রাজীব আর এশা দুজন বিকেলে ঘুরছে রিকশা নিয়ে। রাজীব রিকশার হুট তুলে দিলো আর এশার পেছনে হাত দিলো। এশা হাত সরিয়ে নিলো। কিছুদিন ধরেই রাজীব এশার খুব কাছে আসতে চাচ্ছে খুব কাছে। আর এশা তার উপর বিরক্ত। এশা’র মনে ঘুরছে আজকাল সব ছেলেরাই এক খাটে শোয়াবে তারপর গভীর ভালোবাসা গভীর জ্বলে হারিয়ে যাবে। এশা ‘ বলো কি হয়েছে? ‘ আমি তোমার কাছে আসতে চাই অনেকটা কাছে। তোমাকে ছুয়ে দেখতে চাই। ‘ রাজীব সব চাইলেই হয়না! আমি এমন মেয়ে না!
‘ তুমি কি আমায় বিশ্বাস করো না? ‘ করি খুব বিশ্বাস করি। নিজের থেকেও বেশি। ‘ তাহলে কেনোই বা আমাকে বাধা দিচ্ছো? আমি তো তোমায় ভালোবাসি তাইনা? ‘ আমি পারবো না রাজীব আমাকে দিয়ে হবেনা! রাজীব মন খারাপ নিয়ে রিকশা থেকে নেমে গেলো। এশা রাজীব’কে ভালোবাসে কিন্তু, সে কখনোই তার সাথে এসবের চিন্তাও করেনি। তাদের পরিচয় মাত্র তিনমাসের। এর ভেতরই অনেকটা বিশ্বাস করে ফেলেছে এশা। এশার প্রথম ভালোবাসা রাজীব! এশা রাজীবের কথা ভেবে এশা মন খারাপ করছে। এশা কখনোই রাজীবকে হারাতে চায়না! রাজীব এশাকে বিয়ে করার আশ্বাস ও দিয়েছে। এই আশ্বাস এশাকে বাচিয়ে রেখেছে।
রাজীব ফোন দিয়েছে। ‘এশা’ রাজীব আমি জানতাম তুমি কল দেবে তোমার কথাই ভাবছি। ‘ এশা আমি বকবক করতে কল দেইনি। তুমি পারবে কিনা সেটা বলো?’ আমার দ্বারা পসিবল না রাজীব! ‘ এশা আমিতো তোমায় ভালোবাসি। আর ভালোবাসি বলেই তো তোমায় ছুয়ে দেখতে চেয়েছি। এই সুযোগ টা আমায় দেবে না?’ আর তুমি বিশ্বাস করো না?’ করি। কিন্তু, ‘ কিন্তু ফিন্তু বুঝি না কালই হচ্ছে আমাদের দেখা’ আমি পারবো না রাজীব! ‘তাহলে আমিও পারবো না এই সম্পর্কে আর জড়াতে!’
ফোনের লাইনটা কেটে দিলো রাজীব। এশা চাইলেও পারছে না রাজীবকে কল দিতে। ফোনে হাজারো বার বলতে ইচ্ছে করছে ভালোবাসি রাজীব। এশা চিন্তায় পড়ে গেলো। কি করবে এখন সে? নিজেকে সামলাবে নাকি ভালোবাসা? নিজের লাজলজ্জা নিজের দেহ বিলিয়ে দিবো রাজীবকে? নাকি ভেঙে দিবো সম্পর্ক? হাজারো প্রশ্ন এশার মনে কিন্তু, এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই! না এ কখনোই না সম্পর্ক ভাঙবে না এশা! একটা গোলকধাঁধায় পড়ে গেলো এশা! নিজের লাজলজ্জা, নিজের দেহ সব কি বিলিয়ে দিবে রাজীবকে? আর রাজীব তো ভালোবাসে আমাকে। বিয়ে করার আশ্বাস ও দিয়েছে আমায়। কি হয় একটা ক্ষনিকের সময়ই তো! কি হয় ক্ষনিকের জন্য লাজলজ্জা ছেড়ে ভালোবাসলে!
সবই বুঝলাম কিন্তু রাজীব যদি ছেড়ে চলে যায় আমায়? এই ভয়টা কাটাতে হবে আমায়! রাতটা কাটিয়ে নিলো খুব কষ্টে এশা! ভাবতে ভাবতেই চলে গেলো রাতটা। আজ দু’দিন হলো এশার সাথে রাজীবের কোনো যোগাযোগ হচ্ছে না! সব ভয় কাটিয়ে এশা খুব সাহস নিয়ে রাজীবকে ফোন দেয়। রাজীব ‘ আমি জানতাম তুমি কল দিবেই আমায়। ‘ আমি রাজি রাজীব। আমি নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছি। তাড়াতাড়ি আসো এশা আমি আর অপেক্ষার প্রহর গুনতে পারছি না। ‘
এশা রাজীবের দেওয়া ঠিকানায় গেলো। রাজীবের দিকে তাকাতেই মনে হলো সে খুব ক্ষুদার্ত! এই ক্ষুদা ভালোবাসার ক্ষুদা। এশা রাজীবের খুব কাছে গিয়ে বসলো। দুজনের মাঝে খুব কাছাকাছি দুরত্ব। রাজীব এশার দিকে এগিয়ে আসছে এগিয়ে আসছে এই বুঝি এশাকে ছুয়ে দিবে এই বুঝি স্পর্শ হলো এশার শরীর এই বুঝি তাদের ছায়া একসাথ হবে। রাজীব ক্ষুদার্ত খুব ক্ষিপ্ত! এই বুঝি ছুয়ে দিলো এশাকে! মিনিট দশেক পর। রাজীবের লাশ পড়ে আছে খাটে। রাজীবের অর্ধেক শরীর খাটে আর অর্ধেক নিচে। রক্তে ভরে গেছে রাজীবের সারা শরীর। এশা সিগারেট ধরালো। সিগারেট টানতে টানতে ফোন দিলো তানিশা’কে।
ফোনে এশা বলছে কাজ হয়ে গেছে বাকি টাকা খামে ভরে পাঠিয়ে দাও! লাশ’টা পুড়িয়ে ফেলতে হবে! ওদিক থেকে তানিশা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে থাকলো। তানিশা রাজীবের আগের প্রেমিকা তাকেও রাজীব বিয়ে করার আশ্বাস দেয় ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে ধোকা দেয়। রাজীব তানিশার গর্ভে থাকা বাচ্চাকেও অস্বীকার করে। এবং তাকে ধোকা দেয়। রাজীবকে মেরে ফেলে কি লাভ ক্ষতি হয়েছে জানা নেই তবে অন্তত্য তানিশার মতো অন্য কোনো মেয়ের জীবন তো আর নষ্ট হবেনা! পরেরদিন পত্রিকার হেডলাইন এ বের হয় এই অমানুষের পুড়ে যাওয়া ছবি।