পাড়ায় বিয়ের ধূম পড়েছে। আমি কেন যে কালো হলাম? বিধাতা আমায় কেন কৃষ্ণ বর্ণে সৃ্ষ্টি করলেন? পাড়া পড়শি বিয়ে খেয়ে খেয়ে আমাদের বাড়িতে আসছে পান খেতে। ইনিয়ে বিনিয়ে রসিয়ে রসিয়ে বিয়ে বাড়ির আলাপ চারিতা ঝাড়ছেন। আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে মনে হয় আমার কলিজা কষিয়ে রান্না করে খাচ্ছেন। আমার কি অপরাধ? আমি কেন সব সময় এমন পেঁচানো কথায় দগ্ধিত হই? আমার কি ইচ্ছে করেনা বর সোহাগী বউ হতে? মা আর দাদী মিলে পানের বাটা থেকে পান বানিয়ে মহিলাদের এগিয়ে দেন আর অন্যদের বিয়ে বাড়ির আলাপ গিলছেন। মহিলারা বলে, ‘হায়গো আফা আমাদের চারুর যদি গায়ের রঙটা একটু উজ্জ্বল হতো তাহলে আর কোনো চিন্তা ছিলনা। ওর সম বয়সী সবার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে দেখতে খারাপ লাগছে আমাদের।” “কেন আপনাদের খারাপ লাগে? হাতের পাঁচটা আঙ্গুল সমান? আমি পড়ছি, আরো পড়বো। পড়া শেষ হলে চাকুরি করবো। আন্টি আমার বিয়ে নিয়ে আপনাদের এত ভাবতে হবেনা।” “এই চারু চোপা করিস কেন? এমনিতেই তো দেখতে কালো তার উপর যদি এমন চোপা থাকে কে বিয়ে করবে?”
“আমি বিয়ে করবো না বললাম তো?”
মা আমায় বকছেন। উনারাও যা নয় তাই শুনিয়ে গালাগাল দিচ্ছেন। মেজাজের বারোটা বাজিয়ে তবে এখান থেকে গেলেন সব আন্টিরা। মাকে বলি তুমি সবাইকে পান সাজিয়ে দিবে না। আমার এসব কথা শুনতে ভালো লাগেনা। আরেকদিন যদি এমন কর আমি কিন্তু বাড়ি ছেড়ে দু’চোখ যেদিকে যায় চলে যাব। মাকে বললাম, তোমার মেয়ে কালো হয়েছে এতে তোমার মঙ্গল হয়েছে। কোনো ছেলে আড় চোখে চায়না, বাড়িতে প্রেমের কলঙ্ক নিয়ে বিচার আসেনা। এটা ভালো নয়? এ পর্যন্ত ছত্রিশবার বউ সেজে বরের বাড়ির লোকদের সামনে গেছি আর কত? আমার কেন মরণ হয়না? আমার পরিবারের লোকেরাও হয়েছে এক তামশা। যেখানেই শুনবে পাত্র দেখতে চায় সেখানেই মনে হয় আমাকে জোর করে পাঠিয়ে দিবেন। বিয়ে ছাড়া মনে হয় দুনিয়াতে আর কোনো কাজ নেই।
পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি তবুও যেন বাবা মা খু্শি নয়। বিয়েটা কিভাবে দিবে সেই ফন্দী আঁটে। যেন তেন কথা নয় ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছি। না, আমাকে আরো শক্ত হতে হবে। পড়া লেখা করবোই যা হয় হবে। ওমা মা বাবা দেখি পরামর্শ করে, চোখে ইশারা করে। সম্পদ তো আল্লাহ কম দেয়নি তাও কঞ্জুসি ভাবটা আর গেলোনা।
“বাবা সত্যি করে কও, লেখাপড়া করাইবা না?” “এত লেখাপড়া দিয়ে কী হবে মা? স্বামীর বাড়ি গিয়ে হাড়ি ঠেলতে হবে।” মা বলে শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে লাভ কী? আমার চোখে আর কিছু ভাসেনা। মানু্ষ কত সখ করে একটা বাচ্চাকে উচ্চ শিক্ষিত করতে। কিন্তু তারা পারেনা ছেলে মেয়ে পড়তে চায়না বলে। আমি পড়তে চাই কপালে দেয়না। কী করবো উপায় বের করতে হবে। দেখুন মূর্খ বড়লোক হলে হবে কী শিক্ষার মর্ম তারা বোঝেনা।চাচাতো ভাইটা এবার ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে তার কাছে একটু ভালো পরামর্শ পাওয়া যায়। ওরা মনে করে বিয়ে দিলেই মেয়ে সুখী হবে আসলে তা সত্য নয়। ঐদিন যে মেয়েটির বিয়ে হয়েছে তার স্বামী রোড এক্সিডেন্টে মারা গেলো। শশুড়বাড়ি লোকেরা তিনদিন যেতেই মেয়েকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। তাতে কী হলো? সে সুখী হয়েছে?
বাস্তব দেখাই তাও মা বাবা পড়াবে না। আমার জন্য ছয় ভরি গয়না বানিয়ে রেখেছে। বিয়েতে আমাকে দিবে বলে।
জুয়েল ভাইকে বললাম, ভাই গয়না নিয়ে আমি পালাবো জীবনে আর বাড়ি আসবোনা। তুমি শুধু আমাকে ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিয়ে আসবে বাকীটা আমি নিজেই ব্যবস্থা করে নিবো।
আমার দাদীটা বুড়ো হলেও বোঝেন লেখাপড়া কি জিনিস? উনারা কিছু বোঝেন না। বড় একখান চিঠি লিখে টেবিলের উপর রেখে গয়না নিয়ে আজানের আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। আমার ভাই আগেই বড় রাস্তায় অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। অন্ধকার বলে বাড়ির চার পাশটা ভালো করে দেখতেও পারিনি। চোখের কোণে জমা বিদ্রোহের নোনা জল সমুদ্র হয়ে ঝরছে। জুয়েল ভাই আমাকে শান্তনা দিয়ে বললেন, “লেখাপড়া করে বড় হও চারু, দেখবে জামাইরা তোমার পিছনে লাইন দিবে। এই কালো চামড়াই একদিন মেকী সাদা চামড়া থেকে বেশি দামী হবে।” উনার কথার প্রত্যেকটা কথা আমার মনে ধরেছে। আমার ভবিষ্যৎ গড়ার পাথেয় হিসেবে কাজে দিবে।
শহরে পৌঁছে গয়নার দোকানে গিয়ে আগে হাতে কিছু টাকা নিয়েছি। বাকী টাকা ব্যাংকে রেখে ভর্তি বই যা কিছু লাগে সব কিনে দিয়ে গেলেন জুয়েল ভাই। জানি চুরি করে গয়না আনাটা আমার উচিৎ হয়নি। কি করবো বলুন? গয়নাগুলোতো আমার জন্যই রেখেছিলো। আমার সুখের জন্য যা রেখেছে তা দিয়ে আমার জীবন গড়তে পারলে চার ডাবল ফেরত দেয়া যাবে। শুরু হলো আমার নতুন জীবন।।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি বাড়ির কথা খুব মনে পড়ছে। আমার মত আরো শতশত বোনেরা পড়তে আসছে তাদের বাবা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে। আমার কপালে জুটলো না। কেঁদেছি চারপাঁচ দিন তারপর মনটাকে শক্ত করে পড়ায় মন দিলাম। ভিপি ম্যামকে বলে দু’টো টিউশনি নিয়েছি কলেজের কাছেই। খুব সাদামাটা জীবন পার করছি ফার্স্ট ইয়ার। বাবা মায়ের গয়না বেচার টাকা এখন আর লাগেনা। আমি যা রোজগার করি তা দিয়েই সেকেণ্ডইয়ার শেষ করেছি। টিউশনে যতটুকু সময় বাদে বাকী সময় বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকি। জুয়েল ভায়ের মাধ্যমে বাড়ির খবরা খবর নেই। মাঝে মাঝে লুকিয়ে দাদীর সাথে কথা কই। চিঠি পড়ে বাবা মা বলেছেন আমি নাকি মরে গেছি তাদের জীবনে। ছোট্ট বোনটার কথা খুব মনে পড়ে নীরবে মায়ার অশ্রু ঝরাই।
সবার গার্ডিয়ান কত পদের খাবার রান্না করে নিয়ে আসে। আমিও বারান্দার রেলিং ধরে দূরে তাকিয়ে কল্পনা করি এই বুঝি বাবা মা আসছেন। মিছে কল্পনায় বুকের পাঁজর ভাঙ্গে। হুহু করে কেঁপে ওঠে বুক। রুমম্যাটরা যেদিন বাড়ির খাবার খায় আমি রুমে থাকিনা। ছাদের সিঁড়ি ঘরে না হয় বারান্দায় পায়চারি করে বই গলধঃকরণ করি। খাতা কলম ছাড়া অতিরিক্ত কিছু কেনাকাটা করিনা। সবাই ক্রিটিসাইজ করে কত কথা বলে। আমি নাকি ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর হয়ে যাবো। কারো কথায় কান দেইনি আমি। ভিপি ম্যাম আমাকে খুব আদর করেন তাই কেউ আমার সাথে রেগিং করার সাহস পায়নি।
প্রত্যেকটা পরীক্ষায় আমি ফার্ষ্ট হই। স্যার ম্যাডামদের নজরে আমি সেরা স্টুডেন্ট। হঠাৎ জুয়েল ভাই বলে দাদীর অবস্থা খুব খারাপ। কী করে দাদীকে দেখবো পরাণ জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ভিপি ম্যাম বাবা মায়ের নাম্বার চায় কথা বলার জন্য কিন্তু জুয়েল ভাই বলল, “এতে হিতে বিপরীত হবে।” জুয়েল ভাই লুকিয়ে দাদীর কয়টা ছবি পাঠায়। আসার সময় ফ্যামিলি বাঁধানো বড় পিকটা নিয়ে এসেছিলাম বলে মাঝে মাঝে দেখি সবাইকে। জানেন হোস্টেল সুপারের দুই বাচ্চাকে পড়িয়ে আমি পনেরো হাজার টাকা পাই। আর দুই ঈদে বোনাস সহ বিশহাজার টাকা পাই। উনারা আমাকে যে থ্রীপিচ দেন তাতেই আমার চলে যায়। বাইরে দু’টো পড়াই বিশহাজার টাকা। প্রথম বছর বাবা মায়ের গয়নার তিন লাখ টাকা থেকে এক লাখ টাকা খরচ করেছিলাম। এখন মাসে মাসে খরচ বাঁচিয়ে এক লাখ টাকা মিলিয়ে তিন লাখ টাকা পূরণ করে দিয়েছি। সামনে অনার্স ফাইনাল ইয়ার তাই একমাস পড়াবোনা বলে দিয়েছি। সবাই খুশি মনেই মেনে নিয়েছে। কিন্তু রুমম্যাটরা পার্টি করছে আমি টাকা দেইনি বলে গাল ফুলিয়ে আমাকে রুম থেকে বের করে দিয়েছে।
আমি কিছু মনে করিনি সোজা হোস্টেল সুপার ম্যামের বাসায় গিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসে পড়েছি। রাত বারোটায় এসে দেখি দরজা লাগিয়ে ভেতরে ডান্স করছে বড় লোকের আদরের দুলালিরা। কোথায় শোব ভেবেই পাচ্ছিনা। দরজায় অনেকবার কড়া নেড়ে লাভ হয়নি নিরুপায় হয়ে ভিপি ম্যামকে ফোন করেছি। উনি আর হোস্টেল সুপার ম্যাম এসে দরজা ধাক্কাচ্ছে তাও খুলছেনা বিধায় ওদের নাম লিখে প্রিন্সিপাল ম্যামের কাছে জমা দেয়। দারোয়ান ডেকে দরজা ভেঙ্গে দেখে ওরা নেশা খেয়ে আমার পড়ার টেবিলের সমস্ত বই খাতা ছিড়ে এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখেছে। ছোট্ট ট্রাঙ্কটা ভেঙ্গে কাগজ পত্র কাপড়চোপড় সব ফেলে দিয়েছে। কী এমন অন্যায় করেছি আমি? পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ি কারো ভালো মন্দে থাকিনা। শুধু উনাদের পার্টিতে জয়েন্ট করিনি বলে? আমি কালো সরল সাদামাটা বলে?
আর মাত্র পাঁচদিন পর ফাইনাল। আমার কান্না দেখে হোস্টেলের সবাই একত্র হয়ে ওদের বিচার দাবী করে। রাত বাজে একটা শ্লোগানের পর শ্লোগান দিয়ে ক্যানভাস গরম করে তোলে। প্রিন্সিপাল ম্যাম ক্ষেপে গিয়ে গার্ডিয়ান কল করে ইমার্জেন্সি আসতে বলে। উনারা হয়তো ঢাকার বাসিন্দাই তাই একঘন্টার মধ্যেই গার্ডিয়ান চলে আসলেন। সমস্ত বই কাপড় চোপড় রেখে আধঘন্টার মধ্যে ওদেরকে হোস্টেল থেকে বের করে দিলেন। আমি প্রিন্মিপাল ম্যামের পা দু’খানা ধরে অনেক কেঁদেছি ওদেরকে মাফ করার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি ওরা নিয়ম ভঙ্গ করে বড় অন্যায় করেছে। রাতে একা আমি রুমে ঘুমাইনি। ভিপি ম্যামের রুমে নিচে তোষক পেতে রাত কাটিয়েছি।
ধূরর এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় পড়ায় মন দেয়া যায়? খুব কান্না আসছে। ওদের লাইফটা শেষ। পরের দিন বড় বড় নেতা সহ গার্ডিয়ানরা অফিসেে এসে চিল্লাপাল্লা শুরু করেছে। আমার ভয়ে বুক কাঁপছে। প্রিন্সিপাল স্যার থানায় ফোন করে গেইটে পুলিশ গার্ডের ব্যবস্থা করে আমাকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন। দুইজন সাংবাদিক এসে রুমের কয়টা ছবি নেয়ার পর ম্যাম আমাকে বই বুঝিয়ে বাকী সব অফিসে জমা রাখেন। দু’টো ভদ্র পড়ুয়া মেয়েকে আমার রুমে সেট করে দিয়ে যান। যাই হোক মন্ত্রীদের ফোনে ওদের ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
তবে হোষ্টেলে থাকতে পারবেনা, পরীক্ষা শেষ হলে সোজা বাসায় চলে যাবে। আমি খুব খুশি হয়েছি।
একমাস খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে ফাইনাল দিলাম। ম্যাম বলেছেন আমাকে এখানে থেকে মাস্টার্স করার সুযোগ করে দিবেন। আজ আমার দাদী মূমুর্ষ অবস্থা। বারবার আমার নাম করে দেখতে চাইছেন। ভিপি ম্যাম আরো চার পাঁচজনকে নিয়ে আমাকে সাহস দিলেন। ব্যাংক থেকে মোট পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। দাদী আমাকে খুব ভালোবাসতেন। তাই দেখার জন্য প্রাণটা ছটফট করছে।
বাড়ি চলে এলাম। সোজা দাদীর ঘরে চলে আসলাম। মা বাবা আমাকে দাদীকে দেখতে দিবেনা। গালিগালাজ করে আমাকে জোর করে আটকে দিচ্ছেন। ভিপি ম্যাম জোর করে বাবা মায়ের হাত ছাড়িয়ে আমাকে দাদীর কাছে নিয়ে গেলেন। দাদী আমাকে কপালে চুমো দিয়ে বললেন, “অনেক বড় হও দাদু।” আমি আয়তুল কুরসি পড়ে দাদীর গায়ে ফুঁ দিচ্ছি। দাদী শান্তিতে চোখ বুজলেন আর তাকাননি। আমি দাদীর ওখান থেকে বেরিয়ে ব্যাগ থেকে পাঁচ লাখ টাকা বের করে বাবার হাতে দিয়ে বললাম, “আমি প্রয়োজনে গয়নাগুলো নিয়েছিলাম। আমাকে তোমরা চোর বলতে পারো। তবে যে টাকা দিয়েছি তার থেকে আরো বেশি গয়না কিনতে পারবে।”
আমার চোখে বিষাদের জল জমা হয়েছে। বাড়ি ভর্তি মানুষ তাই সিনক্রিয়েট করলাম না। ছোট্ট বোনটা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমার কলিজা ফেটে যাচ্ছে। এতদিন পরে বাড়ি এলাম বাবা মা আমার সাথে কথা না বলে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। বোনটাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, “তুই এইচ,এস,সি পরীক্ষা দে আমি তোকেও ঢাকা নিয়ে যাবো।”
গ্রামের সবাই আমাকে দেখে কান্না করছে। আমারও চোখে মায়ার বন্যা। আমি বাবা মায়ের পায়ে ধরে সালাম করতে গেলে উনারা দূরে চলে যান। উনাদের জন্য আনা কাপড় চোপড় আমার ছোট্ট বোনের হাতে দিয়ে আমরা ঢাকায় চলে আসি।
সত্যি আমি অপরাধি, চোর। আর কখনো বাড়ি আসবো না উনাদের জ্বালাতে। অনার্সের রেজাল্ট দিয়েছে আমি ফার্স্টক্লাশ ফার্স্ট হয়েছি। অনেকেই তাদের বাচ্চাদের পড়াতে অফার দিচ্ছে। আমি মাষ্টার্সে ভর্তি হয়ে বাইরে ছাত্র পড়াই। ইতিমধ্যেই আমার জন্য বিদেশী স্কলার্শিপের ডাক পড়েছে। কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই আমেরিকাতে যাওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু স্যার ম্যামরা আমাকে ভার্সিটিতে থাকার জন্যই রিকোয়েস্ট করেন। আমার মনটা বিষিয়ে গেছে দেশে থেকে কি করবো? মা বাবা আমাকে দেখতে চান না। তার থেকে ভালো আমি সুযোগের সদ্ব্যবহার করি। মাস্টার্স শেষ করে আমি পা বাড়াই বিদেশের মাটিতে। কিন্তু আমি উনাদের কথা দিয়েছিলাম ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে আবার ঢাকা ভার্সিটিতে জয়েন্ট করবো।
আমি এয়ারপোর্ট দাঁড়িয়ে আছি স্যার ম্যাম আমাকে বিদায় দিচ্ছে। সাথে নিয়ে যাচ্ছি আমার ফ্যামিলির একটা ফটো। জন্মদাতা বাবা মাকে কখনো ভুলা যায় না। আশায় আছি হয়তো কোনো একদিন মা বাবা আমাকে তাদের মায়ার আঁচলে ফিরিয়ে নিবেন।