গাছ বা‌লিকা

গাছ বা‌লিকা

একটা গাছ‌কে আমার ভীষণ ভয় লা‌গে ।দীপা‌দের বা‌ড়ি যাওয়ার প‌থে এই আধামরা জবা ফু‌লের গাছটা প‌ড়ে । এমন বৃক্ষ টাইপ জবা ফু‌লের গাছ জীব‌নে দে‌খি‌নি । আম গা‌ছের মত গোড়া মোটা,‌বিশাল ডাল পালা ছড়া‌নো বৃক্ষ । গাছটার মরা মরা অবস্থা হ‌লেও প্রচুর ফুল ফোঁটে গা‌ছে । গাছটার নিচ দি‌য়ে ‌যে‌তে গা ছমছম ক‌রে । গাছটা জায়গাটা‌কে ছায়ায় ঢে‌কে রা‌খে । আমি দীপা‌দের বা‌ড়ি‌তে পড়া‌তে যাই । তা‌দের বা‌ড়ি‌তে যাওয়ার সময় এই গা‌ছের নিচ দি‌য়েই যে‌তে হয় । এক‌দিন পড়া‌তে পড়া‌তে দীপা‌কে ব‌লে‌ছিলাম

– ঐ জবা ফু‌লের গাছটা তোমরা কাট‌তে পা‌রো না?
– ‌কি ব‌লেন দাদা! পাগল ! ঐ গাছটা আমার ঠাকুরদাদার মা লা‌গি‌য়ে‌ছিল । পৈতৃ‌কি সম্প‌ত্তি আমা‌দের ওটা । আর পূ‌জোর ফুল সব সময় ঐ গাছ থে‌কেই নেয়া হয় । দূর্গা পূ‌জোর সময় তো পু‌রো গ্রা‌মের সবাই লাইন ধ‌রে ফুল নি‌তে আসে ।
– হ‌য়ে‌ছে থা‌মো । তোমা‌কে বড় হ‌য়ে হি‌স্ট্রি‌তে পড়া উচিত । কিছু জান‌তে চাই‌লেই ইতিহাস বলা শুরু ক‌রো ।
– আচ্ছা আর বল‌বো না ।

দীপা হালকা ধমক খে‌য়ে চুপ কর‌লো । সব ব্যাপা‌রেই মে‌য়েটা ইতিহাস ব‌লে । খা‌লি যেটা জানা দরকার সেটা জা‌নে না। ঐ জবা ফু‌লের গা‌ছে একটা প্র‌তিমার মত মে‌য়ে ব‌সে থা‌কে । দীপার মত বয়সীই ম‌নে হয় । ওদের বা‌ড়ি‌তেই না‌কি থা‌কে মে‌য়েটা । এই মে‌য়েটাই অর্ধমৃত গাছটা‌কে আরও ভয়ঙ্কর ক‌রে তু‌লে‌ছে । প্রথম যে‌দিন দীপা‌দের বাসায় আসি সে‌দিন রাত ছিল,‌কিছু দেখ‌তে পা‌রি‌নি আশেপা‌শে । প‌রের দিন যখন আস‌ছি , জবা গাছটার কাছাকা‌ছি আসার সা‌থেই একটা কা‌লো কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু কর‌লো ।

কি ভয়ঙ্কর দাঁত আর লালা পড়া মুখ । ছি‌ড়ে খা‌বে এমন অবস্থা । লজ্জায় দৌড়ও দি‌তে পার‌ছি না । এমন সময় একটা শীষ বাজ‌লো,আর কুকুরটা দৌ‌ড়ে গেল গা‌ছের নি‌চে,শান্ত হ‌য়ে ব‌সে পড়‌লো । তখনই গা‌ছের দি‌কে নজর গেল, তিন চার বছ‌রের বাচ্চার মত দু‌টো পা ঝুল‌ছে । একটা বাঁ‌শের ক‌ঞ্চির মত চিকন পা । কি বিশ্রী ! অসম্ভব খা‌টোও পা দু‌টো । কিন্তু উপ‌রের দি‌কে তাকা‌তেই দে‌খি, একি! এতো সুন্দর একটা মে‌য়ে ! আবার পলক ফে‌লে তাকালাম ঠিকঠাক মত দেখার জন্য । আবারও তাই দেখলাম,পা দু‌টো বা‌শের মত বিকৃত আর কোমড় থে‌কে অনেক সুন্দর একটা মে‌য়ের অবয়ব । দে‌খে এবার ভ‌য়ে দৌড়ই দিলাম । ম‌নে হল,‌কোন অতিপ্রাকৃত জি‌নিস দেখ‌ছি । পড়া‌নোর সময় দীপা‌কে জি‌ঙ্গেস করলাম

– তোমাা‌দের বা‌ড়ি‌তে কোন ভূত প্রেত নেই তো?
– ‌কেন কিছু দে‌খে‌ছেন?
– না । কিন্তু কেমন যেন অশরীরী লাগ‌লো ।
– আপ‌নি তাহ‌লে ঠিকই ধ‌রে‌ছেন । আমারও মা‌ঝে মা‌ঝে এমন ম‌নে হয় । রা‌তে ম‌নে হয় বা‌ড়ির ছা‌দে কেউ হাঁটে । ম‌নে হয় পিছ‌নে কেউ দাঁ‌ড়ি‌য়ে আছে । এজন্য তো মা মন্ত্র প‌ড়ি‌য়ে এনে‌ছে ঠাকু‌রের কাছ থে‌কে ।

– ঐ জবা গাছটা‌তে কিছু ঘ‌টে না‌কি?
– ‌কি জা‌নি! আমি তো দে‌খি‌নি । ত‌বে তারা মা‌ঝেমা‌ঝে কি দে‌খে যেন ।
– তারা মা‌নে,কারা?
– ধুর,একটা মে‌য়ে ব‌সে থা‌কে না,ওর নাম, তারা ।
– ও । ও কে হয় তোমা‌দের?
– ‌কেউ না । ওর কেউ নাই জন্য বাবা মা থাক‌তে দি‌য়ে‌ছে ।
– ও কি অসুস্থ?
– হুম । জ‌ন্মের পর পো‌লিও হ‌য়ে‌ছিল না‌কি । তখন থে‌কে এমন । বে‌শি দূর যে‌তে পা‌রে না হেঁটে হেঁ‌টে,তাই গা‌ছে উঠে ব‌সে থা‌কে সারা‌দিন ।

ভুত প্রেত ভে‌বে হুদাই দীপার সা‌থে আলাপ ক‌রে সময় নষ্ট করলাম । যাওয়ার সময় আবার মে‌য়েটা‌কে দে‌খেতে দেখ‌তে গেলাম । এবারও কুকুরটা পিছু নিল । এবার মে‌য়েটা গান গাওয়া মাত্র কুকুরটা আমার পিছু ছে‌ড়ে তার কা‌ছে গেল ।

যাওয়া আসার প‌থে বহু‌দিন আমি মে‌য়েটা‌কে দেখলাম । এর মা‌ঝে দীপার ভন্ডা‌মিও আবিষ্কার হল । ভূত ভূত ক‌রে সে এক‌দিন লাফ দি‌য়ে জড়ায়ই ধর‌লো । প‌রে বুঝলাম সে প্রে‌মে প‌ড়ে‌ছে,তাই এসব ইচ্ছা ক‌রে ক‌রে । দীপাও খুব সুন্দরী,‌কিন্তু আমার পছন্দ না । আবার ঐ গা‌ছে ঝু‌লে থাকা তারার মত সুন্দরী না । এদি‌কে কুকুরটার অত্যাচা‌রে আমি অতিষ্ট । এম‌নি‌তেই কুকুর খুব ভয় পাই । চি‌লে‌কোঠার ছোট রু‌মে যে ক‌লে‌জের বন্ধুর সা‌থে আমার বসবাস ,তা‌কে ঘটনাটা বললাম । টাকার দরকার,‌টিউশ‌নি ছাড়‌তে পার‌ছি না । আবার টিউশ‌নির প‌রি‌বেশটা একদম বির‌ক্তিকর । বন্ধুর নাম কাব্য । সে জান‌তে চাইলো

– গাছটা‌কে তোর অপছন্দ কেন । জবা ফু‌লের গা‌ছে কি সমস্যা থাক‌তে পা‌রে?
– খুব অদ্ভুত গাছটা । এক‌দিক থে‌কে দেখ‌লে মানু‌ষের মাথার মত,আবার আরেক দিক থে‌কে দেখ‌লে কোন ভয়ঙ্কর প্রাণীর মত ম‌নে হয় । আর ঐ মে‌য়েটা গা‌ছে কি কি সব বাঁধে,প‌লি‌থিন,কাপড় কি কি সব জঙ্গল । দে‌খে‌তে আরও জ‌টিল লা‌গে ।

– তাহ‌লে মে‌য়েটা‌তে সমস্যা ।
– না । সেটা ম‌নে হয় না । প্রথম‌দিন ওর পা দে‌খে ভয় পে‌লেও,এখন দে‌খি সে পা ঢে‌কে গা‌ছে ব‌সে থা‌কে । পা বা‌দে তার সব সুন্দর । কি সুন্দর চুলও । যখন ছে‌ড়ে দেয় অনেক লম্বা চুল ।
– ‌প্রেমে পড়‌লি না‌কি ভাই !
– আরে না ।
– ‌দে‌খিস,‌প্রে‌মে পড়‌লে ত্রিভুজ প্রেম হ‌বে ,‌তোর ছাত্রী তোর প্রে‌মে আর তুই গাছ বা‌লিকার প্রে‌মে । হি হি‌ হি
– ও । একটা সমস্যা আছে ।
– ‌কি সমস্যা!
– কুকুরটা । ভীষণ ভয় পাই । আত‌ঙ্কে থা‌কি ।
– ধুর বোকা ,এটা কোন সমস্যা! এক‌দিন লা‌ঠি দেখা‌বি।
– আমি? আমি দেখা‌বো লা‌ঠি,তার আগেই আমি শেষ ।
– ধুর ব্যাটা,‌কেমন পুরুষ তুই । আচ্ছা যা ,‌তোর কুত্তা সমস্যা সমাধা‌নের দা‌য়িত্ব আমার ।
– ‌কেম‌নে?
– ‌নি‌য়ে যা এক‌দিন সা‌থে । মা‌নে টিউশ‌নি শে‌ষে ফেরার সময় কল দি‌বি । আমি আশেপা‌শেই থাক‌বো ।
– Ok.

কাব্য গুরু দা‌য়িত্ব কাঁধে নিল । টিউশ‌নি শে‌ষে কাব্য‌কে কল দিলাম “ বের হ‌চ্ছি ।“ বা‌ড়ির এড়িয়া পার না হওয়া পর্যন্ত কুকুরটা পি‌ছে পি‌ছে আসে দাঁত ক্যালা‌তে ক্যালা‌তে । আজ‌কেও আস‌লো । কাব্য রাস্তার মাথায় দাঁড়া‌নো । সে প্যা‌কে‌টে ক‌রে খাবার এনে‌ছে । কুকুরটা‌কে ডাক‌ছে। কুকুরটা আস‌ছে না আর সাম‌নে । খাবার দে‌খে আস‌লো । আমি কাব্য‌কে বললাম,”‌বিষ মিশাস‌নি তো আবার?” কাব্য বল‌লো, “ আরে না । খা‌লি খাওয়া শুরু কর‌লে ওকে ঠ্যাঙ্গা মারা হ‌বে।“ কুকুরটা খাওয়া শুরু কর‌লো,ঐ দি‌কে তারা গান ধ‌রে‌ছে,এখন কুকুরটা খাওয়া ছে‌ড়ে দৌড় দি‌চ্ছি‌লো । কাব্য দৌড় দে‌খে তাড়াতা‌ড়ি ক‌রে একটা লা‌ঠি দি‌য়ে ঢিল দিল । এক ঢি‌লে কুকুরটা পিছ‌নের অংশটা প‌ড়ে গেল। আবার কষ্ট ক‌রে উঠে চিৎকার চিৎকার কর‌তে কর‌তে যা‌বে তার আগে আরেকটা ঢিল লাগ‌লো পা‌য়ে । তারপর আমরা উধাও হ‌য়ে গেলাম,আর কুকুরটা ছ্যাচড়া‌তে থাক‌লো ।  মহা বাঁচা বাঁচলাম । প‌রের দিন গেলাম টিউশ‌নি‌তে,শা‌ন্তিই শা‌ন্তি । নির্ভ‌য়ে গেলাম,‌ফিরলাম । ত‌বে অবাক ব্যাপার,তারাও নাই গা‌ছে । সেটা দে‌খে মন খারাপ হল । প‌রের দিনও দে‌খি গাছ বা‌লিকা গা‌ছে নাই । ফেরার সময় দে‌খি,গাছ বা‌লিকা গা‌ছের নি‌চে ব‌সে । আমা‌কে দে‌খে ছ্যাচড়া‌তে ছ্যাচড়া‌তে এগি‌য়ে আস‌লো ।

– দাদা,একটু কথা ব‌লি?
– ব‌লো ।
– আমার ভূতু‌কে দে‌খে‌ছেন?
– কুকুরটা? না তো ।
– ও‌ ।
– ‌কেন? ওকে খুঁ‌জে পা‌চ্ছি না তো ।

আমি অবাক হ‌য়ে পঙ্গু তারার চো‌খের দি‌কে তা‌কি‌য়ে দেখলাম,‌চোখ ছলছল । না চো‌খের পা‌নি দে‌খি‌নি । দে‌খে‌ছি শুধু তার চো‌খের দু‌টো ম‌ণি । একটা ম‌ণি হালকা বাদামী রং আরেকটা ম‌ণি হালকা সবুজ রং । দে‌খে অবাক হলাম । এমনও হয় না‌কি! এসে বহু স্টা‌ডি করলাম ,ক‌রে জানলাম,হ্যা হয় এমন । Heterochromia ব‌লে এটা‌কে । প‌রের দিন টিউশ‌নি‌তে গেলাম শুধু তারার চো‌খের ম‌ণি দেখ‌তে । ত‌বে তারার দেখা মিল‌লো না । তাই দীপার সা‌থে আলগা পি‌রি‌তি করলাম,কথা শোনার জন্য

– তারা,‌কোথায় থা‌কে?
– এখা‌নেই । ঐ দী‌প্তি দি‌দির সা‌থে । মা‌নে কা‌জের দি‌দি ।
– ওর কেউ নাই ।
– না । মা ম‌রে গে‌ছে । ওর জ‌ন্মের পর পরই ।
– বাবা কই? বাবা নাই? জা‌নো না ।
– জা‌নি । কিন্তু বলা নি‌ষেধ । কারণ কেউ জা‌নে না, আমি এসব জা‌নি ।
– আমা‌কে ব‌লো, আমি কাউ‌কে বল‌বো না ।
– ওর বাবাও নাই । ও আমার বাবার ছোট ভাই,মা‌নে কাকার মে‌য়ে ।
– ‌তোমার কাকা?
– হ্যা । আমার ঠাকুরদাদার আরেকজন স্ত্রী ছিল,‌কেউ জান‌তো না ।

তার একটা ছে‌লে ছিল । ঠাকুরদাদার মারা যাওয়ার আগে আগে না‌কি ঐ কাকা তার প‌রিবার,মা নি‌য়ে এসে‌ছিল । যেন বাবার সম্প‌ত্তি তারাও কিছু পায় । তারপর না‌কি এ বা‌ড়ি‌তেই তারা থাক‌তো । প‌রে কাকা‌কে কারা জা‌নি খুন ক‌রে‌ছিল । তখন না‌কি ,কাকী গর্ভবতী ছিল । কাকা মারা যাওয়ার পর না‌কি কাকী পাগল হ‌য়ে গি‌য়ে‌ছিল । তারপর , তারার জন্ম হল । তারাও হল এমন পঙ্গু । কতজন কত কথা বল‌তো,শুন‌তে না পে‌রে না‌কি,কাকী ঐ জবা ফু‌লের গাছটা‌তেই ফাঁসি দি‌য়ে‌ছিল । সেইজন্য তো তারা গা‌ছে ব‌সে ব‌সে কথা ব‌লে আর গাছটা‌তে কি কি সব মঙ্গল সুতা বাঁধে । গাছটাও কেমন আধামরা হ‌য়ে যা‌চ্ছে । কাউ কে এসব ব‌লি‌য়েন না কিন্তু । মা পি‌ঠের ছাল তু‌লে নুন দি‌য়ে সিদ্ধ কর‌বে শুন‌লে । বু‌ঝে‌ছেন?

– হুম । ওর কুকুরটা খুঁজে পে‌য়ে‌ছে?
– ‌কি জা‌নি । আগে গা‌ছে ব‌সে থাক‌তো,এখন পু‌রো গ্রাম ছ্যাচ‌ড়ে ছ্যাচ‌ড়ে কুকুর খুঁজে বেড়ায় ।
– ঐ কুকুরটা ওর খুব পছন্দ না!
– হুম । জান ওটা ওর । ছি,‌কি নোংরা কুকুরটা নি‌য়ে এক থা‌লে ব‌সে খায় । ওর মতই কুকুরটা ।
– ওর মত মা‌নে? কথাবার্তা ঠিক ক‌রে বল‌তে পা‌রো না !
– ভগবান সাক্ষী । ওর মতই চোখ । দু‌টো চো‌খের রং দু রকম ।
– কুকুরটার?
– হুম ।

ওর ও এমন,কুকুরটাও এমন । কোথা থে‌কে কোন গ্রাম থে‌কে যে এসে জু‌টে‌ছিল ওর কা‌ছে,‌কে জা‌নে !
আমি পাগ‌লের মত কুকুর খুঁজ‌তে বের হলাম । তার আগে কাব্য‌কে কল দি‌য়ে বললাম সব কিছু । আমরা যে অপরাধ ক‌রে‌ছি,তার জন্য আমরা দুজ‌নেই দু:‌খিত ছিলাম । সন্ধ্যার দি‌কে গ্রাম্য এক ডাক্তা‌রের চেম্বা‌রের সাম‌নে ভূতুর খোঁজ দিল একজন । যে‌য়ে দে‌খি তাই ।

ডাক্তার একজন ভা‌লো মানুষ,‌সে যে‌তে যে‌তে প‌থে কুকুরটা দে‌খে মায়া ক‌রে নি‌য়ে এসে প্লাসটার ক‌রে দি‌য়ে‌ছে পা দু‌টো । যত্ন নি‌য়ে চেম্বা‌রের সাম‌নে খাওয়া‌চ্ছেনও । আর বাজা‌রের লোকজন হাস‌ছে,বল‌ছে “ডাক্তার তো কুকু‌রের ডাক্তার হ‌য়ে গে‌ছে।“ আমার আর কাব্যর মো‌টেও হা‌সি পা‌চ্ছে না,বরং কান্না পা‌চ্ছে । আতঙ্কে আগে আমি থাকতাম,এখন দেখলাম কুকুরটা আত‌ঙ্কিত । কো‌লে নি‌য়ে দীপা‌দের বা‌ড়ি ফিড়লাম,সারা রাস্তায় কুকুরটার চোখ দু‌টো দেখলাম । বা‌ড়ি যে‌য়ে শুনলাম , ঐ দিন তারা বা‌ড়ি ফে‌রে‌নি । তা‌তে কারও মাথা ব্যথা নেই,শুধু দীপা আর দীপার বা‌ড়ির কা‌জের লোক চি‌ন্তিত, “ মে‌য়েটা কুকুর খুঁজ‌তে বের হল,কুকুর তো ফির‌লো,‌মে‌য়েটা তো ফির‌লো না ।

আমি আর কাব্য আর দীপা দা‌য়িত্ব নিলাম । দীপা‌কে বললাম,”আমরা খুজ‌ছি,আর এর ম‌ধ্যে ও বা‌ড়ি ফির‌লে কল দি‌য়ে জানা‌তে।“ বহু খুজলাম । রা‌তেও খুজলাম বাসায় না ফি‌রে । সকা‌লের দি‌কে একটা দোকা‌নের বে‌ঞ্চি‌তে যখন ঝিমু‌চ্ছি তখন দীপার কল এল “ দাদা,ও বা‌ড়ি ফি‌রে‌ছে । বা‌ড়ি চ‌লে আসুন ।“ খু‌শি‌তে আত্মহারা হ‌য়ে বা‌ড়ি গেলাম । যে‌য়ে দে‌খি চিতা প্রস্তুত । মে‌য়েটা পা‌নি‌তে প‌ড়ে ,‌ভে‌সে ছিল । সাঁতার জা‌নে না,রক্ষা হয়‌নি । কুকুর শো‌কে , কোথায় যে‌য়ে প‌ড়ে‌ছিল পা পিছ‌লে । এর‌কিছু‌দিন পর ‌থে‌কে জবা ফু‌লের গাছটা আর ফুল দেয়‌নি,শুধু মরা পাতা দি‌য়ে‌ছিল আমা‌কে ।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত