনো ?
আম্মুঃ বল্লে কি তুই কি ফাজলামি কম করতি তাই এই কাহিনিটা করলাম কিন্তু কি আর করার মেয়েটাকে কি করলি ?
আমিঃ সরি আম্মু আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি বুঝতে পারি নি ।
আম্মুঃ আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে কি লাভ চেতে হলে বউ এর কাছে যা ।
এই মূহর্তে দেখি বউ হাজির আর বলছে—->
বউঃ আম্মু রান্নাটা করা শেষ আর কি কি রান্না করবো ?
আমি তো সেখানে থ এত সুন্দর করে কথা বলছে এখন আর বরিশালের ভাষায় কথা বলছে না তখন আম্মু বল্লো—->
আম্মুঃ হ্যা মা যাও বাকিটা রান্না করে ফেলো ।
বউঃ ঠিক আছে আম্মু ।
অতঃপর ও চলে গেলো আর আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকি যে মেয়েটা এতদিন কি ব্যবহার করতো আজ সে পুরা চেঞ্জ ।
তো আমি রান্না ঘরে গেলাম দেখি ও রান্না করছে তখন আমি বল্লাম—->
আমিঃ দেখো আমি গতকাল রাগের মাথায় ঐসব কথা গুলো বলেছি তার উপর আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম তাই তোমার কথা গুলো শুনার পর আমি থাপ্পর টা মারি তাই প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমি বুঝতে পারি নি ।
তো আর কি ও আমার কোনো কথাই শুনলো না কিছু বল্লো ও না একবার আমার দিকে তাকালো ও না ।
অতঃপর এরকম ওকে সরি বলতাম কিন্তু ও শুনতো না ও ওর মতো থাকতো আস্তে আস্তে করে ওকে খুব অনুভব করতে থাকি কারন খুব মিস করি ওর দুষ্টামি গুলো তার উপর অনেক দিন ধরে ও আমার সাথে ঘুমায় না আলাদা রুম ছিলো সেখানে থাকতো অতঃপর ওকে আমি এই মিস করাটা থেকে আস্তে আস্তে ওকে ভালোবেসে ফেলি একটা পর্যায় ওর প্রতি খুব দুর্বল হয়ে যাই ।
যাইহোক আজ অফিস থেকে বাসায় ফিরলাম দেখলাম আজ শেষ বারের মতো যদি কিছু বলে কারন ওকে ছাড়া এখন আমার এক মুর্হতো ও ভালো লাগে না তাই ওকে ঘরে খুজলাম কথাও পেলাম না পরে আম্মু বল্লো ও নাকি ছাদে আছে তো আমি ও ছাদে গেলাম দেখি খারিয়ে আছে তখন ওর কাছে গিয়ে বল্লাম—->
আমিঃ দেখো রাইসা আজ আমার একটা ভুলের কারনে এতটা ভুগতে হচ্ছে তোমাকে অনেক বার সরি বলার পর ও তুমি শুনলা কিন্তু তুমি কি জানো এতদিন ধরে তোমাকে কতটা মিস করছি তোমার ঐ দুষ্টামি গুলো এখন আর পাই না তুমি কাছে থেকে ও মনে হচ্ছে কাছে নেই তাই আজ শেষ বার একটা কথা বলতে চাই তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি তখন হয়তো বুঝতে পারি নি কিন্তু এখন খুব ভালোবেসে ফেলেছি।
অতঃপর ও আমার কথা শুনে কান্না করে দিলো আর কান্না করে বলছে—->
বউঃ কেনো আপনি না আমাকে ডিবর্স দিবেন আপনার তো আমাকে সহ্য হয় না তাই না ।
যাক অনেক দিন পর ওর মুখে কথা শুনলাম যাইহোক পরে আমি বল্লাম—>
আমিঃ সরি বল্লাম তো আমি বুঝতে পারি নি বিশ্বাস করো তোমাকে খুব ভালো বেসে ফেলেছি ।
বউঃ যান আমার থেকে ভালো মেয়ে পাবেন গিয়ে বিয়ে করেন তাহলে আর আমার মতো কেও বিরক্তি করবে না ।
তখন একটু মজা করে বল্লাম—->
আমিঃ কি আর করার বলো কপালে তো বরিশাইল্লা বউ জুটলো না দেখি কোনো নোয়াখাইল্লা বউ পাই কিনা ।
এটা বলে চলে যেতে লাগলাম তখন ও আমার হাত ধরে ফেল্লো আর আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো দেখি খুব কান্না করছে আর বলছে—->
বউঃ জানেন আমি আপনাকে দেখার পর থেকেই ভালোবেসে ফেলি আপনাকে বিরক্তি করতে আমার খুব ভালো লাগতো এতদিন আমার আপনাকে ছাড়া থাকতে কতটা কষ্ট হয়েছে কিন্তু আপনি বলুন আমার কি ছেলে মেয়ের ইচ্ছা হয় না ইচ্ছা কি হয় না মা হতে তাই সিদিন আপনাকে বলি আর আপনি আমাকে থাপ্পর দিলেন তাই আমি খুব কষ্ট পাই ।
আমিঃ আহারে আমার বউটা কত কষ্ট পাইছে এইযে দেখো কানে ধরছি আর কখনো তোমার সাথে এরকম করবো না ।
বউঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না ।
আমিঃ আহা মোর বউডারে কত দিন দইররা ভালোবাসতে পারি আও একখান কপালে চুম্মা দেই …।
বউঃ এই আপনি বরিশালের ভাষা শিখলেন কিভাবে ?
আমিঃ আমার মিষ্টি বউটার কাছ থেকে তখন একটু একটু শিখলাম …।
বউঃ এইর ফর যদি আমনে মোর লগে ওবাইল হরেন মুই কিন্তু এইফির আমনেরে থুইয়া চইল্লাম যামু কলম ।
আমিঃ মুই আর তোমারে জীবনে ও ছারমু ওয়া মুই কল্পনা ও হরতে পারি না মোর বরিশাইল্লা বউডা ছাড়া মুই বাচতে পারমু না কলম ।
বউঃ হাহাহা ……।
অতঃপর আমাদের ভালোবাসাটা পরিপূন্য হয়ে গেলো শুরু হলো আমাদের নতুন জীবন।।