বউকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যাবো ৷ উঠলাম লোকাল বাসে ৷ আমি বসলাম বাসের একদম সামনে, জানালার পাশে ৷ পাশে যে বউ বসবে এটা তো স্বাভাবিক বিষয় ৷ কিন্তু না, সে আমার পাশে না বসে মহিলা সিটে এক মহিলার পাশে বসলো ৷ বউকে বললাম,
_ওখানে কেন? এখানে বসো!
_না, তুমিই বসো! এখানেই ভাল আছি ৷
মনে মনে বউকে গালি দিলাম আর ভাবতে লাগলাম যদি পাশে একটা সুন্দরী মেয়ে এসে বসতো তবে কতইনা ভাল হতো ৷ ভাবাও সারা একটি অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে বাসের ভেতর এসে হাজির, আমার দিকে সে এক নজর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তারপর বাসে খালি সিট না পেয়ে আমার পাশেই বসে পড়লো ৷ মেয়েটা আমার পাশে বসাতে বউ দেখি ব্রয়লার মুরগির মত চোখ বানিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো, বুঝতে পারলাম এখন সে রাগে সাপের মত ফোসফোস করবে ৷ কিন্তু এমনটা করে লাভ কি? মেয়েটা আমার গা-ঘেষে বসলো ৷ এটা দেখে বউ সহ্য করতে পারলো না ৷ আমার ফোনে ম্যাসেজ দিলো, সে লিখছে,
_ঐ খাটাস, তুই মেয়েটারে বসতে দিলি কেন?
_আমি কই বসতে দিলাম? সেই তো বসে পড়লো ৷
_তুই না করতে পারলি না ?
_কেন না করবো? মেয়েটা কই বসতো বলোতো?
_ওরে আমার দরদ রে ৷ তোর কোলে বসাতে পারলিনা ? এক্ষণি মেয়েটাকে সিট থেকে উঠে যেতে বল!
_আমি পারবোনা, তুমিই বলো ৷ আমার বউ দাজ্জাল মহিলাদের মত গলা বানিয়ে বলল
_এই মেয়ে ওঠ সিট থেকে ওটা আমার সিট ৷ মেয়েটাও দেখি কম যায় না, সেও উঁচুস্বরে বলল
_আপনার সিট কিন্তু সিট খালি রেখে এতক্ষণ ওখানে কি করছিলেন? নাকি পুরুষ মানুষের স্পর্ণ পেতে ইচ্ছা করছে? তাই অন্যের সিটে বসার ধান্ধা, তাইনা? মেয়েটার এমন কথা শুনে মনে হলো আমি মাত্রই উড়োজাহাজ থেকে ঠাস করে মাটিতে পড়লাম ৷ মেয়ের সাহস দেখে আমার প্রাণ যায় অবস্থা! আমার বউ বলল,
_এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না, মুখের উপর তর্ক করো?
_সাহসের কি দেখছেন ? যেই দেখলেন সুন্দরী একটা মেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলের পাশে বসেছে ওমনি হিংসা হলো? তার পাশে বসার জন্য ছটফট করছে আপনার মন তাইনা? দেখে তো মনে হয় বিবাহিতা, জামাইকে আনতে পারেননি?
_আরে, বোকা মেয়ে; যার পাশে বসে আছিস সেই তো আমার জামাই ৷
_হা হা হা! ভালই তো জোকস বলতে পারেন ৷ সে হবে আপনার স্বামী? কোন এঙ্গেলে? যাইহোক, সিট পাবেন না!
_বিশ্বাস হয়না সে আমার স্বামী?
_প্রমাণ করুন? আমার বউ আমার ফোনে কল দিল ৷ দুজনে কথা বললাম ৷ মেয়েটাকে বউ বলল
_এবার তো বিশ্বাস হলো?
_ওরকম কন্টাক্ট নাম্বার আমার সংগ্রহেও আছে ৷
মেয়েটাও আমার নম্বরে ফোন দিল ৷ আমরা ফোনে কথাও বললাম ৷ কিন্তু অবাক করা ব্যাপার মেয়েটা নাম্বার পেল কই? মেয়েটা আমার বউকে বলল
_তার নাম্বার আপনার সংগ্রহে আছে এর জন্য যদি তাকে স্বামী হিসেবে দাবী করেন, তবে সেও আমার স্বামী ৷ বউ এবার নরম হয়ে তুই থেকে তুমিতে উন্নতি হয়ে আমাকে বলল
_তুমি কিছু বলোনা কেন ?
_কি বলবো?
_কি বলবা মানে, বাড়িতে যাইয়া লই শুধু দেখাব মজা! বউয়ের কথায় কান দিলাম না ৷ মেয়েটা আমার দিকে আরো ঘেষে বসলো এবং জড়িয়ে ধরে বলল
_জান, আমাকেও জড়িয়ে ধরো তুমি ৷
আমি বোবার মত শুধু মেয়েটার কান্ডকারখানা দেখে ও উপভোগ করে যাচ্ছিলাম ৷ তাকে কি জবাব দিব এর কোন ভাষা আমি খুঁজে পেলাম না ৷ বউ শুধু রাগে বেলুনের মত ফুলছে ৷ সে মেয়েটাকে বলল
_নির্লজ্জ বেহায়া মেয়ে বাসভর্তি লোকের সামনে পরপুরুষকে জড়িয়ে ধরে আছে ৷
_তাতে আপনার সমস্যা কোথায় ৷ আমার জান পাখিটাকে আমি জড়িয়ে ধরবো আপনার কি সমস্যা?
_আমার সমস্যা যে সে আমার স্বামী, তুই স্বামীর মর্ম কি বুঝবি বেহায়া মেয়ে?
_মুখ সামলে কথা বলবেন, পারলে দেখান তো একটা ছবি যেখানে আপনারা একত্রে জড়িয়ে ধরে আছেন! পারবেন দেখাতে? মেয়েটার কথা শুনে বউ এবার চুপ হয়ে রইলো ৷ কারণ সে কোনদিন আমার সাথে একত্রে কোন সেলফি বা ফটো ওঠেনি ৷ মেয়েটা তার ফোনে থাকা বেশকিছু পিকচার দেখালো এবং বউকে বলল
_দেখুন, সে আমাকে কত রোমান্টিকভাবে জড়িয়ে ধরেছে!
বউ পিকচার দেখে আরো রেগে গেল ৷ মনে হলো তার চোখ দিয়ে আগুন বের হয়ে আমার গায়ে লাগবে ৷ আমি বুঝতে পারলাম পিকগুলো এডিট করা, এডিটও চমৎকার হয়েছে ৷ আমি ভুলেই গেছিলাম যে বাসের লোকজন আমাদের নোটিশ করছে ৷ খেয়াল করে দেখলাম সকলে ভূ়ত দেখার মত করে তাকিয়ে তাকিয়ে আমাদের সিন দেখছিল ৷ বউ আমাকে তার ৩২টা দাঁত কটরমটর করে বলল
_তোর খবর আছেরে, তুই শুধু বাড়ি চল ৷ বাস গন্তব্যস্থলে পৌঁছলে মেয়েটা আমাকে ছেড়ে দেয় ৷ এতক্ষণ আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিল ৷ সে বাস থেকে নামার পূর্বে বললো
_জান, আসি; ফোন দিব বাড়ি গিয়ে, ভাল থাকো ৷ আমি কোন জবাব দিলাম না ৷ ভাবতে লাগলাম সে আমাকে কেমনে চিনে? বউয়ের সাথে তার বাপের বাড়ি পৌঁছলাম ৷ পৌঁছেই বউ আমার গায়ে ডামুর ডুমুর লাগিয়ে দিল কয়টা এবং বলল
_বল, কতদিনের সম্পর্ক ঐ মেয়ের সাথে? কতদিন তোরা নোংরামি করছিস? পরকিয়া করা ছুটাবো আজ তোকে!
শ্বাশুরি আম্মা এসে বলল
_ঐ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? জামাইটা এতদিন পর এল, ওর সাথে যুদ্ধ লাগায় দিলি ৷ কিছুক্ষণ পর কোথা থেকে যেন ৫-৬ জন সুন্দরী মেয়ে এল ৷ এসেই তাদের মধ্যেকার সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটা বললো
_ভাইয়া একটা সেলফি হবে?
_ শিওর ৷ সে আমার কাঁধে তার কাঁধ রেখে সেলফি উঠল ৷ বউ পাশেই ছিল এটা দেখে তার রাগ আর কে দেখে! আরেকটা মেয়ে বলল,
_আপনাকে একটা কিস করবো, এটা আমার স্বপ্ন, প্লিজ না করবেন না ৷ ভাবলাম কপালে হয়তো কিসটা করবে ৷ কিন্তু না, ঠোঁটেই কিস লাগিয়ে দিল ৷ আমার বউ মেয়েটার চুলের মুঠি ধরে বলল
_এই ছেনাল ওটা কি তোর ভাতার যে কিস করলি?
_আরে ছাড়ো তো বাচ্চা একটা মেয়েকে মারছো কেন হুদায়?
_তোর ভন্ডামীর শেষ দেখে ছাড়বো ৷ ভাই আসুক ৷ ওরে দিয়ে তোরে সোজা করবো ৷ শালা বাবু কোথা থেকে যেন তার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এল ৷ তার গার্লফ্রেন্ড আমাকে দেখেই খুশিতে আটখানা হয়ে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বলল
_ভাইয়া, আপনি এখানে? আপনি জানেন আমি আপনাকে কতটা ভালবাসি? আপনি কত্ত কিউট! শালা বাবু বলল
_ঐ তুমি না আমাকে ভালবাসো? দুলাভাইকে কেন আবার?
_আরে বোকা, আমি তো ভাইয়াকে অন্যরকম ভাবে ভালবাসি, তাইনা ভাইয়া? আজকে রনিদের বাসায় শুধু আপনার জন্য থাকবো ৷ রাত্রীতে আপনার সাথে মজা করবো ৷ এই কথাটা শুনে বউ বলল
_আরেকটা নির্লজ্জ মেয়ের উদয় হয়েছে ৷৷একটা পুরুষের জন্য এত মেয়ে পাগল দেখে অবাক আমি! আজকাল কার মেয়েদের কি লজ্জা শরম উঠে গেছে? এই মেয়ে তুমি রাত্রীতে কি মজা করবা? মেয়েটা বলল,
_সেটা রাত হলেই দেখতে পারবেন ৷
মেয়েটা আমার হাত ধরে একটা রুমে নিয়ে গেল ৷ সাথে আর কেউ এলোনা ৷ বউ এটা দেখে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো ৷ রাতে শ্বশুর আব্বা বাড়ি এলে বউটা তার বাপের নিকট কাঁদতে কাঁদতে বলে
_তুমি আমার জীবনটা নষ্ট করলা আব্বা, আমাকে তুমি একটা লম্পটের হাতে তুলে দিছ ৷ যার এত্তগুলো মেয়ের সাথে সম্পর্ক ৷ আমার ছোট ভাইয়ের বান্ধবীর সাথেও তার পরকিয়া চলছে ৷ শ্বশুর আব্বা এটা শুনে বলল
_কিসব বলছিস মা? তন্ময় তো এমন না ৷ তুই তো বিয়ের সাত মাস পর্যন্ত ওর চরিত্রের প্রশংসা করতি ৷ হঠাৎ কি হলো?
_তখন বলতাম কারণ এসব তখন দেখিনি ৷ কিন্তু তলে তলে যে এসব করছে তা কে জানতো? আব্বু, তুমি কিছু একটা করো নইলে আমি বিষ খাব ৷ রাত্রীতে খাওয়া দাওয়ার পর শালা বাবুর গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে লুডু খেলছিলাম হঠাৎ শ্বশুর আব্বা এসে বলল,
_জামাই বাবু, তুমি নিয়মিত ছোটপর্দায় নাটক করছ ৷৷ মেয়েরা তোমার প্রতি পাগল হবে, তাই বলে কি তাদেরকে তুমি এতো সুযোগ দিবে? ঘরে তোমার বউ আছে তার কথা ভুলে যেওনা ৷ যাস শালা, আমি তো সত্যি সত্যিই ভুলে গেছিলাম যে আমি টিভি পর্দার জনপ্রিয় নাট্য-অভিনেতা ৷ নিজেকে নিয়ে কেমন যেন গর্ববোধ হলো ৷ মনে হলো মুই আজ কি হনুরে ৷ শ্বশুরকে পাত্তা না দিয়ে বললাম,
_আব্বা, এসবের জন্য চিন্তা কইরেন না ৷ আমার প্রতি মেয়েরা একটু আকর্ষিত হবেই ৷ অভিনেতা বলে কথা ৷ রাত পার হলে সকালে টাউনের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে লাগলাম ৷ ওহ নো, কয়েকটা আন্টি এসে আমাকে ধরে ফেলল তারপর একটা আন্টি বলল
_আজ তোকে ছাড়ছিনা ৷
তোর জন্য আমার মেয়ে ঠিকমত খাচ্ছেনা ৷ তোর প্রেমে আমার মেয়ে পাগল হয়ে গেছে ৷ আগে আমার বাসায় চল ৷ গেলাম তার বাসায় ৷ তার মেয়েটাকে দেখালো ৷ ওহ নো, মেয়েটা এত মোটার মোটা ৷ আমাকে মেয়েটা দেখেই আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো ৷ এমন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়লো যে বেডের উপর এমন ভাবে ধপাস করে পড়লাম, মাজাটা মনে হলো ভেঙ্গেই গেছে ৷ এরপর মেয়েটা হিংস্র বাঘের মত আমাকে যা তা ভাবে চুমু দিতে লাগলো ৷ এখান থেকে ছাড়া পেয়ে আরেকটা মহিলা নিয়ে গেল তার বাসায় ৷ একটা অর্ধপাগল মেয়ে ৷ দেখি সে আমাকে দেখে কান্না করে ফেলল ৷ তারপর বলা কওয়া নেই জড়িয়ে ধরলো ৷ তারপর বলল
_আশা পূরণ হয়েছে চলে যান এবার ৷
এভাবে সারাদিন চলতে লাগলো ৷ সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলাম ৷ মুখভর্তি মেয়েদের চুমার দাগ ৷ কখনো ভাবিনি এমনটা হবে ৷ বউ আমার এমন অবস্থা দেখে নাটকের অভিনেত্রীদের মত বিলাপ করতে করতে কাঁদতে কাঁদতে বলল
_আমার কি সর্বনাশ হইলোরে, লম্পটটা অন্য মেয়ের সাথে কিসব করে আসছেরে, ও মা ও মা, ও মা কি জামাই আমার জুটলো রে ৷ বউকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলাম ৷ গোসল করে বউয়ের নিকট গেলাম এবং বললাম
_তোমার জন্য আজ এমনটা হল ৷ বললাম প্রাইভেট কারে করে যাই ৷ তুমি বললে না, আজ বাসে যাব ৷ তোমার জন্য এত বিড়ম্বনায় পড়তে হলো ৷৷আমি কি জানতাম এই শহরের মেয়েরাও আমার জন্য পাগল ৷
_ভাল হয়েছে ৷ আমার জন্য তোমার কখনো ইন্টারেস্ট ছিলনা তেমন ৷ ভাবতাম তুমি নাটকেই রোমান্টিক বাস্তবে না, কিন্তু নাটকের চেয়ে বাস্তবে বেশি রোমান্টিক শুধু আমার নিকট না ৷ বুঝলাম বউটা কষ্ট পেয়েছে ৷ অভিমানে এমনটা বলছে ৷ তার অভিমান ভাঙ্গানোর জন্য জড়িয়ে ধরতে গেলাম ৷ কিন্তু সে সরিয়ে নিল এবং বলল
_এসবের দরকার নাই, আমাকে একা থাকতে দাও ৷
বুঝলাম বউটা বড় ধরণের কষ্ট পায়ছে ৷ তাই শ্বশুর শ্বাশুরিকে বিদায় জানিয়ে বিকেলে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম ৷ আবারো বাসে, এবার বউ আমার পাশে বসা ৷ কিন্তু হঠাৎ একটা সুন্দরী মেয়ে এসে আমার বউকে বললো,
_প্লিজ আপু, আপনার নিকট অনুরোধ সিটটাতে আমাকে একটু বসতে দিন ৷
আপনি তো আপনার শখ পূরণ করছেন, এবার আমার শখটা পূরণ করতে দিন ৷ আমার অনেক প্রিয় অভিনেতা সে ৷ মনপ্রাণ উজার করে তাকে ভালবাসি ৷ প্লিজ একটু বসতে দিন ? বউ কিছু না বলে সিট থেকে উঠে মহিলা সিটে বসলো ৷ মেয়েটা আমার সিটে বসে পড়লো ৷ কন্টাক্ট নাম্বার চাইলো ৷ দিতে চাইলাম না কিন্তু জোরাজুরি করতে লাগলে দিতে বাধ্য হলাম ৷ হঠাৎ আচমকা কিস করে বসলো ৷ বউ এটা দেখে নিজেকে সামলাতে না পেরে কান্না করে দিল ৷ বুঝতে পারলাম তার এসব সহ্য হচ্ছেনা ৷ মেয়েটাকে বললাম
_আপু, এবার একটু ওঠ; তোমার ভাবি ওখানে বসে কান্না করছে, আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে ৷ এবার তুমি ঐ সিটে বস ৷ মেয়েটা কোন কথা না বলে চলে গেল অন্য সিটে ৷ বউকে বললাম আসো এবার ৷ কিন্তু না সে আসবেনা ৷ জিদ পেয়ে বসেছে তাকে ৷ বারবার করে বলা সত্বেও যখন এলোনা তখন ড্রাইভারকে বললাম বাস থামান ৷ তিনি বাস থামালেন ৷ এবং ড্রাইভার বলল
_ভাইজান, যাবার আগে একটা অটোগ্রাফ দিয়ে যান ৷ অটোগ্রাফ দিয়ে বাস থেকে নেমে পড়লাম ৷ বউ ভাবলো এমনি এমনি বাস থেকে নামছি তাই সে কোন প্রতিক্রিয়া জানালো না ৷ বাস থেকে নেমে বেশখানি রাস্তা হাঁটলাম ৷ হঠাৎ বউটা আমাকে দূর থেকে ডাকতে লাগল ৷ তার ডাকে সাড়া দিলাম না ৷ বউ ডেকে চলছে আর আমি হেঁটে চলছি ৷ বউ বলছে
_বাবু, রাগ করছো আমার উপর? একটু দাড়াওনা! তার কথার কোন জবাব দিলাম না ৷ আরো কিছুক্ষণ হাঁটার পর দৌড়ে এসে বউটা ঝাঁপটে ধরলো আমাকে ৷ এত শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যে আর সামনে এগোতে পারলাম না ৷ সে বলল
_আমি বুঝতে পেরেছি তোমার ব্যাপারটা ৷ আমাকে মাফ করো প্লিজ ? রাগ করে থেকোনা ৷
_তোমার উপর রাগ নেই ৷ আমি তো হাঁটছিলাম পা’টা ব্যাথা হয়ে গেছে জন্য ৷ কারণ গতকাল বিকেলে যে দৌড়ানিটা না খেয়েছি!
_কি হয়েছিল কাল?
_আর বলোনা ৷ গতকাল অনেকগুলো আন্টি আমাকে তাদের বাড়ি নিয়ে যায় ৷ এক আন্টির একটি মেয়ে ছিল খুবই
মোটা ৷ তার নিকট প্রথমবার নিয়ে গেলে যে নাজেহাল অবস্থা হয়! সবশেষে আবারও যেতে বলে ৷ মেয়েটার অত্যাচার প্রথমে সহ্য করেছিলাম ৷ পরেরবার মেয়েটার নিকট যাবার মত অবস্থা আমার ছিলনা ৷ আন্টির হাত থেকে বাঁচতে দৌড়াতে লাগলাম ৷ কিন্তু না, আন্টিও কম দৌড়ায় না ৷ সে তার মহল্লার মেয়েদেরও আমার উপর লেলিয়ে দেয় ৷ পুরো ২০ মিনিট ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে পা ব্যাথা হয়ে গেছিল ৷৷ রাতে তোমাকে পা’টা টিপে দিতে বললে দাওনি ৷ আজ পা’টা ব্যাথায় শেষ ৷ তাই ব্যাথার উপর ব্যাথা দিতে হাঁটছি ৷ তুমিও কি হাঁটবে?
_হুম, হাঁটবো; চলো ৷
হাঁটতে লাগলাম ৷ হঠাৎ কোথা থেকে আরেকটা মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে করে আসছিল ৷ আমাকে দেখে তার বয়ফ্রেন্ডকে ছেড়ে জড়িয়ে ধরতে লাগলে বউ বলে,
_উহু, টিকেট কাটতে হবে ৷ বিনামূল্যে হবেনা ৷
_কত টাকা টিকেট?
_১০০০ টাকা ৷
মেয়েটা দেখি তাতেই রাজি ৷ টাকা দিয়ে মেয়েটা দেখি আমার উপর চিতা বাঘের মত হামলা করে বসলো ৷ ভাবলাম বউ আজকে আমাকে নিয়ে ব্যবসা করতে নেমেছে ৷ পুরো রাস্তা জুরে হাঁটার সময় যতজন মেয়ের সাথে দেখা হল ৷ প্রত্যেকের থেকে বউ আমার টাকা নিলো বিনিময়ে মেয়েরা আমাকে পেল ৷ বউকে বললাম
_এগুলো তুমি কি শুরু করছো?
_কেন ভালই তো হচ্ছে? মাগনা কেন তোমাকে ইউস করবে তারা টাকা দিয়ে করুক ৷
_ছিঃ, এভাবে বলছো কেন?
_তুমি চুপ থাক ৷ আজকের পর থেকে তোমার সাথে যারাই এমনটা করতে আসবে তাদের থেকে টাকা নিবো ৷
এই টাকা জমিয়ে আমি চাঁদে যাবার টিকেট কিনবো যাতে তোমাকে কেউ দেখতে না পারে ৷ বউয়ের পরিকল্পনার কথা শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারলাম না ৷ হঠাৎ, তখনই আরেকটি মেয়ে হাজির ৷ যেই সেই মোটা ৷ বউ মেয়েটাকে দেখে মুচকি হাসলো ৷ বউকে বললাম
_বাঁচাও আমাকে বউ!
_কেন কি সমস্যা? এর থেকে বেশি টাকা নিবো, দেখ ৷ মেয়েটাকে বউ বলল
_উহু, মাগনায় জড়িয়ে ধরতে পারবে না ৷ কিস হাগ করতে চাইলে ৫ হাজার টাকা দিতে হবে ৷ মেয়েটা তাতেই রাজি ৷
আমি বাঁচার জন্য দিলাম দৌড় ৷ এমন দৌড় দিলাম, দৌড়াতে দৌড়াতে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল ৷ ঘুম ভেঙ্গে বুঝতে পারলাম স্বপ্ন ছিল ৷ যে ভয়াবহ স্বপ্ন দেখলাম! পাশে শুয়ে থাকা বউকে বললাম
_বউ, আমি তোমাকে ওয়াদা দিলাম আর কখনো নায়ক হবার কথা বলবোনা ৷ বউ বললো
_খবরদার এখন এমনটা বললে হবেনা ৷ তোমাকে নায়ক হতেই হবে ৷
_না, মরে গেলেও নায়ক হবনা ৷
বউ শুনেই ডামুর ডুমুর কিল ঘুষি লাগালো ৷ এতদিন বউকে আমি চর থাপ্পর মারতাম কারণ সে নায়ক হবো কথা শুনেই ঝগড়া লাগিয়ে দিত ৷ আর আজ আমি নায়ক হবোনা শুনে উল্টা আমাকে মারছে ৷ কোন দিকে যাবো বুঝলাম না? বউ আমাকে বলছে, মাইর খাওয়া সহ্য করতে শিখো, সিনেমা করার সময় এটা কাজে লাগবে, সেখানেও তোমাকে মাইর খেতে হবে!