গায়ত্রী ছিল আমার প্রথম প্রেম। আমার স্ত্রী সে। কিন্তু আজকাল গায়ত্রীকে আমার একদমই ভালো লাগে না। ভালো লাগে না বললে ভুল হবে। ওকে আমার আর সহ্য হয় না। ও ভালো খারাপ যাই করুক না কেন আমার অসহ্য বোধ হয়। ভালো না লাগলে হয়ত মানিয়ে চলা যায়। কিন্তু যদি সহ্যই না হয় তাহলে মানুষ কতদিনই বা একসাথে থাকতে পারে। অথচ হুট করে থাকব না বলেলেই তো আর চলে না। প্রেম ভালোবাসার ব্যাপার হলে না হয় ছেড়ে যেতে পারতাম। ওই যাকে ব্রেকআপ বলে আর কি। কিন্তু পাঁচ বছর সংসার করার পর তো একটা মেয়েকে অকারনে ছেড়ে দেয়া যায় না। অবশ্য কারন তো একটা আছেই যে আমি ওকে সহ্য করতে পারি না। কিন্তু এই কারন দেখিয়ে ডিভোর্স নেয়া যায় না।
অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে এসবই ভাবছিলাম। আজকাল কাজের ফাঁকে একটু অবসর পেলেই কিংবা কাজ করতে করতেও আমি এসবই ভাবি। কি ভাবি? গায়ত্রীকে আমার জীবন থেকে তাড়ানোর উপায়। এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি সবসময়ই ভাবি। প্রেমের তিন বছর তারপর এই সংসারের পাঁচটা বছর কেবল ভেবেই চলেছি। শুধু ভাবনার বিষয়ে পরিবর্তন হয়েছে। প্রেমের সময় ভাবতাম কি করে ওকে আমার ঘরে আনব। আর এখন ভাবছি কি করে ওকে তাড়াব! অদ্ভুত না?
আমার বাসা ফোর্থ ফ্লোরে। লিফট ব্যবহার করলে সময় কম লাগবে। তাই কষ্ট হলেও সিড়ি দিয়ে উঠি। যতটা বিলম্ব করা যায় আর কি। ঘরে ফিরতে মন চায় না। কিন্তু সেই তো ফিরতেই হবে। একটা সময় ছিল যখন বিকাল চারটা বাজার আগে থেকেই আমার চোখ ঘঁড়িতে থাকত। কখন পাঁচটা বাজবে। কখন অফিস ছুটি হবে। পাঁচটা বাজার পরবর্তী আধঘন্টায় আমি উড়ে বাসায় চলে আসতাম। গায়ত্রী আমার জন্য অপেক্ষা করত। আমার সারাদিনের কর্ম ক্লান্ত মুখের শেষ ফোঁটা ঘাম ওর আঁচলে মুছে দিয়ে তবেই তৃপ্তির হাসি হাসত। এখনও গায়ত্রী একইভাবে অপেক্ষা করে। কিন্তু আমি বদলে গেছি। গায়ত্রীর অপেক্ষা আমার কাছে স্রেফ আদিখ্যেতা মনে হয়। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বেল টেপার আগে সেই অাদিখ্যেতা সহ্য করার প্রস্তুতি নিয়ে নেই। তারপর ধীরে সুস্থে বেল টিপলাম। সাথে সাথে দরজা খুলে গেল। গায়ত্রী হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে।
: দরজা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? সরে দাঁড়াও।
আমার কথায় গায়ত্রীর মন খারাপ হয়। আমি জানি। কিন্তু আমি যত দূরে ঠেলে দেই, গায়ত্রী তত কাছে আসে। এই জিনিসটাই আমার ভালো লাগে না। ও জানে আমি ওকে ইগনোর করি তবুও কেন যেন বুঝেও না বোঝার ভান করে। তবে আজ ওকে কেমন যেন শান্ত মনে হল। মহাপ্লাবনের আগে প্রকৃতি যেমন আশ্চর্য শান্ত থাকে তেমনি। চুপচাপ দরজা থেকে সরে দাঁড়াল। রাতে খেয়ে দেয়ে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম। গায়ত্রীর ঘুমানোর জন্য অপেক্ষা করছি। ফেসবুকে সামান্থা নামের একটা মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। প্রথমদিকে চ্যাটিং করতাম। এখন ফোনে কথা বলি। গায়ত্রী ঘুমালে তবেই কথা শুরু করব। পাশ ফিরে থাকলেও গায়ত্রীর প্রতিটা দীর্ঘশ্বাস আমার কানে লাগছে। অথচ সামান্যতম অপরাধবোধ কাজ করছে না। স্রেফ অসহ্য লাগছে!
রাত তিনটা বাজে। তখনও পলক ফোনে কারও সাথে ফিসফিস করেই চলেছে। আজকাল প্রায় প্রতি রাতেই আমি চোখ বন্ধ করলে ও ফোনে কথা বলা শুরু করে। প্রথম প্রথম অস্বস্তি লাগত। পলক জানে আমি পাশে আছি। তারপরও সে যদি অন্য কারও সাথে কথা বলে তো আমি আর কি বলব। মানিয়ে নিয়েছি। এখন ওই আলাপন শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে পড়ি। অবশ্য দু’ একদিন যখন রাতের এই সময়টায় ঘুম ভেঙে যায় তখনও শুনি কথা চলছে। নিঃশব্দ মাঝরাতে ওর ফিসফিসে কথাগুলো তীব্রতর হয়ে কানে আঘাত করে। মনের মধ্যে কোথায় যেন একটা সূক্ষ্ম ব্যথা কাজ করে। পলক কাউকে ফোনে সঙ্গ দিচ্ছে।
আর আমি ওর পাশে শুয়ে থেকেও কতটা নিঃসঙ্গ। মন কেন জানি বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। আমি হঠাৎ করে উঠে বসে বেড সাইড ল্যাম্পটা অন করে দেই। ঘটনার আকস্মিকতায় পলক চমকে গেল। ফোনটা কানের কাছ থেকে সরাতে ভুলে গেল। কেবল বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে। আমার দৃষ্টি ওর উপর নিবদ্ধ। নাহ্, কোন প্রতিবাদ বা ঝগড়া নয়। স্রেফ ওকে জানিয়ে দিতে চাই আমি চুপ করে থাকি তার মানে এটা নয় যে আমি অন্ধ, চোখে দেখি না। কিংবা বধিরও নই যে কানে শুনি না। শীতল কন্ঠকে আরও শীতল করেই বললাম, “পলক, তুমি কথা বলছ সেটা কোন সমস্যা নয়। কিন্তু কি বলোতো? মাঝরাতে আওয়াজগুলো বড্ড কানে লাগে। সারাদিন সংসারের কাজের পর আমার একটু বিশ্রাম চাই। I want to sleep in peace..তাই তুমি দয়া করে বারান্দায় অথবা ড্রয়িং রুমে গিয়ে কথা বলবে?”
আমার এই দীর্ঘ বাক্যের মধ্যে পলক কোন প্রতিবাদ করেনি। সে বারান্দায়ও যায়নি কিংবা ড্রয়িংরুমেও না। সে মোবাইলটা রেখে চুপচাপ পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। আমিও ল্যাম্পটা অফ করে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু বাকি রাত আর দু’চোখের পাতা এক করতে পারলাম না। হঠাৎ কোথা থেকে যেন মহা সমুদ্রে জোয়ার আসল। সেই জোয়ারের পানি উপচে পড়ছিল আমার দু’চোখ বেয়ে। আমি আবারও কাঁদব কখনো ভাবিনি। ভেবেছিলাম আমার চোখ দু’টো হয়ত পাথর হয়ে গেছে। কিন্তু নাহ্। আজ অবাক হলাম। সেখানে এখনো জলের অস্তিত্ব আছে তাহলে! শেষ কবে কেঁদেছিলাম? সময়টা ঠিক মনে নেই। তিন বছর? আরও কিছু বেশিও হতে পারে। পলকের জন্যই শেষবার কেঁদেছিলাম। বিয়ের পাঁচ বছর পরেও আমরা একটা বাচ্চার মুখ দেখতে পারিনি। অবশ্য সমস্যা আমার না, পলকের।
তিন বছর আগে আমি যখন ডক্টরের চেম্বারে আমাদের টেস্ট রিপোর্টস নিয়ে বসেছিলাম, তখন পলক ছিল না। ওর অফিসে কি একটা কাজে আটকে গিয়েছিল। তাই আমি একাই রিপোর্টস দেখাতে গিয়েছিলাম। সব রিপোর্টস পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখার পর ডক্টর সেন যখন বললেন, “আপনার হাজবেন্ড সন্তান জন্মদানে অক্ষম। আপনি চাইলে মা হতে পারবেন। কিন্তু সে কখনো বাবা হতে পারবে না।” আমি চোখে অন্ধকার দেখেছিলাম। একই সাথে আমার ডাক্তারের প্রতি ভীষন রাগ হয়েছিল। আমার স্বামী যদি বাবা হতে নাই পারে তো আমি কিভাবে মা হব? পলক ব্যতীত অন্য কাউকে আমি কল্পনাও করিনা। সন্তানহীনতার ব্যথা কেমন হয় আমি জানি না। কারন আমি সন্তানের সাহচর্য কখনো পাইনি। বাকি জীবনেও নাহয় বঞ্চিতই থাকলাম। কিন্তু পলককে আমি কখনো হারাতে পারব না। চেম্বার থেকে বাসায় ফিরে সারাটা দুপুর বিকাল আমি প্রচন্ড কেঁদেছিলাম। পলক অফিস থেকে ফিরেই জানতে চাইল,
