মিস বিপরীতপক্ষ

মিস বিপরীতপক্ষ

— ওই আর কখনো তোমায় না বলে আইডি অফ করবো না প্লিজ রাগ করো না?
— আমি রাগ করি নি।

কথাটা ফোনের অপর পাশ থেকে অস্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। জানি অন্তরা এখন কাদঁছে। আসলে দোষটা আমারই । কি দরকার ছিল ওরে না জানি এমন করে হঠাৎ আইডি টা অফ করে দেওয়ার। এখন এই মেয়ের রাগ কমাবো কি করে? ওর কাছে একবার জানতে চেয়ে ছিলাম কি করলে ওর রাগ কমে। আর ওর উত্তর শুনে আমি পুরু অবাক কারন ওর উত্তর ছিল যার উপর রাগ করবে তাকে যতখন ইচ্ছা মত না মারবে ততখন নাকি ওর রাগ কমবে না। আর এখন তো জানি ও ফোনের ওই পাশে বসে কাদঁছে কারন আমি ওরে না জানিয়ে আমার আইডি ডিএক্টিভেট করছি। এখন কি করি ভেবে পাচ্ছি না।আমি এটা শিউর হয়ে গেলাম যে খুব তারাতারি ওর রাগ না ভাঙ্গাতে পারলে আমার উপর দিয়ে সুনামি বয়ে যাবে।

— আমি জানি তুমি আমার উপর খুব রেগে আছো প্লিজ আর রেগে থেকো না।
— বললাম তো আমি রাগি নি।
— আমি কিন্তু এখন বৃষ্টিতে দাড়িয়ে তোমার সাথে কথা বলছি। আর যদি আমার একবার আমার জ্বর আসে তাহলে তো জানোই আমি খুব অসুস্থ হয়ে পরি।
— ওই কে বলল তোমাকে বৃষ্টিতে দাড়িয়ে কথা বলতে। যাও বাসায় যাও।
— যাবো তবে আগে বলো তুমি এখন আর আমার উপর রেগে নেই।
— হুমম রেগে নেই।
— আচ্ছা তাহলে রাখলাম বায়।

আমি জানি ও আমার অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারনে এখন বলল রাগ করে নি কিন্তু ও যে ফোনের অপর পাশে ফুপিয়ে কেদেছে এটা আমি খুব ভাল করেই জানি। তবে এটা ঠিক যে আমি বৃষ্টিতে দাড়িয়ে কথা বলছি। তবে বলা যায় হালকা বৃষ্টি তবে যে কেউ ভিজে যাবে। ওর কথা ভাবতে ভাবতে রুমে ডুকলাম । মাত্র টিউশনি শেষ করে বাড়ি ফিরছি। ফোনটা চার্জে লাগিয়ে ভাবলাম ওয়াশরুমে যাবো কিন্তু হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ আসলো অন্তরার নাম্বার থেকে, তবে আমি ওর নাম্বারটা বিপরীত পক্ষ নামে সেভ করছি কারন আমি যা করি ওর সব সময় এর বিপরীত কিছু করে। সব বাদ দিয়ে মেসেজটায় ক্লিক করলাম।

— খুব রাগ হইছে আমার উপর তাই না?আমি দুঃখিত আর ভুল হবে না। এই যে কান ধরে আছি কিন্তু। যতখন না আপনি হাসবেন ততখন আমি কান ছাড়বো।

বাব্বা মেসেজটা পরে ভাল লাগলো। ও আমার উপর রাগ করলো আবার উল্টো ও নিজেই আমাকে তেল মারছে। তবে মেয়েটা আমার খুব কেয়ার নেয় মানতে হবে। তাই আমি আবার মেসেজ ব্যাক করলাম।

— ভাল হইছে আর এটা আপনার শাস্তি।আর থাকেন আপনি কান ধরে?
মেসেজটা দিয়ে মোবাইল থেকে চোখ ফেড়াতে না ফেড়াতেই আরেকটা মেসেজ চলে আসলো….

— আচ্ছা কান ধরে থাকবো তবে কেউ যদি জানতে চায় কি কারনে কান ধরে আছি তাহলে কি বলবো?

মেসেজটা দেখার সাথে সাথে হাসি চলে আসলো আমার মুখে। তাই হাসতে হাসতে আমি রিপ্লে করলাম..
— কেউ জানতে চাইলে বলবে তুমি কারো বুকের বাম পাশে ব্যাথা দিছো তাই তোমায় শাস্তিসরূপ এই কান ধরে আছো।তুমি কি জানো তোমার রাগ ভাঙ্গাতে একটা ছেলে ১২ মিনিট ২৯ সেকেন্ড বৃষ্টিতে ভিজছে।

আমি জানি ও আমায় জেনে শুনে বৃষ্টিতে ভিজাতে চায় নি তবে ও নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না এটাই সমস্যা । তারপরও মেসেজ ব্যাক করলো…
— আচ্ছা কতখন চলবে এই শাস্তি, এইবার কিন্তু কেঁদে দিবো।
আমি জানি এবার যদি আমি রাগ দেখাই তাহলে ও আবার রেগে যাবে তাই বললাম…
— ওকে মন থেকে বলছি আমি আরে রেগে নেই। যাও এখন ঘুমাও।
— হুহহ তোমার রাগে আমার কি? কাল ভার্সিটি আসো আগে। আমি এখনো রেগে আছি। বায়।

এটা কেমন হলো? এতখন আমার রাগ কমালো কেন? এই মেয়েরে কি কখনো আমি বুঝতে পারবো না। যাই হোক, এটা সিউর যে কাল আমার কপালে শনি তো লাগবেই সাথে সাথে রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও লাগবো। পাগলী একটা মেয়ে। কি করে আমার সাথে বন্ধুত্ব করে নিলো নিজে থেকে, আমি বুঝতে পারলাম না। আর আস্তে আস্তে এখন আমার মনেও জায়গা নিয়েছে তবে কেউ কাউকে কখনো ভালবাসি বলি নি।
তবে ওর সাথে দেখাটা প্রথম একটা বিয়েতে হয়েছিল যা ঝগড়া দিয়ে শুরু……

আজ আমার বন্ধু নিলয়ের বড় বোনের বিয়ে তাই আমি দাওয়াতে গেলাম। দাওয়াত বলতে ভুল হবে কারন বন্ধুর বোন তো আমারও বোন তাই গত সপ্তাহ জুড়েই কাজ করছি। গতকাল গায়ে হলুদের রাত প্রায় ২টা পর্যন্ত ছিলাম। আর আজ তো সকাল থেকেই নানা রকম কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তবে বিয়েটা হচ্ছে পাশাপাশি এলাকার মাঝেই। যেহেতু আমরা মেয়ের বাড়ির লোক তাই কাজ একটু বেশিই করতে হচ্ছে আর কাজের সাথে চাপ তো আছেই। তবে কথা হলো বরপক্ষেরর লোক আসলে কে কে গেট ধরতে যাবে। নিলয় মনে হয় যাবে না তাই আমিও যাবো না ভাবলাম। হয়ত একটু পরেই বরপক্ষ চলে আসবে। ঠিক তাই হলো, কিছুখন পরেই বরপক্ষ চলে আসলো আর নিলয় আর আমি চুপচার দূরে দাড়িয়ে ওদের তর্কে দেখতে থাকলাম। তখনই হঠাৎ একটা মেয়ের উপর আমার চোখ আটকে গেল তাই দূরে দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না। তখন বরপক্ষের থেকে মেয়েটা বলল….
— আমরা ৫ হাজারের বেশি এক টাকাও দিবো না।
— কেন? সাথে সেই এক টাকাটাও নাই।

আমার কথা শুনে বাকি সবাই হেসে দিলো আর মেয়েটা আমার দিকে একটা ভয়ংকর রূপ নিয়ে তাকালো। মনে হয় উত্তর দেওয়াটা ঠিকমত টাইমিং হয়েছে। তখন মেয়েটা এবার তর্ক করার জন্য বলল…..
— টাকা না থাকার কি আছে হুহহ?
— থাকলে দিবেন না কেন হে? বিয়ে তো আর বারবার হয় না তাই টাকা গেলে একবারই যাইবো।
— ওই আপনে কে যে এতো বকবক করছে?
— আপনি বরের যা আমি কনের তা, পারলে এবার বুঝে নেন আমি কেঠা?
— তার মানে আপনি কনের ভাই?
— হি হি হি জ্বী না আমি কনের ভাইয়ের বন্ধু। বলতে গেলে এক হিসাবে ভাই আর আপনি বরের বোন। যাই হোক, আপনেরা টাকা নিয়ে তর্ক করেন আর গেলাম। যা জানার দরকার তা জানা হয়ে গেছে।

আমি আর কথা না বলে আর ওই মেয়েকে কথা বলতে না দিয়ে এখান থেকে চলে আসলাম। আমি শুধু আন্দাজে জানতে গিয়েছিলাম এই মেয়ে বরের কি হয়? যাক জানাও হয়ে গেল আর বিপরীত পক্ষ হিসেবে আমার সাথে খুব জমবে।
আমি সিড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যাবো তখনই নিলয় আমার হাতটা ধরে ফেলল….
— কিরে রাজ ডানে বামে না তাকিয়ে কোথায় হাটছিস?
— আচ্ছা দোস্ত বরের বোনের নামটা কি রে?
— অন্তরা কিন্তু কেন?
— আরে মামা এতো কিউট একটা বিপরীত পক্ষ আছে আমার তুই বললিও না।
— কি বলছিস??
— কিছু বলতেছি না শুধু সবাইরে বলে দে যেন বরের বোনের দিকে কেউ নজর না দেয়।
— হা হা হা আচ্ছা বুঝছি।

পরে খুব ভাল ভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করলাম। পরে যখন বর পক্ষকে খেতে দেওয়া হলো আর আমরাই খাওয়াচ্ছিলাম আর আমি অন্তরা মানে আমার বিপরীত পক্ষকে খুজতে ছিলাম। খুজতে খুজতে চোখটা একটা কর্নারের টেবিলে পরলো আর তাতে অন্তরা বসে ছিল তবে সাথে আরো সৈন্যদল ছিল। আর ওই টেবিলে খাবার দিচ্ছিল আমাদের বন্ধু রাফি। তাই রাফি যখন খাবার নিয়ে যাচ্ছি আমি ওর সামনে হাজির।
— কিরে সামনে থেকে সরে যা, দেখস না ব্যস্ত।
— রাফি আর ভাই তুই চাস না আমি একটা প্রেম করি?
— অবশ্যই কিন্তু কোন মেয়েটা তোর ভাল লাগছে?
— এই তো মামা লাইনে আসছো। তুই যেই টেবিলে খারাপ দিচ্ছিস ওই খানে হলুদ ড্রেসে পড়া মেয়েটা।
— কি অন্তরা?
— এ্যা তুই ওর নাম জানলি কেমন করে?
— আরে আমি আর অন্তরা তো একই ডিপার্টমেন্টে পড়ি।
— কিন্তু আমি চিনি না কেন?
— ওই তুই কি আমাদের ডিপার্টমেন্টে পরছ যে চিনবি। আর মামা তোর চয়েজ হেব্বি মানতে হবে।
— নজর দিয়ো না। খাবারের প্লেট টা আমার হাতে দিয়ে সাইড কেটে যাও।
— ওকে
তার মানে ও আর আমি একই ভার্সিটিতে পরি। তাও রাফির ডিপার্টমেন্টে মানে রসায়ন বিভাগে আর আমি গনিত বিভাগে। এখন তো মনে হয় আমার বাকি ক্লাস গুলো রসায়ন বিভাগেই করতে হবে। মনে মনে কথা গুলো বলে মুখে হাসি নি ওদের টেবিলের কাছে গেলাম।
— কার কার কি লাগবে বলেন? শরবত থেকে শুরু করে চাটনি পর্যন্ত সবই আছে।
— এই যে মিস্টার আমাদের অলরেডি হাফ খাওয়া হয়ে গেছে তাই শরবত নয় বরং চাটনী দেন।
— এই যে, জলের ধরে ফলের রস, না খেলে টুটাল লস।
— আপনের শরবত আপনিই খান।

তাই আর কথা না বলে ওদের চাটনী দিতে লাগলাম। আর এখানে সব কথা ও বললো আর বাকিরা শুধু তাল মিলেয়েছে। তার মানে ও হলো সবার হেড কোয়াটার।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা সবাই মিলে কনে বিদায়ে এগিয়ে গেলাম। যদিও নিলয়ের চোখে পানি কারন ওর একমাত্র বোন তো। আর আমি এই দিকে বিপরীত পক্ষ অন্তরাকে নিয়ে ব্যস্ত । কারন ফোন নাম্বারটা পাওয়া গেলে লাইন মারা যেতো। কিন্তু আধা চামচ আপসোস সহীত বুঝলাম অন্তরা প্রথম গাড়িতে চলে গেছে আর আমারে ঝাকানাকা ছ্যাকা দিয়ে গেল। কিন্তু আমিও ছাড়বার পাত্র নই কারন একই ভার্সিটিতে পড়ি।বিয়ে কাজ কর্ম শেষ করে আমি বাড়ি চলে আসি। আর একটা লম্বা ঘুম দেই।

প্রায় ১ সপ্তাহ পরে আমি ভার্সিটি যাই তবে নিজের ক্লাসের আগে রসায়ন বিভাগে চলে যাই। আর ওদের ক্লাসের বাইরে ওর জন্য ওয়েট করতে থাকে। প্রায় ৩০ মিনিট পর ওদের ক্লাস শেষ হয় আর এক এক করে সবার বার হতে থাকে। হঠাৎ খেয়াল করি অন্তরাও ওর এক বান্ধবীর সাথে কথা বলতে বলতে বার হচ্ছে।

— এই যে মিস বিপরীতপক্ষ একটু শুনবেন?
আমার ডাকে আমার দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে যেন একটা বিলুপ্ত হওয়া কোন প্রানীকে দেখছে।
— আমায় ডাকছেন?
— হুমম
— তা কেন ডাকছেন শুনি?
— আপাতত তো এমনি ডাকলাম আপনার সাথে কথা বলার মন চাইলো তাই।
— এই মিস্টার সত্যি করে বলেন তো। আপনার মুখ দেখে তো লাগছে এখানে চক্করবাজি চালাতে এসেছেন।
— দেখেন আমার হবু জি এফ এর প্রমিস আমি মিথ্যা বলছি চক্করবাজি চালাতে আসি নি।
— তাহলে সত্যি হলো চক্কর বাজি চালাতে আসছেন।
— কেন যে সব বুঝে যান তাই বুঝি না।
— এইসব আপনার না বুঝলেও চলবে।
— আসলে আপনার সাথে একটা মজা গেম খেলতে এসেছি?
— এই যে আমার এখন কুতকুত খেলার বয়স নেই ওকে।
— সুযোগ পেলে তাও খেলতাম। কিন্তু আমি কুতকুত খেলতে আসি নি তবে একটা মজার গেম খেলবো।
— ওকে বলেন শুনি কি খেলা?
— আমি আপনার পিছনে লাইম মারবো কিন্তু আপনি রাজি হতে পারবেন না আর এটাই আমার খেলা। যদি তুমিও আমায় ভালবাসো তাহলে গেমটা এখানেই শেষ।
— আমাকে আপনার প্রেমে ফেলার ভাল একটা উপায় বার করছেন তো তবে আমি রাজি না।
কথাটা বলেই চলে যেতে লাগলো। আরে আমি তো তাই চাই ওরে একটু ভালবাসতে। কিন্তু ও তো রাজি হলো না।
— আরে শুনেন এতো রাগ করার কি হলো?
— কই রাগি নি তো তবে আমি এই খেলায় রাজি না।
— আরে আমি তো তোমায় ভালবাসতে বলছি না তবে আমায় ভালবাসার সুযোগ দেন।
— ওকে তবে শুধু ৫ দিন দেখেন কি করতে পারেন?
— ওকে তাহলে তোমার নাম্বারটা তো দিয়ে যান।

কথাটা শুনো একটু অবাক হলেও নাম্বার টা দিয়ে দিলো। তারপর চলে গেল আর আমি ওর চলে যাওয়া দেখতে লাগলাম।কিন্তু আমি জানি আমি ফোন দিয়ে বা মেসেজ দিয়ে কোন লাভ হবে না আর এই মেয়ে পটবে না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ওর নাম্বারেরর শুভ সকাল মেসেজ পাঠালাম। কিন্তু ও ঠিক সাথে সাথেই রিপ্লে দিলো। তবে ও কি আমার ফোন বা মেসেজের অপেক্ষায় ছিল। যাই হোক, আজাইরা ভাবনা আর নানান কাজেরর মধ্যে দিয়ে দিনটা কেটে গেল কিন্তু ওরে পটাতে পারলাম না। এরপর ফোনে কথা বলে ওর ফেসবুক আইডি নিলাম আর ওরে উদ্দেশ্য করে নানান পোস্ট দিতে থাকলাম কিন্তু মনে হয় না কোন কাজ হয়েছে। এভাবে ৫টা দিনও কেটে গেল কিন্তু কোন লাভ হয় নি বরং ব্যর্থ প্রমানিত হলাম। তাই ওরে ভালবাসার আশা ছেড়ে দিলাম। এভাবেই কথা হতো মাঝে মাঝে তবে মেয়েটা আস্তে আস্তে আমার খুব কেয়ার নিতে শুরু করে তবে এখন তো আর আমাদের মাঝে কোন গেম নেই। বরং পুরুটাই সব নিয়ম মাফিক হচ্ছে। কিন্তু গতকাল আমি কিছু সমস্যার কারনে আমার ফেসবুক আইডি অফ করে দেই যার কারনে এতো কান্ড। ও আমায় ঠিক ১২ মিনিট ২৯ সেকেন্ড বৃষ্টিতে ভিজিয়েছে। তবে নিজে থেকে রাগটা কমিয়েছে।

হঠাৎ মায়ের ডাকে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। ও তার মানে এতো খন অন্তরাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমের রাজ্যে চলে গেছিলাম।
— কিরে আজ কি ক্লাস নাই?
— না ক্লাস আছে। বাজে কয়টা?
— ১০ টার কাছাকাছি হবে।
— কি বলো এইসব?

সাথে সাথে মোবাইল টা খুজে বার করে দেখি অন্তরার ১০+ মিসকল। ইশ খাইছেরে এমনি মেয়েটা আইডি অফ করার জন্য রেগে আছে আর আজ ওর ফোনও ধরলাম না। এবার তো আমার উপর ১৪ নম্বর বিপদ সংকেত কেউ আটকাতে পারবো না।
কোন মতে ফ্রেশ হয়ে দৌড় দিলাম ভার্সিটির দিকে। কোন মতে ভার্সিটি পৌছেই গেলাম রসায়ন ভবনের দিকে কিন্তু অন্তরা কে পেলাম। এবার কি করা যা ভেবে মোবাইল টা বের করে ওরে অন্তরাকে ফোন দিলাম। কিন্তু একি ওর মোবাইল তো বন্ধ, তার মানে রাগটা এবার খুব ভাল ভাবেই করছে।

মাথা কোন কাজ করতাছে না কি করবো তাই ভাবতে লাগলাম ও রাগে গেলে কোথায় যেতে পারে। সাথে সাথে মনে পরে গেল তাই আর লেট না করে ভার্সিটির পুকুর পাড়ে দৌড় দিলাম। যা ভাবলাম তাই হয়েছে। মেয়েটা পুকুরের পানিতে ঢিল দিচ্ছে। আমি আর কিছু না ভেবে ওর পাশে কি বসে পরলাম? ও আমায় দেখেছে কিন্তু চুপ হয়ে আছে তাই আমি বললাম……
— আচ্ছা মিস আপনি অন্তরাকে কোথাও দেখেছেন?
–(………)
— দেখতে একটু অভিমানী তবে মনটা খুব নরম।
— (………..)
অন্তরা চুপ করে বসে আছে মানে খুব বড় ধরনের একটা ঝড় আসতে চলেছে। ঝড়টা আসার আগেই থামাতে হবে নয়ত হীতে বিপরীত হতে পরে।

চুপচাপ বসে না থেকে ওর সামনাসামনি বসলাম। ওর চোখ গুলো ছলছল করছে হয়ত এখনই বর্ষন শুরু হবে। আমি ওর কপালের সাথে আমার কপালটা লাগালাম। আর সাথে সাথে ওর চোখ দিয়ে জল পড়ে গেল।

— সব সময় তোমার রাগটা কমানোর অধিকারটা কি দিবে একটু? সত্যি বলছি গেম খেলবো না, শুধু তোমাকে আমার করে নিতে চাই। একটু একটু করে ভালবাসার গল্প তৈরি করতে চাই।
— ( এখনো চুপ তবে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো)
— এই যে মুখে বলো নয়ত….
— নয়ত আর কিছুই না। আমার হাত যদি ছাড়ার চেষ্টা করো তাহলো তোমার হাতটা কেটে রেখে দিবো।
— বাব্বা এতো রাগ…..
— রাগ নয় বরং খুব বেশিই ভালবাসি যে তোমায়।
— আমিও তো…

চুপচাপ হয়ে বসে আছি। আমি জানি এই মেয়েটা এমনই। হি হি হি পাগলী একটা, তবুও খুব বেশি ভাল বাসি। না এই পাগলীটার হাতটা ছাড়া যাবে না। এই যে আমার পারফেক্ট মিস বিপরীতপক্ষ।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত