অবন্তীর গল্পে আমিও ছিলাম

অবন্তীর গল্পে আমিও ছিলাম

আমি মানুষটা খুবই এককেন্দ্রিক।তাই তো ছোটবেলা থেকে আমার বন্ধুমহল গড়ে উঠে নি।কারো সাথেই খুব একটা মিশতে পারতাম না।কেনো যেনো মনে হতো কেবল নিজেকে নিয়েই ভাবা উচিত।

মানুষ অামাকে দেখলে কিছুটা বিরক্তিবোধ করে সেটা অামি জানি।অামি বুঝতে পারি।কতোবার চেষ্টা করেছি অাগামীকাল থেকে সবার সাথে মিশতে চেষ্টা করবো।কিন্তু সেই অাগামীকাল টা অার আসে নি। কোন ঘনিষ্ঠ-অাত্মীয় স্বজন এমনকি সমবয়সী কাজিনদের সাথেও কখনও ভালোভাবে মিশতে পারি নি। শুনেছি নিজের দুঃখ-কষ্ট বা অনুভূতি কারো সাথে ভাগাভাগি করলে কষ্ট কমে যায়।কিন্তু আমার তো সেই অর্থে কোন কস্টই পাওয়া হয় নি যে সেটা কারো সাথে ভাগাভাগি করতে হবে।দিনগুলি এভাবেই চলছিলো।

তবে জীবনে প্রথমবার অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতে শুরু করি যাকে নিয়ে তার নামই হলো অবন্তী। ও হ্যাঁ।আমার পরিচয়টাই তো দেয়া হয় নি।আমার নাম আকাশ।বর্তমানে কী করছি সেটা পরেই বলি।তবে ছাত্রজীবনে কখনোই খুব ভালো ছাত্র ছিলাম না।তবে একেবারে খারাপও ছিলাম না।শিক্ষকরা দুই ধরণের ছাত্রদের খুব মনে রাখে।এক হলো যারা পড়াশোনায় অনেক ভালো।আর এক হলো যারা একেবারে খারাপ। আমি ছিলাম মাঝামাঝি।কখনও যেমন ভালো ফলাফলের জন্য পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠা হয় নি ঠিক তেমনি কখনো খারাপ ফলাফলের জন্য স্যারদের কথাও শুনি নি।তাইতো আমাকে হয়তো ছাত্রজীবনের সিংহভাগ শিক্ষকরাই এখন চেনে না।যাই হোক সেটা নিয়ে এখন কোন অাক্ষেপও হয় না।

অবন্তীকে দেখেছিলাম একদিন স্কুল ছুটির পর।আমাদের স্কুলের পাশেই ছিলো গার্লস স্কুল। সেদিন কেনো যেনো অবন্তীর কথাই সারাদিন মনে হচ্ছিলো।চিন্তা ভাবনা যতই অন্য দিকে সরাতে চেষ্টা করছিলাম না কেনো বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলাম। তারপর থেকে মনের অজান্তেই অবন্তীকে এক নজর দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম।তবে তাকে কখনোই বুঝতে দেই নি যে আমি তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকি। অবন্তী ছিলো ঠিক আমার বিপরীত।আমি যতটা চুপচাপ আর এককেন্দ্রিক ছিলাম অবন্তী ছিলো ততটাই চঞ্চল আর মিশুক।সারাদিন দেখতাম বান্ধবীদের সাথে হৈ চৈ করে বেড়াতো।

দিনদিন অবন্তীর প্রতি দুর্বলতাটা বাড়তেই থাকলো। কিছুদিন পর জানতে পারলাম অবন্তী আমার এক ব্যাচ জুনিয়র।আমার মেট্রিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মাঝে মাঝেই অবন্তীর স্কুল থেকে ফিরে আসার সময় যেতাম। তখন টের পাই অবন্তীও আমাকে আড় চোখে দেখে।সে হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে।আমিও মনে মনে খুশিই হই।তবে খুশিটা আর স্থায়ী হয় না।আমার পরিবার ঢাকায় চলে আসে।আমি ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হই। অবন্তীর সাথে আর যোগাযোগের উপায় থাকে না।আমার তো মফস্বলে তেমন কোন বন্ধুও ছিলো না যে কারো মাধ্যমে অবন্তীর খোঁজ নিবো।দুই বছর কেটে গেলো ঢাকাতেই।অবন্তীর কথা মনে পড়তো খুব কিন্তু আমার করার কিছুই ছিলো না।

তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আবার ছুটে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় সেই মফস্বলে।মনে মনে ভাবছিলাম অবন্তীর কথাই।তাকে কী দেখতে পাবো কিনা শেই শঙ্কা কাজ করছিলো মনে।মজার ব্যাপার হলো আমি অবন্তীর বাড়ি চিনতাম না।শুধু কোন এলাকাটাতে থাকতো সেটাই জানতাম।

ছুটে গেলাম সেখানেই।একটা বাড়িতে দেখলাম বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। আমার মনের ধারণা সত্য প্রমাণিত হলো। আসলে সেখানে অবন্তীরই বিয়ের প্রস্তুতি চলছিলো। আমার মাথাটা কেমন যেনো লাগছিলো জীবনের প্রথম কোন কিছু হারানোর কস্ট অনুভব করছিলাম যেনো। বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমি সবেমাত্র প্রথম বর্ষে পড়ি।আর তাছাড়া এখনও অবন্তীকে আমার মনের কথাই কখনো বলা হয় নি। তবুও কেনো যেনো মনে হলো অবন্তীকে আমার ভালোবাসার কথা জানানো উচিত।হয়তো এখন না জানালে কোনদিন আর জানানোই হবে না।

আমি অবন্তীর বন্ধু পরিচয়ে অবন্তীর বাড়িতে গেলাম।অবন্তী আমাকে দেখে হয়তো চিনতে পেরেছে বলেই মনে হলো।অবন্তী নিজেই অবাক হলো।কারণ আমি তো তার বন্ধু না।এমনকি তার সাথে কোনদিন কথাও বলি নি।সে আমাকে চেনে কি না সেটাই জানি না ভালো করে।তবুও অবন্তী কেনো যেনো সব মানিয়ে নিলো। আমি যে তার বন্ধু না এটা বলে আমাকে বিপদে ফেললো না। আমি নিজেই নিজের প্রতি অনেকটা অবাক হয়েছি।এতো ঝুঁকি নিয়ে এতো বড় একটা সাহসী কাজ করলাম কীভাবে। যাই হোক বাড়িতে যখন ঢুকে পড়েছি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এক ফাঁকে অবন্তীকে ভালোবাসার কথাটা বলেই এখান থেকে চলে যাবো।কারণ বিয়ে বাড়িতে কোন ঝামেলা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য অামার ছিলো না।আর এমনও না যে অবন্তী আমাকে ভালোবাসে।আমি শুধু তাকে জানাতে চাই আমার গত কয়েক বছরের ভাবনা জুড়ে শুধু সে-ই ছিলো।

তবে একটা জিনিস খুব অবাক লাগলো অবন্তী আমাকে এতো সহজভাবে বন্ধু পরিচয় দিতে চাইলো কেনো??যাই হোক অতশত ভেবে আমার লাভ নেই। আমি শুধু আমার মনের কথা বলে দিতে পারলেই হলো। বিকালবেলা অবন্তীদের বাড়ির পুকুর ধারে বসে আছি আর ভাবছি অবন্তীকে বলাটা ঠিক হবে কি না।বিয়ের আগে একটা মেয়েকে ভালোবাসার কথা বলে কী কোন ঝামেলা পাকিয়ে ফেলবো কি না। হঠাৎ দেখি অবন্তী আমার দিকে হেঁটে আসছে।আমি নিশ্চিত এখন অবন্তীর জেরার মুখে পড়তে হবে।

>>অাপনি আকাশ তাই তো??(অবন্তী) আমি কিছুটা অবাক হলাম অবন্তী আমার নামও জানে।

>>আমি জানি না আপনি কেনো এখানে এসেছেন।আমার যতটুকু মনে পড়ে আপনি আমাদের পাশের স্কুলে পড়তেন।প্রায় সময় আপনাকে রাস্তায় দেখতাম। তারপর বন্ধু বান্ধবদের দিয়ে খোঁজ নিয়ে আপনার নামটা জানতে পেরেছিলাম।তবে তারপর আর আপনাকে কখনো দেখি নি।(অবন্তী) ৩-৪ বছর আগের আমাকে যে অবন্তী মনে রেখেছে সেটাই আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া ছিলো। অবন্তীই আমার সাথে কথা বলছিলো কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না।আসলে কী বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।