: ডক্টর কি বলেছে? আমি পলককে বলতে পারিনি যে তুমি কখনো বাবা হতে পারবে না। কথাটা ঘুরিয়ে বলেছিলাম,
–আমি কখনো মা হতে পারব না, পলক। পলক বেশ অকেক্ষন আমার দিকে অপলক তাকিয়ে ছিল। তারপর আমাকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল,
: আমি তোমাকে আরও ভাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব, গায়ত্রী। আমি চুপচাপ ওর বুকে মিশে ছিলাম।
প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও বেশ দ্রুতই সামলে নিয়েছিলাম আমরা। পলক অবশ্য মাঝে মধ্যে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বলত। কিন্তু আমার অনাগ্রহ ছিল সর্বদাই। আমি চাইতাম না ও সত্যটা জানুক। ওর চোখে মুখে কোন অপরাধবোধ বা হতাশা আমি সহ্য করতে পারব না। পলকও হয়ত একই কথা ভাবত। এই জন্যই ডাক্তারের চেম্বারে আর আমাদের পা পড়ল না। আমরা বিষয়টা প্রায় ভুলেই গেলাম। সন্তাননামক অধরা স্বপ্নটা ছাড়াও বেশ ভালোই চলছিল আমাদের টোনাটুনির সংসার। সময় খুব দ্রুত কেটে যায়। সব ক্ষত সারিয়ে দেয়। হয়ত নতুন ক্ষত সৃষ্টির জন্যই। নাহলে আমার সুখের সংসারে ভাঙন আসবে কেন? পলক এখন আর আমাকে চায় না। আমি বেশ বুঝতে পারি ও আমাকে সহ্য করতে পারে না। কিন্তু আমি ওকে ভালোবাসি। ভয়ানক ভালোবাসি। তাই বারবার কাছে ছুটে যাই। যতটা দ্রুততায় আমি ওর কাছে যাই তার থেকেও তীব্রতর ওর প্রত্যাখান। কিন্তু আর না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। ডিভোর্সের প্রসেসিং চলছে। অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পলক যেটা করতে পারছে না, সম্পূর্ন অনিচ্ছা নিয়েও সেই কাজটা আমি করব। কারন আমি পুলককে ভালোবাসি। ওকে মুক্তির চিঠিটা দিয়েই তবে ঘর ছাড়ব। আর কয়েকটা দিনের অপেক্ষা মাত্র ডিভোর্স পেপারটা হাতে নিয়ে পলক বসে আছে।
গায়ত্রী চলে গেছে। আজ অফিস থেকে ফিরে ওর মুখ দেখতে হয়নি। আর কখনোই দেখতে হবে না। পলকের কি এখন খুশি হওয়া উচিত? কিন্তু সে খুশি হতে পারছে না। কেন পারছে না সেটাও বুঝতে পারছে না। রাতে শেষ বারের মত গায়ত্রীর হাতের রান্না খেয়েছে পলক। যাওয়ার আগে মেয়েটা রান্নাও করে রেখে গেছে। সব কিছু আছে আগেরই মত। নেই শুধু গায়ত্রী স্বয়ং। ঘুমানোর আগে এক মগ ব্ল্যাক কফি খাওয়া পলকের বহুদিনের অভ্যাস। বারান্দায় বসে অনেকক্ষন কফির জন্য অপেক্ষা করে যখনই পলকের মেজাজটা চড়ছিল তখনই মনে হল রাগ কার প্রতি? গায়ত্রী তো নেই। পলক নিজেই কিচেনে গিয়ে কফি বানাল। সে উপলব্ধি করল ব্যাপারটা যথেষ্টই বিরক্তিকর। রাত বিরেতে কফি খাওয়ার অভ্যাসটা ছাড়তে হবে। আর গায়ত্রী? এত বছরের বসবাসের সূত্র ধরে সেও একটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছিল। তাকেও ঝেড়ে ফেলতে হবে মন থেকে। এমন কঠিন কিছু নয় নিশ্চয়ই! আজ সামান্থার সাথে সারারাত কথা বলা যাবে। একটা নির্ঘুম প্রেমময় রাত হতে চলেছে আজকে।
