একুশ জারজ সন্তান নাকি,প্রকৃত ভাবে দুনিয়াতে আসছে।সেই প্রশ্ন একুশের কাছে থেকে যাবে।একটা ছেলে/মেয়ে যেভাবেই দুনিয়াতে আসে ঠিক সেভাবই দুনিয়াতে আসেনি একুশ।এই প্রশ্নের উত্তর ঘুরপাক খাবে একুশের কাছে।সব প্রশ্নের উত্তর কিন্তু একুশে ঘিরে ধরবে অপেক্ষার শেষ প্রহরে।সময়টা হচ্ছে ২১-২-১৬।রাত ঠিক বারোটা এক মিনিট। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রাসেল আহমেদ আসছেন শহীদ মিনারে শহীদের প্রতি সালাম
জানানোর জন্য,তার পর ভাষা শহীদের আত্নাটাকে ফুল দিয়ে, ৪০-৫০টা ছেলে নিয়ে সব শহীদের কে নিরবে দাঁড়িয়ে স্যালুট জানায়।শুধু কি মাতৃভাষা দিবসে। স্বাধীনতা দিবস থেকে শুরু করে ১৫আগস্ট সব দিবস উদযাপন করেন রাসেল আহমেদ।কারন শহীদের প্রতি তার ভালবাসা আর শ্রদ্ধা।কারন রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা।স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন রাসেলের বাবা।
-যাই হোক।
ডাক্তার বলছেন রাসেল কখনো বাবা, এবং তার স্ত্রী কখনো মা হতে পারবে না। তার স্ত্রী তাকে আদেশ দিয়েছিলেন আরেকটা বিয়ে করার জন্য।তিনি তার প্রতি উত্তরে বললেন।বিয়ে মানুষের জীবনে একবার।আল্লাহর যদি পছন্দ না হয় তাহলে আমাদের ঘরে নতুন অতিথি জীবনেও আসবে না।সব মানুষ কিছু না কিছু নিয়ে অসুখী থাকতে হয়। কারোর কপালে ১৬ আনা জুঁটে না।এটাই প্রকৃতির নিয়ম।সন্তান নাহলে কি হবে।দরকার হলে এতিমখানা থেকে একটা সন্তান নিয়ে এসে নিজের মত করে লালন পালন করবো। রাসেলের স্ত্রী আফিয়া এই কথা শুনে অনেক খুঁশি হইছে ,নিজেকে অনেক ভাগ্যবান নারী মনে করতেছে।আজকাল কাল এত ভাল স্বামী সহজে কারোর কপালে জুঁটেনা।শহীদ মিনারে শহীদের প্রতি সালাম জানিয়ে আসার সময়,কিছু একটার কান্না আওয়াজ শুনতে পায় রাসেল। তিনি ভাবতেছেন সম্ভবত বিড়ালের বাচ্চা কান্না করতেছে।
“আপনি একটা জিনিস খেয়াল করবেন।একটা বিড়াল যখন বাচ্চা জন্ম দেয়।তখন বিড়ালের বাচ্চাদের ক্ষুধা লাগে,যখন মা কে ডাকার জন্য কাঁদে। ঠিক এক নবজাতকের কান্নার মত।বুঝতে পারবেন না এটা বিড়ালের বাচ্চার কান্না। কান্নার আওয়াজ অতি তীব্র ভাবে বেড়ে যাচ্ছে।দৌড়ে গেলো শহীদ মিনারের পিছনে।সেখানে একটা কালভার্ট আছে।কালভার্টের নিছে দেখতেছে একটা বাচ্ছা কান্না করতেছে।এই ঠান্ডার মধ্যে চারদিকে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা।রাসেল সুয়েটার টা খুলে বাচ্চাটার গায়ে মুড়িয়ে দিলো।এমন সময় গান বেঁজে উঠল যেটা হৃদয় ব্যাকুল হয়ে যায়। “আমার ভাইয়ের রক্তের রাঙানো”!
—একুশে ফেব্রুয়ারী। ” আমি কি ভুলিতে পারি।
তাই রাসেল বাচ্চাটার নাম রাখলেন একুশে।ছুটে গেলেন হসপিটালে।বাচ্চাটার শ্বাসকষ্ট সমস্যা হইছে এই ঠান্ডার কারনে। বাচ্চা ক্ষুধায় চিৎকার করতেছে।এমন সময় নার্স এসে বললেন।আপনি যদি কিছু না মনে করেন আপনার ছেলেকে আমার বুকের দুধ খাওয়াতে পারি।রাসেল নার্স কি বলে ধন্যবাদ দিবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা।বাচ্চাকে সুস্থ করে হসপিটাল থেকে নিয়ে যায়।আর তার ছোট ভাইদের কে ওয়াদা করিয়ে বলল। আজ থেকে একুশ আমার ছেলে।এই একুশ কে খুঁজে পেয়েছি সেটা যেন তোরা আর আমি একমাত্র আল্লাহ পাক ছাড়া কেউ না জানে।যদি সমাজের কিছু নোংরা মানুষ জানতে পারে,পরে কিন্তু একুশ জারজ সন্তান হিসাবে আখ্যায়িত হয়ে যাবে।বাবা হয়ে এটা পরে মেনে নিতে পারবো না।আমার যতটুকু ভালবাসা আছে সব কিছু একুশে বড়া করার চেষ্টা করবো।জানিস আমার স্ত্রী সন্তানের জন্য পাগল হয়ে গেছে।
“না রাসেল ভাইয়া আমাদের জীবন যাবে।তার পরেও বলবো না।আপনার মত ভাল মানুষ এই পৃথিবীতে একটাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।এটা আল্লাহর রহমত। আজ থেকে সবাই জানবে একুশ আপনার ছেলে। রাসেল অনেক খুঁশি হয়ে চলে যায় বাড়িতে।এর পর নতুন দিগন্তের অগ্রসর হবে একুশ।ছয়মাস বছর খানিক পর আধ ভাষা কথা বলবে। বাবা জিজ্ঞেস করবে কেমন আছো।আর তাদের সন্তান ‘ছ’ উচ্চারণ না করে ‘ত’ উচ্চারণ করে বলবে ভাল আতি।এভাবেই চলে যাবে তাদের সুখের সংসার।হয়তো ভালবাসা পেয়ে ভুলে যাবে দুনিয়ার আসার কথা।এভাবেই চলে যাবে বছরের পর বছর।এক নতুন রূপে অবতীর্ণ হবে ভালবাসার ছোঁয়া পেয়ে।
-তুমি ভুল করিয়াছো।যে ভুলের কোন ক্ষমা তুমি পাবে না কখনো.!৪০কোটির শুক্রাণু দিয়ে একটা বাচ্চা ১০মাস ১০দিন গর্ভে লড়াই করে দুনিয়াতে ফিরে আসে।আর কিছু সন্তানের জায়গা মায়ের বুকের, আর কারোর কুকুর শেয়ালের মুখে।মনে রাখিবে অন্যায়ের অন্যায় তুমি সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে ভাল মানুষের বহুরূপী করতেছো।সময় বলে দিবে কত ধানে কত চাল।