কল্পনায় উপলব্ধি

কল্পনায় উপলব্ধি

আমি মেয়ে হয়ে গেলাম কীভাবে! এই সাতসকালে ঘুম থেকে উঠে আমি এসব কী দেখছি। আশ্চর্য্য ব্যাপার, আমার বুকে দু’টা মাঝারি ধরনের স্তন, শরীর কেমন নরম নাদুসনুদুস। আমি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে আয়না দেখতে যাব, কিন্তু লক্ষ করলাম আগের মতো যেতে পারছি না। মেয়েলী ভঙ্গিমায় আমি বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে আয়নার সামনে গেলাম। আয়নায় এই যুবতী মেয়েটি কে! এটা কী আমি? আমার মাথায় ঘন কালো লম্বা চুল, পরনের সেন্টু গেঞ্জিকে ডিঙিয়ে আমার মেয়েলি শরীর উকিঁ মারছে।

আতব চালের মত গায়ের রঙ। উপচে পড়া যৌবন। এমন শরীরের জন্য কত কৌতূহল উত্তেজনা সীমাহীন আগ্রহ ছিলো আমার। আজ নিজের শরীর সেরকম হয়ে গেল কীভাবে। প্রস্রাবের চাপ দিচ্ছে, ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করা হয়নি। বাথরুমের দরজা বন্ধ করে আমি লুঙ্গী তোলে প্রস্রাব করতে বসেছি। কিন্তু নিজের বিশেষ অঙ্গটি দেখে আবার আঁতকে উঠলাম। এটাও পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমি বাথরুম থেকে দৌড়ে বের হলাম। বউ এখনও ঘুমোচ্ছে। আমি ডাক দিলাম, ‘মুনিয়া’। আশ্চর্য্য ব্যাপার ভয়েজটা কেমন চিকন হয়ে গেছে৷ আমি গলা খাকারি দিয়ে পরিষ্কার করে নিলাম, তারপর জোরে ধাক্কা দিয়ে আবার বললাম, ‘নবাবজাদী এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমোচ্ছিস কেন? উঠবে কিনা লাথি দিয়ে তুলতে হবে?’ আশ্চর্য্য, আগের মতো পুরুষালি ভরাট স্বর আর নেই। মেয়েদের মতো চিকন গলা হয়ে গেছে।

মুনিয়া ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠলো। সেও আমার অবস্থা দেখে নির্বাক হয়ে যায়। তারপর আমার তিন বছরের ছেলে মিজানেরও ঘুম ভেঙে গেল। সেও কেমন বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ধীরে ধীরে এলাকায় জানাজানি হল। আশপাশের গ্রাম সহ সবদিক থেকে লোকজন দেখতে এসেছে। আমার খুব বিরক্ত লাগছে। মুনিয়া আমাকে ছেড়ে মিজানকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছে। একটি মেয়ে তো আরেকটা মেয়ের সাথে সংসার করতে পারে না। কদিন হল আমি বাসায় একা একা থাকি। কে জানি দরজায় নক করছে, এতো রাতে আবার কে এলো। দরজা খোলে দেখলাম নিশাদ, বকুল, আর তমাল এসেছে। এরা সবাই আমার বন্ধু। রুমে ঢুকেই তারা দরজা বন্ধ করে আমার পাশে এসে বলল, ‘দোস্ত এটা কীভাবে সম্ভব, তোকে যা সুন্দরী লাগছে না দোস্ত। ঐযে পাড়ায় মাঝে মাঝে একেকটা গরম মাল দেখিনা সেরকম লাগছে।

অদ্ভুত ব্যাপার হল, আমি কেন জানি অস্বস্তিবোধ করছি, এই বন্ধুদের সাথে এসব আলাপ তো তুচ্ছ ব্যাপার এদের নিয়ে আরও জঘন্য কাজও করেছি। কিন্তু রাত – বিরাতে আমি যুবতী মেয়ে একা বাসায় আর তিনটে ছেলে এসেছে, এটা ভাবতেই আমার কেমন জানি ভয়ও লাগছে। সবাই কেমন গা ঘেষে বসেছে আমার। হঠাৎ তমাল বলল, ‘দোস্ত তুই কোনো এক রহস্যময় কারণে মেয়ে হয়েছিস যখন আমারে ইয়ে করার একটা সুযোগ দেনা! কত শখ তুই তো জানিস৷ আমি বিয়েশাদীও করিনি। তোরা যে হাওরে সবাই মিলে একটা মেয়েকে মনে আছে? সেদিনও কিন্তু আমি ছিলাম না, সে কথা কাউকে বলেছি বল? প্লিজ লাগে দোস্ত, আমাকে সুযোগ দে।’ তমাল হঠাৎ বুকে হাত দিয়ে বলল, ‘উফ দোস্ত’। আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে অন্য রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম। তারা ধাক্কাধাক্কি করছে৷ আর আমি শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ঘুরে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছি।

পরেরদিন ভোরে আমি রওয়ানা দিলাম ছোট খালার বাড়ি। বুঝে গেছি এই এলাকায় আমার দ্বারা থাকা সম্ভব হবে না। ছোট খালা আমার মেয়ে হবার ব্যাপারটা জানেন, কিন্তু তাদের এলাকার কেউ তো আর জানেনা। সেখানে গিয়ে আমি স্বাভাবিক জীবন – যাপন করতে পারবো। কিন্তু এখানে এসে এই অল্প ক’দিনে আমি খুব বুঝতে পারলাম শালার মেয়েদের জীবনটাই স্বাভাবিক না। কত সমস্যা নিয়ে যে মেয়েরা জীবনটাকে যাপন করছে এটা গ্রামের ব্যস্ত কঠিন পুরুষেরা চিন্তাও করতে পারবে না। আমিও কোনো রহস্যময় কারণে মেয়ে হয়ে আজ সবকিছু উপলব্ধি করতে পারছি। এইযে মেয়ে হবার পর থেকে প্রতি মাসে মেয়েলী কিছু অসুখ নিয়ে চলাফেরা করতে হয় আমার, এটা আমি মেনে নিতে পারছিনা। কারণ আমি একসময় পুরুষ ছিলাম, চাঙ্গা একটা দেহ ছিল আমার। নিয়ম করে কোনো পুরুষালী অসুখ নেই।

আহা পুরুষ জীবন! এদিকে খালার বাড়িতে কারেন্টও নেই। পুরুষরা রাত – বিরাতে খালি গায়ে লুঙ্গী পরে খোলা আকাশের নীচে গিয়ে হাটাহাটি করে, আমি এখন মেয়েদের পোশাক পরে ঘরে বন্দী হয়ে আছি। দিনে যখন বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হই কতো পুরুষ যে লোভাতুর চোখে তাকিয়ে থাকে সেটা খেয়াল হলেই আমার কেমন অস্বস্তি লাগে। জোড়া জোড়া চোখ রাস্তাঘাটে এমন করে তাকায় মনে হয় সুযোগ পেলেই শেয়াল কুকুরের মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলবে। রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা মোটেই সম্ভব নয়। কারো দিকে এমন করে তাকিয়ে থাকলেও যে এমন অসুবিধা হয় পুরুষ থাকতে আমি বোঝতে পারিনি। এখন আমার কাছে প্রায়ই মনে হয় পুরুষরা বন জঙ্গলের হিংস্র জানোয়ারের মতোই। সেটা ধর্মও নারীদেরকে ইঙ্গিত দিয়েছে হয়তো। নির্জন জায়গায় বেশিক্ষণ নিজের পিতার সাথেও বসা যাবে না।

প্রতিদিন প্রতিনিয়ত যেন পুরুষ থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াই। নিজের পোশাকে – আশাকে চলাফেরায় সবকিছুতে ওমন আড়ালে থাকার কারণ কে? কারণটা পুরুষরাই, এদের থেকে বাঁচার জন্য এতো সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে হয়। আমি এখন প্রায়ই ভাবি, ধর্ম পর্দাটাই দিয়েছে পুরুষদের থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য। এখন আবার নিজের পুরুষ জীবন নিয়ে ঘেন্না লাগছে। আমি যে এতোটা বছর পুরুষ ছিলাম ভাবতেই কেমন লজ্জা লাগছে। পুরুষরা আসলে পরোক্ষভাবে নারীদের কাছে বনের হিংস্র জানোয়ার। আরও ভয়ংকর ব্যাপার হল। ওইসব জানোয়ার থাকে বনে – জঙ্গলে পুরুষরা থাকে নারীর ঘরে। আজ আমি মেয়ে হবার কারণে নিজের উপর নিয়ে এগুলো উপলব্ধি করতে পারছি, ওরা কীভাবে করবে? পুরুষরা কখন বুঝতে পারবে আমাদের কারণেই কেন নারীদের জীবন ওমন বিষময় হয়ে উঠবে?

খালার কাছে একটা বিয়ের আলাপ এসেছে। পাশের গ্রামে ছেলের বাড়ি। অতোটা না ভেবেই সবাই বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেছে। কারণ খালারা তো আমাকে আজীবন বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে পারবে না।  তারপর আমার বিয়ে হয়ে গেল। আমার পরিচিত জগত, মা – বাবা, বন্ধু – বান্ধব সব ছেড়ে আমি একটা অপরিচিত জায়গায় এসেছি। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে মেয়েদের জন্ম দু’বার হয়। বিয়ের আগে এক জনম বিয়ের পর আরেক জনম। সবকিছু কেমন নতুন করে শুরু করতে হয়। বিয়ের প্রায় এক মাস চলে গেছে, আমার স্বামী গ্রামের আট – দশটা পুরুষের মতোই। বন থেকে এসে খাবার খেতে বসে বলবে, ‘পাখা দিয়ে বাতাস করতে পারস না মাগী’।

পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে আমার অতীত মনে পরে, আমিও খালি গায়ে খাবার খেতে বসতাম। বউ পাখা দিয়ে বাতাস করতো। খাবার শেষে আমি পশ্চিমের শিমুল গাছের নীচে বসে খোলা হাওয়ায় শরীর ঠান্ডা করতাম। একদিন এভাবে বসে আছি। উঠোনে শুকানোর জন্য ধান মেলা হয়েছে। হঠাৎ দেখলাম এক পাল হাস – মুরগী এসে ধান খাচ্ছে। আমি দৌড়ে গিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে বউকে গালাগালি শুরু করলাম, ‘মাগী সারাদিন চেপ্টা লাইগা বইসা থাকস। ধানের দিকে নজর থাকে না।’ বউ ঘর থেকে বলল, ‘খেতে বইছি মিজানের বাপ। তোমারে ভাত দেওনের আগে ধান নাড়া দিয়ে আসলাম।’ ‘মাগী তোর ভাত খাওনের সময় চইল্লা গেছে, চইল্লা গেছে না? ভাত খাবি যখন বাহিরে বসে খেলিনা কেন’ বলেই চুলে ধরেই হেঁচকা টান দিয়ে পিঠে কিল ঘুষি মারতে শুরু করলাম।

আমার স্বামীও ভাত খাওয়া শেষ করে এখন খালি গায়ে বাহিরে গিয়ে বসেছে। প্রচন্ড গরমে আমিও ভাত খেতে বসলাম। আমি নিশ্চিত গ্রাম – বাংলার কোনো পুরুষ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না বউ খেতে বসলে পাখা দিয়ে বাতাস করে। আমার স্বামীও আট – দশজনের মতো। গ্রাম – বাংলার কোনো বউও আশা করে না সে খেতে বসলে স্বামী বাতাস করুক। কারণ এখানে স্বামী আর স্ত্রীর সম্পর্ক বন্ধুত্বের না, দাসী আর মালিকের মতো। আমি আজ মেয়ে হওয়ায় উপলব্ধি করতে পারছি। এই যে রাত আসবে আমি অর্ধেক রাত কাটাব স্বামীর পা টিপে দিয়ে। কখনও কী আমার স্বামী আমার পা টিপে দিবে? অবশ্যই দিবে না, কারণ আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বের না, সেটা অন্যকিছু। কিছু কিছু পুরুষের কাছে টয়লেট আর বউ প্রায় একই। শুধু চাপ দিলেই যেমন দৌড়ে টয়লেটে যেয়ে শান্তি হয়। সেভাবে বিশেষ অঙ্গে বিশেষ একটা চাপ পেলেই এরা রোবটের মতো বউয়ের কাপড় খুলে শান্তি হয়ে মুখ ফিরিয়ে ঘুমিয়ে যায়।

আমাদের বিয়ের প্রায় বছর খানেক হয়ে গেল, কিছুদিন যাবত আমার স্বামী রাত করে বাড়ি ফিরে। লোকমুখে শুনেছি ঐ পাড়ার একটা বেশ্যা মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক হয়েছে। প্রতিদিন এভাবে দেরী করে বাড়ি ফিরে সে৷ সেদিন বাড়িতে আসার পর বললাম, ‘প্রতিদিন এতো রাত করে কই থেকে আসো?’ ‘তোরে কওন লাগবো নি মাগীর ঘরের মাগী?”হ কওন লাগবো আমি তোমার ঘরের বউ, আর মা তোলে গালাগালি কর কেন’?’রাখ তোর ঘরের বউ, দেশের ডিসি – পিসি নেতা – খেতারাও বউ – বাচ্চা রেখে ওসব করে বেড়ায় আর তুই নবাবজাদী বউ দেখাচ্ছিস।’

‘আমার এতো কিছু বোঝন লাগতো না তুমি ওই বেশ্যা বেটির লগ ছাইড়া দেও।’ ‘মাগী তোর মুখ ফুটেছে।’ বলেই গালে চড় – থাপ্পর পিঠে কিল ঘুষি মারতে মারতে অজ্ঞান করে দিয়েছিল। এরপর থেকে আমি এসব নিয়ে আর কথা বলি না, সংসারের কাজ করি আর খাই। রাত এখন প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে, দরজায় কে জানি কড়া নাড়চ্ছে। নিশ্চয় উনি হবেন। আমি বিছানা থেকে উঠ দরজা খুলে দিতেই কয়েকটি ছেলে হুড়মুড় করে ঘরে ঢোকে গেল। আমি চিৎকার করতে যাবো সাথে সাথেই একজন আমার মুখ চেপে ধরেছে। হারিকেনের আলোয় এদের সবাইকে দেখতে পারছি আমি।

এরা কদিন যাবত আমার বাড়ির আশেপাশে ঘোরঘোর করতো। একজন টেনে আমার সেলোয়ার কামিজের খোলে নিয়েছে। হাত – পা বেধে একজন পরে আরেকজন আসছে। স্তনে খুব ব্যথা করছে। ওদিকে রক্তপাত হচ্ছে। আমি শুধু গোঙাচ্ছি। আজ থেকে প্রায় একযুগ আগের একটা দৃশ্য এখন আমার চোখের সামনে ভাসছে। আমি তখন তরতাজা যুবক ছিলাম। আমরা নয় জন বন্ধু মিলে অন্য হাওর থেকে একটা ছাগল চুরি করে এনে আমাদের হাওরে তাবু টাঙিয়েছি। এতো বড় হাওরের এদিকে লোকজন খুব কমই আসে। আমরা ছাগল জবাই করে রান্নাবান্না শুরু করলাম। প্রয়োজনীয় সবকিছু আগেই এনে রেখেছিলাম। খাওয়া – ধাওয়া শেষে সবাই যার যার বাড়ির দিকে চলে গেছে। আমরা তিনজন আসার পথে হঠাৎ একটি ৮ – ৯ বছরের মেয়ে দেখলাম।

মেয়েটি গরুর গোবর খুঁজছে ( গোবর রান্নার জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয় )। সেদিন আমার সাথে নিশাদ আর বকুল শুধু। আমি বললাম এদিকে লোকজন নেই। চল এই মেয়েকে মুখ চেপে ধরে ওইদিকে নিয়ে যাই। এদেরকে বলে আমি নিজেই মেয়েটির মুখ চেপে ধরে হাওয়ের নির্জন জায়গায় নিয়ে গেলাম। ওরা দু’জন মেয়েটির মুখ চেপে ধরেছে। আমি মেয়েটির সেলোয়ার টেনে নামিয়ে লুঙ্গী তোলে নিজেই শুরু করলাম। মেয়েটি কৈ মাছের মতো ছটফট করছে। খুব বেশি ব্লাডিং হচ্ছে। তারপর নিশাদও করল। কিন্তু বকুল কিছুক্ষণ করার পর লক্ষ করলাম মেয়েটির নড়াচড়া নেই। আমরা সবাই ভয় পেয়ে গেলাম। মেয়েটি তো মারা গেছে। তারপর আমরা তাড়াতাড়ি সেখান থেকে কেটে পড়ি।

আমার সাথেও তাই হচ্ছে, ওরা একের পর এক আমার উপরে উঠছে। স্তন টিপে ব্যথা ধরিয়েছে, ঠোঁট কামড়ে রক্ত বের করে ফেলছে। যোনী থেকে রক্ত বের হচ্ছে। এখন আমার মাথা কেমন ভারী হয়ে এসেছে। চোখ ঝাপসা হয়ে এসছে। হঠাৎ আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম। জ্ঞান যখন ফিরল তখন লক্ষ করলাম আমি আবার পুরুষ হয়ে গেছি। শক্ত শরীর, সবকিছু আগের মতো। মুখ বাধা অবস্থায় পড়ে আছি। পরনে মেয়েদের কাপড় রয়ে গেছে। আমি মুখে বাধ খোলে তাড়াতাড়ি স্বামীর লুঙ্গী আর শার্ট পরে দৌড়াতে লাগলাম। আমি আমার বউয়ের কাছে যাবো। আমার মিজানের মায়ের কাছে৷

এলাকায় গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে, আবার আমি মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে গেছি। এখন তো আমি পুরুষ, সবকিছু ঠিকঠাক সামাল দিয়ে নিয়েছি। মিজানের মাকে বাড়িতে এনেছি। বউ আবার আগের মতো ভয় পায়। কিন্তু সে তো জানে এখন আমি তার মতো করে সব ভাবতে পারি। দুপুরে প্রচন্ড গরম পড়েছে, আকাশে ঝকঝকে রোদ৷ বউ ভাত দিয়ে পাখা হাতে নিয়ে বাতাস করছে। আমি খানা শেষ করে বাহিরে না গিয়ে বললাম ‘খেতে বস বউ আর পাখা আমার কাছে দে।’ বউ হা করে তাকিয়ে বলল, ‘কি কও না কও মিজানের বাপ’। ‘কেন বউ তোর কী গরম লাগে না? গরম কী শুধু আমার? ভাত খেয়ে নে বউ আমি বাতাস করি।’ বউ অনিচ্ছা সত্যে খেতে বসেছে, কিন্তু খেতে পারছেনা। গাল বেয়ে জল পড়ছে। হঠাৎ হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘মিজানের বাপ তুমি এত মায়া কইরো না আমারে৷ আমার খালি কান্দন আহে মিজানের বাপ।’ ‘আরে বোকা বউ, মায়া করুম না কেন? তুই কী কাজের মেয়ে নাকি? সারাক্ষণ শুধু কাজ করবি? তাছাড়া বউকে তো মায়াই করতে হয় বাহিরের রাগ এসে তোকে মেরে মেটাবো নাকি? বউয়ের আর স্বামীর সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের মতো। কিন্তু আমরা স্বামীরা হয়ে যাই মুরব্বী চাচার মতো।’ ‘হা হা হা কি যে কও মিজানের বাপ।’

রাতের খাবার শেষে শুয়েছি। প্রতিদিনের মতো বউ পা টিপে দেবার জন্য হাত দিয়েছে। আমি বললাম বউ আমার পায়ে তো ব্যথা নেই। তোমার পায়ে ব্যথা থাকলে বল, পা টিপে দেই। ‘আস্তাগফিরুল্লাহ, কি কও মিজানের বাপ। তোমার মাথা কি ঠিক আছে। স্বামী বউয়ের পায়ে হাত দিলে আল্লাহ পাপ দিব মিজানের বাপ। এমন কথা কইও না আর৷ কেউ কী বউয়ের পা টিপে দেয় শুনেছ? কোনো স্বামী বইয়ের পা টিপে দিছে এটা জানলে লোকে কইবো এই বেটা কোনো পুরুষই না। এটা নিয়ে সমাজ হাসাহাসি করবো।’

‘তাহলে আমার পায়ে তুমি হাত দিওনা বউ। আমার বুকে এসো, বুকে মাথা রেখে ঘুমোবে। আদুরে বিড়ালের মতো মিশে যাবে বুকে। আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেব। কপালে একটি চুমু দেই বউ? আমি এখন সব জানি, কি চাস তুই আমি সব জানি। আর শুন বউ, আজ থেকে আর তোর অনিচ্ছায় টেনে কাপড় খুলবো না৷ এখন থেকে আমি তোর মন আর দেহ একসাথে চাই। মন ছাড়া দেহ তো মৃত লাশের মতো রে বউ।’

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত