হঠাৎ মেসেজ রিকুয়েস্ট আসল,, এড একসেপ্ট করুন। বিয়ের প্রস্তাব পাঠাব। প্রথমে দেখে ই কেমন একটা অবাক হলাম। কৌতুহল বসত আইডি তে ঘুরতে গেলাম। এ কি দেখছি,, বয়স ষাট এর কাছাকাছি হবে। সে কি না আমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবে। বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে নাকি। নাতিপুতির সাথে ছবি আপলোড করা। পিচ্চি একটা মেয়ে র সাথে ছবি দিয়ে ক্যাপশন,, আমার ইনি..! বুড়ো বয়সে এত ! মরার জন্য প্রস্তুত না হয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কি করব ভাবছি। নাহ থাক একটা মাত্র এসেছে মেসেজ তারাতাড়ি রিয়েক্ট করার দরকার নাই থাকুক। পরদিন কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে আবার লগ ইন করলাম। আবার চোখ পড়ল আগের জায়গায়। লেখা,,” মাশাআল্লাহ আপনি দেখতে ভালো বোরখা পরেন খুব ভালো লাগছে এটা। আজকাল কার মেয়ে। উচ্চতা, হাটা সব ঠিক আছে। পছন্দ হয়েছে। ” মেসেজ টা দেখে কি রিয়েক্ট করব বুঝতে পারছি না। কিভাবে কোথা হতে শুরু করব ভাবছি।
তার মধ্যে পাশের বাসার আন্টির আগমন। চেয়ে দেখলাম উনার ভাব ভঙ্গি কিছু অন্যরকম। আম্মুর সাথে কি যেন ফিসফিস করছেন। একটু শোনলাম। তাতে কি হয়েছে ভাবি। এসব কিছু না। বিয়ে দিলে ঠিক হয়ে যাবে। এ আর এমন কি..! কথা টা শুনে বুক টা ধকক করে উঠল, কি এমন কি। মানে ঐ বুড়া টা নয় তো..! আন্টি এদিক দিয়ে আসতে ই সরে গেলাম। আমাকে দেখতে পেয়ে বললেন,, পড় মা পড় সারাজীবন ই পড়তে পারবা সমস্যা কি। বুঝলাম না কিসের ইঙ্গিত দিলেন। ঐ বুইড়া টা সব জেনে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় নি তো। টেনশন এ আমার গলা শুকিয়ে আসছে। কিন্তু ভয় পেলে আমার চলবে না। বিহিত তো করতে ই হবে। আবার ঢুকলাম। এই যে বুইড়া খাটাশ কিসের প্রস্তাব পাঠাবেন ! দাঁত যেগুলা আছে সেগুলা ও আর থাকবে না। ৫ সেকেন্ডের মধ্যে রিপ্লে। বুইড়া এত এক্টিভ।
— আরে দাঁত তো সবগুলা ই আছে। চিন্তার কোনো কারণ নাই। বলে কি, হারামজাদা। এক পা কবরে এক পা ডাঙায়। তারপরও এত শখ। এই ব্যাটা, এত শখ এই বয়সে..! কি আছে এত?
— আরে সব আছে। রুপ, যৌবন, টাকা পয়সা সব সব। শুধু রাজি হও।।
ষাটর্ধো বয়সে রুপ, যৌবন..! দেখে ভিষণ ভাবে একটা ভীষম খেলাম। এদিকে আমার আম্মু লুকিয়ে লুকিয়ে কি যেন খেয়াল করছেন। বুঝলাম ঐ আন্টির ডোজ টা এপ্লাই করছেন। হঠাৎ কাছে এসে বললেন,, কি রে তুই প্রেম টেম করিস নাকি..! কার সাথে এত সিরিয়াস হয়ে মোবাইল টিপছিস..? আম্মুকে কি বলে দিব! নাহ, আম্মু তো মনে হয় জানে। কি করব। ব্যাটা কে একলা সাইজ করতে হবে। আম্মু গেলেন। আবার দেখলাম। মেসেজ, যা চাও তাই পাবে। শুধু হা বল। আমিও বললাম, যান নিজের বয়সি কাউকে খোঁজেন। লজ্জা শরম নাই কয়টা করবে বিয়া..? আরে একটাও হয়নি। কি বল। একমাত্র তোমার ছবি দেখে পছন্দ হয়েছে। না বল না। হানিমুনে প্যারিস যাবে। বুইড়া লোক,, আপনার সাথে প্যারিস কি কোনো পাগল পাবনায়ও যাবে না। বুড়ো টার রিপ্লে নাই। বুঝলাম কাজ হয়েছে। অন্যদিকে আবার বাসায় বিয়ের কথা। ফিসফিস আওয়াজ। বুঝলাম না কি হচ্ছে। লাস্ট মেসেজ, প্রস্তাব দিছি, রাজি হয়ে যাও। ভালো হবে। এদিকে বাবা মা সবাই রাজি বিয়ে তে। আমার দিকে নজর নেই। কি হচ্ছে। বাপের চাচার বয়সি লোকের সাথে বাবা বিয়ে নিয়ে এত খুশি। নাহ মানব না। এসব।
আজ দেখতে আসছে। আম্মুকে বললাম এখানে বিয়ে না দিয়ে বিষ এনে দাও খেয়ে চলে যাই ওপারে। নাহ, আম্মু বলল,, সব ভালো হবে। একটু সমস্যা তো থাকে ই এসব ব্যাপার না। তাই বলে এসব। আর না, সবার সামনে ঐ বুড়ো কে দেখিয়ে বলে দিলাম। আমি বিয়ে করব না। মত নেই । সবাই তাকিয়ে আছে। বাবা রাগে টমেটো। বুড়ো হেসে বলল। আমাকে কেন বিয়ে করবে। আমার মেয়ের নাতি র জন্য তোমাকে পছন্দ করেছি। আর নাতবউ এর সাথে তো একটু মজা করতে ই পারি। তলে তলে বুড়ো দের এত আপডেট ভার্সন বের হবে জানা ছিল না। নাতবউ এর সাথে ফেইসবুকে মসকরা।।।