>>দেখুন আপনি এতো বছর পর কী উদ্দেশ্যে এসেছেন আমি জানতেও চাই না।আমি শুধু আপনার কাছে একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি।(অবন্তী) আমি একটু ভয় পেয়ে অবন্তীকে বললাম কথাগুলো বলার জন্য।

>>অাসলে আমাকে এই বিয়েটা আমার মতের বিরুদ্ধে করতে বাধ্য করা হচ্ছে।আমি বিয়েটা করতে চাই না।
আমি শাফিনকে অনেক ভালোবাসি।আমরা বিয়ের আগেরদিন পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।সব পরিকল্পনা করা আছে।আমার বান্ধবিরা আমাকে সাহায্য করবে।কিন্তু হঠাৎ করে আপনি উদয় হলেন কোথা থেকে সেটা বুঝতে পারছি না।আমি বুঝতে পারছি না আপনি কী করতে চাচ্ছেন।দেখুন আমি চাচ্ছিলাম না যে আমি পালানোর সময় আপনি কোনভাবে থাকবেন বা দেখবেন।তাই আপনাকে আগেই বললাম কথাগুলো।আর আপনাকে বন্ধু বলে পরিচয় দিয়েছি যাতে বিয়ের আগে কোনরকম সমস্যা বা অনাকাঙ্ক্ষিত কোন কিছু না ঘটে।আপনাকে যদি বন্ধু পরিচয় না দিতাম তবে আপনি হয়তো ঝামেলায় পড়তেন।এখন যেহেতু বন্ধু পরিচয় দিয়েছি তাই বন্ধু হিসেবেই একটা অনুরোধ করবো প্লিজ বিষয়টা কাউকে বলবেন না।(অবন্তী)

আমি বুঝতে পারছিলাম না কী বলা উচিত অবন্তীকে।আমি শুধু তাকে অাশ্বস্ত করলাম যে আমি কাউকে কিছু বলবো না।যাকে নিয়ে ৩-৪ বছর ধরে শুধু ভেবেই গেছি সে যে ক্ষণিকের জন্য হলেও বন্ধু পরিচয় দিয়েছে সেটাই তো অনেক।আর আমি তো তার সাথে কোনদিন কথাই বলি নি।শুধু মনের ভেতর অনুভূতিই জমিয়ে গেছি।তার মনে আমার জন্য ভাবনা না থাকাটাই স্বাভাবিক। আমি অবন্তীর বিয়ের আগের দিন বিকেলে কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে আসার জন্য রওনা দেই।আর আজ রাতেই অবন্তীর পালানোর কথা শাফিনের সাথে।

রাতে বাস ষ্টেশনে বসে আছি।সাড়ে এগারোটার বাস। মনে মনে ভাবছি অবন্তী কী পালাতে পারলো কি না?? কিছুক্ষণ পর কয়েকজন লোক এসে আমাকে ষ্টেশন থেকেই সবার সামনে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলো। অবন্তীদের বাড়িতেই আবার আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো। আমার উপস্থিতি তাদের বাড়িতে যথেষ্ট সন্দেহজনক ছিলো।তার ওপর আজ আবার কাউকে না বলে চলে এসেছি।তাদের ধারণা ছিলো অবন্তীর পালিয়ে যাওয়ার সময় সাহায্যকারী ছিলাম আমি।আর আমি হয়তো সব জানি।আমি তাদের অবন্তীর সন্ধান দিতে পারবো। আমাকে প্রথম তেমন কিছু করা হলো না।আমিও সব সত্য ঘটনাই তাদের বললাম।আর অনুরোধ করলাম অবন্তী আর শাফিনকে যাতে কিছু না করা হয়।

কিন্তু আমার কথা তাদের কাছে হাস্যকর ঠেকলো।অবন্তী আমাকে চেনে না অথচ আমি তার বিয়েতে এসেছি শুধুমাত্র আমার ভালোবাসার কথা বলতে এরকম কথা তাদের বিশ্বাসযোগ্য না হওয়াটাই স্বাভাবিক।রাতে আমাকে খুব মারধর করা হলো।তবে আমার কিছুই করার ছিলো না।কারণ আমি তো শাফিন যে কে সেটাও চিনি না।শুধু একবার অবন্তীর মুখ থেকে নামই শুনেছি।আমি শাফিন আর অবন্তীর সন্ধান কোথা থেকে দিবো??

সকাল বেলা শরীরে প্রচুর ব্যথা হচ্ছিলো।তবে সকালে দেখলাম অবন্তীকে ধরে আনা হয়েছে।সম্ভবত ওরা ধরে পড়ে গিয়েছিলো।তারপর আর আমার কিছু মনে নেই। ২ দিন পর আমি নিজেকে একটা হাসপাতালে আবিষ্কার করি।সম্ভবত তারা আমাকে এখানে ফেলে রেখে চলে গেছে।আমার বাবা-মা বসে আছে। আমার কী হয়েছিলো জানতে চাচ্ছে।আমি নির্বাক হয়ে বসে বসে অবন্তীর কথা ভাবছি।আমার বাবা-মায়ের ধারণা আমি হয়তো নিঁখোজ ছিলাম কারণ আমাকে কেউ কিডন্যাপ করেছিলো।আর এখন আমাকে ফেলে রেখে গেছে।তারা আমাকে আর ঘাটালো না।আমি ফিরে এসেছি এতেই তারা খুশি।

আমার অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। হাঁটতেই পারছিলাম না।না হয় তখনই আবার চলে যেতাম অবন্তীর কী অবস্থা সেটা দেখার জন্য।মনে মনে ভাবছি অবন্তীকে কী জোর করে তার বাবার পছন্দের ছেলের সাথেই বিয়ে দেয়া হলো কি না?? ২ দিন পর কিছুটা সুস্থ হতেই আমি আবার সেই মফস্বলে ছুটে গেলাম। বিয়ে তো শেষ।তবুও বাড়িতে বেশ ভালোই লোকজন। তবে সবার মুখেই কেমন যেনো মলিন ভাব।আমি সরাসরি অবন্তীর বাবার কাছে গেলাম। লোকটা পাথর হয়ে আছে।কিছুই বলছে না।অনেক জনকেই জিজ্ঞেস করলাম। তারপর একজন আমাকে বললো অবন্তীকে জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ায় বিয়ের আগেই সে আত্মহত্যা করেছে ২ দিন আগে।

অবন্তী আত্মহত্যা করায় তার লাশটাও জানাযা ছাড়াই দাফন হয়েছে।কিন্তু আমার অবন্তীর মৃত্যুটা কী আত্মহত্যাই ছিলো??তাকে তো জোর করে মেরে ফেলা হলো।কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসলো আর আমাকেও ধরে নিয়ে গেলো।কারণ আমিও এই আত্মহত্যার পেছনে তাদের সন্দেহের তালিকায়। আমি অবন্তীর কবরটাতে একবার যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু যেতে দেয়া হয় নি। পরে অবশ্য পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয় আমার কোন সম্পৃক্ততা না পেয়ে।শুনেছিলাম অবন্তীর বাবাও নাকি পড়ে আত্মহত্যা করেছে অপরাধবোধ থেকে। লোকটার কান্ড দেখে আমার হাসি পাচ্ছে।এই লোকটার জন্যই কতগুলো জীবন ধ্বংস হলো।তবে আমার ধারণা ছিলো তিনি আত্মহত্যা না করলেও মেয়ের আত্মহত্যার জন্য তিনিই হতেন পুলিশের ১ নম্বর আসামি।

অবন্তীকে এখনো খুব করে দেখতে ইচ্ছে করে।মাঝে মাঝে এটুকু ভেবেই শান্তি পাই যে অবন্তীর জীবনের শেষের দিকের গল্পটাতে আমার তো খানিকটা অস্তিত্ব ছিলো।কিংবা সেই ক্লাস টেনের গল্প টা যেখানে অবন্তী নিজে থেকেই আমার নাম জানতে পেরেছিলো। অন্তত এটুকু হলেও তো বলতে পারি যে অবন্তীর গল্পে আমিও ছিলাম।
আর আমার গল্প? আমার গল্পের পুরোটা জুড়েই তো অবন্তী।

ও হ্যাঁ।আমি বর্তমানে কী করছি সেটা তো বলা হয় নি। বর্তমানে আমাকে সুস্থতা লাভের জন্য একটা হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা আছে।আমি নাকি মানসিকভাবে অসুস্থ।আমি কী সুস্থ আছি কি না আছি সেটা নিয়ে কখনো চিন্তাই করি না।অবন্তীর গল্পে যে আমি ছিলাম এটাই আমার সার্থকতা।আজ শুনেছি একটা লোক আসবে আমার সাথে দেখা করতে। তার নাম শাফিন।সে আসলে তাকে বলবো যে অবন্তীর গল্পে আমিও ছিলাম।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত