ডেঙ্গু! বলা হচ্ছে দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ আকার ধারণ করে এগিয়ে আসছে। এগিয়ে আসছে কথাটা খুব সম্ভব এখন বললে চলবে না; বলতে হবে এসে গেছে। ফিলিপাইনে যেখানে এই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে রেড এলার্ট ঘোষণা করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী ভারতে যখন ফ্রি মেডিকেল সেন্টার চালু করা হয়েছে,আমরা ঠিক তখন- অপেক্ষায় আছি এটা কতদূর আগায় দেখতে।
আমরা বাঙ্গালী আসলেই ঠিক এমন। দুইদিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান,হবিগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন; মারা গেছে ভার্সিটি কোচিং করতে আসা তুবা। আজ মারা গেলেন সুস্থ্য মন্ত্রনালয় উপসচিবের স্ত্রী। শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে ৬মাসের সেই অবুজ শিশুটিও! মৃত্যু শয্যায় ৪হাজার প্লাস লোক। ডেঙ্গুতে প্রতিদিন ৫০০+ লোক কেবল ঢাকাতেই আক্রান্ত হচ্ছে। তবুও আমরা নীরব; আমাদের সরকার লেভেলের লোকজন আমিন নিয়ে জায়গা মাপছে। এ মশাটা ঢাকা উত্তরের সো এটা উত্তরের মেয়র দেখবে,এটা দক্ষিণের সুতরাং এটা নিধন করবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
এ যেন এক কাদা ছুড়াছুড়ির হলিখেলা। এদিকে বলিরপাঠা হচ্ছে অসহায় সাধারণ পাব্লিক। এখনো ডেঙ্গু সারাদেশে মহামারী আকারে ছড়ায়’নি;যদিও এর আংশিক দেশের ৫০টা জেলায় পাওয়া গেছে।
যদি আল্লাহ না করে- আফ্রিকায় বিস্তার করা মহামারী ইবোলা কিংবা নিকা ভাইরাসের মত ডেঙ্গু সারাদেশে ছড়িয়ে যায়? ভাবতে পারছেন! কি ঘটতে চলেছে? আচ্ছা- একটু জনসম্পৃক্ত থাকা ভান করে বসে থাকা কিছু লোক/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের দিকে একটু তাকাই চলেন। যারা আমাদের সিম্প্যেথীই পুজি করে ব্যবসা করেন- অথবা আমাদের রক্তচোষা টাকা দিয়ে সম্পত্তির পাহাড় গড়েন,তারা ঠিক কি করছেন আমাদের এই দুর্দিনে।
প্রথমেই সালমান এফ রহমান সাহেবের দিকে আঙ্গুল তুলছি,তুলতে হচ্ছে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের লিস্টে যিনি বর্তমানে অবস্থান করছেন; বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান জনাব এফ রহমান কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেন আমাদের মত সাধারণ ভোক্তাদের দিয়ে! অথচ এই ভোক্তারাই আজ ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু শয্যায়; উনি কি চাইলেই ১০০টা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করার টাকা জোগাড় করে দিতে পারতেন না? এত সম্পত্তির পাহাড় গড়ে উনারা কি করবেন? যদি ভোক্তারাই মরে যায়? আসুন দেখি ব্র্যাকের চেয়াম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদকে। বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং ধনী এনজিও প্রতিষ্টান ব্র্যাক।
উনি কি চাইলেই পারতেন না,১০০০ রোগীর (গরীব) সম্পূর্ণ চিকিৎসার ভার বহন করতে? যে এনজিওর মূল ক্রেতাই দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত,সেই সব নিম্ন মধ্যবিত্তদের একটু সহযোগিতা করলে কি উনার সম্পত্তি খুব কমে যেতো? প্রান আরএফএল গ্রুপ কিংবা স্কয়ার গ্রুপের কি ব্যাংক ব্যালেন্সে ৪/৫ হাজার কোটি টাকার থেকে একটুও কম আছে? এখান থেকে ১কোটি টাকাও খরচ করলে কি খুব লস হয়ে যেতো উনাদের ? প্রান চাইলেই এক হাজার বোতল পানি আর খাদ্য ফ্রি দিতে পারতো না? স্কয়ার বা ইনসেপটা গ্রুপকি চাইলেই পারতো না দশ হাজার লোকের ফ্রি চিকিৎসা করাতে? নাহ উনারা পারবেন না! কারণ উনারা ভোক্তার থেকে ব্যবসাকে আগে দেখেন।
যেখানে পৃথিবীর বড় বড় প্রতিষ্টান “আমাজন,আলিবাবা,নিশসান কিংবা মাইক্রোসফট” তারা ব্যবসার আগে দেখে ভোক্তার সুবিধা। যেকারণে অনেক সময় দেখা যায়- ব্যবসার অবস্থান ডাউনে এনেও ভোক্তাকে সুবিধা দেন উনারা। ঠিক সেখানে আমাদের দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা ভোক্তাকে জলে ডুবিয়েও চান নিজেদের সম্পত্তির পাহাড় গড়তে। সম্পত্তির পাহাড় না থাকলে নিজেকে দেশের শীর্ষ ধনীর খেতাব দিবেন কিভাবে? অনেক সময় দেখা যায়- রমজান মাসে,আরব দেশগুলো পণ্যের উপর ৪০ থেকে ৬০% ছাড় আনেন; ঠিক আমাদের দেশের সিন্ডিকেটরা সুযোগ পেয়ে পণ্যের উপর ৪০ থেকে ১০০% বেশি মূল্য হাকান। এগুলা সত্যিই খুব দুঃখজনক।
লিখাটাতে খুব কষ্ট নিয়ে রিকুয়েস্ট করছি,দেশের সে সকল বিত্তবানদের; যারা একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই জেগে উঠবে নতুন করে হাজারো পরিবার। বেচে যাবে টাকার অভাবে চিকিৎসা না করাতে পারা অসহায় লোকগুলো। এর জন্যে উনাদের সম্পত্তির ১% ও কমবে বলে আমি মনে করি না। আসুন আমরা সচেতন হই। হারপিক আর ব্লেসিং পাওডার ছিটানোর মত গুজব থেকে নিজেদের দূরে রাখি। আল্লাহ সবাইকে সুস্থ রাখুন।