:-খালা , আজ মোর শরীলডা ভালা না কারো লগে বিছানায় যাইতে পারুম না।
:- কি কইলি ফকিরনির বাচ্চা । বিছানায় যাইতে পারবি না। টাকা কি তোর বাপে আইয়া দিয়ে যাইবো। ওহোনি খরিদ্দার আইবো যা গা গতর পরিস্কার কর।
নবাবের বেটি বিছানায় যাইতে পারবে না।
:- দেহ খালা ,আমার বাজানরে তুলে গালি দিবা না। যা খুশি আমারে কও।
:- ওরে তোরা হুনছোস নবাবের বেটি কয় কি। এহানে ভাল ভাল খাইয়া গতরে তেল জমছে । হুইনা রাখ এইডা জমিলা খালার খাস মহল আমি যা কমু তাই। এই ল সাজন গোজন এক সাহেব আইবো শহর থেকে নগদ বিশ হাজার টাকার চেক দেছে তারে যদি তুই খুশি করতে না পারোস তোরে আমি চুলের মুঠি ধইরা পিডামু।
(ফতে ও ফতে আমার পানের ডিব্বা লইয়া আয়। সকাল সকাল মেজাজ খারাপ কইরা দেছে। শোভা জর্দা আনতে ভুলিস না আবার । বাপ মা মরা মাইয়াগো এতো দেমাগ আমার জানা আছে কেমনে ঠিক করতে হয়।)
এক নাগারে কথা গুলি বলে যাচ্ছে জমিলা বেগম । বুঝতেই পারছেন জমিলা বেগম কি করে । এবার চলুন গল্পর বাকিটা জানা যাক।
তুলি খুব শান্ত একটা মেয়ে । দেখতে অপরুপ সুন্দরী । যেমন গায়ের রঙ ঠিক তেমনই তাঁর রুপ। চুল গুলি কোমড় বেয়ে নেমে গেছে আরো নিচে। রেশমি চুল গুলি যেন ওর মতোই সারা দিন হেসে খেলে বেড়ায় । তুলি যখন খিলখিল করে হাসে ওর হাসির শব্দ শুনে মনে হয় ওর সাথে বাগানের ফুল পাখি মিষ্টি করে তাকিয়ে আছে । কিন্তু মেয়ে টা ছোট থাকতেই বাবা মাকে হারিয়েছে। বসন্ত রোগে দুইজন কেই এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়ে গেছে ওপারে । বাপ মা মরা মেয়ে কে দাদী লালন পালন করে ।
দুই কুলে ওর কেউ ছিল না। হঠাত্ করে একদিন দাদী বিছানায় পড়ে গেল । তুলির দাদী মেম্বারের বাড়িতে কাজ করে দুজনের পেট চালাতো। তাই বাধ্য হয়ে তুলিকেই কাজে নামতে হলো। মেম্বারের নজর খারাপ । সে তুলিকে সুযোগ পেলেই গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করতো। তুলি না পেরে একদিন মেম্বারের স্ত্রীকে জানালো। সেই থেকে মেম্বার ওদের উপরে খেপে গেল । তুলি টেনে টুনে এইট পাশ করেছিল । তাই একদিন বুড়ো দাদীকে নিয়ে চলে এলো শহরে ।
কিন্তু এখানে ও ভাগ্য ওকে সহায় করলো না। দাদী টানাটানির এক সপ্তাহ মাথায় মারা গেল । তুলির চারিদিকে নেমে এলো অন্ধকার । যেই বস্তিতে এসে উঠে ছিল সেই বস্তির একটা ছেলে রাতের আধারে তুলির ঘরে ঢুকে ওকে রেপ করলো।
সকালে তুলি কান্না কাটি করতে করতে বাড়ি ওয়ালার কাছে বিচার চাইলো। বাড়ি ওয়ালা বুড়ো আরো এটা ওটা বলে তুলির গায়ে হাত দিয়ে বললো,
:- তোর কোথায় কোথায় হাত দিছে ? তখন আসে পাশে কেউ ছিল ? রাত তখন কতো ছিল ?
তুলির বাড়ি ওয়ালার উপরে ঘৃণায় শরীর রি রি করে উঠলো। সেখান থেকে চলে আসতেই জমিলা খালা ডাক দিয়ে বললো,
:- এই ছেড়ি তোর নাম কি ? কই থাকোস ? যাবি আমার লগে ? টাহা পাবি অনেক টাহা।
সেই থেকেই তুলি পতিতা । দুইদিন ধরে মেয়েটার শরীরে জ্বর । কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। সব কিছু তিতা লাগে ।
তুলি বসে বসে এ সব ভাবছে ঠিক এমন সময় পিছন থেকে একজন বলে উঠলো ,
:- আমি কি ভিতরে আসতে পারি ?
তুলি অবাক হয়ে চেয়ে থাকে । লোকটা কি বোকা নাকি । আমরা পতিতা আমাদের কাছে আবার জিজ্ঞাসা করা আসবে নাকি । এখানে কেউ আসলেই আগে শরীরের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে তারপর শকুনের মতো ছিড়ে খেতে চায় সারা শরীর ।
লোকটা আবার বললো,
:- আমি কি আসতে পারি?
:- জী আসেন । আজকের রাত আমি আপনার । আপনি যেভাবে ইচ্ছে ভোগ করতে পারেন ।
এই বলেই তুলি বুকের উপর থেকে ওড়না সরালো। এমন সময় লোকটা বললো ,
:- এতো ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই। মাত্র এগারো টা বাজে। এখনও সকাল হতে অনেক বাকি। আমি রোহিত । এতোদিন দেশের বাইরে ছিলাম । এক সপ্তাহ হলো এসেছি। আপনার নামটা জানতে পারি ?
তুলি হা করে রোহিতের কথা শুনছে । কয়েক টা ঢোক গিলে বললো,
:- আমার নাম তুলি,
:- বাহ মিষ্টি একটা নাম। আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি অসুস্থ । আপনি কি পানি খাবেন ।
তুলি যতো ওকে দেখছে অবাক হচ্ছে । এক গ্লাস পানি খেয়ে তুলি বললো,
:- এখন একটু ভাল লাগছে ।তাহলে এখন কাজ ………..
:- আচ্ছা তুলি , তুমি কি জানো আমি তোমাকে এক সপ্তাহের জন্য কন্ট্রাক করেছি। এই এক সপ্তাহ আমাদের রোজ দেখা হবে। তুমি এখন একটা কাজ করো কিছু সময় রেস্ট নাও। যখন আমার দরকার হবে আমি তোমাকে ডেকে তুলবো।
তুলি মাথা নাড়িয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লো। কখন যে গভীর ঘুমিয়ে তলিয়ে গেছে বুঝতে পারেনি। যখন ঘুম ভাঙে বাইরে তাকিয়ে দেখে সকাল হয়ে গেছে । ধড়ফড় করে উঠে বসে দেখে রোহিত ঘরে নেই। একটা কাগজ টেবিলের উপরে রাখা। ওটা হাতে নিয়ে পড়তে লাগলো,
“তোমাকে ঘুমের মধ্যে দেখতে অনেক মিষ্টি লাগে । আজ রাতে আবার দেখা হবে ।”