রাতের এক প্রান্তে যখন চলছে স্মৃতি ভোলার মহরা, অন্যপ্রান্তে সেই স্মৃতিই আবার কাউকে দু’চোখের পাতা এক করতে দেয় না। নির্ঘুম রাত সেও কাটায়। প্রেমময় আলাপে রঙিন নয় বরং চোখের জলে ভেজা এক স্যাঁতসেঁতে রাত। সে রাত দীর্ঘ। ঘঁড়ির কাঁটাও যেন স্থির। অসহায় সমর্পিত রাতের কাছে সামান্থার সাথে পলকের প্রেম প্রেম সম্পর্কটা বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তারপরই পলক জানতে পারে সে কখনো বাবা হতে পারবে না। এতবড় সত্যটাকে মেনে নিয়ে গায়ত্রী তার সাথে থাকতে রাজি হয়েছিল এমনকি কথাটা লুকিয়েও রেখেছিল। কিন্তু সামান্থা মানেনি। পলক এখন একা। সে নিজে নিজে অনুতপ্ত হয়। গায়ত্রীর কাছে ফিরতে মন চায়। মোবাইল থেকে নাম্বারটা ডিলিট তো অনেক আগেই করেছিল। কিন্তু স্মৃতিতে রয়ে গেছে। ডায়াল করতেই রিং হল। পলক উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করে। এই সিমটা যে গায়ত্রীই ব্যবহার করে এমন নাও হতে পারে। হঠাৎ ওপাশ থেকে সেই চেনা কন্ঠ ভেসে আসে।
: হ্যালো! পলক একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সিমটা চেঞ্জ করেনি তাহলে।
–আমি পলক।
: হুম, বলো। কোন ভূমিকা না করেই বলে ফেলে,
–দেখা করতে পারবে? ওপাশে খানিক নীরবতা।
: কোথায়?
–সেটা তুমি জানো।
: হুম।
বছর তিনেক বা আরও পরে পলক গায়ত্রীর সামনে দাঁড়ায়। এতদিনে একবারও খোঁজ নেয়া হয়নি। সেই পুরনো জায়গা যেখানে ওরা চুটিয়ে প্রেম করে বেড়াতো। অবশ্য জায়গাটা আগের মত নেই। সময়ের সাথে বদলেছে। তারাই কি আর আগের মত আছে? গায়ত্রীকে দেখতে আরও সুন্দর লাগছিল। বিপরীতে পলক যেন একটু মলিনই ছিল। সেই প্রথম কথা বলে,
–কেমন আছ, গায়ত্রী?
: বেশ ভালো আছি। তোমার কি খবর? এতদিন পরে কি মনে করে!
–আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, গায়ত্রী। তোমার সাথে অন্যায় করেছি আমি। আমি ক্ষমা চাচ্ছি তোমার কাছে। ফিরে চল, প্লিজ! গায়ত্রী শব্দ করে হেসে ওঠে।
: পলক, তুমি দেখছি আমাকে পুরোপুরি ভুলে গিয়েছিলে। কোন খবরই রাখো নি।
–মানে?
: তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। বাবা মার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়েও করেছিলাম। তার প্রতিদান তো তুমি দিয়েছ। তারপর আমার আর কি করার। ফিরতে হয়েছে সেই বাবা মার কাছেই। তাই আমিও বাবা মার বাধ্য মেয়ে হয়ে গেলাম। দেরিতে হলেও তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছি।
–মানে?
গায়ত্রীর দৃষ্টি অনুসরন করে ঘুরে পেছনে তাকাতেই পলক দৃশ্যটা দেখল। এক ভদ্রলোক একটা বছর দুয়েকের বাচ্চা মেয়ের সাথে খেলছেন।
: আমার হাজবেন্ড তন্ময় আর আমার মেয়ে হৃদি। পরিচিত হবে ওদের সাথে? ডাকব? পলকের ঠোঁটে এক টুকরো তিক্ত হাসি ফুটে উঠল।
–নাহ্। থাক আর ডাকতে হবে না। তোমাকে বিরক্ত করার জন্য দু:খিত। আমি আসছি।
গায়ত্রীর উত্তরের অপেক্ষা না করেই পলক দ্রুতপায়ে হাঁটতে থাকে। সে আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। গায়ত্রী দু’পা হেঁটে স্বামী সন্তানের কাছে যায়। তার চোখ অকারনেই জলে ভরে উঠেছিল। কিন্তু সন্তানের আধো আধো বুলির মা ডাকে সে জলভরা চোখেও স্বপ্ন খেলে যায়। মুখের বিষন্নতা ঠোঁটের কোনে গিয়ে হাসিতে রূপান্তরিত হয়। তার সমস্তটা জুড়ে এখন তার স্বামি আর সন্তান। সেখানে কোথাও পলকের স্থান নেই। ভালোবাসা রং বদলায়। কারনে অকারনেই বদলায়। বদলে গিয়েছিল পলক। বদলেছে গায়ত্রীও। কিন্তু কারো জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। কখনোই না..